কানাডার টরন্টোতে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এসময় স্বাধীনতাযুদ্ধে পাকিস্তানিদের সংঘটিত গণহত্যাকে জাতিসংঘের স্বীকৃতির দাবিতে আলোচনা, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়।
১৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় টরন্টোর ২৫৫০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র ইউনাইটেড হোপ চার্চ অডিটোরিয়ামে পালন করা হয় দিবসটি। এর আয়োজন করে ‘কানাডিয়ান কোয়ালিশন ফর রিকগনিশন অব বাংলাদেশ জেনোসাইড ইন ১৯৭১’।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের ওপর ধারণ করা বিভিন্ন টেলিভিশনের ফুটেজ এবং যুদ্ধের ওপর নির্মিত প্রামাণ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়। ৩০ মিনিট দৈর্ঘ্যের এই প্রামাণ্যচিত্রটি সম্পাদিত করেন চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করিম বাবুল।
প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনের পর ১৯৭১ সালের শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রদীপ প্রজ্বলন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডা. মোহাম্মদ মোর্তুজার কন্যা দ্যুতি অরনি।
এছাড়া বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যার বিষয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবিতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের প্রাক্তন এজিএস নাসির উদ দুজা।
আরও বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আকবর কবির, বীর মুক্তিযোদ্ধা ছানাউল ইসলাম খান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. আজিজুল হক, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভিপি ফায়জুল করিম, সাংস্কৃতিক কর্মী নওশের আলী, মিনারা বেগম, সুমন সাঈয়েদ, ম্যাক আজাদ, সাংবাদিক শওগাত আলী সাগর, মানবাধিকার কর্মী আরমান রশিদ এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা এনায়েত করিম বাবুল।
বক্তারা তাদের আলোচনায় গণহত্যার যৌক্তিক দাবির বিষয়ে আলোকপাত করেন। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সব শক্তিকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের গান, নাচ ও কবিতা পরিবেশিত হয়। বাংলাদেশের হাইওয়ান গিটারিস্ট এনামুল কবির গিটারে মুক্তিযুদ্ধের একটি গান পরিবেশন করেন। নৃত্য পরিবেশন করেন টরন্টোর সাংস্কৃতিক জগতের প্রিয় মুখ অরুণা হায়দার।
স্মৃতিচারণ করছেন শহীদ বুদ্ধিজীবী কন্যা দ্যুতি অরনি ও মূল বক্তব্য রাখেন নাসির উদ দুজা
কবি শামসুর রাহমান এবং রুদ্র মোহাম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতা আবৃত্তি করেন যথাক্রমে দিলারা নাহার বাবু ও কামরান করিম। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের সমবেত সংগীত পরিবেশন করেন সুমন সাঈয়েদ, নাহিদ কবির কাকলী, মৈত্রেয়ী দেবী, ফারহানা শান্তা, শাপলা শালুক, ফারজানা বিন্দু, বিদিতা, নুজাত শারিন, মোহাম্মদ শফিক, ইভানা, ওমর, হিরা ও সোহানা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তবলায় সংগত করেন রাজীব ও মামুন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মনিস রফিক।
গত ৩ অক্টোবর সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ৫১তম অধিবেশনে বাংলাদেশের গণহত্যা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির দাবির বিষয়টি প্রথমবারের মতো এজেন্ডাভুক্ত ও আলোচিত হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় কানাডার টরন্টো শহরেও স্বাধীনতাকামী প্রবাসীরা এই দাবির পক্ষে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছেন।
সূএ: জাগোনিউজ২৪.কম