অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী :যেভাবে শোনা যাচ্ছে তাতে মনে হচ্ছে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অথবা ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে আমাদের সাধারণ নির্বাচন হবে। যে তারিখমতোই হবে তাতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। ইতোমধ্যে নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ী গঠিত হয়েছে এবং তারাও তাদের কাজ শুরু করেছে। কিন্তু আগের নির্বাচন কমিশন আর এবারের নির্বাচন কমিশনের মধ্যে যদি তুলনা করি তাহলে একটি বিষয় খুব অবাক লাগে আমার, কেন যেন তারা দায়িত্ব¡ নিয়েই প্রথম মনে করেন, বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো তাদের নৈতিক দায়িত্ব¡। কিন্তু আমি সংবিধান ভালোভাবে পড়ে দেখলাম, কোথাও নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের ভিতর এটা পড়ে না। তাদের দায়িত্ব¡ হচ্ছে, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে তাদের সঠিক নির্বাচন উপহার দেওয়া। ভোটে যেন কোনো বাধা না আসে। এখন কে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে, না করবে এটা কোনোভাবেই নির্বাচন কমিশনের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। অথচ দায়িত্বের বাইরে গিয়ে যারা সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত হন, তারা কেন যে এসব বক্তব্য দেন তা অনেক সময় আমার বোধগম্য হয় না। তবে আমি এখন একটি বিষয় সম্পর্কে বলতে চাই (যদিও এটা আমার নিজের বক্তব্য না, আমি কোথাও পড়েছিলাম) যে, আমরা যখন চুল কাটাতে সেলুনে যাই তখন একটা বয়সের ফটো দেখিয়ে বলা হয়, স্যার কোন স্টাইলে চুল কাটাবেন। তারপর হঠাৎ চুল কাটতে কাটতে একটা সময় বলে স্যার কোন রং ব্যবহার করবেন। অর্থাৎ আমাদের বয়স বাড়ছে সেটা বোঝা যায়। এর চেয়েও একটি সহজ বুদ্ধি আছে বয়স চেনার। সেটি হচ্ছে, যখন কেউ কথা বলার সুযোগ পায় আর কথা বলা থামাতে চায় না, তাহলে বুঝতে হবে তার বয়স হয়েছে। সেলুনের থেকেও এটা বোধহয় সহজ বুদ্ধি বয়স চেনার। তা আমার মনে হয় যেন যারাই এসব সাংবিধানিক পদে আসেন, তারা অবসর নেওয়ার পরে আসেন। তাদের বয়স হয়েছে। তাই তারা প্রথমে এসেই বোধহয় বক্তব্য দিয়ে নিজেদের যে বয়স হয়েছে তার প্রমাণ দিতে চান। এটা আমার ধারণা। আসলে এটা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে না। যারা সাংবিধানিক পদ অথবা গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত তাদের বক্তব্য অবশ্যই দায়িত্ব¡পূর্ণ হতে হবে। প্রথম ব্যক্তি থেকে শুরু করে যে-কোনো দায়িত্ব¡পূর্ণ ব্যক্তিরই এটা করতে হবে।
আমাদের অনেককেই দেখা যায় (মন্ত্রীরা পর্যন্ত) যার যেটা দায়িত্ব¡ নয় সেটা বলতে। কিন্তু সম্প্রতি আমি লক্ষ্য করেছি এটা অনেক কমে গেছে। যেমন হাছান মাহমুদ সাহেব হচ্ছেন (যদি অফিশিয়াল টার্ম ব্যবহার না করি তাহলে বলা চলে) প্রচারমন্ত্রী। তিনি সরকারের প্রচারমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন। তারই সবকিছু বলার কথা এবং সেটা বলছেনও। আমার সবচেয়ে যেটা ভালো লাগে এবং তাকে নিয়ে গর্ব অনুভব করি যে, তিনি এত বললেও, সীমারেখার বাইরে বলেন না এবং তার ভাষাগত কোনোরকম জড়তা নেই এবং কাউকে আক্রমণ করে বলেন না। যেটা বলছেন, সেটা সঠিক বক্তব্য। তিনি তার দায়িত্বের সীমারেখার মধ্যেই রয়েছেন। তিনি তার রেডলাইন ক্রস করেন না। এখন যারা সাংবিধানিক পদে আছেন, সম্প্রতি টেলিভিশনে যখন দেখি, তখন আমার এদের প্রতি মায়া লাগে। কারণ এদের আমি চিনি এবং তাদের সততা সম্পর্কে জানি এবং তাদের দায়িত্ব¡বোধের বিষয়ে জানি। আসলে সবার স্পষ্টত বোঝা প্রয়োজন, আমি সাম্প্রতিক কালে ২৫ জুন যেদিন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয়, সেদিন কমিউনিটি ক্লিনিকের ওয়ার্কারদের সঙ্গে এ দিনটি উদ্যাপন করার জন্য বরিশালে গিয়েছিলাম। সেদিন বরিশাল সদর উপজেলার ৯ নম্বর টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়নে যাই এবং এ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান যিনি তার সঙ্গে আগে অল্প পরিচয় ছিল। সে হঠাৎ আমাকে বলল, ভাই, নির্বাচন কবে হবে? আমি বললাম, তোমার কী মনে হয়? বলে না, আমরা তো দূরে বসে অনেক সময় বুঝতে পারি না। সেজন্য আপনাকে জিজ্ঞাসা করছি। নির্বাচনের বিষয়ে তোমার কী ধারণা সেটা আগে বল। সে বলল, শুনছি তো সব লোকই বলে, আগামী বছরই নির্বাচন হবে। আমি বললাম, ঠিকই শুনেছ। তা না হলে আর কী হতে পারে? ধর যদি কোনো কারণে আগামী বছর ডিসেম্বরে না হয়, জানুয়ারিতে হতে পারে। তারা কিন্তু মোটামুটিভাবে জানে যে, নির্বাচন হচ্ছে। আমি দেখলাম, একজন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, তার কিন্তু সন্দেহ নেই, নির্বাচন সময়মতো হচ্ছে। দ্বিতীয় প্রশ্ন যেটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা হচ্ছে নির্বাচন এখন যে সংবিধান আছে সেই সংবিধানের বাইরে করার ক্ষমতা কারও নেই। আর নির্বাচন কমিশনের তো প্রশ্নই ওঠে না। তাদের দায়িত্ব¡ই হচ্ছে শুধু সঠিক নির্বাচন করা। তারা এমনভাবে নির্বাচন করবে, যাতে লোকে তাদের প্রতি বিশ্বাস রেখে যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায় না তাদের কাউকে তো বাড়িতে গিয়ে দাওয়াত করে এনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করানো তাদের দায়িত্বের ভিতর পড়ে না। সুতরাং তারা এটা নিয়ে কেন এত উদগ্রীব আমি বুঝতে পারি না। আর এখানে এখন পর্যন্ত যে আলামত দেখা যাচ্ছে, তাতে নির্বাচন শুধু সময়মতো হবে তা নয়, নির্বাচন অংশগ্রহণমূলকও হবে। এখন বরং আমি আওয়ামী লীগের যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চায়, তাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ তারা না চাইলেও দিতে চাই, তারা নির্বাচনের জন্য জনগণের সঙ্গে এখনই যোগাযোগ করুক এবং এমনভাবে করুক, অনেকদিন যদি এলাকায় না গিয়ে থাকেন, তাহলে সেখানে যান। যদিও সময় অনেক কম তবু ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করুন। কারণ আপনাদের প্রতিপক্ষ হবে শক্তিশালী। এ দেশে বর্তমানে দুটি ভাগ। একটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি, যার নেতৃত্বে আছে আওয়ামী লীগ। আরেকটি হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি, যার প্রধান হচ্ছে জামায়াত-বিএনপি। বিএনপি যে বলছে, তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না এ সরকারের অধীনে, তারা তো এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন বর্জন করেনি। এটা আপনাদের ভালো করে বুঝে দেখতে হবে। এই যে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন হলো, এ নির্বাচনে তারা বহিষ্কার করল, আর তারা হারল কীজন্য? নিজের দলের দুজন থাকার জন্য। না হলে তো ৩০ হাজার ভোটে তারা জিতত। সুতরাং তারা বেস্ট পসিবল ক্যান্ডিডেটকেই ব্যাক করেছে। সুতরাং এতে প্রমাণ হয়, বিএনপি অর্গানাইজড ওয়েতেই কুমিল্লার ইলেকশনে অংশগ্রহণ করেছে। আমার নিজস্ব বিশ্বাস হচ্ছে, এবার বিএনপি শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবে। বিএনপি নামে করলে তো ধানের শীষ হবে। তা না করে বেস্ট পসিবল ক্যান্ডিডেটকেই তারা বিভিন্ন জায়গার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য ব্যবস্থা নেবে। কেউ ঘড়ি মার্কাই হোক বা কেউ ঘুড়ি মার্কাই হোক, তারা একতাবদ্ধ হয়ে এটা করবে। অর্থাৎ যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি নয়, তারা অবশ্যই আওয়ামী লীগের বা আওয়ামী লীগ সমর্থিত যে প্রার্থী তার বিরুদ্ধে তারা এক হয়ে দাঁড়াবে এবং আওয়ামী লীগ যে ১৪ দল করেছে, যে যতই বলুক না কেন, আল্টিমেটলি এই ১৪ দল থাকবে। এটিই আমাদের বিশ্বাস এবং জনগণেরও। কেননা তারা এই ১৪ দলের কোন শরিক কয়টা ভোট পাবে বা না পাবে এটা বড় কথা না, বড় কথা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকে যত দিন পর্যন্ত দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন, যত দিন পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগ প্রধান আছেন তত দিন পর্যন্ত তিনি মুক্তিযুদ্ধের শক্তিকেই একতাবদ্ধ রাখার চেষ্টা করবেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যারা আছেন, তাদের যতটুকু আমি চিনি, তারা শেষ পর্যন্ত অন্যদিকে যাবেন না। হতে পারে অনেকেই হয়তো অভিমান করে বা বিভিন্ন কারণে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন না, কিন্তু তারা তখন দুটো কাজ করবেন, হয় নির্বাচন কেন্দ্রেই যাবেন না, আর নির্বাচন কেন্দ্রে গেলে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যারা দাঁড়িয়েছেন তাকেই ভোট দেবেন। ঠিক তেমনিভাবে যারা মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না, তারা একই কাজ করবে। তারা ওই ঘুড়ি মার্কা হোক আর যেটাই হোক সেই গ্রুপকেই ভোট দেবে। সুতরাং নির্বাচন যে আমাদের দেশে উৎসবমুখর হয়, সেই উৎসবমুখরই হবে এবং ধরে নিতে হবে যে, মূল নেতৃত্ব একদিকে থাকবে আওয়ামী লীগ, অন্যদিকে বিএনপি। এখন তারা বিএনপি নামে থাকবে নাকি তারা প্রক্সি সিস্টেমে করবে, সেটা তাদের ব্যাপার। এখন যারা বিএনপি নেতৃত্ব, আসলে নেতৃত্ব চালানো হয় তো এখন লন্ডন থেকে, উনি এইটা ঈদের মতো করে ফেলেছেন। আমাদের দেশে যে রকম সারা বছর যে কাপড় বিক্রি না হয়, এক রোজার ঈদে সেই বিক্রি তারা পুষিয়ে নেয়। তেমনিভাবে ওই বিএনপি নেতার (যিনি লন্ডনে বসে আছেন) তার প্রধান ইনকাম হচ্ছে নির্বাচন এলে ইলেকশনের যদি পার্টিসিপেট না করে তাহলে তার একটা বড় সোর্স অব ইনকাম বাদ হয়ে গেল। সুতরাং তাকে যোগাযোগ করেই প্রার্থী ঠিক হবে এবং এর থেকে তাদের যে মাপকাঠি, সেই মাপকাঠি অনুযায়ী চলবে। সে মাপকাঠি কী তারা তখন বলবে, এই যে আমরা বলছিলাম, ইলেকশন ঠিকমতো হয় না, সেটা। আমি উত্তরবঙ্গের কথা বলছি, উত্তরবঙ্গে যখন আমি বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, আপনাদের এমপি কেমন? তারা বলল সে কোনো কাজেরই না। আমাদের কোনো খোঁজ নেয় না এবং এবার সে দাঁড়ালে ভোট দেব না। আমি বললাম, যদি আমাদের দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা ইলেকশনে দাঁড়ান এখানে আপনার হিসাবে কী করবেন? আপনার কী ধারণা উনি কত পার্সেন্ট ভোট পাবেন। তারা বলল কমপক্ষে ৭০ পার্সেন্ট ভোট পাবে। বললাম কেন ৩০ পার্সেন্ট পাবে না। বলে যে তারা কোনো অবস্থাতেই মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে ভোট দেবে না। সুতরাং সে যে কেউ দাঁড়াক না কেন তার বিরুদ্ধেই তারা থাকবে। তারা বলল আপনাদের থেকে আমরা রাজনীতি কম বুঝি না। বিএনপি দাঁড়াবে কি না জানি না, তবে বিএনপির লোক দাঁড়ানোর জন্য এক পায়ে খাড়া হয়ে আছে। যেমন রাজশাহীতে একজন রিটায়ার্ড প্রিন্সিপাল। তিনি খাঁটি বিএনপি। বাগমারা থেকে ইলেকশন করার জন্য মুখিয়ে আছেন। আমার একজন এর মাধ্যমে আলাপ হলো। আলাপ করলাম যে, আপনি কি ইলেকশনে দাঁড়াবেন? বলে পার্টি নমিনেশন দিলে দাঁড়াব। পার্টি যদি পার্টিসিপেট না করে, তাহলেও ইলেকশনে দাঁড়াব। অর্থাৎ তিনি ইলেকশন কিন্তু করবেন কারণ তার বিশ্বাস যে, ইলেকশনে দাঁড়ালে লোকে আমাকে ভালো করে চিনবে এবং এবং আমি তো জিতেও যেতে পারি। আমি সুযোগটা ছাড়ব কেন। এটা হলো বাস্তবতা। ফলে ওদের ভোট কিন্তু ভাগ হবে না, ওদের ভোট একদম সলিডভাবেই আসবে এবং সঠিকভাবেই হবে।
সুতরাং নির্বাচন সঠিক সময়েই হবে এবং শুধু আমি বলব যারা বিভিন্ন সাংবিধানিক পদে আছেন তারা যেন দয়া করে তাদের রেডলাইনটাকে বোঝেন এবং সীমারেখা ঠিক রাখেন। তারা নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যা যা করা দরকার সবকিছু করবেন এবং সে বিষয়ে তাদের বক্তব্য এবং কার্যক্রম সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। তার বাইরেও তাদের যাওয়ার কোনো দরকার নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং সে নির্বাচনে যারা যারা পার্টিসিপেট করবে তারা যেন ঠিকমতো ভোট দিতে পারে সেটা ইনস্টল করার জন্য কী লাগবে আপনাদের সেটা করা উচিত। আমরা যেভাবে গণতন্ত্রকে রক্ষা করে চলেছি, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করে চলেছি এবং যেভাবে ধর্মনিরপেক্ষ হিসেবে আমরা চলেছি এ মূল বিষয়গুলো যাতে কোনোরকমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং বিশেষ করে নির্বাচন সামনে রেখে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত করার সুযোগ না নেয় সেদিকে আমাদের সবার নজর রাখতে হবে।
আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন সঠিক সময়ে সঠিকভাবেই হবে এবং এর বিরোধী শক্তির দ্বারা অর্থাৎ নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ করার তারা কোনো সুযোগ বা কোনো অসিলা পাবে না এবং এ দেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।
লেখক : সাবেক উপদেষ্টা, চেয়ারম্যান, বিএমআরসি।
Email : [email protected] সূএ:বাংলাদদেশ প্রতিদিন