সাপের রাজা টাইটানোবোয়া

ছবি : সংগৃহীত

 

সাপের নাম শুনলে যেমন গা গুলিয়ে আসে তেমনি এর গল্প শুনলেও অনেকে পান ভয়। কিন্তু সিনেমায় দেখা বিশাল আকারের এনাকোন্ডার কথা চিন্তা করলেই ভয়ে গলা শুকিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এনাকোন্ডাকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপ মনে করেন অনেকেই। তবে জানেন কি এর চেয়েও ঢের বড় সাপ এই পৃথিবীতে রাজত্ব করে গেছে। নাম তার ‘টাইটানোবোয়া চেরোনোসিস’।

 

যে সাপ দাপিয়ে বেড়াতো দক্ষিণ আমেরিকার বন-জঙ্গল। অতীতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘন জঙ্গলের অভাব ছিল না। অনেকের ধারণা, দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়াও বিশ্বের অনেক স্থানে ছিল বিশ্বের বড় এই সাপটি। টাইটানোবোয়া সম্বন্ধে এমনও বলা হয়েছে, সে কায়েম করতো সন্ত্রাসের রাজত্ব।

একেকটি টাইটানোবোয়া চেরোনোসিসের ওজন ছিল এক টনেরও বেশি। আর লম্বাও সেই অনুপাতে ৫০ ফুট। পুরো সাপটি দেখতে আজকের যুগের উচু দালানের সমান হবে নিশ্চয়ই!

জানা যায়, প্রাগৈতিহাসিক যুগে এই ভয়ানক সরীসৃপের অস্তিত্ব ছিল। পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়াতো আজ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ বছর পূর্বে। এর ফসিলের সন্ধান মিলেছে উত্তর কলম্বিয়ার একটি বিশাল খনিতে। সাপটি এতই বৃহদাকার যে পুরো একটি কুমির খেয়ে ফেলতে পারত মুহূর্তেই। দেখে বোঝার উপায় নেই সাপটির পেটে আস্ত কুমির রয়েছে।

 

বছর কয়েক আগেও বিশাল আকৃতির এ সাপ সম্বন্ধে এতটুকুও ধারণা ছিল না বিজ্ঞানীদের। অর্থাৎ এ সম্বন্ধে তারা কিছুই জানতেন না। এর ফসিলের সন্ধান মিলার পরই টাইটানোবোয়ার কথা কমবেশি জানতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা।

 

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সাপটিও টাইটানোবোয়ার তুলনায় অনেক ছোট। অনেকের মতে, আজকের যুগের সবচেয়ে বড় বা বিশাল সাপটিও এর অর্ধেকের কম। এর ফসিল আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী কার্লোস ও তার সহযোগীরা। তারা বলেন, আমরা ভাবতেও পারিনি, এত বছর আগের এত বড় একটা প্রাণীর ফসিল আমরা পাবো। এটি আমাদের জন্য একটি ব্যাপক সাফল্য।

 

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, টাইটানোবোয়া হতে পারে দক্ষিণ আমেরিকার অজগর জাতীয় সাপ বোয়া কন্সট্রিক্টর এর বংশধর। কেননা ফসিলের কার্বন ডেটিংয়ে দেখা যায় সাপটির সঙ্গে এসব প্রাণীর যথেষ্ট মিলও রয়েছে। তবে মজার ব্যাপার হলো, সাপটি দানবাকৃতির হলেও বিষাক্ত বা বিষধর ছিল না। শরীরে প্রচন্ড রকমের শক্তি ছিল। একবার কোনো প্রাণীকে ধরলে মুহূর্তেই চাপ দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে ফেলতো। জানা গেছে, প্রতি বর্গইঞ্চিতে প্রায় ৪০০ পাউন্ড ওজনের সমান ছিল এর চাপের শক্তি।

 

সাপ সাধারণত নিজের শরীরের তাপমাত্রা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এর বেঁচে থাকার জন্য বাইরের তাপের ওপর নির্ভর করতে হয়। বিজ্ঞানী ব্লোচ বলেন, ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছে আজ থেকে প্রায় ছয় কোটি বছর আগে। এর পরবর্তীতে তাপমাত্রা যথেষ্ট বেশি ছিল বিষুবরেখায়। আর এ কারণেই আকারে এত বিশাল হতো টাইটানোবোয়া। আর এটাই হচ্ছে এই সরীসৃপের বড় হওয়ার রহস্য। এদিকে আবারও বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। তবে কি ফের দেখা মিলবে টাইটানোবোয়ার?   সূএ: জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ছয় দিন ধরে ঝড়বৃষ্টির পূর্বাভাস

» রাজউকের প্লট-ফ্ল্যাট বরাদ্দ নিয়ে নতুন বিধিমালা

» ফিলিস্তিনি প্রতি বাংলাদেশের অকুণ্ঠ সমর্থন রয়েছে: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

» যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের মাধ্যমে আমরা দায়মুক্ত হয়েছি : মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী

» পরিবেশ বিষয়ক সাংবাদিকতায় হয়রানি হলে সহায়তা দেবে তথ্য মন্ত্রণালয়

» নকল স্যালাইন উৎপাদনকারী একটি চক্রের ৩ সদস্য গ্রেফতার

» ভোটারবিহীন নির্বাচনে আনন্দ নেই, সৌন্দর্য্য নেই: ইসি রাশেদা

» আমি ব্রেকআপ করলাম: সুহানা খান

» লড়াইয়ের সর্বশেষ প্রস্তুতি নিন, নেতাকর্মীদের রিজভী

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২৬জন গ্রেপ্তার

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

সাপের রাজা টাইটানোবোয়া

ছবি : সংগৃহীত

 

সাপের নাম শুনলে যেমন গা গুলিয়ে আসে তেমনি এর গল্প শুনলেও অনেকে পান ভয়। কিন্তু সিনেমায় দেখা বিশাল আকারের এনাকোন্ডার কথা চিন্তা করলেই ভয়ে গলা শুকিয়ে যাওয়া স্বাভাবিক। এনাকোন্ডাকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় সাপ মনে করেন অনেকেই। তবে জানেন কি এর চেয়েও ঢের বড় সাপ এই পৃথিবীতে রাজত্ব করে গেছে। নাম তার ‘টাইটানোবোয়া চেরোনোসিস’।

 

যে সাপ দাপিয়ে বেড়াতো দক্ষিণ আমেরিকার বন-জঙ্গল। অতীতে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে ঘন জঙ্গলের অভাব ছিল না। অনেকের ধারণা, দক্ষিণ আমেরিকা ছাড়াও বিশ্বের অনেক স্থানে ছিল বিশ্বের বড় এই সাপটি। টাইটানোবোয়া সম্বন্ধে এমনও বলা হয়েছে, সে কায়েম করতো সন্ত্রাসের রাজত্ব।

একেকটি টাইটানোবোয়া চেরোনোসিসের ওজন ছিল এক টনেরও বেশি। আর লম্বাও সেই অনুপাতে ৫০ ফুট। পুরো সাপটি দেখতে আজকের যুগের উচু দালানের সমান হবে নিশ্চয়ই!

জানা যায়, প্রাগৈতিহাসিক যুগে এই ভয়ানক সরীসৃপের অস্তিত্ব ছিল। পৃথিবীতে দাপিয়ে বেড়াতো আজ থেকে প্রায় পাঁচ কোটি ৮০ লাখ বছর পূর্বে। এর ফসিলের সন্ধান মিলেছে উত্তর কলম্বিয়ার একটি বিশাল খনিতে। সাপটি এতই বৃহদাকার যে পুরো একটি কুমির খেয়ে ফেলতে পারত মুহূর্তেই। দেখে বোঝার উপায় নেই সাপটির পেটে আস্ত কুমির রয়েছে।

 

বছর কয়েক আগেও বিশাল আকৃতির এ সাপ সম্বন্ধে এতটুকুও ধারণা ছিল না বিজ্ঞানীদের। অর্থাৎ এ সম্বন্ধে তারা কিছুই জানতেন না। এর ফসিলের সন্ধান মিলার পরই টাইটানোবোয়ার কথা কমবেশি জানতে শুরু করেছেন বিজ্ঞানীরা।

 

বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় সাপটিও টাইটানোবোয়ার তুলনায় অনেক ছোট। অনেকের মতে, আজকের যুগের সবচেয়ে বড় বা বিশাল সাপটিও এর অর্ধেকের কম। এর ফসিল আবিষ্কার করেন বিজ্ঞানী কার্লোস ও তার সহযোগীরা। তারা বলেন, আমরা ভাবতেও পারিনি, এত বছর আগের এত বড় একটা প্রাণীর ফসিল আমরা পাবো। এটি আমাদের জন্য একটি ব্যাপক সাফল্য।

 

বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, টাইটানোবোয়া হতে পারে দক্ষিণ আমেরিকার অজগর জাতীয় সাপ বোয়া কন্সট্রিক্টর এর বংশধর। কেননা ফসিলের কার্বন ডেটিংয়ে দেখা যায় সাপটির সঙ্গে এসব প্রাণীর যথেষ্ট মিলও রয়েছে। তবে মজার ব্যাপার হলো, সাপটি দানবাকৃতির হলেও বিষাক্ত বা বিষধর ছিল না। শরীরে প্রচন্ড রকমের শক্তি ছিল। একবার কোনো প্রাণীকে ধরলে মুহূর্তেই চাপ দিয়ে দুমড়ে মুচড়ে ফেলতো। জানা গেছে, প্রতি বর্গইঞ্চিতে প্রায় ৪০০ পাউন্ড ওজনের সমান ছিল এর চাপের শক্তি।

 

সাপ সাধারণত নিজের শরীরের তাপমাত্রা ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। এর বেঁচে থাকার জন্য বাইরের তাপের ওপর নির্ভর করতে হয়। বিজ্ঞানী ব্লোচ বলেন, ডাইনোসরের বিলুপ্তি ঘটেছে আজ থেকে প্রায় ছয় কোটি বছর আগে। এর পরবর্তীতে তাপমাত্রা যথেষ্ট বেশি ছিল বিষুবরেখায়। আর এ কারণেই আকারে এত বিশাল হতো টাইটানোবোয়া। আর এটাই হচ্ছে এই সরীসৃপের বড় হওয়ার রহস্য। এদিকে আবারও বাড়ছে পৃথিবীর উষ্ণতা। তবে কি ফের দেখা মিলবে টাইটানোবোয়ার?   সূএ: জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com