জাতীয় প্রেসক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে প্রয়াত অনারারী জীবন সদস্য তোয়াব খান ও সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনসহ ১৬ সদস্যের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এই স্মরণসভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, করোনা মহামারির ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি আরও অনেক স্বজন, সুহৃদ-সহযোগীকে। সাংবাদিকতা পেশার উন্নয়ন ও মর্যাদা বৃদ্ধির ধারাবাহিক যে চর্চা ও প্রয়াস, সেই অভিযাত্রার অগ্রসৈনিক ছিলেন তাঁদের অনেকে।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আমাদের প্রিয় সেকেন্ড হোম জাতীয় প্রেস ক্লাবের ৬৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে তাঁদের বিনম্র শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও গভীর কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। যাঁরা ইন্তেকাল করেছেন, তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। তাঁদের রুহের মাগফেরাতের জন্যে পরম করুণাময়ের দরবারে প্রার্থনা করি।
প্রেসক্লাব সভাপতি বলেন, এই স্মরণসভার আয়োজনের কথা চিন্তা করছিলাম, জানতাম না এখানে তোয়াব খানের নাম যুক্ত হবে। তিনি কখনোই বৃদ্ধ হননি। তাঁর কর্মকাণ্ড ছিল তরুণ। যার প্রমাণ শেষ বয়সে এসে পত্রিকা বের করেছেন। একই সাথে সাবেক প্রেসক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ ছিলেন চার চারবারের সভাপতি। সাংবাদিকদের রুটি-রুজির সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন। একবার অভিমান করে প্রেসক্লাবে আসা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। খুব বেশি দিন রাগ করে থাকতে পারেননি। যার মূলে সাংবাদিকতাকে ভালোবাসতেন। ভালোবাসতেন আশপাশের মানুষগুলোকে।
এসময় জাতীয় প্রেসক্লাবে সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, করোনা-দুঃসময়ে অন্যসব পেশার মতো সাংবাদিকতা পেশায়ও অস্বাভাবিক ওলট-পালট, বিপর্যয় ঘটেছিল। জীবিকার অনিশ্চয়তার পাশাপাশি সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করাও দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার চাপ সামলাতে না পেরে অনেকের মৃত্যু ত্বরান্বিত হয়েছে। গত এক বছরে আমরা হারিয়েছি ক্লাবের জীবনসদস্য সাংবাদিক সম্প্রদায়ের অভিভাবক ও বাতিঘর মুক্তিযোদ্ধা সাংবাদিক তোয়াব খান, ক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, বরেণ্য গীতিকার ও কবি কে জি মোস্তফাসহ মোট ১৬ জন সুহৃদ সদস্যকে।
ইলিয়াস খান বলেন, অনন্তলোকে যাঁরা চলে গেছেন, তাঁদের আত্মীয় পরিজনের প্রতি আমাদের গভীর আন্তরিক সমবেদনা। তাঁদের প্রিয়জন হারানোর যে মনোকষ্ট, তার অংশীদার আমরাও। আত্মীয় বিয়োগের আঘাত ও প্রবল শোক সহ্য করার মতো শক্তি ও ধৈর্য যেন আল্লাহ তাদের দান করেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই লগ্নে আমাদের যে সাথীরা এখন অবর্তমান, আমরা মনে করি তাঁদের স্বপ্ন-আকাঙ্ক্ষা, আদর্শ ও অবদান আমাদের সঙ্গে সব সময় রয়েছে। সেই উজ্জ্বল স্মৃতির পাথেয় সম্বল করে আমরা সামনে এগিয়ে যাবো।
স্মরণসভায় জাতীয় প্রেসক্লাবের আজীবন সদস্য তোয়াব খান, সাবেক সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ, গীতিকার কবি কে জি মোস্তফা, এস. এম. শওকত হোসেন, রাজা সিরাজ, মো. শামীম মাশরেকী, সৈয়দ আকরাম, খন্দকার আনিছুর রহমান, পীর হাবিবুর রহমান, শামসুল আলম বেলাল, সাগর বিশ্বাস, এএম মুফাজ্জল, এইচ এম জালাল আহমেদ, আবুল বাশার নূরু, শফিকুল ইসলাম ইউনূস, গিয়াস উদ্দিন আহমেদকে বিশেষভাবে স্মরণ করা হয়।