যে চার শর্তে জামাতে নামাজ পড়া আবশ্যক

জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে রয়েছে কোরআনের দিকনির্দেশনা। জামাতে নামাজ পড়ার জন্য ৪ শর্ত প্রযোজ্য। শর্তগুলো কী?

 

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে এভাবে তাগিদ দিয়েছেন-

وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ

‘আর রুকুকারীদের সঙ্গে (জামাতে) একসঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৩)

 

জামাতে নামাজ পড়া প্রসঙ্গে হাদিসে পাকে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন-

১. পুরুষের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা; যা ওয়াজিবের সঙ্গে তুলনীয়। (অর্থাৎ এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি)।’ (মুসলিম)

২. কোনো ওজর বা অপারগতা ছাড়া জামাত থেকে বিরত থাকা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গুনাহগার হবে।’ (আবু দাউদ)

 

 

জামাতে নামাজ পড়ার ৪ শর্ত

১. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া। যার ওপর নামাজ ফরজ হয়েছে সে ব্যক্তির জন্য জামাতে নামাজ আদায় করা আবশ্যক। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের উপর জামাত আবশ্যক নয়।

২. জামাত নামাজ পড়ার জন্য পুরুষ হওয়া আবশ্যক। নারীর জন্য তা আবশ্যক নয়।

৩. সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী, জ্ঞানবান হওয়া আবশ্যক। অজ্ঞান, পাগল বা নেশাগ্রস্তদের জন্য জামাত আবশ্যক নয়।

৪. যে সব ওজর-আপত্তির জন্য জামাত ছেড়ে দেয়ার অনুমতি রয়েছে, সে সব ওজর-আপত্তি না থাকা।’ (বুখারি)

 

ওজরগুলো হলো-

১. প্রচণ্ড বৃষ্টি থাকলে।

২. অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হলে।

৩. বেশি অন্ধকার হলে।

৪. মসজিদে যাওয়ার পথ ভীষণ কাদা বা ঝুঁকিপূর্ণ হলে।

৫. প্রচণ্ড ঝড় হলে।

৬. হেঁটে মসজিদে যেতে না পারার মতো অসুস্থ হলে।

৭. চলাচলে অক্ষম প্রবীণ হলে।

৮. দৃষ্টিহীনের সাহায্যকারী না থাকলে।

৯. কেউ যদি এমন রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকে যে, তার অনুপস্থিতিতে রোগীর ক্ষতি বা কষ্ট হবে; তাহলে তার জামাআতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়।

১০. সফরে কাফেলার যাত্রার সময় হয়ে গেলে, গাড়ী ও জাহাজ ছেড়ে দেয়ার সময় হয়ে গেলে এবং মাল-সামান হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলেও জামাতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়।

১১. জামাতের সময় ইস্তিঞ্জার হাজত হলে।

১২. ক্ষুধার সময় খাবার সামনে উপস্থিত হলে এবং খাবার চাহিদা থাকলে জামাতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়।

 

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী জামাতে নামাজ আদায় করা। জামাতে নামাজ পড়ার মাধ্যমে ২৫/২৭ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত লড়াই চলবে: সারজিস

» জুলাই ফাউন্ডেশনে নতুন সিইও, শহিদের বাবা বললেন ‘মানি না’

» মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন ১৫০ জন, আটক ১৫ জন

» খেলার জার্সি পরে যমুনার সামনে রমনার ডিসি মাসুদ

» যমুনার সামনেই ফজরের নামাজ আদায় করলেন অবস্থানকারীরা

» জুমার নামাজের পর বড় কর্মসূচির ঘোষণা দিলেন হাসনাত

» সিদ্ধিরগঞ্জের হত্যা মামলায় কারাগারে আইভী

» সেলিনা হায়াৎ আইভী গ্রেফতার

» দাঁড়িয়ে থাকা বাসে দ্রুতগতির ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন নিহত

» যে কারণে মেয়ের ছবি প্রকাশ্যে আসেনি, জানালেন দীপিকা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে চার শর্তে জামাতে নামাজ পড়া আবশ্যক

জামাতে নামাজ পড়ার গুরুত্ব ও ফজিলত অনেক বেশি। জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে রয়েছে কোরআনের দিকনির্দেশনা। জামাতে নামাজ পড়ার জন্য ৪ শর্ত প্রযোজ্য। শর্তগুলো কী?

 

আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিমে জামাতে নামাজ পড়ার ব্যাপারে এভাবে তাগিদ দিয়েছেন-

وَ ارۡکَعُوۡا مَعَ الرّٰکِعِیۡنَ

‘আর রুকুকারীদের সঙ্গে (জামাতে) একসঙ্গে রুকু করো।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ৪৩)

 

জামাতে নামাজ পড়া প্রসঙ্গে হাদিসে পাকে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেছেন-

১. পুরুষের জন্য ৫ ওয়াক্ত নামাজই জামাতে আদায় করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা; যা ওয়াজিবের সঙ্গে তুলনীয়। (অর্থাৎ এটি ওয়াজিবের কাছাকাছি)।’ (মুসলিম)

২. কোনো ওজর বা অপারগতা ছাড়া জামাত থেকে বিরত থাকা বৈধ নয়। যে ব্যক্তি জামাত ত্যাগে অভ্যস্ত হয়ে যায়, সে গুনাহগার হবে।’ (আবু দাউদ)

 

 

জামাতে নামাজ পড়ার ৪ শর্ত

১. প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়া। যার ওপর নামাজ ফরজ হয়েছে সে ব্যক্তির জন্য জামাতে নামাজ আদায় করা আবশ্যক। অপ্রাপ্ত বয়স্কদের উপর জামাত আবশ্যক নয়।

২. জামাত নামাজ পড়ার জন্য পুরুষ হওয়া আবশ্যক। নারীর জন্য তা আবশ্যক নয়।

৩. সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী, জ্ঞানবান হওয়া আবশ্যক। অজ্ঞান, পাগল বা নেশাগ্রস্তদের জন্য জামাত আবশ্যক নয়।

৪. যে সব ওজর-আপত্তির জন্য জামাত ছেড়ে দেয়ার অনুমতি রয়েছে, সে সব ওজর-আপত্তি না থাকা।’ (বুখারি)

 

ওজরগুলো হলো-

১. প্রচণ্ড বৃষ্টি থাকলে।

২. অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হলে।

৩. বেশি অন্ধকার হলে।

৪. মসজিদে যাওয়ার পথ ভীষণ কাদা বা ঝুঁকিপূর্ণ হলে।

৫. প্রচণ্ড ঝড় হলে।

৬. হেঁটে মসজিদে যেতে না পারার মতো অসুস্থ হলে।

৭. চলাচলে অক্ষম প্রবীণ হলে।

৮. দৃষ্টিহীনের সাহায্যকারী না থাকলে।

৯. কেউ যদি এমন রোগীর সেবায় ব্যস্ত থাকে যে, তার অনুপস্থিতিতে রোগীর ক্ষতি বা কষ্ট হবে; তাহলে তার জামাআতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়।

১০. সফরে কাফেলার যাত্রার সময় হয়ে গেলে, গাড়ী ও জাহাজ ছেড়ে দেয়ার সময় হয়ে গেলে এবং মাল-সামান হারিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলেও জামাতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়।

১১. জামাতের সময় ইস্তিঞ্জার হাজত হলে।

১২. ক্ষুধার সময় খাবার সামনে উপস্থিত হলে এবং খাবার চাহিদা থাকলে জামাতে উপস্থিত হওয়া আবশ্যক নয়।

 

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, উল্লেখিত শর্ত অনুযায়ী জামাতে নামাজ আদায় করা। জামাতে নামাজ পড়ার মাধ্যমে ২৫/২৭ গুণ বেশি সওয়াব পাওয়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com