মহান বিজয় দিবস, ১ জানুয়ারি ইংরেজি নববর্ষ ও ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সরকার বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে বলে দাবি করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
আজ (৫ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ে জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ দাবি করেন।
১০ ডিসেম্বরের সমাবেশকে কেন্দ্র করে গণগ্রেপ্তার চলছে বলে বিএনপির অভিযোগের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ১ থেকে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিজয় দিবস, একই সঙ্গে সামনে নতুন বছর উদযাপন ও শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে সরকার বিশেষ অভিযান পরিচালনা করছে। প্রতিবছরই এমনটি ঘটছে। বিশেষ অভিযান ১ ডিসেম্বর থেকে শুরু হয়। সেখানে বিএনপির মধ্যে আছে আগুন সন্ত্রাসীরা, সারা দেশে যারা ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে আগুন সন্ত্রাস চালিয়েছিল, মানুষ হত্যা করেছিল, তারা তো বিএনপির নেতাকর্মী। তাদের কাউকে যদি গ্রেপ্তার করা হয়, তা আইনগত বিষয়।
রাজনৈতিক উদ্দেশে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি দাবি করে সরকারের এ মন্ত্রী বলেন, যারা আগুন সন্ত্রাসের জন্য অর্থ দিয়েছিল, হুকুম দিয়েছিল, তাদের তো এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। মানুষ মনে করছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করা দরকার।
বিএনপি এখন নয়াপল্টন থেকে সরে এসে কাকরাইল, আরামবাগ কিংবা মতিঝিল এলাকায় সমাবেশ করতে চাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমি টেলিভিশনে দেখেছি, বিকল্প প্রস্তাব পেলে তারা সেটি নিয়েই কাজ করবে। হ্যাঁ, বিকল্প তো আছে। জনসভা তো হয় ময়দানে, রাস্তায় হয় না। গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করে মানুষকে আতঙ্কের মধ্যে ফেলে জনসভা করা কোনো দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দলের কাজ না। আওয়ামী লীগের জনসভায় একটু ভোগান্তি হলেই তো কয়েকটি পত্রিকা লিখে যে জনসভায় মানুষ হয়েছে, তবে ভোগান্তি হয়েছে। সেই পত্রিকাগুলোকে এখন বিএনপির রাস্তায় জনসমাবেশ করতে চাওয়া নিয়ে লিখতে দেখি না।
জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত ইতো নাওকির সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমার সঙ্গে আলাপচারিতায় ইতো নাওকি আশাবাদ প্রকাশ করেছেন, আগামী নির্বাচনে সব রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবে। কয়েকদিন আগে জাপান-বাংলাদেশ মিত্রতার ৫০ বছর উদযাপন হয়েছে। বাংলাদেশে জাপানের অনেকগুলো প্রকল্প চলমান আছে। আমরা তা নিয়ে আলোচনা করছি।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার (৬ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে জাপানি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আমরা উদ্বোধন করতে যাচ্ছি। মিরসরাই বঙ্গবন্ধু শিল্প নগরীতে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনে জাপান আগ্রহ দেখিয়েছে। মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্রবন্দরে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ দিকে। সেগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
জাপানের বিদায়ী রাষ্ট্রদূত বাংলায় গান গাইতে পারেন জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তাকে জিজ্ঞেস করলাম, জাপানে চলে গেলে আপনার বাংলা গানের চর্চার কী হবে? সেটা অব্যাহত রাখতে হবে। এভাবে নানা বিষয়ে তার সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমরা আলোচনা করেছি, পলিটিক্স অব ডিনায়েল, পলিটিক্স অব কনফ্রন্টেশন। সবকিছুতে না বলার সংস্কৃতি বন্ধ করা উচিত।
‘বিএনপি ও তার মিত্ররা যে সাংঘর্ষিক রাজনীতি করে, সে বিষয়টি আমি তার সামনে তুলে ধরেছি। এগুলো যে উন্নয়নের প্রতিবন্ধকতা, সে বিষয়ে তিনিও একমত’ -বলেন তথ্যমন্ত্রী।