ফাইল ফটো
নাটোরে গুরুদাসপুরে ধর্ষণের শিকার হয়ে চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ১১ বছর বয়সী শিশু অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত প্রতিবেশী জাহিদুল ইসলাম ওরফে জাহিদুল খাঁকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার রাতে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে র্যাব-৫ ও র্যাব-১০ এর যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়।
আজ সকালে র্যাব-৫ সিপিসি ২ নাটোর ক্যাম্পে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান (র্যাব ৫- রাজশাহী) অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার।
অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার জানান, চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার বিষয়টি স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ব্যাপক আলোড়ন ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। যা গণমাধ্যমেও ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। এরপরই মামলার এজাহারের উপর ভিত্তি করে র্যাব-৫ ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে র্যাব সদর দপ্তরের সহযোগিতায় নিজস্ব গোয়েন্দা নজরদারিতে আসামির অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। পরে ১২ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস অভিযান পরিচালনা করে গতকাল রাতে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে অভিযুক্তকে আটক করা হয়।
তিনি আরও বলেন, এই অভিযানে র্যাব সফল হলেও এই ঘটনা আমাদের সামাজিক এবং নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়াবহ বার্তা দেয়। তাই প্রতিটি পরিবারকে তাদের সন্তানদের প্রতি আরও যত্নশীল ও নজরদারি বৃদ্ধি করার আহ্বান জানাচ্ছি।
আসামিকে গুরুদাসপুর থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উল্লেখ্য, নাটোরের গুরুদাসপুরে গত নয় মাস আগে ভুক্তভোগী ৪র্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটিকে প্রতিবেশী দাদা জাহিদুল খাঁ তার ভ্যানে ঘুরতে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ধর্ষণ করে। বিষয়টি জানাজানি হলে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় জাহিদুল। ঘটনার সাত মাস পর শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন হলে বিষয়টি তার চাচির নজরে আসে। তিনি স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফির মাধ্যমে গর্ভে সন্তান থাকার বিষয়টি জানতে পারেন। পরে শিশুটি সব খুলে বললে চলতি বছরের ১৮ জুন শিশুটির দাদি বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
এরপর থেকেই গুরুদাসপুর উপজেলার দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের কালু খাঁ’র ছেলে অভিযুক্ত জাহিদুল খাঁ আত্মগোপনে চলে যান।
এদিকে আল্ট্রাসনোগ্রাফির রিপোর্ট অনুযায়ী ভিকটিম শিশুটির আগামী ৮ সেপ্টেম্বর সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে শারীরিক অবস্থাসহ পরবর্তী নানা শারীরিক ও মানসিক সমস্যা এড়াতে তার সিজারিয়ান অপারেশনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোজাহিদুল ইসলাম।