জুমার নামাজ না পড়া মুসলমানদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী  :আল্লাহতায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন এই দিনে। এই দিনেই হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-কে জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে দিনটাকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়।
মালেক ইবনে শিহাব থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনে সাব্বাক থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কোনো এক জুমার দিনে বললেন, ‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! আল্লাহতায়ালা এই দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।’ আরবি শব্দ জুমুআ-এর অর্থ একত্র হওয়া। শুক্রবারকে বলা হয় ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন। বিনা কারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়ার জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি।
রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে ওজু করা করে জুমা নামাজ পড়তে আসবে তার পূর্ববর্তী জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংগঠিত গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়।
পবিত্র কুরআনে সূরা আল জুমায় ইরশাদ করা হয়েছে, যখন সালাতের জন্য জুমার দিবসের আহবান জানানো হয়, তখনই আল্লাহকে স্মরণের উদ্দেশে চলে এসো এবং ব্যবসায়িক লেনদেন বন্ধ করে দাও। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।
জুমার নামাজ না পড়ার পরিণাম:
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (তিরমিযী,আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)।
অপর এক হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন, জুমা ত্যাগকারী লোকেরা হয় নিজেদের এই খারাপ কাজ হতে বিরত থাকুক। (অর্থাৎ জুমার নামাজ আদায় করুক), নতুবা আল্লাহ তাআলা তাদের এই গোনাহের শাস্তিতে তাদের অন্তরের ওপর মোহর করে দেবেন। পরে তারা আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পিছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।
তবে আবার রাসূল (সা.) বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ব্যতিত জুমআ’র নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। চার শ্রেণির লোক হল- ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)।
মহান আল্লাহ তাআলা সবাইকে নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করে ভয়াবহ শাস্তি থেকে সবাইকে হেফাজত করুন।আল্লাহুুম্মা আমিন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জামায়াতে ইসলামীর আপিল শুনানি বুধবার পর্যন্ত মুলতবি

» ৮ অঞ্চলে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির আভাস

» আজ মঙ্গলবার রাজধানীর যেসব এলাকা-মার্কেট বন্ধ

» জামালপুরে ডিবির অভিযানে গাঁজাসহ মাদক ব্যবসায়ী আটক

» শাওমি নিয়ে এলো ১০ কোটি টাকার ঈদ ক্যাম্পেইন

» গ্রামীণফোনের লিমিটলেস ইন্টারনেট প্যাকে ১০% ছাড়

» ব্র্যাক ব্যাংক আস্থা: ৯ লাখ গ্রাহকের স্মার্ট ব্যাংকিং অভিজ্ঞতায় অনন্য যে প্ল্যাটফর্ম

» দিনাজপুরের বিরল উপজেলায় কৃষকদের জন্য কৃষি ঋণ বিতরণ ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে প্রাইম ব্যাংক

» স্কুলে অগ্নি নিরাপত্তা প্রশিক্ষণ আয়োজন করলো এনার্জিপ্যাক

» নওগাঁর মহাদেবপুরে আওয়ামীলীগের ৩ নেতা-কর্মী আটক

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

জুমার নামাজ না পড়া মুসলমানদের জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি

হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী  :আল্লাহতায়ালা জগৎ সৃষ্টির পূর্ণতা দান করেছিলেন এই দিনে। এই দিনেই হজরত আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.)-কে জান্নাতে একত্র করেছিলেন এবং এই দিনে মুসলিম উম্মাহ সাপ্তাহিক ঈদ ও ইবাদত উপলক্ষে মসজিদে একত্র হয় বলে দিনটাকে ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন বলা হয়।
মালেক ইবনে শিহাব থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ইবনে সাব্বাক থেকে বর্ণনা করেছেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) কোনো এক জুমার দিনে বললেন, ‘হে মুসলিম সম্প্রদায়! আল্লাহতায়ালা এই দিনটিকে ঈদের দিন হিসেবে নির্ধারণ করেছেন।’ আরবি শব্দ জুমুআ-এর অর্থ একত্র হওয়া। শুক্রবারকে বলা হয় ইয়াওমুল জুমাআ বা জুমার দিন। বিনা কারণে জুমার নামাজ ছেড়ে দেয়ার জন্য রয়েছে ভয়াবহ শাস্তি।
রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, জুমা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ দিবস। তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি সুন্দর রূপে ওজু করা করে জুমা নামাজ পড়তে আসবে তার পূর্ববর্তী জুমা থেকে বর্তমান জুমা পর্যন্ত সংগঠিত গুনাহসমূহ মাফ হয়ে যায়।
পবিত্র কুরআনে সূরা আল জুমায় ইরশাদ করা হয়েছে, যখন সালাতের জন্য জুমার দিবসের আহবান জানানো হয়, তখনই আল্লাহকে স্মরণের উদ্দেশে চলে এসো এবং ব্যবসায়িক লেনদেন বন্ধ করে দাও। এটা তোমাদের জন্য উত্তম যদি তোমরা জানতে।
জুমার নামাজ না পড়ার পরিণাম:
রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পরপর তিনটি জুমা বিনা ওজরে ও ইচ্ছা করে ছেড়ে দেবে, আল্লাহ তাআলা ঐ ব্যক্তির অন্তরে মোহর মেরে দেবেন। (তিরমিযী,আবু দাউদ, নাসাঈ, ইবনে মাজাহ)।
অপর এক হাদীসে রাসূল (সা.) বলেছেন, জুমা ত্যাগকারী লোকেরা হয় নিজেদের এই খারাপ কাজ হতে বিরত থাকুক। (অর্থাৎ জুমার নামাজ আদায় করুক), নতুবা আল্লাহ তাআলা তাদের এই গোনাহের শাস্তিতে তাদের অন্তরের ওপর মোহর করে দেবেন। পরে তারা আত্মভোলা হয়ে যাবে। অতপর সংশোধন লাভের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত হয়ে যাবে। (মুসলিম)।
হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি পর পর তিনটি জুমা পরিত্যাগ করবে, সে ইসলামকে পিছনের দিকে নিক্ষেপ করল। (মুসলিম)।
তবে আবার রাসূল (সা.) বলেছেন, চার শ্রেণির লোক ব্যতিত জুমআ’র নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গোনাহ। চার শ্রেণির লোক হল- ক্রীতদাস, স্ত্রীলোক, অপ্রাপ্ত বয়স্ক বালক, মুসাফির ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তি। (আবু দাউদ)।
মহান আল্লাহ তাআলা সবাইকে নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করে ভয়াবহ শাস্তি থেকে সবাইকে হেফাজত করুন।আল্লাহুুম্মা আমিন।
লেখক: বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ লেখক ও কলামিস্ট হাফিজ মাছুম আহমদ দুধরচকী।
Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com