বাংলাদেশ পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) নিয়মিতভাবে দুঃস্থ ও আর্তমানবতার সেবায় কাজ করে আসছে। বর্তমান পুনাক সভানেত্রী জীশান মীর্জা দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে সারাদেশে সমাজসেবার কাজ জোরদার করা। দেশের গণমাধ্যমগুলোতে এটি ব্যপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।
সম্প্রতি একজন অসুস্থ শিশুর সাহায্য সংক্রান্ত একটি ফেসবুক পোস্ট পুনাক সভানেত্রীর নজরে আসে। তিনি সেই শিশুটির পিতাকে চিকিৎসাপত্রসহ সাহায্য গ্রহণ করার জন্য আহ্বান করেন। কিন্তু সাহায্যপ্রার্থী হাজির না হয়ে নানা টালবাহানা করেন। পরবর্তীতে একই ছবি দিয়ে আরেকটি পোস্ট দেখলে পুনাক কর্তৃপক্ষের সন্দেহ হয়। এরপর তারা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের কাছে বিষয়টি অনুসন্ধান করার অনুরোধ করে।
অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে সাহায্যপ্রার্থীরা মূলত এই পদ্ধতিতে প্রতারণা করে আসছেন। এইভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুস্থ ও অসহায়দের সাহায্যর নামে প্রতারণার অভিযোগে ছদ্মবেশী প্রতারক চক্রের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে সিটিটিসির সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগ।
গ্রেফতাররা হলেন- মো. রেজাউল ইসলাম, মো. হাফিজুল ইসলাম, মো. মেহেদী হাসান ওরফে আকাশ ও মো. তানভীর আহাম্মেদ। গ্রেফতারদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত ২৭টি ফেসবুক আইডি, ১০টি মোবাইল, মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউনসহ ১৫টি সিমকার্ড ও প্রতারণালব্ধ নগদ দুই লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
মঙ্গলবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ইন্টারনেট রেফারেল টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) ধ্রুব জ্যোতির্ময় জাগো নিউজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, প্রতারক চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারনেট থেকে দেশ বিদেশের বিভিন্ন অসুস্থ ব্যক্তিদের ছবি ব্যবহার করে ফেসবুকে ফেক আইডি খুলে প্রতারণা করে আসছিল। এরকম একটি ফেক আইডি ‘এমডি জুয়েল রানা’ থেকে ফেসবুক গ্রুপ ‘নক্সে বন্দী হাসানুর রহমান হোসাইন সাইবার টিমে’ অজ্ঞাতপরিচয় অসুস্থ একটি শিশুর ছবি যুক্ত করে। ‘বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী বিশ্বাস’ নামের অপর একটি ফেসবুক ফেক আইডি থেকে ‘আমরা বৃহত্তর পুরান ঢাকাবাসী’ নামের ফেসবুক গ্রুপে সাহায্যের আবেদন করা হয়। এ ধরনের ২৭টি আইডি থেকে আরও বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে মিথ্যা সাহায্যের আবেদন করা হয়।
সাধারণ মানুষের আবেগের সঙ্গে প্রতারণা করে প্রায় ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই প্রতারক চক্র।
ধ্রুব জ্যোতির্ময় আরও বলেন, তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় প্রতারক চক্রের সদস্যদের শনাক্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় রংপুর থেকে রেজাউল, হাফিজুল ও আকাশকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া রাজধানীর মিরপুর এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের আরেক সদস্য তানভীরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে রমনা মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে বলেও জানান সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগের ইন্টারনেট রেফারেল টিমের এই কর্মকর্তা। সূূূএ:জাগোনিউজ২৪.কম