ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ যেসব ফল

স্থূলতা পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হতে পারার অন্যতম কারণ। আদর্শ ওজন রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। তাই টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের খাদ্যতালিকা ঠিক রাখা খুব প্রয়োজন। যেসব খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) কম ও ফাইবারের পরিমাণ বেশি, সেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভালো। কারণ এসব খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ওপর ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে।

 

টক ফলে শর্করা কম থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর উপকারী ফলের তালিকায় থাকবে লেবু, আমলকী, সবুজ আপেল, বাতাবি লেবু। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন’র তথ্য অনুযায়ী কিছু ফলে উপকারী ভিটামিন এবং ফাইবার রয়েছে। এসব উপাদান টাইপ টু ডায়াবেটিস দূরে রাখতে সহায়তা করে।

 

আমলকী: আমলকীতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি আছে। ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত আমলকী খেলে রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

 

আমড়া: আমড়া একটি পুষ্টিকর টক ফল। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটি খুবই উপকারী।

 

পেয়ারা: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে পেয়ারায়। ডায়েটারি ফাইবার থাকার কারণে জিআই খুবই কম পরিমাণে থাকে যা রক্তের শর্করা না বাড়িয়েই শরীরে দেয় বাড়তি পুষ্টি। এছাড়াও ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও সহায়তা করে।

 

আনারস: আনারস অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামাটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটরিয়াল একটি ফল, যা খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়, ফলে সাধারণত ভাইরাল জ্বরে আনারস অনেক বেশি কাজে দেয়। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও আনারস বেশ কার্যকরি।

 

স্ট্রবেরি ফল: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকায় অনেক নিয়মনীতি থাকে। তারা চাইলেই যেকোনো ফল খেতে পারেন না। কিছু ফল রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। যেমন আম, লিচু, কলা। এসব ফলে জিআই বা ইনডেক্স উপরের দিকের তালিকায় পড়ে। এ কারণে এসব ফল ডায়াবেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলা উচিত।

 

নাসপাতি: নাসপাতিতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি রয়েছে। তাই ডায়াবেটিক ডায়েটে নাসপাতি রাখা উচিত। এমনকি ফ্রুটস সালাদেও রাখা যেতে পারে এই ফল।

 

আপেল: বছরের প্রায় সময়ই এখন আপেল পাওয়া যায়। আপেলের গুণ সম্পর্কে বোধ হয় বলার কিছু প্রয়োজন নেই। এতেও ফাইবারের পরিমাণ অধিকমাত্রায় থাকায় আপেল খাওয়ার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি থাকে। এছাড়াও ভিটামিন-সি রয়েছে আপেলে।

 

পিচ: পিচ ফল খুবই উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরের বিপাক হার বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এই ফল। যাদের স্মুদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা রোজ সকালে দই বা ঘোলের সঙ্গে সামান্য দারচিনি গুঁড়ো, হালকা আদা এবং কয়েকটি পিচের টুকরো দিয়ে স্মুদি তৈরি করতে পারেন।

 

জাম: জামে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো এটি। সেই সঙ্গে স্ট্রবেরিসহ অন্যান্য জামজাতীয় ফল খাওয়া যেতে পারে। ফল বা সালাদ হিসেবে চেরি, স্ট্রবেরি ও জাম ইত্যাদি নিয়মিত খেতে পারেন। এতে বেশ উপকার পাবেন।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» দক্ষিণাঞ্চলের সর্ববৃহৎ দুর্গাপূজা এক মণ্ডপে ২০০-র বেশি প্রতিমা-বিগ্রহ! লাখো ভক্তের সমাগমের প্রস্তুতি

» সিটি ব্যাংক ও গার্ডিয়ানের অংশীদারিত্বে প্রথমবারের মত ব্যাংকিং অ্যাপ থেকে ইন্স্যুরেন্স পলিসি কিনতে পারবেন গ্রাহকেরা

» ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিজিটাল বীমা পলিসি ডক্যুমেন্ট প্রদানের সেবা চালু করল মেটলাইফ বাংলাদেশ

» নওগাঁয় মহিলাসহ ৪ ভুয়া পুলিশ আটক

» প্রাইম ব্যাংক ও প্রগ্রেসিভ লাইফ ইন্স্যুরেন্স-এর মধ্যে পেরোল ব্যাংকিং চুক্তি স্বাক্ষর

» ইসির ২ আইন সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন

» কল্কির সিক্যুয়েল থেকেও বাদ পড়লেন দীপিকা

» সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন

» বাংলাদেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করেছে: টুকু

» বায়তুল মোকাররম এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ শুরু

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আদর্শ যেসব ফল

স্থূলতা পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি না হতে পারার অন্যতম কারণ। আদর্শ ওজন রক্তে শর্করার মাত্রা ঠিক রাখে। তাই টাইপ-১ বা টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের খাদ্যতালিকা ঠিক রাখা খুব প্রয়োজন। যেসব খাবারে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) কম ও ফাইবারের পরিমাণ বেশি, সেগুলো ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে ভালো। কারণ এসব খাবার রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণের ওপর ইতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে।

 

টক ফলে শর্করা কম থাকে। ডায়াবেটিস রোগীর উপকারী ফলের তালিকায় থাকবে লেবু, আমলকী, সবুজ আপেল, বাতাবি লেবু। আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন’র তথ্য অনুযায়ী কিছু ফলে উপকারী ভিটামিন এবং ফাইবার রয়েছে। এসব উপাদান টাইপ টু ডায়াবেটিস দূরে রাখতে সহায়তা করে।

 

আমলকী: আমলকীতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি আছে। ডায়াবেটিস রোগীরা নিয়মিত আমলকী খেলে রক্তের চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।

 

আমড়া: আমড়া একটি পুষ্টিকর টক ফল। ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এই ফলটি খুবই উপকারী।

 

পেয়ারা: প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং ডায়েটারি ফাইবার রয়েছে পেয়ারায়। ডায়েটারি ফাইবার থাকার কারণে জিআই খুবই কম পরিমাণে থাকে যা রক্তের শর্করা না বাড়িয়েই শরীরে দেয় বাড়তি পুষ্টি। এছাড়াও ডায়েটারি ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতেও সহায়তা করে।

 

আনারস: আনারস অ্যান্টি ভাইরাল, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামাটরি এবং অ্যান্টি ব্যাকটরিয়াল একটি ফল, যা খেলে দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যায়, ফলে সাধারণত ভাইরাল জ্বরে আনারস অনেক বেশি কাজে দেয়। এছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণেও আনারস বেশ কার্যকরি।

 

স্ট্রবেরি ফল: ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকায় অনেক নিয়মনীতি থাকে। তারা চাইলেই যেকোনো ফল খেতে পারেন না। কিছু ফল রক্তে শর্করার মাত্রা বাড়িয়ে দিয়ে থাকে। যেমন আম, লিচু, কলা। এসব ফলে জিআই বা ইনডেক্স উপরের দিকের তালিকায় পড়ে। এ কারণে এসব ফল ডায়াবেটিস রোগীদের এড়িয়ে চলা উচিত।

 

নাসপাতি: নাসপাতিতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি রয়েছে। তাই ডায়াবেটিক ডায়েটে নাসপাতি রাখা উচিত। এমনকি ফ্রুটস সালাদেও রাখা যেতে পারে এই ফল।

 

আপেল: বছরের প্রায় সময়ই এখন আপেল পাওয়া যায়। আপেলের গুণ সম্পর্কে বোধ হয় বলার কিছু প্রয়োজন নেই। এতেও ফাইবারের পরিমাণ অধিকমাত্রায় থাকায় আপেল খাওয়ার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভর্তি থাকে। এছাড়াও ভিটামিন-সি রয়েছে আপেলে।

 

পিচ: পিচ ফল খুবই উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে। নিয়মিত খাওয়ার ফলে শরীরের বিপাক হার বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে এই ফল। যাদের স্মুদি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে তারা রোজ সকালে দই বা ঘোলের সঙ্গে সামান্য দারচিনি গুঁড়ো, হালকা আদা এবং কয়েকটি পিচের টুকরো দিয়ে স্মুদি তৈরি করতে পারেন।

 

জাম: জামে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের পরিমাণ বেশি থাকায় শরীরের জন্য অত্যন্ত ভালো এটি। সেই সঙ্গে স্ট্রবেরিসহ অন্যান্য জামজাতীয় ফল খাওয়া যেতে পারে। ফল বা সালাদ হিসেবে চেরি, স্ট্রবেরি ও জাম ইত্যাদি নিয়মিত খেতে পারেন। এতে বেশ উপকার পাবেন।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com