অভিনব প্রতারণায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি

সোনার বার, কয়েন ও ম্যাগনেটিক পিলার দেওয়ার নাম করে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। তারা নিজেকে কেউ কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তা, কেউ পরমাণু বিজ্ঞানী ও কেমিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের পাশে নিয়ে ভুক্তভোগীকে বলা হতো আপনি অপেক্ষা করেন, আপনাকে অফিসের ভেতর থেকে সোনারবার এনে দেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগ বিশ্বাসে স্বর্ণের বার বাবদ মোটামুটি টাকা দিতেন। কিন্তু কাস্টমসের ভেতরে ঢোকা সেই ব্যক্তি আর বের হয়ে আসতেন না। পরে ভুক্তভোগী বুঝতে পারতেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

 

সম্প্রতি এক নারীর কাছ থেকে রাজধানীর ভাটারা ও বসুন্ধরা এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এই ঘটনায় সেই নারী মামলা দায়ের করলে তদন্ত নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তর এলাকা থেকে চক্রটির মূল হতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

 

 

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বশির মোল্লা (৫৩), শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু (৩৩), দীন মোহাম্মদ (৪১), কথিত ডাক্তার মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ (৪০), শেখ আলী আকবর (৫৭), জামাল ফরাজী (৫৫), সোহেল শিকদার (৩০), বিল্লাল হোসেন (৩২) ও শাহরিয়ার ইকবাল (২৫)।

 

সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানান ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ।

DB-2

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগী এক নারীর দুটি ফ্ল্যাট বিক্রির কথা বলে তার সাথে প্রতারণা করে এই প্রতারক চক্র। ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনারবার বিভিন্ন মানুষের কাছে সরবরাহ করবে বলে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা বিভিন্ন সময়ে এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ১০ প্রতারককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। বিমানবন্দর থানা পুলিশ ও দক্ষিণখান থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রটির সদস্যদের গ্রেফতার করে।

 

এ সময় তাদের কাছ থেকে কাস্টমসের ভুয়া আইডি কার্ড, নকল সোনার বার, নকল সোনার বার তৈরির মেশিন উদ্ধার করা হয়।

 

মোহাম্মদ আশরাফ জানান, চক্রটি কেমিস্ট ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে এমনভাবে প্রদর্শন করে যে, তাদের কাছে স্বর্ণের বারটি নিয়ে গেলে তারা এ বিষয়ে সার্টিফিকেট দেবে। এভাবে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চক্রটি এ পর্যন্ত ১১ কোটি টাকা হাতে নিয়েছে। এই চক্রটিকে ডিবি পুলিশ এই মুহূর্তে গ্রেফতার করতে না পারলে ভাটারার সেই নারীর মতো অনেকে নিঃস্ব হয়ে যেত।

 

পুলিশ জানায়, এই দশ প্রতারকের মধ্যে কেউ নিজেকে কাস্টমস অফিসার হিসেবে পরিচয় দেয়। কেউ নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর, কেউ পরমানুবিজ্ঞানী আবার কেউ কেমিস্ট হিসেবে পরিচয় দেয়। চার থেকে পাঁচজন ক্রেতা সংগ্রহ করত। চক্রটি কাস্টমস হাউজের কাছে গিয়ে সেই লোককে পাশে দাঁড়িয়ে রেখে বলে- আমরা সোনার বার বের করে আনছি, আপনি অপেক্ষা করেন-এই বলে তারা কাছে মোটা অংকের টাকা নেয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যারা নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছে তারা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি নয়

» অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখায় নবজাতকের মৃত্যু, মূল হোতা সবুজ গ্রেফতার

» আ.লীগ ধর্মের বিভাজন সৃষ্টি করে ফায়দা হাসিল করেছে : টুকু

» চব্বিশের শহীদদের চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা হয়েছে: রিজভী

» আপনারা কি ওষুধ কোম্পানির দালাল? অত্যাচার বন্ধ করুন: আসিফ নজরুল

» সরকার না চাইলে ইসির পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়: বদিউল আলম

» হোয়াটসঅ্যাপের গ্রুপ কলে নতুন তিন সুবিধা

» প্রসবঘরটি হোক আস্থার জায়গা

» চিকিৎসাসেবা না কমিশনবাণিজ্য

» ট্রেনে কাটা পড়ে একজনের মৃত্যু

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

অভিনব প্রতারণায় ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি

সোনার বার, কয়েন ও ম্যাগনেটিক পিলার দেওয়ার নাম করে অভিনব প্রতারণার মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে ১১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। তারা নিজেকে কেউ কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তা, কেউ পরমাণু বিজ্ঞানী ও কেমিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন। বিমানবন্দরের কাস্টম হাউজের পাশে নিয়ে ভুক্তভোগীকে বলা হতো আপনি অপেক্ষা করেন, আপনাকে অফিসের ভেতর থেকে সোনারবার এনে দেওয়া হচ্ছে। ভুক্তভোগ বিশ্বাসে স্বর্ণের বার বাবদ মোটামুটি টাকা দিতেন। কিন্তু কাস্টমসের ভেতরে ঢোকা সেই ব্যক্তি আর বের হয়ে আসতেন না। পরে ভুক্তভোগী বুঝতে পারতেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন।

 

সম্প্রতি এক নারীর কাছ থেকে রাজধানীর ভাটারা ও বসুন্ধরা এলাকায় দুটি ফ্ল্যাট বিক্রির টাকা হাতিয়ে নেয় চক্রটি। এই ঘটনায় সেই নারী মামলা দায়ের করলে তদন্ত নেমে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ। সেই তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর উত্তর এলাকা থেকে চক্রটির মূল হতাসহ ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে।

 

 

গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন- বশির মোল্লা (৫৩), শেখ সোহাগ হোসেন মিন্টু (৩৩), দীন মোহাম্মদ (৪১), কথিত ডাক্তার মোজাম্মেল খান ওরফে আকাশ (৪০), শেখ আলী আকবর (৫৭), জামাল ফরাজী (৫৫), সোহেল শিকদার (৩০), বিল্লাল হোসেন (৩২) ও শাহরিয়ার ইকবাল (২৫)।

 

সোমবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের এসব তথ্য জানান ডিবির ওয়ারী বিভাগের ডিসি মোহাম্মদ আশরাফ।

DB-2

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ভুক্তভোগী এক নারীর দুটি ফ্ল্যাট বিক্রির কথা বলে তার সাথে প্রতারণা করে এই প্রতারক চক্র। ম্যাগনেটিক পিলার, কয়েন ও সোনারবার বিভিন্ন মানুষের কাছে সরবরাহ করবে বলে অনেক টাকা হাতিয়ে নেয়। তারা বিভিন্ন সময়ে এ ঘটনায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ ১০ প্রতারককে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে। বিমানবন্দর থানা পুলিশ ও দক্ষিণখান থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে চক্রটির সদস্যদের গ্রেফতার করে।

 

এ সময় তাদের কাছ থেকে কাস্টমসের ভুয়া আইডি কার্ড, নকল সোনার বার, নকল সোনার বার তৈরির মেশিন উদ্ধার করা হয়।

 

মোহাম্মদ আশরাফ জানান, চক্রটি কেমিস্ট ও পরমাণু বিজ্ঞানীকে এমনভাবে প্রদর্শন করে যে, তাদের কাছে স্বর্ণের বারটি নিয়ে গেলে তারা এ বিষয়ে সার্টিফিকেট দেবে। এভাবে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে চক্রটি এ পর্যন্ত ১১ কোটি টাকা হাতে নিয়েছে। এই চক্রটিকে ডিবি পুলিশ এই মুহূর্তে গ্রেফতার করতে না পারলে ভাটারার সেই নারীর মতো অনেকে নিঃস্ব হয়ে যেত।

 

পুলিশ জানায়, এই দশ প্রতারকের মধ্যে কেউ নিজেকে কাস্টমস অফিসার হিসেবে পরিচয় দেয়। কেউ নিজেকে অবসরপ্রাপ্ত মেজর, কেউ পরমানুবিজ্ঞানী আবার কেউ কেমিস্ট হিসেবে পরিচয় দেয়। চার থেকে পাঁচজন ক্রেতা সংগ্রহ করত। চক্রটি কাস্টমস হাউজের কাছে গিয়ে সেই লোককে পাশে দাঁড়িয়ে রেখে বলে- আমরা সোনার বার বের করে আনছি, আপনি অপেক্ষা করেন-এই বলে তারা কাছে মোটা অংকের টাকা নেয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com