ভালুকায় খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভর করে শীত নামছে প্রকৃতির বুকে। এরই মধ্যে খেজুরের রস সংগ্রহে গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বাঁধার কাজে ব্যস্ত ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার গাছিরা।

 

চলছে খেজুরের রস সংগ্রহে বিশেষ পদ্ধতিতে গাছের আগায় কাটাকুটি। এরই ধারাবাহিকতায় ধারালো গাছি দা (দেশীয় তৈরি দা) দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ বের করছেন তারা। যাকে গাছিরা চাঁচ দেওয়া বলে থাকে। এরপর নোলক (এক ধরনের বিশেষ নল) স্থাপনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় খেজুরের রস। তা দিয়ে তৈরি করা হবে লোভনীয় গুড় ও পাটালি।

 

সরেজমিনে উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, অনেক গ্রামাঞ্চলে এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। গ্রামের কৃষকরা জানান, আগের মতো এখন তেমন আর খেজুর গাছ চোখে পড়ে না। তবে ভালুকা উপজেলায় ডাকাতিয়া, বিরুনীয়া, রাজৈ, মল্লিকবাড়ি, কাচিনা ও উথুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামজুড়ে খেজুরের গাছ রয়েছে।

 

ভালুকায় এই মৌসুমে প্রতিটি গ্রামের ঘরে ঘরে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ে গুড়-পাটালি তৈরিতে। গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারীরা খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা-পায়েসসহ নাম না জানা হরেক রকমের মুখরোচক খাবার তৈরিতে ব্যস্ত থাকে। সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে খেজুর গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

 

গাছি (রস সংগ্রহকারী) আবুল কালাম বলেন, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে গাছের আগা কাটা হয়। ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা মজুরি নিয়ে তারা গাছ কেটে থাকেন। আর শীত মৌসুমের পুরো চার মাস তারা বাড়িতে খেজুরের গুড় ও পাটালি তৈরি করেন।

 

খেজুর গাছ কেটে আপনার সংসার চলে কি? এমন প্রশ্নে গাছি বলেন, ‘কি কমু ভাই, জীবন তো বাঁচাতে হবে। তবে আবার অনেকটা শখ আছে বটে। এ মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ১শ খেজুর গাছ নিয়েছি। মৌসুমে প্রতি খেজুর গাছ থেকে দুই কেজি রস জ্বাল করে দিতে হবে কৃষককে। তারপর যা থাকে তা বাজারে বিক্রি করে যা টাকা পাই। তা দিয়ে আমার সংসার চলে।

 

এদিকে গ্রামের কৃষকরা বলেন, এলাকায় বাপ-দাদার অনেক পুরনো গাছ ছিল। এখন আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। ফলে এখন তেমন খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। এই মৌসুমে বেপারিরা ভালুকা, মল্লিকবাড়ি, কাচিনা, উথুরা, ধীতপুর, বিরুনীয়া ও ডাকাতিয়া, রাজৈসহ বিভিন্ন বাজারে রস ও গুড়ের হাটে আসেন। তারা এসব হাট থেকে খেজুরের গুড় ও পাটালি কিনে সারাদেশে সরবরাহ করেন। তবে প্রথম প্রথম দাম ভালো পাওয়া যায়।

সূএ:পূর্বপশ্চিম ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সংস্কারবিহীন কোনো নির্বাচন জামায়াত গ্রহণ করবে না: তাহের

» ৪৮তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ১৮ জুলাই

» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত আরও ৮১১ জন আসামি গ্রেফতার

» নির্বাচনী বাজেটে কোনো কার্পণ্য করা হবে না: অর্থ উপদেষ্টা

» ‘জুলাই শহীদ স্মৃতি বৃত্তি’ চালু করল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়

» জুলাই শহীদদের স্মরণে গণসংহতির শ্রদ্ধা, সরকারকে সতর্ক করলেন সাকি

» ইউপিডিএফ সদস্য গ্রেপ্তার

» ১৬ বছর অপেক্ষা নয়, প্রতিবছর অভ্যুত্থান স্মরণের অঙ্গীকার

» জুলাই গণহত্যা : শেখ হাসিনাসহ ৩ আসামির পক্ষে শুনানি সোমবার

» ‘জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি খালেদা জিয়া

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ভালুকায় খেজুরের রস সংগ্রহে ব্যস্ত গাছিরা

উত্তরের হিমেল হাওয়ায় ভর করে শীত নামছে প্রকৃতির বুকে। এরই মধ্যে খেজুরের রস সংগ্রহে গাছে গাছে মাটির হাঁড়ি বাঁধার কাজে ব্যস্ত ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার গাছিরা।

 

চলছে খেজুরের রস সংগ্রহে বিশেষ পদ্ধতিতে গাছের আগায় কাটাকুটি। এরই ধারাবাহিকতায় ধারালো গাছি দা (দেশীয় তৈরি দা) দিয়ে খেজুর গাছের সোনালী অংশ বের করছেন তারা। যাকে গাছিরা চাঁচ দেওয়া বলে থাকে। এরপর নোলক (এক ধরনের বিশেষ নল) স্থাপনের মাধ্যমে সংগ্রহ করা হয় খেজুরের রস। তা দিয়ে তৈরি করা হবে লোভনীয় গুড় ও পাটালি।

 

সরেজমিনে উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, অনেক গ্রামাঞ্চলে এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে খেজুর গাছ। গ্রামের কৃষকরা জানান, আগের মতো এখন তেমন আর খেজুর গাছ চোখে পড়ে না। তবে ভালুকা উপজেলায় ডাকাতিয়া, বিরুনীয়া, রাজৈ, মল্লিকবাড়ি, কাচিনা ও উথুরা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামজুড়ে খেজুরের গাছ রয়েছে।

 

ভালুকায় এই মৌসুমে প্রতিটি গ্রামের ঘরে ঘরে মানুষ ব্যস্ত হয়ে পড়ে গুড়-পাটালি তৈরিতে। গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারীরা খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা-পায়েসসহ নাম না জানা হরেক রকমের মুখরোচক খাবার তৈরিতে ব্যস্ত থাকে। সুস্বাদু পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে খেজুর গুড় ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

 

গাছি (রস সংগ্রহকারী) আবুল কালাম বলেন, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে গাছের আগা কাটা হয়। ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকা মজুরি নিয়ে তারা গাছ কেটে থাকেন। আর শীত মৌসুমের পুরো চার মাস তারা বাড়িতে খেজুরের গুড় ও পাটালি তৈরি করেন।

 

খেজুর গাছ কেটে আপনার সংসার চলে কি? এমন প্রশ্নে গাছি বলেন, ‘কি কমু ভাই, জীবন তো বাঁচাতে হবে। তবে আবার অনেকটা শখ আছে বটে। এ মৌসুমে কৃষকের কাছ থেকে ১শ খেজুর গাছ নিয়েছি। মৌসুমে প্রতি খেজুর গাছ থেকে দুই কেজি রস জ্বাল করে দিতে হবে কৃষককে। তারপর যা থাকে তা বাজারে বিক্রি করে যা টাকা পাই। তা দিয়ে আমার সংসার চলে।

 

এদিকে গ্রামের কৃষকরা বলেন, এলাকায় বাপ-দাদার অনেক পুরনো গাছ ছিল। এখন আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। ফলে এখন তেমন খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। এই মৌসুমে বেপারিরা ভালুকা, মল্লিকবাড়ি, কাচিনা, উথুরা, ধীতপুর, বিরুনীয়া ও ডাকাতিয়া, রাজৈসহ বিভিন্ন বাজারে রস ও গুড়ের হাটে আসেন। তারা এসব হাট থেকে খেজুরের গুড় ও পাটালি কিনে সারাদেশে সরবরাহ করেন। তবে প্রথম প্রথম দাম ভালো পাওয়া যায়।

সূএ:পূর্বপশ্চিম ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com