শিশু কথায় কথায় মিথ্যা বললে আপনার করণীয়

স্কুলে যাওয়ার কথা উঠলেই বেঁকে বসে অদিতি। পেটে ব্যথা, জ্বর আসছে এমন নানা অজুহাত দেখায়। কেবল স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে নয়, আরও অনেক ক্ষেত্রেই ছোটোখাটো মিথ্যা বলছে সে। অদিতির মতো মিথ্যা বলার স্বভাব অনেক শিশুরই রয়েছে। 

 

বিশেষত ৩-৪ বছর বয়সে শিশুরা মিথ্যা বলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা নিজের অপরাধ বুঝতে পারে না। কিন্তু এই বদ অভ্যাসের কারণে মা-বাবাকে পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। অনেক অভিভাবকই এমন পরিস্থিতিতে সন্তানকে ধমক দেন বা মারেন। যাতে ফল শুভকর হয় না। তাহলে কী করবেন? শিশু মিথ্যা বললে মা-বাবা হিসেবে আপনার করণীয় জানুন।

 

অতিরিক্ত শাসন একদম নয়: আপনি কি ছোটোখাটো ব্যাপারেও সন্তানকে কড়া ধমক দেন? কিংবা শাস্তি দিয়ে থাকেন? এতে শিশুর মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। অনেকসময় ভয়ের কারণে সে মিথ্যা বলতে পারে। ধরুন, ভুল হাত থেকে পড়ে একটি গ্লাস ভেঙে গেছে। এজন্য তাকে মার খেতে হবে সেটা সে জানে। তাই মিথ্যা বলবে যে সে এটা করেনি।

 

আবার মিথ্যা বলার জন্য যদি আপনি শাস্তি দেন তাহলে শিশু আরও ভয় পাবে। এতে মিথ্যা কথা বলার হার বাড়বে বৈ কমবে না।

 

শিশুদের সামনে মিথ্যা এড়িয়ে চলুন: শিশুরা যা দেখে তাই শেখে। অনেক মা-বাবাই শিশুদের কাছ থেকে কথা লুকাতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। এই কাজটা যত কম করবেন ততই মঙ্গল। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে অতিকথন, মিথ্যা বলা ইত্যাদি শিশুর সামনে এড়িয়ে চলুন।

 

মিথ্যা বলার কারণ বন্ধু নয় তো? : সন্তানের খেয়াল রাখা আপনার দায়িত্ব। সে স্কুলে কার সঙ্গে মিশছে, কার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখুন। শিশুর বন্ধু ও তাদের পরিবার সম্পর্কে জানুন। কোনো শিশুর মিথ্যা বলার প্রবণতা থাকলে তা যেন আপনার সন্তানকে প্রভাবিত না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

 

শিশুকে সময় দিন :নানা কারণে শিশু মিথ্যা বলতে পারে। অনেকসময় পরিবারের বড়দের থেকে এই অভ্যাস আয়ত্ত করে সে। শিশুর কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। সে নিজের ওপর আস্থা হারাচ্ছে কিনা কিংবা অবহেলিত হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন।

বোঝান গল্পের ছলে : গল্প শুনতে ভালোবাসে শিশুরা। তাদের সহজে কিছু বোঝাতে চাইলে এই বিষয়টিতেই গুরুত্ব দিতে পারেন। মনীষীদের জীবনী, ঈশপের নানা গল্প, নীতিকথা ইত্যাদি শোনান। সত্য বলার উপকারি, মিথ্যা বলা কেন উচিত নয়, এর ক্ষতিকর দিক কী হতে পারে- এসব বোঝান। এতে শিশুর সত্য বলার অভ্যাস বেড়ে উঠবে।

ধমক বা শাস্তি দিয়ে শিশুর মিথ্যা বলার অভ্যাস ত্যাগ করানো যায় না।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

» আওয়ামী লীগের শ্রমিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল

» বঙ্গবন্ধু সব সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন : খাদ্যমন্ত্রী

» ট্রাকচাপায় প্রকৌশলী নিহত

» অপহরণকারী চক্রের সদস্য সিরাজকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার

» কেনিয়ায় বৃষ্টি-বন্যায় নিহত বেড়ে ১৬৯

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২১জন গ্রেপ্তার

» নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য শ্রমিক ও জনগণের জন্য অভিশাপ : ইনু

» শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না : রিজভী

» যতবার সরকারে এসেছি ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

শিশু কথায় কথায় মিথ্যা বললে আপনার করণীয়

স্কুলে যাওয়ার কথা উঠলেই বেঁকে বসে অদিতি। পেটে ব্যথা, জ্বর আসছে এমন নানা অজুহাত দেখায়। কেবল স্কুলে যাওয়ার ক্ষেত্রে নয়, আরও অনেক ক্ষেত্রেই ছোটোখাটো মিথ্যা বলছে সে। অদিতির মতো মিথ্যা বলার স্বভাব অনেক শিশুরই রয়েছে। 

 

বিশেষত ৩-৪ বছর বয়সে শিশুরা মিথ্যা বলে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তারা নিজের অপরাধ বুঝতে পারে না। কিন্তু এই বদ অভ্যাসের কারণে মা-বাবাকে পড়তে হয় বিব্রতকর পরিস্থিতিতে। অনেক অভিভাবকই এমন পরিস্থিতিতে সন্তানকে ধমক দেন বা মারেন। যাতে ফল শুভকর হয় না। তাহলে কী করবেন? শিশু মিথ্যা বললে মা-বাবা হিসেবে আপনার করণীয় জানুন।

 

অতিরিক্ত শাসন একদম নয়: আপনি কি ছোটোখাটো ব্যাপারেও সন্তানকে কড়া ধমক দেন? কিংবা শাস্তি দিয়ে থাকেন? এতে শিশুর মনে বিরূপ প্রভাব পড়ে। অনেকসময় ভয়ের কারণে সে মিথ্যা বলতে পারে। ধরুন, ভুল হাত থেকে পড়ে একটি গ্লাস ভেঙে গেছে। এজন্য তাকে মার খেতে হবে সেটা সে জানে। তাই মিথ্যা বলবে যে সে এটা করেনি।

 

আবার মিথ্যা বলার জন্য যদি আপনি শাস্তি দেন তাহলে শিশু আরও ভয় পাবে। এতে মিথ্যা কথা বলার হার বাড়বে বৈ কমবে না।

 

শিশুদের সামনে মিথ্যা এড়িয়ে চলুন: শিশুরা যা দেখে তাই শেখে। অনেক মা-বাবাই শিশুদের কাছ থেকে কথা লুকাতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকেন। এই কাজটা যত কম করবেন ততই মঙ্গল। পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে অতিকথন, মিথ্যা বলা ইত্যাদি শিশুর সামনে এড়িয়ে চলুন।

 

মিথ্যা বলার কারণ বন্ধু নয় তো? : সন্তানের খেয়াল রাখা আপনার দায়িত্ব। সে স্কুলে কার সঙ্গে মিশছে, কার সঙ্গে সময় কাটাচ্ছে সেদিকে খেয়াল রাখুন। শিশুর বন্ধু ও তাদের পরিবার সম্পর্কে জানুন। কোনো শিশুর মিথ্যা বলার প্রবণতা থাকলে তা যেন আপনার সন্তানকে প্রভাবিত না করে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন।

 

শিশুকে সময় দিন :নানা কারণে শিশু মিথ্যা বলতে পারে। অনেকসময় পরিবারের বড়দের থেকে এই অভ্যাস আয়ত্ত করে সে। শিশুর কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করুন। সে নিজের ওপর আস্থা হারাচ্ছে কিনা কিংবা অবহেলিত হচ্ছে কিনা সেদিকে খেয়াল রাখুন।

বোঝান গল্পের ছলে : গল্প শুনতে ভালোবাসে শিশুরা। তাদের সহজে কিছু বোঝাতে চাইলে এই বিষয়টিতেই গুরুত্ব দিতে পারেন। মনীষীদের জীবনী, ঈশপের নানা গল্প, নীতিকথা ইত্যাদি শোনান। সত্য বলার উপকারি, মিথ্যা বলা কেন উচিত নয়, এর ক্ষতিকর দিক কী হতে পারে- এসব বোঝান। এতে শিশুর সত্য বলার অভ্যাস বেড়ে উঠবে।

ধমক বা শাস্তি দিয়ে শিশুর মিথ্যা বলার অভ্যাস ত্যাগ করানো যায় না।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com