অষ্টম শ্রেণি পাস শামসুন্নাহার ওরফে মায়া (৩৩)। ৫ বছর আগে তিনি একটি সিকিউরিটি কোম্পানিতে চাকরি করেন। সেই অভিজ্ঞতা থেকেই নিজে খুলে বসেন একটি সিকিউরিটি কোম্পানি। নাম দেন: সিনথীয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেড। প্রথম স্বামীর ঘর না করতে পেরে পূর্বপরিচিত তার ৮ বছর কম বয়সী জুয়েল ভূঁইয়াকে বিয়ে করেন। স্বামী ও স্ত্রী মিলে ফেসবুকে সিনথীয়া সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেডের বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতারণার জাল শুরু করেন। তাদের ফাঁদে প্রায় ৭০০ জন যুবক প্রতারিত হয়েছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে নেয়া হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা।
এদের অধিকাংশই হচ্ছেন গ্রাম থেকে আসা দরিদ্র পরিবারের সন্তান। এই প্রতারক স্বামী স্ত্রীসহ চক্রের ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। গতকাল বিকালে রাজধানীর কাওরানবাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আব্দুল মোমেন জানান, রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের বিভিন্ন এলাকায় কয়েকটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র দীর্ঘদিন যাবত ডিজিটাল পাটফরমে চাকরি দেয়ার নামে ভুয়া নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রদান করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করে আসছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে রোববার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে রাজধানীর উত্তরখান থানাধীন আটিপাড়া বাজারের মাসুদ রানার মালিকানাধীন ‘মা মনোয়ারা সুপার মার্কেটের’ ৪র্থ তলায় সিনথীয়া সিকিউরিটি সার্ভিস লিমিটেডের অফিসে অভিযান পরিচালনা করে এমএলএম প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য ও সিনথীয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামসুন্নাহার ওরফে মায়া ও তার স্বামী মো. জুয়েল ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত অন্যরা হলো- মো. কামরুজ্জামান, ফারহানা ইয়াছমিন, মেহেদী হাসান, মো. আল মামুন ও তাজবির হাসান। এ সময় তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ভুয়া কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়।
তিনি আরও জানান, তারা একটি সংঘবদ্ধ এমএলএম প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য। ওই এমএলএম কোম্পানিটির নাম সিনথীয়া সিকিউরিটি সার্ভিসেস লিমিটেড এবং রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় তাদের অফিস। প্রতারক চক্রটি ডিজিটাল পাটফরমে তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেয়ার কথা বলে বিভিন্ন পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে। এই চক্রটি তাদের কোম্পানিতে ম্যানেজার, অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার এবং তাদের অধীনে বিভিন্ন অফিস, ব্যাংক, এটিএম বুথ, থ্রি স্টার অ্যাপার্টমেন্ট, গার্মেন্ট- টেক্সটাইল, মিল-ফ্যাক্টরি, বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্ট, মেট্রোরেল হেড অফিস ও চায়না প্রজেক্টসহ আরও কিছু জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের লাভজনক পদে কিছু কর্মচারী নিয়োগের জন্য তাদের ফেসবুক পেজ-এ বিজ্ঞাপন দিতো।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব-১ এর এএসপি (অপারেশন) এএসপি নোমান আহমেদ ও এএসপি পার্থ উপস্থিত ছিলেন। সূএ:মানবজমিন