হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখেন নুর ইসলাম

প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর একে একে ১০টি বিয়ে করেন নুর ইসলাম (৭০)। তিনি পেশায় একজন ভিক্ষুক। তবে ১০ স্ত্রীর সবাই তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। পরে আরেকটি বিয়ে করেছেন। তিনি চান না এই স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে না যাক। এজন্য ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষা করেন নুর ইসলাম।

 

নুর ইসলাম ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের ধারাকপুর উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ১১তম মানসিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী জান্নাত বেগমকে (৩৫) নিয়ে ভিক্ষা করে চলে তার সংসার।

নুর ইসলামের ভিটেমাটি বলতে আছে শুধু আড়াই শতাংশ জমি। সেই জমিতে কলাপাতা, সুপারি পাতা, ছেঁড়া কাপড়, বস্তা ও কুড়িয়ে আনা পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি তৈরি করে সেখানেই বসবাস করছেন এই দম্পতির।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, নুর ইসলামের প্রথম স্ত্রীর নাম হাজেরা খাতুন। ওই সংসারে এক ছেলে শেখ চান ও এক মেয়ে হুন্নি আক্তারকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তাদের। তবে, আনুমানিক ১৫ বছর আগে হাজেরা খাতুন অসুস্থ হয়ে মারা যান।

 

হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখেন নুর ইসলাম

এরপর একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেন নুর ইসলাম। কিন্তু কিছুদিন পর স্বামী মারা যাওয়ায় তার কাছে ফিরে আসেন মেয়ে। কয়েক বছর আগে একমাত্র ছেলেও অসুস্থ হয়ে মারা যান।

 

স্থানীয়রা জানান, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ১০ জন মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে বিয়ে করে বারবার সংসার সাজানোর চেষ্টা করেছেন নুর ইসলাম। কিন্তু, তারা মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় দু-তিনমাস থাকার পর নিরুদ্দেশ হয়ে যেতেন। নুর ইসলাম তাদের আর খুঁজে পেতেন না।

 

গতবছরের রমজান মাসে ফুলপুর পৌরসভার আমুয়াকান্দা বাজারের জান্নাত বেগম নামের এক পাগলিকে বিয়ে করে আবার সংসার শুরু করেন ভিক্ষুক নুর ইসলাম। বিয়ের পর থেকে হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে জান্নাতকে শিকলে বেঁধে সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষা করেন তিনি।

 

হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখেন নুর ইসলাম

 

থাকার জন্য সরকারের কাছে একটি ঘর দাবি করেছেন নুর ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার কত মানুষকে ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। আমাকেও যদি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে হয়তো জীবনের শেষ সময়টুকু শান্তিতে থাকতে পারতাম।

 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নুর ইসলামের ঘরের জন্য আবেদন করা আছে। বরাদ্দ এলে তাকে ঘর দেওয়া হবে। তারা যেন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে নজর থাকবে।

 

এ বিষয়ে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি ফুলপুরে আসার পর সবার সহযোগিতায় দুই পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। সবার সহযোগিতা পেলে খুব শিগগির ওই দম্পতির জন্যও একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।’ সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্র করছে ভারত: নীরব

» খালেদা জিয়াকে বিদেশ নেওয়ার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে

» ভিডিও বার্তায় মইন ইউ আহমেদ মুন্নি সাহার লাইভ বিডিআর বিদ্রোহ ছড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছে

» ক্ষমতায় গেলে দেশের সকল ফরম থেকে ধর্মালম্বী অপশন তুলে দেওয়া হবে—- ড. মঈন খান

» পলাশে হামলা ভাংচুরের পর বন্ধ হয়ে গেল জনতা জুটমিল, কর্মহীন হয়ে পড়েছে ৭ হাজার শ্রমিক

» বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞার এক সপ্তাহ পরেও যে কারণে পর্যটক নেই

» হাতীবান্ধা রিপোর্টার্স ক্লাবের কমিটি গঠন সভাপতি মোস্তফা সম্পাদক রহিম

» ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইসলামপুর উপজেলা কার্যালয় উদ্বোধন

» এক্সিম ব্যাংকে ডাকাতি চেষ্টার অভিযোগে ১০ জন আটক

» ‘লুকিয়ে রাখা’ পুতিনের দুই ছেলের তথ্য ফাঁস!

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখেন নুর ইসলাম

প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর একে একে ১০টি বিয়ে করেন নুর ইসলাম (৭০)। তিনি পেশায় একজন ভিক্ষুক। তবে ১০ স্ত্রীর সবাই তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। পরে আরেকটি বিয়ে করেছেন। তিনি চান না এই স্ত্রীও তাকে ছেড়ে চলে না যাক। এজন্য ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষা করেন নুর ইসলাম।

 

নুর ইসলাম ময়মনসিংহের ফুলপুর উপজেলার উপজেলার ভাইটকান্দি ইউনিয়নের ধারাকপুর উত্তরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। ১১তম মানসিক প্রতিবন্ধী স্ত্রী জান্নাত বেগমকে (৩৫) নিয়ে ভিক্ষা করে চলে তার সংসার।

নুর ইসলামের ভিটেমাটি বলতে আছে শুধু আড়াই শতাংশ জমি। সেই জমিতে কলাপাতা, সুপারি পাতা, ছেঁড়া কাপড়, বস্তা ও কুড়িয়ে আনা পলিথিন দিয়ে ঝুপড়ি তৈরি করে সেখানেই বসবাস করছেন এই দম্পতির।

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, নুর ইসলামের প্রথম স্ত্রীর নাম হাজেরা খাতুন। ওই সংসারে এক ছেলে শেখ চান ও এক মেয়ে হুন্নি আক্তারকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল তাদের। তবে, আনুমানিক ১৫ বছর আগে হাজেরা খাতুন অসুস্থ হয়ে মারা যান।

 

হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখেন নুর ইসলাম

এরপর একমাত্র মেয়েকে বিয়ে দেন নুর ইসলাম। কিন্তু কিছুদিন পর স্বামী মারা যাওয়ায় তার কাছে ফিরে আসেন মেয়ে। কয়েক বছর আগে একমাত্র ছেলেও অসুস্থ হয়ে মারা যান।

 

স্থানীয়রা জানান, প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর এ পর্যন্ত ১০ জন মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে বিয়ে করে বারবার সংসার সাজানোর চেষ্টা করেছেন নুর ইসলাম। কিন্তু, তারা মানসিক প্রতিবন্ধী হওয়ায় দু-তিনমাস থাকার পর নিরুদ্দেশ হয়ে যেতেন। নুর ইসলাম তাদের আর খুঁজে পেতেন না।

 

গতবছরের রমজান মাসে ফুলপুর পৌরসভার আমুয়াকান্দা বাজারের জান্নাত বেগম নামের এক পাগলিকে বিয়ে করে আবার সংসার শুরু করেন ভিক্ষুক নুর ইসলাম। বিয়ের পর থেকে হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে জান্নাতকে শিকলে বেঁধে সঙ্গে নিয়ে ভিক্ষা করেন তিনি।

 

হারানোর ভয়ে ১১তম স্ত্রীকে শিকলে বেঁধে রাখেন নুর ইসলাম

 

থাকার জন্য সরকারের কাছে একটি ঘর দাবি করেছেন নুর ইসলাম। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘সরকার কত মানুষকে ঘর তৈরি করে দিচ্ছে। আমাকেও যদি একটি ঘরের ব্যবস্থা করে দিতো তাহলে হয়তো জীবনের শেষ সময়টুকু শান্তিতে থাকতে পারতাম।

 

স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নুর ইসলামের ঘরের জন্য আবেদন করা আছে। বরাদ্দ এলে তাকে ঘর দেওয়া হবে। তারা যেন সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয় সেদিকে নজর থাকবে।

 

এ বিষয়ে ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘আমি ফুলপুরে আসার পর সবার সহযোগিতায় দুই পরিবারকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। সবার সহযোগিতা পেলে খুব শিগগির ওই দম্পতির জন্যও একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হবে।’ সূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com