আজ হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণের দশ বছর

ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতে অসংখ্য ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় শক্তিমান এই অভিনেতার। আজ হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণের দশ বছর।

 

হুমায়ূন ফরীদি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক ক্যামেস্ট্রির শিক্ষার্থী সেই সময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় দেশে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীনের পর ফের শিক্ষাজীবন শুরু করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ালেখা করেন অভিনেতা।

 

অভিনয়ের প্রতি তীব্র টান থাকায় অল্প সময়েরে মধ্যেই নাট্য ব্যক্তিত্ব সেলিম আল দীনের সান্নিধ্য পান। এরপর নিজের অভিনয় প্রতিভা তুলে ধরেন। সুযোগ পান ঢাকা থিয়েটারে কাজ করার। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা শুরু।

 

মঞ্চ থেকে ‘নিখোঁজ সংবাদ’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে অভিষেক করেন হুমায়ুন ফরীদি। তবে ‘সংশপ্তক’ এর মাধ্যমে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। এতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘মহুয়ার মন’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘শীতের পাখি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মোহনা’, ‘শৃঙ্খল’ প্রভৃতি।

 

হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। ‘সন্ত্রাস’, ‘দিনমজুর’ সিনেমায় খল অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছান। এরপর ২৫টি সিনেমায় খল অভিনেতা হিসেবে দেখা যায় তাকে। উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো ‘দূরত্ব’ ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘অধিকার চাই’, ‘ত্যাগ’ ও ‘মায়ের মর্যাদা’।

 

২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এ অভিনেতা। এছাড়া মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন হুমায়ুন ফরীদি।

 

১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম ও মায়ের নাম বেগম ফরিদা ইসলাম। আশির দশকে ফরিদপুরে মিনু নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন এ তারকা। সেই ঘরে এক মেয়ে রয়েছে, নাম দেবযানি। পরে অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তাফাকে বিয়ে করেন। কিন্তু ২০০৮ সালে অভিনেত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তার।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» জুলাই ফাউন্ডেশনে নতুন সিইও, শহিদের বাবা বললেন ‘মানি না’

» মৌলভীবাজার সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশইন ১৫০ জন, আটক ১৫ জন

» খেলার জার্সি পরে যমুনার সামনে রমনার ডিসি মাসুদ

» যমুনার সামনেই ফজরের নামাজ আদায় করলেন অবস্থানকারীরা

» জুমার নামাজের পর বড় কর্মসূচির ঘোষণা দিলেন হাসনাত

» সিদ্ধিরগঞ্জের হত্যা মামলায় কারাগারে আইভী

» সেলিনা হায়াৎ আইভী গ্রেফতার

» দাঁড়িয়ে থাকা বাসে দ্রুতগতির ট্রাকের ধাক্কায় দুইজন নিহত

» যে কারণে মেয়ের ছবি প্রকাশ্যে আসেনি, জানালেন দীপিকা

» পাকিস্তান থেকে সরিয়ে যেখানে হবে পিএসএল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আজ হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণের দশ বছর

ঋতুরাজ বসন্তের শুরুতে অসংখ্য ভক্ত-শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেতা হুমায়ুন ফরীদি। ২০১২ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় শক্তিমান এই অভিনেতার। আজ হুমায়ুন ফরীদির প্রয়াণের দশ বছর।

 

হুমায়ূন ফরীদি যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্গানিক ক্যামেস্ট্রির শিক্ষার্থী সেই সময় মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় দেশে। পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীনের পর ফের শিক্ষাজীবন শুরু করেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে পড়ালেখা করেন অভিনেতা।

 

অভিনয়ের প্রতি তীব্র টান থাকায় অল্প সময়েরে মধ্যেই নাট্য ব্যক্তিত্ব সেলিম আল দীনের সান্নিধ্য পান। এরপর নিজের অভিনয় প্রতিভা তুলে ধরেন। সুযোগ পান ঢাকা থিয়েটারে কাজ করার। তারপর ধীরে ধীরে এগিয়ে চলা শুরু।

 

মঞ্চ থেকে ‘নিখোঁজ সংবাদ’ নাটকের মাধ্যমে টেলিভিশন নাটকে অভিষেক করেন হুমায়ুন ফরীদি। তবে ‘সংশপ্তক’ এর মাধ্যমে দেশজুড়ে জনপ্রিয়তা লাভ করেন তিনি। এতে কানকাটা রমজান চরিত্রে অভিনয় করেন। তার অভিনীত নাটকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’, ‘একটি লাল শাড়ি’, ‘মহুয়ার মন’, ‘অযাত্রা’, ‘পাথর সময়’, ‘শীতের পাখি’, ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘মোহনা’, ‘শৃঙ্খল’ প্রভৃতি।

 

হুমায়ুন ফরীদি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন। ১৯৮৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দহন’ সিনেমার মাধ্যমে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। ‘সন্ত্রাস’, ‘দিনমজুর’ সিনেমায় খল অভিনেতা হিসেবে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছান। এরপর ২৫টি সিনেমায় খল অভিনেতা হিসেবে দেখা যায় তাকে। উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো ‘দূরত্ব’ ‘জয়যাত্রা’, ‘শ্যামল ছায়’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘অধিকার চাই’, ‘ত্যাগ’ ও ‘মায়ের মর্যাদা’।

 

২০০৪ সালে ‘মাতৃত্ব’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন এ অভিনেতা। এছাড়া মৃত্যুর পর ২০১৮ সালে মরণোত্তর একুশে পদকে ভূষিত হন হুমায়ুন ফরীদি।

 

১৯৫২ সালে ঢাকার নারিন্দায় জন্মগ্রহণ করেন হুমায়ুন ফরীদি। বাবার নাম এটিএম নুরুল ইসলাম ও মায়ের নাম বেগম ফরিদা ইসলাম। আশির দশকে ফরিদপুরে মিনু নামের এক মেয়েকে বিয়ে করেন এ তারকা। সেই ঘরে এক মেয়ে রয়েছে, নাম দেবযানি। পরে অভিনেত্রী সুবর্ণা মোস্তাফাকে বিয়ে করেন। কিন্তু ২০০৮ সালে অভিনেত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় তার।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com