নর্থ সাউথের ট্রাস্টি কাশেম-রেহানার জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল

অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল করা হয়। রোববার (১৩ নভেম্বর) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

 

এর আগে গত ১০ নভেম্বর এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানকে দুটি শর্তে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। শর্তগুলো হলো- তারা দেশের বাইরে যেতে পারবেন না এবং অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই জামিন দিয়েছিলেন। আদালতে ওইদিন জামিনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনার নামে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

 

মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদকে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়টির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী এটি একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কয়েকজন সদস্যের সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অন্যায়ভাবে লেনদেন হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরবর্তী সময়ে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। এরপর আবার নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। ওই অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।

 

এজাহারে আরও বলা হয়, এ ছয়জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলা হয়েছে।

 

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়টির দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান ও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় দুদক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইসলমাপুরে হত দরিদ্র ও প্রতিবন্ধীদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ

» ‘ইসকনের অনুমোদনই নেই, তাকে নিষিদ্ধ করার কী আছে’

» ভারতে পালাতে গিয়ে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা গ্রেফতার

» মোটরসাইকেল ও ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

» সব আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো প্রস্তুতি আমাদের আছে: গোলাম পরওয়ার

» বহিষ্কৃত চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের দায় নেবে না ইসকন

» ৯ দাবিতে সচিবালয়ে মহাসমাবেশের ডাক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের

» চট্টগ্রাম আদালতে সংঘর্ষ: পুলিশের তিন মামলায় আসামি ১৪৭৬

» মোরগের আকৃতির বিল্ডিং বানিয়ে বিশ্বরেকর্ড

» শিশুর পুষ্টির ঘাটতি মেটায় যে ৫ ফল

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নর্থ সাউথের ট্রাস্টি কাশেম-রেহানার জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল

অর্থ আত্মসাতের মামলায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের দুই সদস্য এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আপিল করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এই আপিল করা হয়। রোববার (১৩ নভেম্বর) জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

 

এর আগে গত ১০ নভেম্বর এম এ কাশেম ও রেহানা রহমানকে দুটি শর্তে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। শর্তগুলো হলো- তারা দেশের বাইরে যেতে পারবেন না এবং অনুমতি ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না।

বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই জামিন দিয়েছিলেন। আদালতে ওইদিন জামিনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক ও সাঈদ আহমেদ রাজা। আর দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।

 

নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের জমি কেনার নামে ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ টাকা ব্যয় দেখিয়ে তা আত্মসাতের অভিযোগে ৫ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১-এ মামলাটি করেন সংস্থাটির উপ-পরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী।

 

মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আজিম উদ্দিন আহমেদকে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য এমএ কাশেম, বেনজীর আহমেদ, রেহানা রহমান, মোহাম্মদ শাহজাহান ও আশালয় হাউজিং অ্যান্ড ডেভেলপারস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমিন মো. হিলালী।

 

মামলার এজাহারে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ বোর্ড অব ট্রাস্টিজ। বিশ্ববিদ্যালয়টির মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন অ্যান্ড আর্টিকেলস (রুলস অ্যান্ড রেগুলেশনস) অনুযায়ী এটি একটি দাতব্য, কল্যাণমুখী, অবাণিজ্যিক ও অলাভজনক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি), শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থাৎ সরকারের সুপারিশ অনুমোদনকে পাশ কাটিয়ে বোর্ড অব ট্রাস্টিজের কয়েকজন সদস্যের সম্মতির মাধ্যমে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ডেভেলপমেন্টের নামে ৯০৯৬ দশমিক ৮৮ ডেসিমল জমির ক্রয়মূল্য বাবদ ৩০৩ কোটি ৮২ লাখ ১৩ হাজার ৪৯৭ টাকা অন্যায়ভাবে লেনদেন হয়েছে।

এতে আরও বলা হয়, অভিযুক্তরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তহবিলের টাকা আত্মসাতের উদ্দেশ্যে কম দামে জমি কেনা সত্ত্বেও বেশি দাম দেখিয়ে প্রথমে বিক্রেতার নামে টাকা প্রদান করেন। পরবর্তী সময়ে বিক্রেতার কাছ থেকে নিজেদের লোকের নামে নগদ চেকের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আবার নিজেদের নামে এফডিআর করে রাখেন। এরপর আবার নিজেরা ওই এফডিআরের অর্থ উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেন। ওই অর্থ হস্তান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধও সংঘটন করেন।

 

এজাহারে আরও বলা হয়, এ ছয়জনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯/৪২০/১৬১/১৬৫ক ধারা এবং ১৯৪৭ সালের ২ নম্বর দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারাসহ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২)(৩) ধারায় মামলা হয়েছে।

 

এর আগে গত বছরের অক্টোবরে বিশ্ববিদ্যালয়টির দুই ট্রাস্টি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্যের দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে ওঠা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অনুসন্ধান ও তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দেয় দুদক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com