রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শিশুদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পৃথিবীকে গড়ে তুলতে এবং শিশুদের ভেতর লুকায়িত পূর্ণ সম্ভাবনার উন্মেষ ঘটাতে সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। প্রতিটি শিশুর ব্যক্তিত্ব আছে, এই ব্যক্তিত্ব প্রকাশের সুযোগ তৈরি করে দিন। স্নেহ, ভালোবাসার পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলুন।
আজ রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘জাতীয় শিশু পুরস্কার প্রতিযোগিতা-২০২০ ও ২০২১’ এর পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
রাষ্ট্রপতি বলেন, শিশুরা যেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে অবদান রাখতে পারে সেই লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, মা-বাবাসহ পরিবারের সদস্যদেরও এগিয়ে আসতে হবে। শিশুরাই জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধার, ভবিষ্যতে তারাই বহন করবে দেশের ভার। এজন্য শিশুদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, সৃজনশীল মেধাসম্পন্ন প্রজন্ম গড়তে সাহিত্য-সংস্কৃতির প্রভাব অপরিসীম। বিদ্যার্জনের পাশাপাশি শিল্প-সাহিত্য ও ক্রীড়াসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে শিশুদের সম্পৃক্ত করে তাদের মানসিক বিকাশের পথ সুগম করা জরুরি। শুধুমাত্র অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের শিশু নয়, সর্বস্তরের সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের কল্যাণে বৈষম্যহীন মনোভাব নিয়ে সংশ্লিষ্টদের এগিয়ে আসতে হবে।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিশুদের খুব ভালবাসতেন উল্লেখ করে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, তিনি সময় পেলেই শিশুদের সঙ্গে মিশে যেতেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও শিশুদের উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। শিশুদের আলোকিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, পরিবার, শিক্ষকসহ সমাজের সবার। শিশুর মেধা বিকশিত করতে প্রয়োজন উপযুক্ত পরিবেশে, পরিচর্যা ও অনুপ্রেরণা।
তিনি বলেন, জাতিসংঘের শিশু অধিকার সনদে অনুস্বাক্ষরকারী রাষ্ট্র হিসেবে এবং বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির আলোকে শিশুর সার্বিক অধিকার নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার বহুমাত্রিক কার্যক্রম পরিচালনা করছে। জাতীয় কর্ম পরিকল্পনায় শিশুর স্বাস্থ্য-পুষ্টি, শিক্ষা-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুদের উন্নয়নেও রয়েছে নানা কর্মসূচি ও পরিকল্পনা।
বর্তমান বিশ্বায়ন ও তথ্যপ্রযুক্তির যুগে শিশুদের নৈতিক শিক্ষা প্রদানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে শিশুদের হাতে মোবাইল, ল্যাপটপসহ বিভিন্ন অত্যাধুনিক ডিভাইস, ফলে শিশুরা আজ মোবাইলে আসক্ত। তারা খেলার মাঠে বেশি যায় না, শিল্প-সাহিত্য চর্চা করে না, প্রকৃতি-পরিবেশ চেনে না। প্রযুক্তির ক্ষতিকর দিক থেকে সন্তানদের রক্ষা করে নিয়মিত লেখাপড়ার পাশাপাশি সৃজনশীল কাজে সম্পৃক্ত করতে হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, বাংলাদেশ শিশু একাডেমির চেয়ারম্যান লাকী ইনাম, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল প্রমুখ।