অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।

 

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫০-৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী গৌতম বলেন, বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ কারণে এখন পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই।

 

কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা বদর আলী বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি কিনেছি ৩০ টাকা। আজ ৫০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। এক লাফে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। শুধু পেঁয়াজ না, বাজারে এখন সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক। চাল, তেল, চিনি, ডাল কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে।

 

তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো স্বল্পআয়ের মানুষেরা খুব কষ্টে আছেন। কিন্তু আমাদের এ কষ্ট দেখার মতো কেউ নেই। বাজারে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

 

খিলগাঁওয়ে ৬০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা আল আমিন বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়া দেখে আমরাও অবাক। দুদিনে দুই দফায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে আমরা এক কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা বিক্রি করেছি। পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন সেই পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘কী কারণে এখন পেঁয়াজের দাম বাড়লো, এটার সঠিক কারণ আমারও জানা নেই। তবে পাইকারি বাজারে গিয়ে শোনা যাচ্ছে, বৃষ্টিতে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে, এ কারণে দাম বেড়েছে।

 

এদিকে, মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৭০-১৭৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৯০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০-২৮০ টাকা।

 

মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিদ্দিকুর বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার কারণে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। সামনে মুরগির দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা করছি।

 

সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ছোট ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩৫-৪০ টাকা। বড় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে দাম বাড়া ফুলকপির দামে নতুন করে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

 

ফুলকপির মতো দাম অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। পুঁইশাকের ফল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। শাল গমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। লাউ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।

 

সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ছিল ৩০-৪০ টাকা।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা।

 

এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পুলিশের দুর্বলতায় ক্রমে বাড়ছে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড

» পুলিশকে সহযোগিতা করুন, এখন দরকার স্থিতিশীলতা: মাহফুজ আলম

» ধর্ষণবিরোধী পদযাত্রায় হামলায় ৭ পুলিশ আহত, আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে পুলিশ

» ১৯৮৫ সালে স্বাধীনতা পদক পাওয়ায় জেনারেল ওসমানীর নাম বাদ: প্রেস উইং

» আজ বুধবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» ইসলামপুরে গ্রাম পুলিশরা পেল রেইনকোর্ট 

» ইসলামপুরে চিনাডুলী ইউনিয়ন বিএনপির উদ্যোগে আলোচনা সভা দোয়া ও ইফতার মাহফিল

» বড়াইগ্রামে গ্যাস সিলিন্ডারের অবৈধ মজুদ, জরিমানা আদায়!

» স্থানীয় প্ল্যাটফর্মে ব্লকচেইন-ভিত্তিক অভ্যন্তরীণ এলসি কার্যকর করেছে প্রাইম ব্যাংক ও ঢাকা ব্যাংক

» ব্রিটিশ কাউন্সিলের আয়োজনে মাদ্রাসা শিক্ষকদের জন্য সেইফগার্ডিং বিষয়ক কর্মশালা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম

রাজধানীর বাজারগুলোতে অস্বাভাবিক বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। এক লাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দামও। সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২৫ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা।

 

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি করছেন ৫০-৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে এই পেঁয়াজের কেজি ছিল ৩০-৩৫ টাকা।

পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে কারওয়ান বাজারের ব্যবসায়ী গৌতম বলেন, বৃষ্টির কারণে পেঁয়াজের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এ কারণে এখন পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। এছাড়া অন্য কোনো কারণ নেই।

 

কারওয়ান বাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা বদর আলী বলেন, গত সপ্তাহে পেঁয়াজের কেজি কিনেছি ৩০ টাকা। আজ ৫০ টাকা কেজি কিনতে হচ্ছে। এক লাফে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে গেছে। শুধু পেঁয়াজ না, বাজারে এখন সব কিছুর দাম অস্বাভাবিক। চাল, তেল, চিনি, ডাল কিনতে ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে।

 

তিনি বলেন, জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বাড়ছে, তাতে আমাদের মতো স্বল্পআয়ের মানুষেরা খুব কষ্টে আছেন। কিন্তু আমাদের এ কষ্ট দেখার মতো কেউ নেই। বাজারে জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণে কেউ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।

 

খিলগাঁওয়ে ৬০ টাকা কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করা আল আমিন বলেন, পেঁয়াজের দাম বাড়া দেখে আমরাও অবাক। দুদিনে দুই দফায় পেঁয়াজের দাম কেজিতে ২৫ টাকা বেড়ে গেছে। গত সপ্তাহে আমরা এক কেজি পেঁয়াজ ৩৫ টাকা বিক্রি করেছি। পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় এখন সেই পেঁয়াজ ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘কী কারণে এখন পেঁয়াজের দাম বাড়লো, এটার সঠিক কারণ আমারও জানা নেই। তবে পাইকারি বাজারে গিয়ে শোনা যাচ্ছে, বৃষ্টিতে অনেক পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে গেছে, এ কারণে দাম বেড়েছে।

 

এদিকে, মুরগির বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করছেন ১৭০-১৭৫ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০-১৫৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০-২৯০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২৫০-২৮০ টাকা।

 

মুরগির দাম বাড়ার বিষয়ে কাপ্তান বাজারের ব্যবসায়ী মো. সিদ্দিকুর বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ কিছুটা কম। এ কারণে দাম বেড়েছে। ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়ার কারণে সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে। সামনে মুরগির দাম আরও বাড়বে বলে ধারণা করছি।

 

সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ছোট ফুলকপির পিস বিক্রি করছেন ৩৫-৪০ টাকা। বড় ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এক সপ্তাহ আগে দাম বাড়া ফুলকপির দামে নতুন করে কোনো পরিবর্তন আসেনি।

 

ফুলকপির মতো দাম অপরিবর্তিত রয়েছে অধিকাংশ সবজির। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০ টাকা। পুঁইশাকের ফল বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০ টাকা কেজি। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০-৭০ টাকা। শাল গমের (ওল কপি) কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪০ টাকা। লাউ প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকা। লালশাকের আঁটি ১০-১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ১৫-২০ টাকা।

 

সপ্তাহের ব্যবধানে বেগুনের দাম কমে কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০-৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৮০-১০০ টাকা। গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০-৩০ টাকা, এক সপ্তাহ আগে গাজরের কেজি ছিল ৩০-৪০ টাকা।

মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০-৪৫০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছ। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাস মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৭০ টাকা।

 

এক কেজি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০-১২০০ টাকা। ছোট ইলিশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা। নলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৭০-২০০ টাকা কেজি। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৬৫০ টাকা কেজি। সপ্তাহের ব্যবধানে মাছের দামে তেমন পরিবর্তন আসেনি।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com