আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই রাষ্ট্রপতি, সার্চ কমিটি এবং সংলাপকে অবজ্ঞা করছে। তাদের এ আচরণ দেশের গণতন্ত্রের জন্য, দেশের জন্য অত্যন্ত হুমকিস্বরূপ।
তিনি বলেন, আসলে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিকে ধ্বংস করে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া তাদের উদ্দেশ্য। ফলে ফেরেশতাও যদি তাদের নির্বাচনে জয়লাভের নিশ্চয়তা না দেয়- তার আগ পর্যন্ত তারা নির্বাচন মানবে না।
বুধবার রাজধানীতে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মিলনায়তনে ঢাকা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল-২০২০ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল। এতে বক্তব্য রাখেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উদ্দীন, ওআইসি ইয়ুথ ফোরামের প্রেসিডেন্ট তাহা আইহান প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, সার্চ কমিটি বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বসে তাদের কাছ থেকে নাম নিয়েছে। কমিটি একটি অসাধারণ প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছে, যা দেশের মধ্যে সাড়া জাগিয়েছে।
তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রপতি তার ক্ষমতাটা সার্চ কমিটির হাতে দিয়েছেন। সার্চ কমিটি সেখান থেকে বাছাই করে ১০ জনের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে পাঠাবেন, যেখান থেকে তিনি পাঁচজনকে নিয়োগ দেবেন। বিএনপি ঘরানা বুদ্ধিজীবীরাও সার্চ কমিটিকে বলেছেন, বিএনপির আসা প্রয়োজন। কিন্তু বিএনপি শুরু থেকেই পুরো প্রক্রিয়াকেই না করেছে।
সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সার্চ কমিটি যেভাবে কাজ করছে এজন্য তারা সত্যিকার অর্থেই দেশবাসীর ধন্যবাদ পাওয়ার অধিকার রাখে। ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা এমনকি ইউরোপের বিভিন্ন দেশেও এত অংশগ্রহণমূলক পদ্ধতিতে নির্বাচন কমিশন গঠিত হয় না- যোগ করেন তথ্যমন্ত্রী।
এর আগে অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে ওআইসির সদস্যভুক্ত করেছিলেন। যে কারণে আজ আমরা ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটালের অনুষ্ঠানাদি আয়োজন করতে সক্ষম হয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক আগ্রহেই আজ বাংলাদেশ ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশ্বে স্থান করে নিতে সক্ষম হয়েছে। যখন আমাদের যুব ক্রিকেট দল বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়, আমাদের নারী ক্রিকেট দল এশিয়া কাপ জিতে নেয়, নারী ফুটবল দল ১১ গোলে পাকিস্তানকে হারিয়ে দেয়, এমনকি আমাদের শারীরিক প্রতিবন্ধী ক্রীড়াবিদ যখন এশীয় অলিম্পিক থেকে পদক নিয়ে আসে- তখন আমরা বিশ্ব সংবাদ হই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্রীড়ায় উৎকর্ষ সাধনের যে নানা উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিয়েছেন সেজন্যই এই অর্জন সম্ভব হয়েছে।
ড. হাছান মাহমুদ এসময় ঢাকাকে ওআইসি ইয়ুথ ক্যাপিটাল হিসেবে নির্বাচিত করায় ওআইসি ইয়ুথ ফোরামকে ধন্যবাদ জানান। প্রতিযোগিতা আয়োজনের জন্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীকেও ধন্যবাদ জানান তিনি। সভাশেষে অতিথিরা ওআইসি ইয়ুথ ফোরাম আয়োজিত শিল্প-সংস্কৃতি বিষয়ে ১০টি প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এদিন বিকেলে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের স্টল উদ্বোধন করেন তথ্যমন্ত্রী। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন। এর আগে নজরুল মঞ্চে কবি আসলাম সানীর কাব্যগ্রন্থ ‘শেখ হাসিনার জয় বিশ্বের বিস্ময়’, ড. মজিদ মাহমুদের ‘সাহিত্যে বঙ্গবন্ধু: মহাজীবনের মহাকাব্য’, ফারুক হোসেনের ‘ছড়ায় বঙ্গবন্ধুর কারাজীবন’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন মন্ত্রী।
বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, গীতিকার সুজন হাজং, আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।