জেনারেল উবানের চোখে মুজিব বাহিনীর চতুষ্টয় এবং সিরাজুল আলম খানের চির-প্রস্থান

ছবি: সংগূহীত

 

 সোহেল সানি:   মুজিব বাহিনীর চতুষ্টয়ের মধ্যে সিরাজুল আলম খানের চিরবিদায়ে এখন বেঁচে থাকলেন কেবল তোফায়েল আহমেদ। মুজিব বাহিনীর পুরোধা জেনারেল উবানের ভাষ্যে কেমন ছিলেন চতুষ্টয় বীর সেনানী শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদ? 

 

মেজর জেনারেল এস এস উবান মুজিব বাহিনীর গঠন, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে উল্লেখ করেন যে, “এক অশান্ত সময়ে আমার সঙ্গে একদল উৎসর্গীকৃত প্রাণতরুণ যুবনেতৃত্বের সাক্ষাৎ ঘটে। পরিচয়ে ধারণা হলো -এরাই একমাত্র নেতৃত্ব, যারা ভালো কিছু দিতে পারবেন। মনে হলো এরা লক্ষ্য উদ্দেশ্য প্রচন্ডভাবে প্রেরণাদীপ্ত এবং তা অর্জনে অকুতোভয়। শেখ মুজিবের প্রতি প্রগাঢ় আনুগত্য এবং ঘনিষ্ঠতার কারণে নিজেদেরকে মুক্তিবাহিনীর বদলে ” মুজিব বাহিনী” নামে অভিহিত হতে চাচ্ছিলেন।

 

ভারতীয় সেনাবাহিনী কেবলমাত্র অস্থায়ী সরকারের মতামত গ্রহণ করতেন। অন্য কোন কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত ছিলেন না- তা যতই ফলপ্রসূ হোক বা স্বদেশপ্রেম যতই তীব্র হোক না কেন। দুর্ভাগ্যজনক ছিলো, তাদের অবস্থান মেনে নেয়ার মেজাজে ছিলেন না অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার। আমি এই পরিস্থিতিতেও স্পষ্টতই আত্মোৎসর্গীকৃত, তীব্র প্রেরণাদীপ্ত এবং সুসংগঠিত একটি তরুণগ্রুপের গুরুত্ব অনুধাবন করছিলাম। সাধারণ বোধ নির্দেশ করছিল যে এদেরকে আমরা সমর্থন দেব এবং মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক সহজতর করে তুলতে যা করণীয়, তা আপ্রাণ করবো- কেননা মুক্তিবাহিনী তো সরাসরি তাজউদ্দীন আহমদের অধিনায়কত্বেই রয়েছে। ভারতীয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব আর এন কাও এসব যুবনেতার নেতৃত্ব সম্পর্কে আগেই অবগত ছিলেন। যুবনেতারা মাথাগরমের হলেও আপোষহীন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন ছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনী গঠনের দায়িত্বটি আমার কাঁধে চড়িয়ে যুবনেতাদের আমার হাতে তুলে দিলেন।

 

জেনারেল উবানের ভাষ্যমতে চার যুবনেতা সত্যিই মুক্তিযুদ্ধকালীন যৌথ নেতৃত্বের চমৎকার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।
মুজিব বাহিনীর অপারেশন পরিচালনার জন্য চারনেতা বাংলাদেশকে চারটি সেক্টরে ভাগ করে নিয়েছিলেন।
শেখ ফজলুল হক মনি বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও সিলেট অঞ্চলের কমান্ডার হিসাবে অধিনায়ক এবং তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে সহ-অধিনায়ক ছিলেন ডাকসু ভিপি আসম আব্দুর রব ও জিএস আবদুল কুদ্দুস মাখন। বৃহত্তর রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর সমন্বয়ে গঠিত উত্তরাঞ্চলীয় সেক্টরের কমান্ডার রূপে অধিনায়ক ছিলেন সিরাজুল আলম খান। সহ-অধিনায়ক ছিলেন মনিরুল ইসলাম ওরফে মার্শাল মনি। বৃহত্তর খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও বৃহত্তর বরিশাল- দক্ষিণাঞ্জলীয় সেক্টরের কমান্ডার রূপে অধিনায়ক ছিলেন তোফায়েল আহমেদ এবং  সহঅধিনায়ক ছিলেন কাজী আরেফ আহমেদ। মুজিব বাহিনীর সদর দফতর ছিলো মেঘালয়ের ডালুতে। এই সেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। উপঅধিনায়ক ছিলেন সৈয়দ আহমেদ। মুজিব বাহিনী বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) নামেও পরিচিত।

জেনারেল উবানের দৃষ্টিতে চার নেতা যেমন ছিলেন-

সিরাজুল আলম খান

সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে জেনারেল উবান বলেছেন, “তিনি প্রগতিবাদী (রেডিক্যাল) চিন্তাধারাকে লালনপালন করতেন এবং ছিলেন আপোষহীন। যুদ্ধ করতেন ব্যাঘ্রের ন্যায়, আর কাজ করতেন কবুলদাসের ন্যায়। একাধিকক্রমে কয়েকদিন না খেয়ে না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতে পারতেন। শুধু চায়ের ওপর বেঁচে থাকতেন। খেতে বসলে প্রচুর খেতেন। মুরগি-মাংস আর ভাত প্রিয় খাদ্য তার।”

 

গত শুক্রবার চির অচেনার দেশে চলে যাওয়া রাজনীতির রহস্যপুরুষ বলে পরিচিত সিরাজুল আলম খান। বঙ্গবন্ধুর কাছে-দূরে থাকা সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে আছে আলোচনা সমালোচনা। জানিনা, মুজিব বাহিনীর অন্যতম চতুষ্টয়ের একজন   তোফায়েল আহমেদের জীবদ্দশায় আমার প্রকাশ করা সমীচীন হবে কিনা-তিনি রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে কথাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়েও দিতে পারেন-তবুও বলছি।
উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তী তোফায়েল আহমেদ আমাকে বলেছিলেন, সিরাজ ভাই (সিরাজুল আলম খান) এর অবদান অস্বীকার করলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। আমি যে “বঙ্গবন্ধু” উপাধিটি দেয়ার কীর্তি নিচ্ছি সেটিও কিন্তু নেপথ্যে সিরাজ ভাইয়েরই দেয়া। উপাধিটি যেন তুমি সম্মোধন করে দেই সেজন্য সিরাজ ভাই একরকম লিখে দিয়ে আগের দিন রিহার্সাল করালেন। শেষ পর্যন্ত আমার জীবনে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি এলো ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯- আমি কারামুক্ত অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে তুমি সম্মোধন করেই “বঙ্গবন্ধু” উপাধিটি ঘোষণা করলাম। মুহূর্তে জনসমুদ্র থেকে মুহূর্মুহু করতালিতে বঙ্গবন্ধুতে অভিষিক্ত হলেন মহান নেতা। স্বাধীনতাপূর্ব সিরাজুল আলম খান আর স্বাধীনতাত্তোর সিরাজুল আলম খান সম্পূর্ণ ভিন্ন এক সত্তা ভিন্ন এক চরিত্র। ছাত্রলীগের স্বাধীনতার ইশতেহার, জাতির পিতা উপাধি, জাতীয় পতাকা সবকিছুর নেপথ্যে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন যে মানুষটি-সেই সিরাজুল আলম খানকে জাতি চিরকাল স্মরণ করবেই।

 

ইতিহাসের তথ্য-উপাত্তের গবেষণা নিশ্চিত করে এই কথাই সাক্ষ্য দেয় যে, সিরাজুল আলম খানের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র অর্থাৎ জাসদের উদভ্রান্ত উগ্র-দর্শন বঙ্গবন্ধু হত্যার পথকে প্রশস্ত করেছিল এবং উত্থান ঘটিয়েছিল অখ্যাত এক জিয়ার। মুজিব বাহিনীর অন্যতম অধিনায়ক তোফায়েল আহমেদ এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের যে নিয়মকানুন অনুসারে সম্মেলন হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন হয়। কিন্তু একটা অজুহাত তো খুঁজতে হবে ছাত্রলীগ ভাঙ্গার। কেন ছাত্রলীগ দুভাগ হলো, সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজে পাই পরবর্তীকালে জাসদের জন্মের মধ্য দিয়ে। তখন তাদের পরিকল্পনা ছিলো-অবাস্তব।

 

আব্দুর রাজ্জাক একবার একটি সাক্ষাতকারে স্বাধীনতার পরপরই ছাত্রলীগের বিভেদ-ভাঙ্গন সম্পর্কে বলেন, “আমরা সবাই তাড়াতাড়ি কলকাতা থেকে চলে আসি কিন্তু সিরাজুল আলম খান এলেন বেশ কিছুদিন পর। তার আসার পরই ছাত্রলীগের মধ্যে হঠাৎ কিছু কিছু কথা শুরু হয়ে গেল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে….  আসম আব্দুর রব (ডাকসু ভিপি) চৌমুহনীতে গিয়ে বললেন, “পরাধীন দেশ স্বাধীন হয়েছে, এবার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হবে। বিপ্লবের নেতৃত্ব দেবেন একজন যুবনেতা। আপনারা তার জন্য অপেক্ষা করুন। তিনি আসবেন আপনাদের সামনে। আসলে তার (সিরাজুল আলম খান) নেতৃত্ব এবং ভাবমূর্তি তৈরিতে নেমে পড়লেন। দেখলাম পিটার কাসটার্সের সঙ্গে তার সংযোগ, পশ্চিম বাংলার অতি বামদের সঙ্গে যোগসূত্র। যাদের সঙ্গে ট্রটস্কিপন্থীদের যোগসাজশ। এক পর্যায়ে যোগসূত্র হলো আন্তর্জাতিক সোসালিস্টদের সঙ্গে-যারা সিআইএ অরগানাইজড। সিরাজুল আলম খান নকশালদের সঙ্গেও সম্পর্ক করেন। জয়প্রকাশ নারায়ণ যিনি মুখে বলতেন সমাজতন্ত্রের কথা, আসলে ছিলেন দক্ষিণপন্থী। তার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিলো তার।

 

আবদুর রাজ্জাক বলেছিলেন, সিরাজুল আলম খান ও আমাকে বঙ্গবন্ধু ডেকে পাঠালেন। বললেন, অস্ত্র জমা দিও না সব, যেগুলো রাখার দরকার সেগুলো রেখে দাও। সমাজ বিপ্লব করতে হবে। প্রতি বিপ্লবীদের উৎখাত করতে হবে।” আব্দুর রাজ্জাকের ভাষ্যমতে শেখ ফজলুল হক মনি ও সিরাজুল আলম খানের মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই ছিল, যেটা অতীতেও ছিল। ১৯৬২ সাল থেকেই স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র বিপ্লব করার জন্য চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম খান প্রস্তাব করেন সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ গঠনের। তখন পর্যন্ত তিনি আমি এবং কাজী আরেফ আহমেদ যুক্ত থাকলেও মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শেখ ফজলুল হক মনি ও তোফায়েল আহমেদ এতে যুক্ত হন। তখনকার অবস্থায় আমাদের মধ্যে মতাদর্শগত বিরোধ ছিলো না। কিছুটা নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ছিলো শেখ ফজলুল হক মনি ও সিরাজুল আলম খানের মধ্যে। ১৯৭২ সালে আমি এবং সিরাজুল আলম খান জাতীয় বিপ্লবী সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেননি। আসলে প্রস্তাব গ্রহণের অনুকূল অবস্থাও ছিলো না ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা চুক্তি (২৫ বছরের) হয়ে যাওয়ায়।

 

“শেখ ফজলুল হক মনি”
জেনারেল উবানের দৃষ্টিতে শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন হালকাপাতলা দেহের এক অগ্নিপুরুষ। মনে হয়েছিল, তিনি প্রকৃতি সৃষ্ট নেতা। স্বদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে প্রচণ্ড রকমের আত্মোৎসর্গেী প্রাণ এবং যে কোন ধরনের ত্যাগস্বীকারের জন্য ছিলেন প্রস্তুত। প্রায়শই অসুস্থবোধ করতেন কিন্তু কদাপিও কাজ থেকে বিরত থাকতেন না। বন্ধুদের প্রতি আন্তরিক আর শেখ মুজিবের প্রতি অনুগত এক নিবেদিত প্রাণ। রাজনীতি সচেতন, ধীর, চিন্তাশীল নামজাদা সাংবাদিকও। তার আকাঙ্খা অনেক উপরে। রাজ্জাক আর তোফায়েল তাকে শ্রদ্ধা করতেন। সিরাজুল আলম খান শ্রদ্ধা করলেও সীমিত পরিসরে, দু’জনের আলোচনাই উত্তপ্ত হয়ে উঠতো। তিনি আমাকে বলতেন, আমি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণ করে চলি। সত্যিই বুঝি সেই শূন্যতা পূরণের বিষয়টি মাথায় রেখে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পাশাপাশি শেখ ফজলুল হক মনিকেও হত্যা করে নরপশু ঘাতকরা।

 

আব্দুর রাজ্জাক

অগ্নিগর্ভ চার নেতার মধ্যে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা চরিত্রের। বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ। বিচারবোধসম্পন্ন এবং গভীর চিন্তাশীল। কোন পরিকল্পনার আগে ভাবতেন দীর্ঘ সময়। উৎকর্ষ অর্জনই ছিলো তার লক্ষ্য। মুজিব বাহিনীর চতুষ্টয়ের আরেক অধিনায়ক ও রাজনীতির প্রতিভাবান সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের মহাপ্রয়াণের পর তোফায়েল আহমেদ তাকে রাজনৈতিক সহোদর হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। চোখে কেটেছে তার কান্নার সাঁতার।

তোফায়েল আহমেদ

চারনেতার মধ্যে তোফায়েল আহমেদ সম্পর্কে জেনারেল উবান বলেছেন, তার কারিশমা হচ্ছে, জন্মগতভাবেই তিনি অকৃত্রিম এবং রাজনৈতিক কাজে কঠিন পরিশ্রমী। কাজ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের অনুচর হয়ে। তার পত্নী তখন বাংলাদেশে। আমি তাকে নিয়ে আসার একটি পরিকল্পনা দিলাম। জবাবে তিনি বলেন, আল্লাহর হাতে তাদের নিরাপত্তার ভার ছেড়ে দেই না কেন আমরা? লাখো লাখো বাঙালি একই রকমের বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সবাইকে তো আনা যাবে না।”

লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও ইতিহাস গবেষক।     সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দুই-এক বছর দেখতে চাই : নুর

» চোখের সেবা সম্প্রসারণে অরবিসের সঙ্গে কাজ করতে বাংলাদেশ আগ্রহী : ইউনূস

» ভারতে বসে হাসিনা ষড়যন্ত্র করছেন : এ্যানি

» স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ২০০ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দে ইইউর সমর্থন চাইল বাংলাদেশ

» ধাপে ধাপে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাবে সরকার : হাসান আরিফ

» বিমান বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা

» অনলাইনে আয়কর পরিশোধ সহজ করতে এনবিআর-এর সাথে পার্টনারশিপ করেছে ব্র্যাক ব্যাংক

» বেসরকারি মেডিকেল শিক্ষায় অশনি সংকেত অটোমেশন; ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা

» ক্যান্টনমেন্টের বাড়িটি খালেদা জিয়াকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি আলালের

» থানায় এসে কেউ যেন সেবা বঞ্চিত না হয়: ডিএমপি কমিশনার

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জেনারেল উবানের চোখে মুজিব বাহিনীর চতুষ্টয় এবং সিরাজুল আলম খানের চির-প্রস্থান

ছবি: সংগূহীত

 

 সোহেল সানি:   মুজিব বাহিনীর চতুষ্টয়ের মধ্যে সিরাজুল আলম খানের চিরবিদায়ে এখন বেঁচে থাকলেন কেবল তোফায়েল আহমেদ। মুজিব বাহিনীর পুরোধা জেনারেল উবানের ভাষ্যে কেমন ছিলেন চতুষ্টয় বীর সেনানী শেখ ফজলুল হক মনি, সিরাজুল আলম খান, আব্দুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদ? 

 

মেজর জেনারেল এস এস উবান মুজিব বাহিনীর গঠন, উদ্দেশ্য ও কার্যক্রমের সংক্ষিপ্ত বিবরণীতে উল্লেখ করেন যে, “এক অশান্ত সময়ে আমার সঙ্গে একদল উৎসর্গীকৃত প্রাণতরুণ যুবনেতৃত্বের সাক্ষাৎ ঘটে। পরিচয়ে ধারণা হলো -এরাই একমাত্র নেতৃত্ব, যারা ভালো কিছু দিতে পারবেন। মনে হলো এরা লক্ষ্য উদ্দেশ্য প্রচন্ডভাবে প্রেরণাদীপ্ত এবং তা অর্জনে অকুতোভয়। শেখ মুজিবের প্রতি প্রগাঢ় আনুগত্য এবং ঘনিষ্ঠতার কারণে নিজেদেরকে মুক্তিবাহিনীর বদলে ” মুজিব বাহিনী” নামে অভিহিত হতে চাচ্ছিলেন।

 

ভারতীয় সেনাবাহিনী কেবলমাত্র অস্থায়ী সরকারের মতামত গ্রহণ করতেন। অন্য কোন কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত ছিলেন না- তা যতই ফলপ্রসূ হোক বা স্বদেশপ্রেম যতই তীব্র হোক না কেন। দুর্ভাগ্যজনক ছিলো, তাদের অবস্থান মেনে নেয়ার মেজাজে ছিলেন না অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকার। আমি এই পরিস্থিতিতেও স্পষ্টতই আত্মোৎসর্গীকৃত, তীব্র প্রেরণাদীপ্ত এবং সুসংগঠিত একটি তরুণগ্রুপের গুরুত্ব অনুধাবন করছিলাম। সাধারণ বোধ নির্দেশ করছিল যে এদেরকে আমরা সমর্থন দেব এবং মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক সহজতর করে তুলতে যা করণীয়, তা আপ্রাণ করবো- কেননা মুক্তিবাহিনী তো সরাসরি তাজউদ্দীন আহমদের অধিনায়কত্বেই রয়েছে। ভারতীয় মন্ত্রিপরিষদ সচিব আর এন কাও এসব যুবনেতার নেতৃত্ব সম্পর্কে আগেই অবগত ছিলেন। যুবনেতারা মাথাগরমের হলেও আপোষহীন দৃষ্টিভঙ্গি সম্পন্ন ছিলেন। তিনি মুজিব বাহিনী গঠনের দায়িত্বটি আমার কাঁধে চড়িয়ে যুবনেতাদের আমার হাতে তুলে দিলেন।

 

জেনারেল উবানের ভাষ্যমতে চার যুবনেতা সত্যিই মুক্তিযুদ্ধকালীন যৌথ নেতৃত্বের চমৎকার দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন।
মুজিব বাহিনীর অপারেশন পরিচালনার জন্য চারনেতা বাংলাদেশকে চারটি সেক্টরে ভাগ করে নিয়েছিলেন।
শেখ ফজলুল হক মনি বৃহত্তর চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও সিলেট অঞ্চলের কমান্ডার হিসাবে অধিনায়ক এবং তার সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে সহ-অধিনায়ক ছিলেন ডাকসু ভিপি আসম আব্দুর রব ও জিএস আবদুল কুদ্দুস মাখন। বৃহত্তর রংপুর, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর সমন্বয়ে গঠিত উত্তরাঞ্চলীয় সেক্টরের কমান্ডার রূপে অধিনায়ক ছিলেন সিরাজুল আলম খান। সহ-অধিনায়ক ছিলেন মনিরুল ইসলাম ওরফে মার্শাল মনি। বৃহত্তর খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর ও বৃহত্তর বরিশাল- দক্ষিণাঞ্জলীয় সেক্টরের কমান্ডার রূপে অধিনায়ক ছিলেন তোফায়েল আহমেদ এবং  সহঅধিনায়ক ছিলেন কাজী আরেফ আহমেদ। মুজিব বাহিনীর সদর দফতর ছিলো মেঘালয়ের ডালুতে। এই সেক্টরের অধিনায়ক ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। উপঅধিনায়ক ছিলেন সৈয়দ আহমেদ। মুজিব বাহিনী বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স (বিএলএফ) নামেও পরিচিত।

জেনারেল উবানের দৃষ্টিতে চার নেতা যেমন ছিলেন-

সিরাজুল আলম খান

সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে জেনারেল উবান বলেছেন, “তিনি প্রগতিবাদী (রেডিক্যাল) চিন্তাধারাকে লালনপালন করতেন এবং ছিলেন আপোষহীন। যুদ্ধ করতেন ব্যাঘ্রের ন্যায়, আর কাজ করতেন কবুলদাসের ন্যায়। একাধিকক্রমে কয়েকদিন না খেয়ে না ঘুমিয়ে কাটিয়ে দিতে পারতেন। শুধু চায়ের ওপর বেঁচে থাকতেন। খেতে বসলে প্রচুর খেতেন। মুরগি-মাংস আর ভাত প্রিয় খাদ্য তার।”

 

গত শুক্রবার চির অচেনার দেশে চলে যাওয়া রাজনীতির রহস্যপুরুষ বলে পরিচিত সিরাজুল আলম খান। বঙ্গবন্ধুর কাছে-দূরে থাকা সিরাজুল আলম খান সম্পর্কে আছে আলোচনা সমালোচনা। জানিনা, মুজিব বাহিনীর অন্যতম চতুষ্টয়ের একজন   তোফায়েল আহমেদের জীবদ্দশায় আমার প্রকাশ করা সমীচীন হবে কিনা-তিনি রাজনৈতিক কৌশলগত কারণে কথাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে উড়িয়েও দিতে পারেন-তবুও বলছি।
উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক রাজনীতির জীবন্ত কিংবদন্তী তোফায়েল আহমেদ আমাকে বলেছিলেন, সিরাজ ভাই (সিরাজুল আলম খান) এর অবদান অস্বীকার করলে ইতিহাস ক্ষমা করবে না। আমি যে “বঙ্গবন্ধু” উপাধিটি দেয়ার কীর্তি নিচ্ছি সেটিও কিন্তু নেপথ্যে সিরাজ ভাইয়েরই দেয়া। উপাধিটি যেন তুমি সম্মোধন করে দেই সেজন্য সিরাজ ভাই একরকম লিখে দিয়ে আগের দিন রিহার্সাল করালেন। শেষ পর্যন্ত আমার জীবনে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি এলো ২৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯- আমি কারামুক্ত অবিসংবাদিত নেতা শেখ মুজিবুর রহমানকে তুমি সম্মোধন করেই “বঙ্গবন্ধু” উপাধিটি ঘোষণা করলাম। মুহূর্তে জনসমুদ্র থেকে মুহূর্মুহু করতালিতে বঙ্গবন্ধুতে অভিষিক্ত হলেন মহান নেতা। স্বাধীনতাপূর্ব সিরাজুল আলম খান আর স্বাধীনতাত্তোর সিরাজুল আলম খান সম্পূর্ণ ভিন্ন এক সত্তা ভিন্ন এক চরিত্র। ছাত্রলীগের স্বাধীনতার ইশতেহার, জাতির পিতা উপাধি, জাতীয় পতাকা সবকিছুর নেপথ্যে অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন যে মানুষটি-সেই সিরাজুল আলম খানকে জাতি চিরকাল স্মরণ করবেই।

 

ইতিহাসের তথ্য-উপাত্তের গবেষণা নিশ্চিত করে এই কথাই সাক্ষ্য দেয় যে, সিরাজুল আলম খানের বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র অর্থাৎ জাসদের উদভ্রান্ত উগ্র-দর্শন বঙ্গবন্ধু হত্যার পথকে প্রশস্ত করেছিল এবং উত্থান ঘটিয়েছিল অখ্যাত এক জিয়ার। মুজিব বাহিনীর অন্যতম অধিনায়ক তোফায়েল আহমেদ এক সাক্ষাতকারে বলেছিলেন, ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের যে নিয়মকানুন অনুসারে সম্মেলন হওয়ার কথা। সে অনুযায়ী সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন হয়। কিন্তু একটা অজুহাত তো খুঁজতে হবে ছাত্রলীগ ভাঙ্গার। কেন ছাত্রলীগ দুভাগ হলো, সেই প্রশ্নের উত্তর আমরা খুঁজে পাই পরবর্তীকালে জাসদের জন্মের মধ্য দিয়ে। তখন তাদের পরিকল্পনা ছিলো-অবাস্তব।

 

আব্দুর রাজ্জাক একবার একটি সাক্ষাতকারে স্বাধীনতার পরপরই ছাত্রলীগের বিভেদ-ভাঙ্গন সম্পর্কে বলেন, “আমরা সবাই তাড়াতাড়ি কলকাতা থেকে চলে আসি কিন্তু সিরাজুল আলম খান এলেন বেশ কিছুদিন পর। তার আসার পরই ছাত্রলীগের মধ্যে হঠাৎ কিছু কিছু কথা শুরু হয়ে গেল বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে….  আসম আব্দুর রব (ডাকসু ভিপি) চৌমুহনীতে গিয়ে বললেন, “পরাধীন দেশ স্বাধীন হয়েছে, এবার সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হবে। বিপ্লবের নেতৃত্ব দেবেন একজন যুবনেতা। আপনারা তার জন্য অপেক্ষা করুন। তিনি আসবেন আপনাদের সামনে। আসলে তার (সিরাজুল আলম খান) নেতৃত্ব এবং ভাবমূর্তি তৈরিতে নেমে পড়লেন। দেখলাম পিটার কাসটার্সের সঙ্গে তার সংযোগ, পশ্চিম বাংলার অতি বামদের সঙ্গে যোগসূত্র। যাদের সঙ্গে ট্রটস্কিপন্থীদের যোগসাজশ। এক পর্যায়ে যোগসূত্র হলো আন্তর্জাতিক সোসালিস্টদের সঙ্গে-যারা সিআইএ অরগানাইজড। সিরাজুল আলম খান নকশালদের সঙ্গেও সম্পর্ক করেন। জয়প্রকাশ নারায়ণ যিনি মুখে বলতেন সমাজতন্ত্রের কথা, আসলে ছিলেন দক্ষিণপন্থী। তার সঙ্গেও সম্পর্ক ছিলো তার।

 

আবদুর রাজ্জাক বলেছিলেন, সিরাজুল আলম খান ও আমাকে বঙ্গবন্ধু ডেকে পাঠালেন। বললেন, অস্ত্র জমা দিও না সব, যেগুলো রাখার দরকার সেগুলো রেখে দাও। সমাজ বিপ্লব করতে হবে। প্রতি বিপ্লবীদের উৎখাত করতে হবে।” আব্দুর রাজ্জাকের ভাষ্যমতে শেখ ফজলুল হক মনি ও সিরাজুল আলম খানের মধ্যে একটা ঠান্ডা লড়াই ছিল, যেটা অতীতেও ছিল। ১৯৬২ সাল থেকেই স্বাধীনতার জন্য সশস্ত্র বিপ্লব করার জন্য চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ১৯৬৪ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল আলম খান প্রস্তাব করেন সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী পরিষদ গঠনের। তখন পর্যন্ত তিনি আমি এবং কাজী আরেফ আহমেদ যুক্ত থাকলেও মুক্তিযুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে শেখ ফজলুল হক মনি ও তোফায়েল আহমেদ এতে যুক্ত হন। তখনকার অবস্থায় আমাদের মধ্যে মতাদর্শগত বিরোধ ছিলো না। কিছুটা নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব ছিলো শেখ ফজলুল হক মনি ও সিরাজুল আলম খানের মধ্যে। ১৯৭২ সালে আমি এবং সিরাজুল আলম খান জাতীয় বিপ্লবী সরকারের প্রস্তাব দিয়েছিলাম বঙ্গবন্ধুর কাছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু গ্রহণ করেননি। আসলে প্রস্তাব গ্রহণের অনুকূল অবস্থাও ছিলো না ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের একটা চুক্তি (২৫ বছরের) হয়ে যাওয়ায়।

 

“শেখ ফজলুল হক মনি”
জেনারেল উবানের দৃষ্টিতে শেখ ফজলুল হক মনি ছিলেন হালকাপাতলা দেহের এক অগ্নিপুরুষ। মনে হয়েছিল, তিনি প্রকৃতি সৃষ্ট নেতা। স্বদেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে প্রচণ্ড রকমের আত্মোৎসর্গেী প্রাণ এবং যে কোন ধরনের ত্যাগস্বীকারের জন্য ছিলেন প্রস্তুত। প্রায়শই অসুস্থবোধ করতেন কিন্তু কদাপিও কাজ থেকে বিরত থাকতেন না। বন্ধুদের প্রতি আন্তরিক আর শেখ মুজিবের প্রতি অনুগত এক নিবেদিত প্রাণ। রাজনীতি সচেতন, ধীর, চিন্তাশীল নামজাদা সাংবাদিকও। তার আকাঙ্খা অনেক উপরে। রাজ্জাক আর তোফায়েল তাকে শ্রদ্ধা করতেন। সিরাজুল আলম খান শ্রদ্ধা করলেও সীমিত পরিসরে, দু’জনের আলোচনাই উত্তপ্ত হয়ে উঠতো। তিনি আমাকে বলতেন, আমি বঙ্গবন্ধুর অনুপস্থিতিতে সৃষ্ট শূন্যতা পূরণ করে চলি। সত্যিই বুঝি সেই শূন্যতা পূরণের বিষয়টি মাথায় রেখে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পাশাপাশি শেখ ফজলুল হক মনিকেও হত্যা করে নরপশু ঘাতকরা।

 

আব্দুর রাজ্জাক

অগ্নিগর্ভ চার নেতার মধ্যে তিনি ছিলেন অত্যন্ত দৃঢ়চেতা চরিত্রের। বলিষ্ঠ সংগঠক ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক। অতিমাত্রায় আবেগপ্রবণ। বিচারবোধসম্পন্ন এবং গভীর চিন্তাশীল। কোন পরিকল্পনার আগে ভাবতেন দীর্ঘ সময়। উৎকর্ষ অর্জনই ছিলো তার লক্ষ্য। মুজিব বাহিনীর চতুষ্টয়ের আরেক অধিনায়ক ও রাজনীতির প্রতিভাবান সংগঠক আব্দুর রাজ্জাকের মহাপ্রয়াণের পর তোফায়েল আহমেদ তাকে রাজনৈতিক সহোদর হিসেবে আখ্যায়িত করেছিলেন। চোখে কেটেছে তার কান্নার সাঁতার।

তোফায়েল আহমেদ

চারনেতার মধ্যে তোফায়েল আহমেদ সম্পর্কে জেনারেল উবান বলেছেন, তার কারিশমা হচ্ছে, জন্মগতভাবেই তিনি অকৃত্রিম এবং রাজনৈতিক কাজে কঠিন পরিশ্রমী। কাজ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমানের অনুচর হয়ে। তার পত্নী তখন বাংলাদেশে। আমি তাকে নিয়ে আসার একটি পরিকল্পনা দিলাম। জবাবে তিনি বলেন, আল্লাহর হাতে তাদের নিরাপত্তার ভার ছেড়ে দেই না কেন আমরা? লাখো লাখো বাঙালি একই রকমের বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। সবাইকে তো আনা যাবে না।”

লেখকঃ সিনিয়র সাংবাদিক, কলামিস্ট ও ইতিহাস গবেষক।     সূএ: বাংলাদেশ  প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com