নামাজ আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়

 আল্লামা মাহমুদুল হাসান : রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি কাজ দ্রুত সম্পাদনের নির্দেশ দিয়েছেন তার একটি হচ্ছে নামাজ। নামাজ আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় ইবাদত। তাই যে ব্যক্তি সঠিক-সুন্দরভাবে নামাজ আদায় করে সে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় বান্দা।

 

হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। এতে আটকে না পড়লে বান্দা নাজাত পেয়ে যাবে বলে হাদিসে সুসংবাদ রয়েছে। কবরে-হাশরে ও পুলসিরাতেও নামাজ নামাজিকে সহায়তা করে মুক্ত করে নেবে বলে বিশুদ্ধ হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।

 

দ্বিতীয়টি হচ্ছে বিয়েশাদি। ছেলেমেয়ে বালেগ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিয়ে দেবে। এতেই তাদের কল্যাণ ও চরিত্রগত উন্নতি নিহিত। অন্যথায় তারা পাপাচারে লিপ্ত হতে পারে। এর জন্য দায়ী হবে মাতা-পিতা ও মুরুব্বিরা। ১৫ বছর বয়সে ছেলেমেয়েরা অবশ্যই বালেগ হয়ে যায়। এরপর দ্রুত বিয়েশাদির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

 

বড়ই পরিতাপের বিষয়, এ বয়সে বিয়েশাদিকে অকল্যাণের কারণ মনে করা হয়। ২০ বছর পার হয়ে গেলেও ছেলেমেয়েদের নাবালেগ ও ছোট মনে করা হয়। ফলে এ বয়সের যুবকদের মধ্যে আজকাল চরিত্রগত দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাতে যুবসমাজ ধ্বংস হতে চলেছে।

 

আমাকে এক পরিচিত লোক তার মেয়েকে জিনে ধরেছে বলে ঝাড়-ফুঁকের জন্য অনুরোধ জানালে আমি পর্দার প্রশ্ন তুলে তাতে অসম্মতি জানাই। কিন্তু মেয়ে ছোট এবং নাবালেগ বলে জানালে আমি তার মন রক্ষার্থে তার বাসায় হাজির হই। মেয়েটিকে সামনে আনা হলে আমি মাথা নিচু করে তাকে জিজ্ঞেস করি, আপনার মেয়ের বয়স কত? সে উত্তরে বলল, খুবই কম মাত্র ২০-২২ বছর। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। দীনের জ্ঞান না থাকলে মানুষ এমনই হয়। যদি ২০-২২ বছর বয়সেও নাবালেগ থাকে তাহলে বালেগ হবে কবে?

 

তৃতীয়টি হচ্ছে, মৃত ব্যক্তির জানাজা নামাজ এবং দ্রুত দাফন করা। দেরি না করা, কারণ দেরি করলে দুই ধরনের খারাবি হয়। লোকটি জান্নাতি হয়ে থাকলে দাফন-কাফনে দেরির কারণে তার কষ্ট হয়। আত্মীয়স্বজনের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। কারণ দাফনের সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতি হতে পারে এবং জান্নাতের চরম ও পরম শান্তি ভোগ করতে পারে। তাই দেরি করার দ্বারা তার কষ্ট হয়। দেরিটুকু তার অসহ্যের কারণ হয়।

 

যদি দু’জন লোক ক্ষুধার তাড়নায় ভুগতে থাকে, এ অবস্থায় একজনকে খাবার দেওয়া হয় আর একজনকে না দেওয়া হয়, তাহলে এ লোকটির কাছে এরূপ আচরণ আগের তুলনায় অধিক কষ্টের হয়। অনুরূপভাবে জান্নাতি ব্যক্তিকে দাফন-কাফনে দেরি করা হলে জান্নাতের সামগ্রী উপভোগে দেরি হওয়ার কষ্টে সে আত্মীয়স্বজনের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়।

 

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, যারা আপন তারাই কাফনের কাজে দেরি করে। এর চেয়ে অধিক দুঃখের বিষয় হচ্ছে সুন্নাতের বরখেলাপ। এহেন কর্মকান্ড আজকাল ওলামা-মাশায়েখ ও পীর সাহেবদের পরিবেশেও শুরু হয়েছে।

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।  সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মানুষের চাহিদা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে কারিকুলাম প্রণয়নের আহ্বান

» উপজেলা নির্বাচন : ৩ দিনের জন্য বন্ধ হচ্ছে বাইক চলাচল

» তীব্র দাবদাহ মোকাবিলায় দেশব্যপী বাংলালিংক-এর বিনামূল্যে পানি ও স্যালাইন বিতরণ

» শিগগিরই অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইনের বিধিমালা জারি – সংসদীয় কমিটিকে ভূমি মন্ত্রণালয়

» ক্র্যাব (CRAB) থেকে আবারও ব্র্যাক ব্যাংকের ‘এএএ’ ক্রেডিট রেটিং অর্জন

» নারীদের মধ্যে কেন বাড়ছে হৃদরোগের ঝুঁকি

» সোমবার থেকে শাহজালালে ৩ ঘণ্টা করে ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ

» বরিশালে বাস চলাচল শুরু

» বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ভোটের অংশ: হানিফ

» চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ করার বিষয়ে যা জানালেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নামাজ আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয়

 আল্লামা মাহমুদুল হাসান : রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনটি কাজ দ্রুত সম্পাদনের নির্দেশ দিয়েছেন তার একটি হচ্ছে নামাজ। নামাজ আল্লাহর সর্বাধিক প্রিয় ইবাদত। তাই যে ব্যক্তি সঠিক-সুন্দরভাবে নামাজ আদায় করে সে আল্লাহর কাছে সর্বাধিক প্রিয় বান্দা।

 

হাশরের ময়দানে সর্বপ্রথম নামাজের হিসাব গ্রহণ করা হবে। এতে আটকে না পড়লে বান্দা নাজাত পেয়ে যাবে বলে হাদিসে সুসংবাদ রয়েছে। কবরে-হাশরে ও পুলসিরাতেও নামাজ নামাজিকে সহায়তা করে মুক্ত করে নেবে বলে বিশুদ্ধ হাদিসে উল্লেখ রয়েছে।

 

দ্বিতীয়টি হচ্ছে বিয়েশাদি। ছেলেমেয়ে বালেগ হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাদের বিয়ে দেবে। এতেই তাদের কল্যাণ ও চরিত্রগত উন্নতি নিহিত। অন্যথায় তারা পাপাচারে লিপ্ত হতে পারে। এর জন্য দায়ী হবে মাতা-পিতা ও মুরুব্বিরা। ১৫ বছর বয়সে ছেলেমেয়েরা অবশ্যই বালেগ হয়ে যায়। এরপর দ্রুত বিয়েশাদির ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।

 

বড়ই পরিতাপের বিষয়, এ বয়সে বিয়েশাদিকে অকল্যাণের কারণ মনে করা হয়। ২০ বছর পার হয়ে গেলেও ছেলেমেয়েদের নাবালেগ ও ছোট মনে করা হয়। ফলে এ বয়সের যুবকদের মধ্যে আজকাল চরিত্রগত দুর্বলতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। তাতে যুবসমাজ ধ্বংস হতে চলেছে।

 

আমাকে এক পরিচিত লোক তার মেয়েকে জিনে ধরেছে বলে ঝাড়-ফুঁকের জন্য অনুরোধ জানালে আমি পর্দার প্রশ্ন তুলে তাতে অসম্মতি জানাই। কিন্তু মেয়ে ছোট এবং নাবালেগ বলে জানালে আমি তার মন রক্ষার্থে তার বাসায় হাজির হই। মেয়েটিকে সামনে আনা হলে আমি মাথা নিচু করে তাকে জিজ্ঞেস করি, আপনার মেয়ের বয়স কত? সে উত্তরে বলল, খুবই কম মাত্র ২০-২২ বছর। এই হচ্ছে আমাদের অবস্থা। দীনের জ্ঞান না থাকলে মানুষ এমনই হয়। যদি ২০-২২ বছর বয়সেও নাবালেগ থাকে তাহলে বালেগ হবে কবে?

 

তৃতীয়টি হচ্ছে, মৃত ব্যক্তির জানাজা নামাজ এবং দ্রুত দাফন করা। দেরি না করা, কারণ দেরি করলে দুই ধরনের খারাবি হয়। লোকটি জান্নাতি হয়ে থাকলে দাফন-কাফনে দেরির কারণে তার কষ্ট হয়। আত্মীয়স্বজনের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়। কারণ দাফনের সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতি হতে পারে এবং জান্নাতের চরম ও পরম শান্তি ভোগ করতে পারে। তাই দেরি করার দ্বারা তার কষ্ট হয়। দেরিটুকু তার অসহ্যের কারণ হয়।

 

যদি দু’জন লোক ক্ষুধার তাড়নায় ভুগতে থাকে, এ অবস্থায় একজনকে খাবার দেওয়া হয় আর একজনকে না দেওয়া হয়, তাহলে এ লোকটির কাছে এরূপ আচরণ আগের তুলনায় অধিক কষ্টের হয়। অনুরূপভাবে জান্নাতি ব্যক্তিকে দাফন-কাফনে দেরি করা হলে জান্নাতের সামগ্রী উপভোগে দেরি হওয়ার কষ্টে সে আত্মীয়স্বজনের প্রতি অসন্তুষ্ট হয়।

 

অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, যারা আপন তারাই কাফনের কাজে দেরি করে। এর চেয়ে অধিক দুঃখের বিষয় হচ্ছে সুন্নাতের বরখেলাপ। এহেন কর্মকান্ড আজকাল ওলামা-মাশায়েখ ও পীর সাহেবদের পরিবেশেও শুরু হয়েছে।

লেখক : আমির, আল হাইআতুল উলয়া ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশ।  সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com