এক চা দোকানির ভাগ্যবদলের কাহিনি

চুয়াডাঙ্গায় ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারে ভাগ্য বদলে গেছে আসাবুল হক নামের এক উদ্যোক্তার। অনেকটা শূন্য থেকে শুরু করে আজ তার পুঁজি কোটি টাকার ওপরে। নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে শতাধিক মানুষের। একই সঙ্গে কৃষি জমির স্বাস্থ্য সুরক্ষাও হচ্ছে তার মাধ্যমে। তিনি আগ্রহী বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে উৎসাহিত করছেন।

 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পিতম্বরপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, আসাবুল হক এক সময় চা দোকানি ছিলেন। তখন নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা ছিল তার। ভাগ্য বদলের আশায় শুরু করেন গাড়ল পালন। এতে কিছুটা সচ্ছলতা আসে। নতুন করে স্বপ্ন দেখেন, তার মতো নিম্নআয়ের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির। ৯ বছর আগে কৃষি বিভাগের সহায়তায় শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন। আসাবুল হক বলেন, কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রমে বদলাতে শুরু করে তার ভাগ্য। নিজের ভাগ্য বদলের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় দরিদ্র নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের সাতটি স্থানে শুরু করেছেন ভার্মি কম্পোস্টের উৎপাদন। সঙ্গে আছে জৈব সার, রেডিমিক্স সয়েল, কোকোডাস্ট, হাড়ের কুচি, শিঙকুচি, নিম খৈলসহ কৃষি জমির নানা উপকরণ। তার ভার্মি কম্পোস্ট প্রজেক্টে কাজ করছে শতাধিক মানুষ। বর্তমানে আসাবুলের ‘কৃষি খামার’ নামের ভার্মি কম্পোস্টের চাহিদা দেশব্যাপী। অনলাইন ও অফলাইনে চলছে বিক্রি। আসাবুল বলেন, সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে অন্তত দুই লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। যে কোনো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ভার্মি কম্পোস্ট এবং জৈব সার উৎপাদনে আসতে চাইলে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

 

‘কৃষি খামার’ ভার্মি কম্পোস্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রিয়াজ হোসেন বলেন, বর্তমানে তাদের সারের চাহিদা উৎপাদনের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে তারা নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করছেন। যাতে নতুন উদ্যোক্তাদের সারও তারা নিজেদের ক্রেতাদের মাঝে সরবরাহ করতে পারেন।

 

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষিনির্ভর হলেও এ জেলার মাটিতে জৈব পদার্থ আছে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ। যার প্রয়োজন অন্তত ৫ শতাংশ। যে কারণে জেলার কৃষি জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করতে ভার্মি কম্পোস্ট এবং জৈব সারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আসাবুল হক চুয়াডাঙ্গার কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে বাস চালকের মৃত্যু,আহত ১৫

» সাহসী প্রশ্ন তুলুন, বিভ্রান্তি নয় সত্য সামনে আনুন: সাংবাদিকদের শফিকুল

» রিকশাচালক হত্যা মামলায় দুইজন গ্রেপ্তার

» উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি বন্ধ করায় এখন কেউ পিডি হতে চান না

» নেপাল পারলে কেন পারবে না বাংলাদেশ?

» কুয়েত চেম্বারে বাংলাদেশের ব্যবসায়িক প্রতিনিধিদলের বিশেষ সভা

» শ্রীলঙ্কা জিতলে বাঁচবে স্বপ্ন, হারলে কঠিন সমীকরণ বাংলাদেশের

» সাতরাস্তা মোড়ে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল শুরু

» ৬৮ কেজি গাঁজাসহ আটক ১

» গাজীপুরে ঢাকা-টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

এক চা দোকানির ভাগ্যবদলের কাহিনি

চুয়াডাঙ্গায় ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সারে ভাগ্য বদলে গেছে আসাবুল হক নামের এক উদ্যোক্তার। অনেকটা শূন্য থেকে শুরু করে আজ তার পুঁজি কোটি টাকার ওপরে। নিজের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি কর্মসংস্থান হয়েছে শতাধিক মানুষের। একই সঙ্গে কৃষি জমির স্বাস্থ্য সুরক্ষাও হচ্ছে তার মাধ্যমে। তিনি আগ্রহী বেকারদের কর্মসংস্থানের জন্য সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনে উৎসাহিত করছেন।

 

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার পিতম্বরপুর গ্রামে গিয়ে জানা যায়, আসাবুল হক এক সময় চা দোকানি ছিলেন। তখন নুন আনতে পান্তা ফুরানোর মতো অবস্থা ছিল তার। ভাগ্য বদলের আশায় শুরু করেন গাড়ল পালন। এতে কিছুটা সচ্ছলতা আসে। নতুন করে স্বপ্ন দেখেন, তার মতো নিম্নআয়ের মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির। ৯ বছর আগে কৃষি বিভাগের সহায়তায় শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন। আসাবুল হক বলেন, কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রমে বদলাতে শুরু করে তার ভাগ্য। নিজের ভাগ্য বদলের সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় দরিদ্র নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান। বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহের সাতটি স্থানে শুরু করেছেন ভার্মি কম্পোস্টের উৎপাদন। সঙ্গে আছে জৈব সার, রেডিমিক্স সয়েল, কোকোডাস্ট, হাড়ের কুচি, শিঙকুচি, নিম খৈলসহ কৃষি জমির নানা উপকরণ। তার ভার্মি কম্পোস্ট প্রজেক্টে কাজ করছে শতাধিক মানুষ। বর্তমানে আসাবুলের ‘কৃষি খামার’ নামের ভার্মি কম্পোস্টের চাহিদা দেশব্যাপী। অনলাইন ও অফলাইনে চলছে বিক্রি। আসাবুল বলেন, সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে অন্তত দুই লাখ টাকা আয় করছেন তিনি। যে কোনো ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা ভার্মি কম্পোস্ট এবং জৈব সার উৎপাদনে আসতে চাইলে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।

 

‘কৃষি খামার’ ভার্মি কম্পোস্টের প্রজেক্ট ম্যানেজার মো. রিয়াজ হোসেন বলেন, বর্তমানে তাদের সারের চাহিদা উৎপাদনের তুলনায় অনেক বেশি। এ কারণে তারা নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরিতে কাজ করছেন। যাতে নতুন উদ্যোক্তাদের সারও তারা নিজেদের ক্রেতাদের মাঝে সরবরাহ করতে পারেন।

 

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষিনির্ভর হলেও এ জেলার মাটিতে জৈব পদার্থ আছে মাত্র ১ থেকে ২ শতাংশ। যার প্রয়োজন অন্তত ৫ শতাংশ। যে কারণে জেলার কৃষি জমির উর্বরাশক্তি বৃদ্ধি করতে ভার্মি কম্পোস্ট এবং জৈব সারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আসাবুল হক চুয়াডাঙ্গার কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com