আপাতত বিক্রি করা যাবে না জমজমের পানি

পবিত্র মক্কা নগরীর জমজম কূপের পানি রাজধানীর বায়তুল মোকাররমসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রির অভিযোগ পাওয়ার পর এ ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, এই পানি আপাতত বিক্রি করা যাবে না। এ ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতামত চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

আজ (৩০ জানুয়ারি) সকালে অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই কথা বলেন।

ভোক্তা অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘আমার মতে, অবৈধভাবে জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে এবং এটাকে এখানে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। এখন এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করবে মার্কেট কমিটি। তারা আগামী বুধবারের মধ্যে আমাদের জানাবেন যে, এ বিষয়ে কী করা যায়। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। জমজমের পানি বিক্রি আপাতত বন্ধ থাকবে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা সেখানে কাজ করবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ বিক্রি করলে, প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে।’

 

সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মালিক সমিতি ও ব্যবসায়ীদের লিখিত মতামত নেব। তারপর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। বিশ্বাসের কথা বলে জমজমের পানি বিক্রি করা যাবে না, উৎস জানতে হবে।

 

ভোক্তা অধিকারের ডিজি বলেন, ‘অনেকে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে জমজমের পানি বিক্রি করছে। এসব পেজ নজরদারিতে নেওয়া হবে। বিটিআরসির মাধ্যমে এসব পেজ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মতবিনিময় সভায় অধিদফতরের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ের প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডলসহ বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও ক্যাবের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

jamjam

এর আগে গতকাল রোববার (২৯ জানুয়ারি) বায়তুল মোকাররম মার্কেট এলাকায় অভিযান চালায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অভিযানে দেখা যায়, প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন আতর-টুপি-গোলাপজল ব্যবসায়ী জমজম কূপের এই পবিত্র পানির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি লিটার জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন হাজার টাকায়। মার্কেটের প্রায় সব দোকানেই ২৫০ মিলি লিটারের জমজমের পানি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খুচরা দরে বিক্রি করা হয়।

 

বিক্রেতারা জানান, বাংলাদেশে জমজম কূপের পানি বৈধভাবে কেউ আমদানি করে না। হজযাত্রীরা সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। হাজিদের কাছ থেকে কিনে খুচরা বিক্রি করা হয়।

 

পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার এক বিস্ময়কর নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয় জমজম কূপকে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে পবিত্র কাবাঘরের পাশে এক শিশুর পায়ের আঘাতে কূপটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। ওই শিশু ছিলেন হজরত ইবরাহিম আ.-এর সন্তান হজরত ইসমাইল আ.। বরকতময় এ কূপের পানি বিশুদ্ধতায় অতুলনীয়। প্রতি সেকেন্ডে আট হাজার লিটার পানি উত্তোলন করার পরও এ কূপ থেকে পানি কখনও কমে যায়নি।

 

মক্কা-মদিনাসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে এই কূপের পানি সরবরাহ করা হয়। হজযাত্রীরা এই কূপের পানি ইচ্ছেমতো পান করেন এবং দেশে ফেরার সময় বোতলজাত পানি নিয়েও আসেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» আবারও কমল স্বর্ণের দাম

» জাপানে শক্তিশালী ৬.৫ মাত্রার ভূমিকম্প

» হজ ফ্লাইট শুরু ৯ মে

» উদ্যমী ও অগ্রগামী মানুষদের নিয়ে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান করলো মানব কল্যাণ পরিষদ

» দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় দেবোত্তর সম্পদ আইন তৈরি করা হচ্ছে – ভূমিমন্ত্রী

» সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে সুসংহত করতে  হবে-ধর্মমন্ত্রী

» ডিপিএস এসটিএস স্কুল ঢাকার আয়োজনে ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্কলার্স কাপ ২০২৪’

» নতুন উদ্ভাবন বাজারে এলো বাংলা ভাষার প্রথম স্মার্টওয়াচ ‘এক্সপার্ট’

» বিএনপির আন্দোলন সফল হবে না, পরিষ্কার ধারণা ছিল : জিএম কাদের

» চিফ হিট অফিসার ডিএনসিসির কেউ নন : মেয়র আতিক

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আপাতত বিক্রি করা যাবে না জমজমের পানি

পবিত্র মক্কা নগরীর জমজম কূপের পানি রাজধানীর বায়তুল মোকাররমসহ বিভিন্ন স্থানে বিক্রির অভিযোগ পাওয়ার পর এ ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। সংস্থাটির মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানিয়েছেন, এই পানি আপাতত বিক্রি করা যাবে না। এ ব্যাপারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মতামত চাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

আজ (৩০ জানুয়ারি) সকালে অধিদফতরের প্রধান কার্যালয়ের সভাকক্ষে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এই কথা বলেন।

ভোক্তা অধিদফতরের ডিজি বলেন, ‘আমার মতে, অবৈধভাবে জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে এবং এটাকে এখানে বাণিজ্যিকীকরণ করা হয়েছে। এখন এ নিয়ে করণীয় নির্ধারণ করবে মার্কেট কমিটি। তারা আগামী বুধবারের মধ্যে আমাদের জানাবেন যে, এ বিষয়ে কী করা যায়। তারপর আমরা সিদ্ধান্ত নেবো। জমজমের পানি বিক্রি আপাতত বন্ধ থাকবে। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা সেখানে কাজ করবে। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ বিক্রি করলে, প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেওয়া হবে।’

 

সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আমরা মালিক সমিতি ও ব্যবসায়ীদের লিখিত মতামত নেব। তারপর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবো। বিশ্বাসের কথা বলে জমজমের পানি বিক্রি করা যাবে না, উৎস জানতে হবে।

 

ভোক্তা অধিকারের ডিজি বলেন, ‘অনেকে ফেসবুক পেজে বিজ্ঞাপন দিয়ে জমজমের পানি বিক্রি করছে। এসব পেজ নজরদারিতে নেওয়া হবে। বিটিআরসির মাধ্যমে এসব পেজ বন্ধ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।

মতবিনিময় সভায় অধিদফতরের পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, উপ-পরিচালক আতিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক এবং ঢাকা জেলা কার্যালয়ের প্রধান আব্দুল জব্বার মণ্ডলসহ বিক্রেতা, ব্যবসায়ী ও ক্যাবের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

jamjam

এর আগে গতকাল রোববার (২৯ জানুয়ারি) বায়তুল মোকাররম মার্কেট এলাকায় অভিযান চালায় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অভিযানে দেখা যায়, প্রায় ২০০ থেকে ২৫০ জন আতর-টুপি-গোলাপজল ব্যবসায়ী জমজম কূপের এই পবিত্র পানির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি লিটার জমজমের পানি বিক্রি হচ্ছে দুই থেকে তিন হাজার টাকায়। মার্কেটের প্রায় সব দোকানেই ২৫০ মিলি লিটারের জমজমের পানি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা খুচরা দরে বিক্রি করা হয়।

 

বিক্রেতারা জানান, বাংলাদেশে জমজম কূপের পানি বৈধভাবে কেউ আমদানি করে না। হজযাত্রীরা সঙ্গে করে নিয়ে আসেন। হাজিদের কাছ থেকে কিনে খুচরা বিক্রি করা হয়।

 

পৃথিবীতে আল্লাহ তায়ালার এক বিস্ময়কর নিদর্শন হিসেবে মনে করা হয় জমজম কূপকে। প্রায় পাঁচ হাজার বছর আগে পবিত্র কাবাঘরের পাশে এক শিশুর পায়ের আঘাতে কূপটির আত্মপ্রকাশ ঘটে। ওই শিশু ছিলেন হজরত ইবরাহিম আ.-এর সন্তান হজরত ইসমাইল আ.। বরকতময় এ কূপের পানি বিশুদ্ধতায় অতুলনীয়। প্রতি সেকেন্ডে আট হাজার লিটার পানি উত্তোলন করার পরও এ কূপ থেকে পানি কখনও কমে যায়নি।

 

মক্কা-মদিনাসহ সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে এই কূপের পানি সরবরাহ করা হয়। হজযাত্রীরা এই কূপের পানি ইচ্ছেমতো পান করেন এবং দেশে ফেরার সময় বোতলজাত পানি নিয়েও আসেন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com