চাঁদার লাখ লাখ টাকা যায় কোথায়

সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে পথে পথে চাঁদা তোলা হয়। লাখ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে আসছেন মালিক ও শ্রমিকরা। কিন্তু উত্তোলনকৃত চাঁদার টাকার কী হয়? তার কোনো হদিস নেই। এ দাবি মালিক-শ্রমিকদের। শুধু রাজশাহীর তানোর, চৌবাড়িয়া, কেশরহাট, মোহনপুর, নওহাটা- এই ছয় পয়েন্টে একজন সিএনজি চালককে দিনে দিতে হয় ১৩৫ টাকা চাঁদা।

 

মালিক ও শ্রমিকদের দাবি, দুর্ঘটনার শিকার হলেও সংগঠনের পক্ষ থেকে সাড়া মেলে না। দুর্ঘটনার পর সিএনজি পুলিশ থানায় নিলে সংগঠনের পক্ষ থেকে কেউ এলেও যাবতীয় খরচ মালিককেই বহন করতে হয়। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হলেও নিজ খরচে চিকিৎসা নেন তারা।

 

রাজশাহী জেলা মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার মিলুর দাবি রাজশাহীতে সমিতির তালিকাভুক্ত ৫৫০ জন সদস্য আছেন। এসব সদস্যের ৫৫০টি সিএনজি চলাচল করে। সিএনজির এই সংখ্যা হলে প্রতিদিন ১ লাখ ১৮ হাজার ২৫০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। আর মাসিক ৩০০ টাকার হিসাবে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

 

তবে সংগঠনের এক নেতা বলছেন, সিএনজির সংখ্যা আরও বেশি। তালিকাভুক্ত ও তালিকা ছাড়া সিএনজির সংখ্যা ১ হাজার ৩০০টির মতো। বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন ১০০টি সিএনজি বন্ধ থাকে। আর সড়কে চলাচল করে ১ হাজার ২০০টি সিএনজি। এসব গাড়ি থেকে জেলার উপজেলা পর্যায়ের ১০টি পয়েন্টে চাঁদা তোলা হয়। একটি সিএনজি এই ১০টি পয়েন্টে গেলে চালককে দিতে হবে ২১৫ টাকা। সেই হিসাবে ১ হাজার ২০০ সিএনজির চালককে প্রতিদিন চাঁদা বাবদ দিতে হয় ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। মাসের হিসাবে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিএনজিচালক জানান, তানোরে ২০ টাকা, চৌবাড়িয়ায় ২০ টাকা, কেশরহাটে ১০ টাকা, মোহনপুরে ১০ টাকা, নওহাটায় ১০ টাকা, মোহনগঞ্জে ২০ টাকা, তাহেরপুর ২০ টাকা, হাটগাঙ্গোপাড়ায় ২০ টাকা ও ভবানীগঞ্জে ২০ টাকা করে চাঁদা নেয় ‘চেন মাস্টাররা’। এ ছাড়া নগরীর তালাইমারীতে ২০ টাকা ও কোর্ট স্টেশনে ১৫ টাকা করে নেওয়া হয় বাইরের সিএনজি থেকে। এই দুই পয়েন্টে চাঁদার আওতার বাইরে থাকে গৌরহাঙ্গা রেলগেট স্ট্যান্ডের সিএনজিগুলো। শুধু স্ট্যান্ডের নাম বললেই ছেড়ে দেন ‘চেন মাস্টাররা’। এ ছাড়া রেলগেটে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ছোট সিএনজি ৪০ টাকা ও বড় সিএনজি ৫০ টাকা নেওয়া হয়। শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে আরও ১৫ টাকা নেওয়া হয়।

 

এর বাইরে সিএনজি মালিককে প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। বিনিময়ে দেওয়া হয় একটি স্টিকার। সেই স্টিকারের মেয়াদ এক মাস। স্টিকার লাগানো থাকলে পয়েন্টগুলোতে সমস্যা হয় না। রাজশাহী জেলা মিশুক সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার মিলু বলেন, ‘আমাদের সব সিএনজি লোকাল সড়কে চলে। বিভিন্ন পয়েন্টে ‘চেন মাস্টার’ আছে। তারা সিএনজি থেকে ১০-২০ টাকা করে চাঁদা নেয়। এই ‘চেন মাস্টার’গুলো সিএনজির সময় থেকে সববিষয় মেইনটেন (তদারকি) করে। এই টাকাগুলো থেকে তাদের বেতন দেওয়া হয়। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘নির্বাচনকালীন কিছু সংস্কার প্রয়োজন, এরপর এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে কোনো দ্বিমত থাকবে না’

» সাকিবকে দ্রুত দেশে আসতে দিন, এখন পর্যন্ত দেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার সে: ইলিয়াস

» লন্ডনে ড. ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন তারেক রহমান

» হাসনাতের আতিথিয়েতায় শহীদ পরিবার-আহতদের পাশাপাশি আমরাও সিক্ত

» সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশি মদ, ফেনসিডিল ও টাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার

» শিশুদের ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে দু’দলের সংঘর্ষে বৃদ্ধ নিহত ,অন্তত ৫

» ড. ইউনূস ছাগল দিয়ে হালচাষের চেষ্টা করছেন : কনক সরওয়ার

» এপ্রিলে নির্বাচন মাথায় রেখে সময়মতো রোডম্যাপ দেবে ইসি: যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা

» বোমা হামলা চালিয়ে বিএনপি নেতাকে হত্যার ঘটনায় ২জন গ্রেফতার

» বক্স অফিসে অক্ষয় ঝড়, ৩ দিনে ১০০ কোটির পথে ‘হাউসফুল ৫’

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

চাঁদার লাখ লাখ টাকা যায় কোথায়

সিএনজিচালিত অটোরিকশা থেকে পথে পথে চাঁদা তোলা হয়। লাখ লাখ টাকা চাঁদা দিয়ে আসছেন মালিক ও শ্রমিকরা। কিন্তু উত্তোলনকৃত চাঁদার টাকার কী হয়? তার কোনো হদিস নেই। এ দাবি মালিক-শ্রমিকদের। শুধু রাজশাহীর তানোর, চৌবাড়িয়া, কেশরহাট, মোহনপুর, নওহাটা- এই ছয় পয়েন্টে একজন সিএনজি চালককে দিনে দিতে হয় ১৩৫ টাকা চাঁদা।

 

মালিক ও শ্রমিকদের দাবি, দুর্ঘটনার শিকার হলেও সংগঠনের পক্ষ থেকে সাড়া মেলে না। দুর্ঘটনার পর সিএনজি পুলিশ থানায় নিলে সংগঠনের পক্ষ থেকে কেউ এলেও যাবতীয় খরচ মালিককেই বহন করতে হয়। এ ছাড়া দুর্ঘটনায় আহত হলেও নিজ খরচে চিকিৎসা নেন তারা।

 

রাজশাহী জেলা মিশুক-সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার মিলুর দাবি রাজশাহীতে সমিতির তালিকাভুক্ত ৫৫০ জন সদস্য আছেন। এসব সদস্যের ৫৫০টি সিএনজি চলাচল করে। সিএনজির এই সংখ্যা হলে প্রতিদিন ১ লাখ ১৮ হাজার ২৫০ টাকা চাঁদা তোলা হয়। আর মাসিক ৩০০ টাকার হিসাবে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ১ লাখ ৫৬ হাজার টাকা।

 

তবে সংগঠনের এক নেতা বলছেন, সিএনজির সংখ্যা আরও বেশি। তালিকাভুক্ত ও তালিকা ছাড়া সিএনজির সংখ্যা ১ হাজার ৩০০টির মতো। বিভিন্ন কারণে প্রতিদিন ১০০টি সিএনজি বন্ধ থাকে। আর সড়কে চলাচল করে ১ হাজার ২০০টি সিএনজি। এসব গাড়ি থেকে জেলার উপজেলা পর্যায়ের ১০টি পয়েন্টে চাঁদা তোলা হয়। একটি সিএনজি এই ১০টি পয়েন্টে গেলে চালককে দিতে হবে ২১৫ টাকা। সেই হিসাবে ১ হাজার ২০০ সিএনজির চালককে প্রতিদিন চাঁদা বাবদ দিতে হয় ২ লাখ ৫৮ হাজার টাকা। মাসের হিসাবে চাঁদার পরিমাণ দাঁড়ায় ৭৭ লাখ ৪০ হাজার টাকা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক সিএনজিচালক জানান, তানোরে ২০ টাকা, চৌবাড়িয়ায় ২০ টাকা, কেশরহাটে ১০ টাকা, মোহনপুরে ১০ টাকা, নওহাটায় ১০ টাকা, মোহনগঞ্জে ২০ টাকা, তাহেরপুর ২০ টাকা, হাটগাঙ্গোপাড়ায় ২০ টাকা ও ভবানীগঞ্জে ২০ টাকা করে চাঁদা নেয় ‘চেন মাস্টাররা’। এ ছাড়া নগরীর তালাইমারীতে ২০ টাকা ও কোর্ট স্টেশনে ১৫ টাকা করে নেওয়া হয় বাইরের সিএনজি থেকে। এই দুই পয়েন্টে চাঁদার আওতার বাইরে থাকে গৌরহাঙ্গা রেলগেট স্ট্যান্ডের সিএনজিগুলো। শুধু স্ট্যান্ডের নাম বললেই ছেড়ে দেন ‘চেন মাস্টাররা’। এ ছাড়া রেলগেটে মালিক সমিতির পক্ষ থেকে ছোট সিএনজি ৪০ টাকা ও বড় সিএনজি ৫০ টাকা নেওয়া হয়। শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে আরও ১৫ টাকা নেওয়া হয়।

 

এর বাইরে সিএনজি মালিককে প্রতি মাসে ৩০০ টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। বিনিময়ে দেওয়া হয় একটি স্টিকার। সেই স্টিকারের মেয়াদ এক মাস। স্টিকার লাগানো থাকলে পয়েন্টগুলোতে সমস্যা হয় না। রাজশাহী জেলা মিশুক সিএনজি মালিক সমিতির সভাপতি আবদুস সাত্তার মিলু বলেন, ‘আমাদের সব সিএনজি লোকাল সড়কে চলে। বিভিন্ন পয়েন্টে ‘চেন মাস্টার’ আছে। তারা সিএনজি থেকে ১০-২০ টাকা করে চাঁদা নেয়। এই ‘চেন মাস্টার’গুলো সিএনজির সময় থেকে সববিষয় মেইনটেন (তদারকি) করে। এই টাকাগুলো থেকে তাদের বেতন দেওয়া হয়। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com