পরবর্তী স্লোগান কি হবে, জানালেন মুসকান

ভারতের কর্ণাটকে কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী দ্বারা হেনস্তার শিকার হওয়া বোরকা ও হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীর প্রতিবাদী অবস্থান ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। মুসকান খান নামের ওই ছাত্রীর সাহসীকতায় মুগ্ধ হয়েছেন নেটদুনিয়া। গত মঙ্গলবার উগ্র হিন্দত্ববাদীদের ভয় উপেক্ষা করে হিজাব পরে কর্ণাটকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন মুসকান নামের ওই ছাত্রী। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করার পর ওই ছাত্ররা তাকে ভয়-ভীতি দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এসময় মুসকান একাই সেই ছাত্রদের সামনে প্রতিবাদ করে। উগ্রপন্থীরা নানা স্লোগানে তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ছাত্রী ভড়কে না গিয়ে উল্টো সাহসী এক প্রতিবাদ করেছেন। ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন তিনি।

 

বিবিসিকে মুসকান খান বলেন, আমরা সবাই হিজাব পরি। ছোটবেলা থেকে হিজাব পরতে পরিবার থেকেই বলা হয়েছে। হিজাব আমার কাছে আত্মমর্যাদার প্রতীক।

সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে মুসকান বলেন, তাদের ধর্মান্ধতায় আমি অবাক হয়েছিলাম। সংখ্যায় তারা অনেকজন ছিল। আক্রমণ করার মতো তারা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল। তখন আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, তিনি যেন আমাকে সেই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেন। সেই সময় আমার মুখ থেকে আল্লাহু আকবর শব্দটি বেরিয়ে আসে। আমি বললাম আল্লাহু আকবার। কারণ আমি ভয় পেয়েছিলাম। ভয় পেলে আমি আল্লাহর নাম নিই। আল্লাহর নাম নিলেই আমার সাহস বেড়ে যায়।

 

মুসকানের ওই ভিডিওটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে। মুসকানের এ সাহসিকতায় সবাই মুগ্ধ হলেও এ স্লোগানের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে বলে কয়েকটি ভারতীয় মিডিয়ায় বলা হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে মুসকান বলেন, আমি কোনো সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে ‘আল্লাহু আকবর’ বলিনি। আমি হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছি না।

 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে মুসকান জানান, ওই দিন প্রতিদিনের মতোই হিজাব ও বোরকা পরে তিনি কলেজে যান। তবে কলেজের প্রবেশপথে একদল ব্যক্তি তাকে থামায়। তারা বোরকা ও হিজাব খুলে তাকে কলেজে প্রবেশ করতে বলে। তার ভাষায়, আমি রেগে তাদের পাশ কাটিয়ে কলেজের পার্কিং লটের দিকে চলে যাই। আমি রাগে লাল হয়ে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে হিজাব খুলতে বলার সাহস করল কীভাবে।

 

সামনে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে কী করবেন জানতে চাইলে মুসকান বলেন, ‘আমি অবশ্যই ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ বলব।

 

১৯ বছর বয়সী মুসকান ব্যবসায় শিক্ষায় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। মুসকান নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মতো পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চান।

তবে চারপাশে এমন অস্থিরতার মধ্যে মানসিক শান্তিতে থাকা কঠিন বলে জানান তিনি।

 

মুসকান বলেন, ভিডিওটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর আমাকে শেরনি (বাঘিনী) ও আরও অনেক নামে ডাকা হয়েছে। সত্যি বলছি, আমি এর কিছুই চাই না। আমি শুধু পড়াশোনা করতে চাই। আমি মানুষের কাছে আমার অবস্থান স্পষ্ট করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। হিজাব আমার পরিচয়, আমি এটা পরতে পছন্দ করি, এটা আমার সম্মানের প্রতীক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পঞ্চম দফায় কমল স্বর্ণের দাম

» আইনগত সহায়তা পাওয়া করুণা নয় : আইনমন্ত্রী

» রিকশাচালকদের ছাতা, স্যালাইন ও পানির কন্টেইনার দেওয়া হবে: মেয়র আতিক

» দুই সহোদরকে পিটিয়ে হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে: র‌্যাব মুখপাত্র

» ১ম টি-টোয়েন্টিতে আজ মুখোমুখি বাংলাদেশ-ভারত

» ট্রাকচাপায় অটোভ্যান চালকের মৃত্যু

» কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষাবিধি নিশ্চিতে কাজ করতে হবে: রাষ্ট্রপতি

» পরীমণির মাদক মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল

» ‘বোন হয়ে লাভ হয়নি’! প্রিয়াঙ্কাকে নিয়ে কী বললেন পরিণীতি?

» অস্ত্র-গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা আটক

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পরবর্তী স্লোগান কি হবে, জানালেন মুসকান

ভারতের কর্ণাটকে কট্টরপন্থী হিন্দুত্ববাদী দ্বারা হেনস্তার শিকার হওয়া বোরকা ও হিজাব পরা মুসলিম ছাত্রীর প্রতিবাদী অবস্থান ভাইরাল হয়েছে সামাজিক মাধ্যমে। মুসকান খান নামের ওই ছাত্রীর সাহসীকতায় মুগ্ধ হয়েছেন নেটদুনিয়া। গত মঙ্গলবার উগ্র হিন্দত্ববাদীদের ভয় উপেক্ষা করে হিজাব পরে কর্ণাটকের একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন মুসকান নামের ওই ছাত্রী। প্রতিষ্ঠানটিতে প্রবেশ করার পর ওই ছাত্ররা তাকে ভয়-ভীতি দেখানোর চেষ্টা করে। কিন্তু এসময় মুসকান একাই সেই ছাত্রদের সামনে প্রতিবাদ করে। উগ্রপন্থীরা নানা স্লোগানে তাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু ছাত্রী ভড়কে না গিয়ে উল্টো সাহসী এক প্রতিবাদ করেছেন। ‘আল্লাহু আকবার’ বলতে বলতে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করেন তিনি।

 

বিবিসিকে মুসকান খান বলেন, আমরা সবাই হিজাব পরি। ছোটবেলা থেকে হিজাব পরতে পরিবার থেকেই বলা হয়েছে। হিজাব আমার কাছে আত্মমর্যাদার প্রতীক।

সেদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে মুসকান বলেন, তাদের ধর্মান্ধতায় আমি অবাক হয়েছিলাম। সংখ্যায় তারা অনেকজন ছিল। আক্রমণ করার মতো তারা আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ধরেছিল। তখন আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলাম, তিনি যেন আমাকে সেই পরিস্থিতি থেকে রক্ষা করেন। সেই সময় আমার মুখ থেকে আল্লাহু আকবর শব্দটি বেরিয়ে আসে। আমি বললাম আল্লাহু আকবার। কারণ আমি ভয় পেয়েছিলাম। ভয় পেলে আমি আল্লাহর নাম নিই। আল্লাহর নাম নিলেই আমার সাহস বেড়ে যায়।

 

মুসকানের ওই ভিডিওটি বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তুলেছে। মুসকানের এ সাহসিকতায় সবাই মুগ্ধ হলেও এ স্লোগানের মাধ্যমে হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি হয়েছে বলে কয়েকটি ভারতীয় মিডিয়ায় বলা হচ্ছে।

 

এ বিষয়ে টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে মুসকান বলেন, আমি কোনো সাম্প্রদায়িকতা ছড়াতে ‘আল্লাহু আকবর’ বলিনি। আমি হিন্দু-মুসলিমের মধ্যে বিভেদ তৈরি করছি না।

 

ঘটনার বিবরণ দিয়ে মুসকান জানান, ওই দিন প্রতিদিনের মতোই হিজাব ও বোরকা পরে তিনি কলেজে যান। তবে কলেজের প্রবেশপথে একদল ব্যক্তি তাকে থামায়। তারা বোরকা ও হিজাব খুলে তাকে কলেজে প্রবেশ করতে বলে। তার ভাষায়, আমি রেগে তাদের পাশ কাটিয়ে কলেজের পার্কিং লটের দিকে চলে যাই। আমি রাগে লাল হয়ে গিয়েছিলাম। তারা আমাকে হিজাব খুলতে বলার সাহস করল কীভাবে।

 

সামনে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে কী করবেন জানতে চাইলে মুসকান বলেন, ‘আমি অবশ্যই ‘হিন্দুস্তান জিন্দাবাদ’ বলব।

 

১৯ বছর বয়সী মুসকান ব্যবসায় শিক্ষায় দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। মুসকান নিয়মিত শিক্ষার্থীদের মতো পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে চান।

তবে চারপাশে এমন অস্থিরতার মধ্যে মানসিক শান্তিতে থাকা কঠিন বলে জানান তিনি।

 

মুসকান বলেন, ভিডিওটি ছড়িয়ে যাওয়ার পর আমাকে শেরনি (বাঘিনী) ও আরও অনেক নামে ডাকা হয়েছে। সত্যি বলছি, আমি এর কিছুই চাই না। আমি শুধু পড়াশোনা করতে চাই। আমি মানুষের কাছে আমার অবস্থান স্পষ্ট করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। হিজাব আমার পরিচয়, আমি এটা পরতে পছন্দ করি, এটা আমার সম্মানের প্রতীক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com