স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বর্তমান সরকার হিমালয় পর্বতের মতো দাঁড়িয়ে আছে। বিরোধী দলের তিনজনের ধাক্কায় হিমালয় পর্বত পড়বে না। কাজেই সামনে নির্বাচনে দেখা যাবে জনগণ কাদের মূল্যায়ন করেন।
আজ বিকেলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা গড়পাড়া শুভ্র সেন্টারে জেলা পরিষদ আয়োজিত কোভিড-১৯ মোকাবিলায় কর্মহীন ৫০০ পরিবারের মাঝে খাদ্য, বস্ত্র ও সুরক্ষা সামগ্রী এবং মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবসহ ১২টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বই বিতরণের সময় তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, যারা পদ্মাসেতু, রাস্তাঘাট, মেট্রোরেল, বিদ্যুৎ, খাদ্যের সংকট মোকাবিলা করেছেন জনগণ তাদের মূল্যায়ন করবে? না যারা সার ও বিদ্যুতের জন্য জনগণকে গুলি করে মেরেছে তাদের মূল্যায়ন করবে? জনগণ উন্নয়নের সঙ্গে আছে, ভবিষ্যতেও উন্নয়নের সঙ্গে থাকবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার করোনা নিয়ন্ত্রণ করেছে। বিশ্বের কম দেশই করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে, আমেরিকাও পারেনি, ইউরোপ পারেনি। বাংলাদেশ করোনা নিয়ন্ত্রণে ৫ম স্থান অধিকার করছে। এখন পর্যন্ত আমাদের দেশে ৩০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। এতে আমাদের দেশের মানুষ সুরক্ষিত রয়েছে। ভ্যাকসিনে ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ৫ বছর থেকে ১১ বছরের শিশুদের পরীক্ষামূলক ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হয়েছে। আগামী ২৫ আগস্ট থেকে সিটি কর্পোরেশন গুলো এ কার্যক্রম শুরু হবে। পর্যায়ক্রমে সারাদেশে ২ কোটি ২০ লাখ শিশুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আমাদের হাতে ৩০ লাখ ভ্যাকসিন রয়েছে। শিশুদের জন্য বিশেষ ভ্যাকসিন আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পেয়ে যাবে।
জাহিদ মালেক বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ সারা বিশ্বে প্রভাব পড়েছে। বিশ্বে জ্বালানি, খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব দেখা দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে দাঙ্গা-হাঙ্গামা চলছে। শ্রীলংকায় সব কিছু বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সেখানে জ্বালানি, খাদ্য,সার ও বিদ্যুৎ নেই। ইউরোপেও এর প্রভাব পড়ছে। সেখানেও রেশনিং শুরু হয়েছে ও ব্যাংকের সুদ বাড়িয়েছে। সমস্যা যখন পৃথিবীতে আসে এর প্রভাব কম-বেশি সব দেশেই পড়ে। আমাদের দেশ ঘনবসতি একটি দেশ, যে কারণে আমাদের দেশেও কিছুটা প্রভাব পড়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা জ্বালানি নির্ভরশীল রাষ্ট্র। আমাদের জ্বালানি আমদানি করতে হয়। জ্বালানির দাম পৃথিবীতে তিনগুণ বেড়ে গেছে। জ্বালানি পাওয়া যাচ্ছে না, অনেক দেশে জ্বালানি নেই। বাংলাদেশের জ্বালানি আছে। প্রধানমন্ত্রী আগে থেকেই সাবধানতা অবলম্বন করছেন। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করছেন। আমাদের এই সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে। স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। তাই আমাদের প্রস্তুত হতে হবে। আমাদের বিদ্যুৎসহ সবক্ষেত্রে মিতব্যয়ী হতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বিরোধী দল যখন প্রচার করছে সরকার জ্বালানির মূল্যে বৃদ্ধি করেছে, সরকার জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি করেনি। আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে, বেশি দাম দিয়ে কিনলে পড়ে, আমাদের দেশেও বেশি দামে তো ছাড়তে হবে। এটা চিরস্থায়ী নয়, আন্তর্জাতিক বাজারে কমে এলে আমাদের দেশেও কমে আসবে। বিদ্যুৎও স্বাভাবিক হয়ে আসবে। আমরা কিছুটা সাশ্রয় করছি ,যেন ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা না হয়। বাংলাদেশে খাদ্যে কোনো ঘাটতি নেই, জ্বালানি আছে।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মহীউদ্দীনের সভাপতিত্বে এ সময় বক্তব্য রাখেন- জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ, পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ গোলাম আজাদ খান, পৌর মেয়র মো. রমজান আলী, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাফিল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আফসার উদ্দিন সরকার।