কয়েকটি কাল্পনিক সিনেমার কাহিনি

মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.) পিএইচডি:  অনেকেই বলেন কিংবা তাচ্ছিল্য করে বলেন, বাংলাদেশে এখন আর ভালো সিনেমা তৈরি হয় না। পুরনো বা সোনালি দিনের সিনেমার কথা বলে স্মৃতিকাতরতায় ভোগেন এককালের সিনেমাপ্রেমীরা। আমিও একদা এই দলে ছিলাম। তবে এখন নয়, কারণ মূলধারার যোগাযোগমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে বেশ উপভোগ করছি স্মরণকালের বেশ কিছু মনকাড়া সিনেমা (কাল্পনিক)।

 

সাম্প্রতিক সময়ে এককালের স্বপ্নের জগৎ বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে (সংক্ষেপে এফডিসি) প্রদর্শিত হচ্ছে ‘শিল্পী সমিতি নির্বাচন’ কাল্পনিক নামের পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা সিনেমা। এ দেশে ভালো সিনেমা হয় না কথার অসারতা প্রমাণ করে সিনেমা নির্মাণকারীদের গড়া ১৮টি সংগঠন। প্রতি সংগঠন যদি বছরে একটি করে ভালো সিনেমা নির্মাণের দায়িত্ব নিত তবে আমরা পেতাম ১৮টি ভালো সিনেমা। ১৮ জন দুস্থ শিল্পীকে পুনর্বাসন করলে চলচ্চিত্রাঙ্গন উপকৃত হতো। ১৮টি জেলায় ১৮টি ডিজিটাল বা অত্যাধুনিক সিনেমা হল করলে ঘুরে দাঁড়াত বাংলা সিনেমা। কিন্তু এসবের ধারেকাছেও নেই কেউ। সবাই সব শোনেন, সব বোঝেন তারপর বলেন, সবই শুনলাম, বুঝলাম। আমি অবশ্যই আছি আপনাদের সঙ্গে। তবে তার আগে বলুন আমার চেয়ার কোনটা? এসব সংগঠনের মধ্যে হালের সুপার ডুপার হিট ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’। মাত্র ৪২৮ জনের এ সংগঠনের সাম্প্রতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটছে না। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে এ নির্বাচনের বিজয়ী বা বৈধ সাধারণ সম্পাদক খুঁজে বের করতে হয়েছে। সিনেমা সেটের লালসালু কাপড় দিয়ে ঘেরা বিচার কক্ষে কাঠের হাতুড়ি দিয়ে টেবিলে বা ঘণ্টায় শব্দ করে ‘অর্ডার’ ‘অর্ডার’ বলে রায় ঘোষণার আদলে আজ বাস্তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বলতে হচ্ছে ‘চেয়ার তুমি কার?’ এ চেয়ার কিছুতেই ছাড়তে নারাজ একজন। এ চেয়ার একমাত্র তার জন্যই জায়েজ। অন্যজন এ চেয়ারে কয়েক মিনিট বসার সুযোগ পেয়েই চেয়ারের গায়ে নিজের নাম নিপুণ হাতে লিখিয়েছেন বলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। মাত্র ৪২৮ জনের এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে কী মধু আছে তা জানতে পারলে হয়তো সুন্দরবনের মৌয়াল কিংবা মানিকগঞ্জের সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহকারীরাও কারওয়ান বাজারে কাউ কাউ করতেন। কিংবা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মরিয়া হয়ে প্রতিযোগিতায় নামতেন। কিন্তু বাস্তবে তার লেশমাত্র নেই। এফডিসিতে এখন সেট ফেলে অনেক কিছুই হয়। তবে নিন্দুকরা বলেন, হয় না কেবল ভালো সিনেমা। তবে নির্বাচনের নামে যে অভিনয় হচ্ছে তা দেখলে সিনেমা দেখার প্রয়োজন কোথায়? ঘটনার আলোকে নির্বাচন নামের এ সিনেমায় একজন পীর সাহেবের নাম প্রকাশিত হলো। অতীতের সিনেমায় একজন পীর বা মাজারের খাদেমের সাক্ষাৎ মিলত, যিনি বিপদগ্রস্তদের দোয়া করতেন, সান্ত্বনা দিতেন, পথের দিশা দিতেন কিংবা যাত্রার বিবেকের মতো ‘ভোলামন বলে’ গান গেয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করতেন। কিন্তু এই পীর সাহেবের নামে একজন মহিলা প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে যা বলেছেন তা সমগ্র সিনেমাজগৎকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ক্রমাগত অভিযোগ করে চলেছেন কানে দুল পরা এক অভিনেতা এবং প্রার্থীর বিরুদ্ধে। যদিও কাগজে কলমে তিনি ‘নায়ক’ তবে বাস্তবে তিনি কয়টি সিনেমা করেছেন বা কয়টি সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তার হিসাব খুঁজতে ম্যাগনিফাইং গ্লাস প্রয়োজন। তবে যে সংখ্যা স্পষ্টত প্রকাশিত হয়েছে তা হলো, তার সরাসরি প্রচেষ্টায় ১৮৪ জন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ হারিয়েছেন। একটি সংগঠনের প্রচেষ্টা থাকে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে কলেবর বাড়ানো। কিন্তু এ সংগঠন হেঁটেছে উল্টো পথে। সুতরাং সব মিলিয়ে কেউ যদি দাবি করেন আমরা সফল, আমরা আদৌ বিব্রত নই, আমরা ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন’ (কাল্পনিক) ও সাধারণ সম্পাদকের ‘চেয়ার তুমি কার?’ (কাল্পনিক) নামের দুটি সিনেমা রেকর্ড সময়ে উপহার দিয়েছি; তবে আমাদের গাইতেই হবে ‘ধন্য ধন্য বলি তারে, বেঁধেছে এমনও ঘর (এফডিসি) শূন্যের উপর পোস্তা করে, ধন্য ধন্য বলি তারে।

 

কদিন আগে জাতি উপহার পেল ‘বোটক্লাবে নামল পরী’ (কাল্পনিক) নামের আরেকটি অ্যাকশনধর্মী সিনেমা। দেশের অনেকেই জানতেন না হাজার ক্লাবের ভিড়ে বাংলাদেশে ‘বোটক্লাব’ নামেরও একটি ক্লাব আছে। বোটক্লাব নাম শুনলেই যে কেউ ভাবতে পারেন এ ক্লাব নৌকাকেন্দ্রিক। এখানে নৌকাবাইচ, নৌকা ভ্রমণ, নানা রকম নৌকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শনী ইত্যাদি হয়। না, এসবের ধারেকাছেও নেই বোটক্লাব। তবে কী আছে সেখানে? এ প্রশ্নের উত্তর জানা গেল হঠাৎ এক রাতে বোটক্লাবে একটি পরীর আবির্ভাব ঘটায়। বাংলা, হিন্দি ও পশ্চিমা সিনেমায় সুন্দরী নারীদের মদ পরিবেশনের ভূমিকায় অন্যায়ভাবে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু ‘বোটক্লাবে নামল পরী’ সিনেমায় এই সুন্দরীর আবির্ভাব মদ পরিবেশনের জন্য নয়, মদ গিলতে। অন্তত তা-ই জানালেন বোটক্লাবের এক কর্মকর্তা। এ যেন সুকান্তের ‘একটি মোরগের কাহিনী’ কবিতার সেই বিখ্যাত উক্তির প্রতিধ্বনি, যেখানে মোরগের প্রাসাদে ঢোকার বর্ণনায় বলা হয়- 

‘তারপর সত্যিই সে একদিন প্রাসাদে ঢুকতে পেল,

একেবারে সোজা চলে এলো

ধবধবে সাদা দামি কাপড়ে ঢাকা খাবার টেবিলে

অবশ্যই খাবার খেতে নয়

খাবার হিসেবে॥’

 

এদিকে সুন্দরী পরীর অভিযোগ তার সরলতার সুযোগে অন্যায়ভাবে তাকে জোরপূর্বক মদ গিলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এমনি প্রেক্ষাপটে সরব হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দেশের এলিট ফোর্সের একদল সশস্ত্র সদস্য পরীর আস্তানায় হানা দিলে বেরিয়ে এলো মদের বোতলের বিশাল সংগ্রহ। বিচিত্র সব আইটেম সংয়ের মতো যোগ হলো লাল বিমানবালার পোশাকে লুঙ্গি ড্যান্স আর নীল শাড়িতে বার্থ ডে কেক ড্যান্স। এভাবে যখন ‘বোটক্লাবে নামল পরী’ (কাল্পনিক) সিনেমা জমে উঠছে, তখন বিয়ের ঘোষণার আগেই ঘোষণা এলো পরীর সঙ্গী ভাইজানরা মামা হতে চলেছেন। হঠাৎ করে একটা সিনেমা শেষ হওয়ার এই নতুন কৌশল হয়তো কাউকে স্বস্তি দিয়েছে। আবার কারও মন ভেঙে দিয়েছে। তবে সাধারণ দর্শক এমন সিনেমা দেখে স্বর্ণযুগের ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবির একটি গান স্মরণ করতেই পারেন, যেখানে বলা হয়-

‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী

সাথী মোদের ফুলপরী,

ফুলপরী, লালপরী, লালপরী, নীলপরী

সবার সাথে ভাব করি।’

অতি সম্প্রতি এবং জীবনঘনিষ্ঠ একটি সিনেমার নাম ‘ওরা তিনজন’ (কাল্পনিক) ডিজিটাল যুগের সঙ্গে মানানসই নাম! এ সিনেমার প্রেক্ষাপটও ডিজিটাল। চমৎকার বিজ্ঞাপন, সকল প্রকার ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে প্রচারণা এবং অত্যাধুনিক অফিস বসিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির মালামাল বিশেষ ছাড়ে গ্রাহকদের দেওয়ার এক অভিনব ব্যবসা শুরু হয় বাংলাদেশে। করোনাজনিত লকডাউনের মধ্যে ঘরে বসে কাক্সিক্ষত পণ্যবাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম মূল্য পেয়ে খুশি বিরাট ক্রেতা গোষ্ঠী।  একবারও কারও মনে প্রশ্ন জাগল না কী করে ১০০ টাকার পণ্য দিনের পর দিন ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করছে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। অধিক পণ্যের আশায় যখন তাদের অ্যাকাউন্টে সাধারণ মানুষের টাকার পাহাড়, তখনই শোনা গেল সেই চিরায়ত বাংলা সিনেমার সংলাপ ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না, অ্যারেস্ট দেম’। সিনেমাটা এখানেই শেষ হলে ভালো হতো। কিন্তু না। দৃশ্যপটে আবির্ভূত হলেন তিন স্বপ্নের তারকা। এ, এফ এবং এম আদ্যাক্ষরের একজন যুগপৎ অভিনেতা ও গায়ক এবং দুজন অফিনেত্রীকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো এমনি একটি প্রতারক কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর (শুভেচ্ছা দূত) এবং জনসংযোগ কর্মকর্তারূপে জনগণকে প্রলুব্ধ করার অভিযোগে। এ তিনজনের মধ্যে কাকতালীয়ভাবে আরেকটি মিল হলো, তারা তিনজনই প্রথম সংসার ত্যাগ করেছেন। সিনেমা বা বিনোদন জগতের তারকারা হলেন দর্শকদের স্বপ্নের জগতের মানুষ, অনুকরণীয় চরিত্র বা রোল মডেল। তদুপরি এ তিনজনই যথেষ্ট শিক্ষিত, আধুনিক এবং সফল মানুষ। সুতরাং কোনো পণ্য বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ বা জনসংযোগ কর্মকর্তা হওয়ার আগে সেই পণ্য বা কোম্পানি সম্পর্কে তারা খোঁজখবর নেবেন, এটাই ছিল স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত। কিন্তু তা না করে তারা লাখ লাখ গ্রাহককে প্রলুব্ধ করে পথে বসিয়ে এখন দুঃখ প্রকাশ করছেন। আর এখানেই থেমে আছে ‘ওরা তিনজন’ (কাল্পনিক) নামের সিনেমা। ‘ওরা তিনজন’ই বলেছেন, তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। নিজের ভালোমন্দ যারা বোঝে না তাদের বলা হয় পাগল। তাই ‘ওরা তিনজন’ সিনেমার টাইটেল সং ‘তিন পাগলে হলো দেখা নদে এসে’।

 

একসময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের কল্যাণে রাজধানীর রামপুরা বিনোদন তারকাদের পছন্দের এলাকা ছিল। এ রামপুরাই ২০২১ সালে আলোচনায় এলো ‘কাজের মেয়ে হাজেরা’ (কাল্পনিক) নামের সিনেমার কারণে। হাজেরা নামের একটি মেয়ে গৃহকর্মীর কাজ করতেন, টানা টানা চোখের এককালের নায়িকার বাসায়। পুলিশের খাতায় লিপিবদ্ধ অভিযোগ মোতাবেক তার কাজ বা কর্মঘণ্টা মনঃপূত না হওয়ায় এ নায়িকা ইট দিয়ে হাজেরার মাথা ও বাঁ হাতে আঘাত করে আহত করেন। এলাকাবাসী ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করলে সেই নায়িকার বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। মদ, ইয়াবাসহ আটক হন নায়িকা। আর ন্যায়বিচারের আশায় দিন গুনছেন ‘কাজের মেয়ে হাজেরা’। রামপুরার পশ্চিমে নিকেতনে কেতন উড়িয়ে আলোচনায় আসেন আরেক নায়িকা। তার নিকেতনের একটি বাড়ি থেকে সাত নারীসহ দুই খদ্দেরকে গ্রেফতার করে গুলশান থানা পুলিশ। এতেই চিত্রায়িত হয় ‘দি আনলাকি সেভেন’ (কাল্পনিক) সিনেমা। কারণ রাজধানীর বুকে বহু অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘটলেও সেদিন নিতান্ত ভাগ্যের ফেরেই হয়তো নিকেতনের ১ নম্বর সড়ক থেকে ২ নম্বর কাজের অভিযোগে অন্য ছয়জনের সঙ্গে এ নায়িকাকেও গ্রেফতার হতে হয়। তাকে নিয়ে রাতভর থানায় চলে নানামুখী দেনদরবার। এ নায়িকাকে কেয়ার (দেখভাল) করার জন্য অনেকেই উদ্যোগী হলেও গণমাধ্যম বিষয়টি টের পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালত হয়ে আবার নিজ নিবাসে ফেরেন এ নায়িকা।

 

দেশের একজন প্রতিমন্ত্রীর ভাইরাল হওয়া কথোপকথনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসী জানতে পারেন ‘এখন তুই হোটেলে আয়’ সিনেমার (কাল্পনিক) কাহিনি। দেশের একশ্রেণির মানুষ টাকা ও ক্ষমতার মহিমায় কত কী যে করতে পারেন, তার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে এ কাল্পনিক সিনেমায়। এখানে আরও আছে দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত নায়িকাকেও কেমন অসম্মানের চোখে দেখেন নব্য রাজনীতিবিদরা তার প্রামাণ্য দলিল। এ কাল্পনিক সিনেমার বিশেষ অংশের শুটিং হয়েছে কানাডা ও দুবাইয়ের বিমানবন্দরে।

 

সিনেমা জগতের বাইরের অনেক মানুষও ইদানীং অনেক সিনেমা (কাল্পনিক) উপহার দিয়েছেন। এমনি ধরনের কয়েকটি সিনেমা (কাল্পনিক) হলো সাহেদ কেন কারাগারে, সম্রাটের পতন, দ্য ক্যাসিনো, জি কে শামীম, দ্য গ্রেট, মিস্ পাপিয়া, নরসিংদী টু ওয়েস্টিন, ঢেলে দিই, এমপি কেন জেলে, লাখ টাকার পর্দা, হাজার টাকার বালিশ, টাকলুর টিকটক, ডা. সাবরিনা এবং এমপি বড় না মেয়র বড় ইত্যাদি। ‘বাবা তোর দরবারে সব পাগলের খেলা, হরেক রকম পাগল নিয়া মিলাইছ মেলা’ টাইটেল সং দিয়ে কেউ যদি ‘পাগলের খেলা’ নামে সিনেমা বানায়, তবে তাকে কি দোষ দেওয়া যায়?

লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাঁধ নির্মাণে অনিয়ম করলে কঠোর ব্যবস্থা: পরিবেশ উপদেষ্টা

» চিন্ময় দাসকে গ্রেফতারের বিষয়ে যা জানালেন উপদেষ্টা আসিফ

» ‘শ্রম অধিকার চর্চার দীর্ঘস্থায়ী চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করা জরুরি’

» জুলাই বিপ্লব ইতিহাসের ইতিবাচক পরিবর্তন : শফিকুর রহমান

» মিরপুর থানার ৩ নং বিট পুলিশ নিয়ে আলোচনা সভা

» রিমান্ড শেষে কারাগারে সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম

» শালিস করা নিয়ে ইউপি সদস্যেল ওপর হামলার চেষ্টার অভিযোগ অস্ত্র সহ তিনজন আটক

» শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে কঠোর হতে চায় না সরকার: উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম

» চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর

» জনগণ প্রত্যাশা মতো গণমাধ্যমের সহায়তা পাচ্ছি না: তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

কয়েকটি কাল্পনিক সিনেমার কাহিনি

মেজর নাসির উদ্দিন আহাম্মেদ (অব.) পিএইচডি:  অনেকেই বলেন কিংবা তাচ্ছিল্য করে বলেন, বাংলাদেশে এখন আর ভালো সিনেমা তৈরি হয় না। পুরনো বা সোনালি দিনের সিনেমার কথা বলে স্মৃতিকাতরতায় ভোগেন এককালের সিনেমাপ্রেমীরা। আমিও একদা এই দলে ছিলাম। তবে এখন নয়, কারণ মূলধারার যোগাযোগমাধ্যম আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের কল্যাণে বেশ উপভোগ করছি স্মরণকালের বেশ কিছু মনকাড়া সিনেমা (কাল্পনিক)।

 

সাম্প্রতিক সময়ে এককালের স্বপ্নের জগৎ বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনে (সংক্ষেপে এফডিসি) প্রদর্শিত হচ্ছে ‘শিল্পী সমিতি নির্বাচন’ কাল্পনিক নামের পূর্ণদৈর্ঘ্য বাংলা সিনেমা। এ দেশে ভালো সিনেমা হয় না কথার অসারতা প্রমাণ করে সিনেমা নির্মাণকারীদের গড়া ১৮টি সংগঠন। প্রতি সংগঠন যদি বছরে একটি করে ভালো সিনেমা নির্মাণের দায়িত্ব নিত তবে আমরা পেতাম ১৮টি ভালো সিনেমা। ১৮ জন দুস্থ শিল্পীকে পুনর্বাসন করলে চলচ্চিত্রাঙ্গন উপকৃত হতো। ১৮টি জেলায় ১৮টি ডিজিটাল বা অত্যাধুনিক সিনেমা হল করলে ঘুরে দাঁড়াত বাংলা সিনেমা। কিন্তু এসবের ধারেকাছেও নেই কেউ। সবাই সব শোনেন, সব বোঝেন তারপর বলেন, সবই শুনলাম, বুঝলাম। আমি অবশ্যই আছি আপনাদের সঙ্গে। তবে তার আগে বলুন আমার চেয়ার কোনটা? এসব সংগঠনের মধ্যে হালের সুপার ডুপার হিট ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি’। মাত্র ৪২৮ জনের এ সংগঠনের সাম্প্রতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ার সমাপ্তি ঘটছে না। দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে এ নির্বাচনের বিজয়ী বা বৈধ সাধারণ সম্পাদক খুঁজে বের করতে হয়েছে। সিনেমা সেটের লালসালু কাপড় দিয়ে ঘেরা বিচার কক্ষে কাঠের হাতুড়ি দিয়ে টেবিলে বা ঘণ্টায় শব্দ করে ‘অর্ডার’ ‘অর্ডার’ বলে রায় ঘোষণার আদলে আজ বাস্তবে দেশের সর্বোচ্চ আদালতকে বলতে হচ্ছে ‘চেয়ার তুমি কার?’ এ চেয়ার কিছুতেই ছাড়তে নারাজ একজন। এ চেয়ার একমাত্র তার জন্যই জায়েজ। অন্যজন এ চেয়ারে কয়েক মিনিট বসার সুযোগ পেয়েই চেয়ারের গায়ে নিজের নাম নিপুণ হাতে লিখিয়েছেন বলে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হচ্ছে। মাত্র ৪২৮ জনের এ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদকের চেয়ারে কী মধু আছে তা জানতে পারলে হয়তো সুন্দরবনের মৌয়াল কিংবা মানিকগঞ্জের সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহকারীরাও কারওয়ান বাজারে কাউ কাউ করতেন। কিংবা বিদেশি বিনিয়োগকারীরা মরিয়া হয়ে প্রতিযোগিতায় নামতেন। কিন্তু বাস্তবে তার লেশমাত্র নেই। এফডিসিতে এখন সেট ফেলে অনেক কিছুই হয়। তবে নিন্দুকরা বলেন, হয় না কেবল ভালো সিনেমা। তবে নির্বাচনের নামে যে অভিনয় হচ্ছে তা দেখলে সিনেমা দেখার প্রয়োজন কোথায়? ঘটনার আলোকে নির্বাচন নামের এ সিনেমায় একজন পীর সাহেবের নাম প্রকাশিত হলো। অতীতের সিনেমায় একজন পীর বা মাজারের খাদেমের সাক্ষাৎ মিলত, যিনি বিপদগ্রস্তদের দোয়া করতেন, সান্ত্বনা দিতেন, পথের দিশা দিতেন কিংবা যাত্রার বিবেকের মতো ‘ভোলামন বলে’ গান গেয়ে সতর্কবাণী উচ্চারণ করতেন। কিন্তু এই পীর সাহেবের নামে একজন মহিলা প্রার্থী সংবাদ সম্মেলন করে যা বলেছেন তা সমগ্র সিনেমাজগৎকে কাঁপিয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে একজন জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী ক্রমাগত অভিযোগ করে চলেছেন কানে দুল পরা এক অভিনেতা এবং প্রার্থীর বিরুদ্ধে। যদিও কাগজে কলমে তিনি ‘নায়ক’ তবে বাস্তবে তিনি কয়টি সিনেমা করেছেন বা কয়টি সফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তার হিসাব খুঁজতে ম্যাগনিফাইং গ্লাস প্রয়োজন। তবে যে সংখ্যা স্পষ্টত প্রকাশিত হয়েছে তা হলো, তার সরাসরি প্রচেষ্টায় ১৮৪ জন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সদস্যপদ হারিয়েছেন। একটি সংগঠনের প্রচেষ্টা থাকে সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধি করে কলেবর বাড়ানো। কিন্তু এ সংগঠন হেঁটেছে উল্টো পথে। সুতরাং সব মিলিয়ে কেউ যদি দাবি করেন আমরা সফল, আমরা আদৌ বিব্রত নই, আমরা ‘চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচন’ (কাল্পনিক) ও সাধারণ সম্পাদকের ‘চেয়ার তুমি কার?’ (কাল্পনিক) নামের দুটি সিনেমা রেকর্ড সময়ে উপহার দিয়েছি; তবে আমাদের গাইতেই হবে ‘ধন্য ধন্য বলি তারে, বেঁধেছে এমনও ঘর (এফডিসি) শূন্যের উপর পোস্তা করে, ধন্য ধন্য বলি তারে।

 

কদিন আগে জাতি উপহার পেল ‘বোটক্লাবে নামল পরী’ (কাল্পনিক) নামের আরেকটি অ্যাকশনধর্মী সিনেমা। দেশের অনেকেই জানতেন না হাজার ক্লাবের ভিড়ে বাংলাদেশে ‘বোটক্লাব’ নামেরও একটি ক্লাব আছে। বোটক্লাব নাম শুনলেই যে কেউ ভাবতে পারেন এ ক্লাব নৌকাকেন্দ্রিক। এখানে নৌকাবাইচ, নৌকা ভ্রমণ, নানা রকম নৌকা সংরক্ষণ ও প্রদর্শনী ইত্যাদি হয়। না, এসবের ধারেকাছেও নেই বোটক্লাব। তবে কী আছে সেখানে? এ প্রশ্নের উত্তর জানা গেল হঠাৎ এক রাতে বোটক্লাবে একটি পরীর আবির্ভাব ঘটায়। বাংলা, হিন্দি ও পশ্চিমা সিনেমায় সুন্দরী নারীদের মদ পরিবেশনের ভূমিকায় অন্যায়ভাবে উপস্থাপন করা হয়। কিন্তু ‘বোটক্লাবে নামল পরী’ সিনেমায় এই সুন্দরীর আবির্ভাব মদ পরিবেশনের জন্য নয়, মদ গিলতে। অন্তত তা-ই জানালেন বোটক্লাবের এক কর্মকর্তা। এ যেন সুকান্তের ‘একটি মোরগের কাহিনী’ কবিতার সেই বিখ্যাত উক্তির প্রতিধ্বনি, যেখানে মোরগের প্রাসাদে ঢোকার বর্ণনায় বলা হয়- 

‘তারপর সত্যিই সে একদিন প্রাসাদে ঢুকতে পেল,

একেবারে সোজা চলে এলো

ধবধবে সাদা দামি কাপড়ে ঢাকা খাবার টেবিলে

অবশ্যই খাবার খেতে নয়

খাবার হিসেবে॥’

 

এদিকে সুন্দরী পরীর অভিযোগ তার সরলতার সুযোগে অন্যায়ভাবে তাকে জোরপূর্বক মদ গিলানোর চেষ্টা করা হয়েছে। এমনি প্রেক্ষাপটে সরব হলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দেশের এলিট ফোর্সের একদল সশস্ত্র সদস্য পরীর আস্তানায় হানা দিলে বেরিয়ে এলো মদের বোতলের বিশাল সংগ্রহ। বিচিত্র সব আইটেম সংয়ের মতো যোগ হলো লাল বিমানবালার পোশাকে লুঙ্গি ড্যান্স আর নীল শাড়িতে বার্থ ডে কেক ড্যান্স। এভাবে যখন ‘বোটক্লাবে নামল পরী’ (কাল্পনিক) সিনেমা জমে উঠছে, তখন বিয়ের ঘোষণার আগেই ঘোষণা এলো পরীর সঙ্গী ভাইজানরা মামা হতে চলেছেন। হঠাৎ করে একটা সিনেমা শেষ হওয়ার এই নতুন কৌশল হয়তো কাউকে স্বস্তি দিয়েছে। আবার কারও মন ভেঙে দিয়েছে। তবে সাধারণ দর্শক এমন সিনেমা দেখে স্বর্ণযুগের ‘ছুটির ঘণ্টা’ ছবির একটি গান স্মরণ করতেই পারেন, যেখানে বলা হয়-

‘আমাদের দেশটা স্বপ্নপুরী

সাথী মোদের ফুলপরী,

ফুলপরী, লালপরী, লালপরী, নীলপরী

সবার সাথে ভাব করি।’

অতি সম্প্রতি এবং জীবনঘনিষ্ঠ একটি সিনেমার নাম ‘ওরা তিনজন’ (কাল্পনিক) ডিজিটাল যুগের সঙ্গে মানানসই নাম! এ সিনেমার প্রেক্ষাপটও ডিজিটাল। চমৎকার বিজ্ঞাপন, সকল প্রকার ডিজিটাল প্ল্যাটফরমে প্রচারণা এবং অত্যাধুনিক অফিস বসিয়ে বিভিন্ন কোম্পানির মালামাল বিশেষ ছাড়ে গ্রাহকদের দেওয়ার এক অভিনব ব্যবসা শুরু হয় বাংলাদেশে। করোনাজনিত লকডাউনের মধ্যে ঘরে বসে কাক্সিক্ষত পণ্যবাজার মূল্যের চেয়ে অনেক কম মূল্য পেয়ে খুশি বিরাট ক্রেতা গোষ্ঠী।  একবারও কারও মনে প্রশ্ন জাগল না কী করে ১০০ টাকার পণ্য দিনের পর দিন ৩০-৪০ টাকায় বিক্রি করছে এসব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। অধিক পণ্যের আশায় যখন তাদের অ্যাকাউন্টে সাধারণ মানুষের টাকার পাহাড়, তখনই শোনা গেল সেই চিরায়ত বাংলা সিনেমার সংলাপ ‘আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না, অ্যারেস্ট দেম’। সিনেমাটা এখানেই শেষ হলে ভালো হতো। কিন্তু না। দৃশ্যপটে আবির্ভূত হলেন তিন স্বপ্নের তারকা। এ, এফ এবং এম আদ্যাক্ষরের একজন যুগপৎ অভিনেতা ও গায়ক এবং দুজন অফিনেত্রীকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হলো এমনি একটি প্রতারক কোম্পানির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর (শুভেচ্ছা দূত) এবং জনসংযোগ কর্মকর্তারূপে জনগণকে প্রলুব্ধ করার অভিযোগে। এ তিনজনের মধ্যে কাকতালীয়ভাবে আরেকটি মিল হলো, তারা তিনজনই প্রথম সংসার ত্যাগ করেছেন। সিনেমা বা বিনোদন জগতের তারকারা হলেন দর্শকদের স্বপ্নের জগতের মানুষ, অনুকরণীয় চরিত্র বা রোল মডেল। তদুপরি এ তিনজনই যথেষ্ট শিক্ষিত, আধুনিক এবং সফল মানুষ। সুতরাং কোনো পণ্য বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ‘ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ বা জনসংযোগ কর্মকর্তা হওয়ার আগে সেই পণ্য বা কোম্পানি সম্পর্কে তারা খোঁজখবর নেবেন, এটাই ছিল স্বাভাবিক এবং প্রত্যাশিত। কিন্তু তা না করে তারা লাখ লাখ গ্রাহককে প্রলুব্ধ করে পথে বসিয়ে এখন দুঃখ প্রকাশ করছেন। আর এখানেই থেমে আছে ‘ওরা তিনজন’ (কাল্পনিক) নামের সিনেমা। ‘ওরা তিনজন’ই বলেছেন, তারা বিষয়টি বুঝতে পারেননি। নিজের ভালোমন্দ যারা বোঝে না তাদের বলা হয় পাগল। তাই ‘ওরা তিনজন’ সিনেমার টাইটেল সং ‘তিন পাগলে হলো দেখা নদে এসে’।

 

একসময় বাংলাদেশ টেলিভিশনের কল্যাণে রাজধানীর রামপুরা বিনোদন তারকাদের পছন্দের এলাকা ছিল। এ রামপুরাই ২০২১ সালে আলোচনায় এলো ‘কাজের মেয়ে হাজেরা’ (কাল্পনিক) নামের সিনেমার কারণে। হাজেরা নামের একটি মেয়ে গৃহকর্মীর কাজ করতেন, টানা টানা চোখের এককালের নায়িকার বাসায়। পুলিশের খাতায় লিপিবদ্ধ অভিযোগ মোতাবেক তার কাজ বা কর্মঘণ্টা মনঃপূত না হওয়ায় এ নায়িকা ইট দিয়ে হাজেরার মাথা ও বাঁ হাতে আঘাত করে আহত করেন। এলাকাবাসী ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি অবহিত করলে সেই নায়িকার বাড়িতে হানা দেয় পুলিশ। মদ, ইয়াবাসহ আটক হন নায়িকা। আর ন্যায়বিচারের আশায় দিন গুনছেন ‘কাজের মেয়ে হাজেরা’। রামপুরার পশ্চিমে নিকেতনে কেতন উড়িয়ে আলোচনায় আসেন আরেক নায়িকা। তার নিকেতনের একটি বাড়ি থেকে সাত নারীসহ দুই খদ্দেরকে গ্রেফতার করে গুলশান থানা পুলিশ। এতেই চিত্রায়িত হয় ‘দি আনলাকি সেভেন’ (কাল্পনিক) সিনেমা। কারণ রাজধানীর বুকে বহু অনৈতিক কর্মকাণ্ড ঘটলেও সেদিন নিতান্ত ভাগ্যের ফেরেই হয়তো নিকেতনের ১ নম্বর সড়ক থেকে ২ নম্বর কাজের অভিযোগে অন্য ছয়জনের সঙ্গে এ নায়িকাকেও গ্রেফতার হতে হয়। তাকে নিয়ে রাতভর থানায় চলে নানামুখী দেনদরবার। এ নায়িকাকে কেয়ার (দেখভাল) করার জন্য অনেকেই উদ্যোগী হলেও গণমাধ্যম বিষয়টি টের পাওয়ায় শেষ পর্যন্ত আদালত হয়ে আবার নিজ নিবাসে ফেরেন এ নায়িকা।

 

দেশের একজন প্রতিমন্ত্রীর ভাইরাল হওয়া কথোপকথনের পরিপ্রেক্ষিতে দেশবাসী জানতে পারেন ‘এখন তুই হোটেলে আয়’ সিনেমার (কাল্পনিক) কাহিনি। দেশের একশ্রেণির মানুষ টাকা ও ক্ষমতার মহিমায় কত কী যে করতে পারেন, তার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে এ কাল্পনিক সিনেমায়। এখানে আরও আছে দেশের একজন প্রতিষ্ঠিত নায়িকাকেও কেমন অসম্মানের চোখে দেখেন নব্য রাজনীতিবিদরা তার প্রামাণ্য দলিল। এ কাল্পনিক সিনেমার বিশেষ অংশের শুটিং হয়েছে কানাডা ও দুবাইয়ের বিমানবন্দরে।

 

সিনেমা জগতের বাইরের অনেক মানুষও ইদানীং অনেক সিনেমা (কাল্পনিক) উপহার দিয়েছেন। এমনি ধরনের কয়েকটি সিনেমা (কাল্পনিক) হলো সাহেদ কেন কারাগারে, সম্রাটের পতন, দ্য ক্যাসিনো, জি কে শামীম, দ্য গ্রেট, মিস্ পাপিয়া, নরসিংদী টু ওয়েস্টিন, ঢেলে দিই, এমপি কেন জেলে, লাখ টাকার পর্দা, হাজার টাকার বালিশ, টাকলুর টিকটক, ডা. সাবরিনা এবং এমপি বড় না মেয়র বড় ইত্যাদি। ‘বাবা তোর দরবারে সব পাগলের খেলা, হরেক রকম পাগল নিয়া মিলাইছ মেলা’ টাইটেল সং দিয়ে কেউ যদি ‘পাগলের খেলা’ নামে সিনেমা বানায়, তবে তাকে কি দোষ দেওয়া যায়?

লেখক : গবেষক ও কলামিস্ট।  সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com