মহাবিশ্বের ১৩০০ কোটি বছর আগের রঙিন ছবি প্রকাশ করল নাসা

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০০ কোটি বছর) আগের মহাবিশ্বের রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে। এই ছবিটি তোলা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে। টেলিস্কোপটির তোলা প্রথম প্রকাশিত ছবি এটি। 

 

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে সেই ছবি প্রকাশ করে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবদানের কথা তুলে ধরেন। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের।

 

প্রকাশিত ছবিটি মহাবিশ্বের গ্যালাক্সিগুলোর একটি অংশকে ধারণ করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে এসএমএসিএস ০৭২৩।

 

ছবিতে সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল ও লম্বাটে যেসব দাগ দেখা যাচ্ছে—সেগুলো পৃথিবীর আবাসস্থল আকাশগঙ্গা ছায়াপথ বা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির প্রতিবেশী তারকা। এ ছাড়া অনেকগুলো আলোকবিন্দুগুলো দেখা যাচ্ছে। দেখতে তারকা মনে হলেও, এগুলো প্রতিটি একেকটি ছায়াপথ।

 

ছবিটিতে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা জ্বলজ্বলে আলোক রশ্মির বিচ্ছুরণ ফুটে উঠেছে। বলা হচ্ছে মহাবিশ্বের প্রাচীনতম রূপ এটি। প্রকাশিত হওয়ার পর ছবিটিকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ছবিটি উন্মোচন করে বলেছেন, ‘নাসা অভূতপূর্ব কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও গোটা মানবসভ্যতার জন্য এটি ঐতিহাসিক দিন

 

মহাবিশ্বের ছবিটি সম্পর্কে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেছেন, ছবিটিতে বিভিন্ন গ্যালাক্সির চারপাশে বাঁকানো গ্যালাক্সির আলো ফুটে উঠেছে। টেলিস্কোপে পৌঁছানোর আগে কয়েক শ কোটি বছর ধরে ভ্রমণ করেছে এ আলো।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১ হাজার ৩০০ কোটি বছরেরও বেশি পেছনের দিকে তাকাচ্ছি।’

নাসা শিগগিরই আরও ছবি প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে। সেই ছবিগুলো প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগেকার। এসব ছবি মহাবিশ্বের আনুমানিক শুরু বিন্দুর কাছাকাছি।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ

নাসার নতুন এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ আগের হাবল টেলিস্কোপ থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এক হাজার কোটি ডলার খরচে এটি তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি মহাশূন্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

 

দুটি লক্ষ্যে কাজ করছে টেলিস্কোপটি। এক, প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বে জ্বলে ওঠা আদি নক্ষত্রগুলোর ছবি তোলা। দুই, দূরদূরান্তের গ্রহগুলো প্রাণ ধারণের উপযোগী কি না, তা খতিয়ে দেখা।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন যুগ ধরে নির্মিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটির তোলা নতুন ছবিটি মহাবিশ্বে সম্পর্কে সবার ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ভারত বাংলাদেশ সফরে না এলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বিসিবি!

» পিআর পদ্ধতিতে ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে, রোধ হবে দুর্নীতি : মাসুদ সাঈদী

» ইনসাফ ও মর্যাদার বাংলাদেশের জন্য লড়াই করছে এনসিপি : নাহিদ ইসলাম

» ‘কুলি’-তে আমির খানের রাফ লুক, ফার্স্ট লুকেই চমক

» ফ‍্যাসিস্টদের পুশইন করুন, বিচার করতে প্রস্তুত আমরা : নাহিদ

» টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হিমাচল, মৃত অন্তত ৬৩

» জয়ার সিনেমার ট্রেলার শেয়ার করে যা বললেন অমিতাভ

» ‘বাংলাদেশে ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ বলে কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না’

» গোলাম মাওলা রনি টেলিভিশন টকশোতে অসত্য তথ্য ছড়াচ্ছেন : প্রেসসচিব

» দমকা হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টির শঙ্কা, ৭ নদীবন্দরে সতর্ক সংকেত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

মহাবিশ্বের ১৩০০ কোটি বছর আগের রঙিন ছবি প্রকাশ করল নাসা

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন (১ হাজার ৩০০ কোটি বছর) আগের মহাবিশ্বের রঙিন ছবি প্রকাশ করেছে। এই ছবিটি তোলা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী টেলিস্কোপ জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের মাধ্যমে। টেলিস্কোপটির তোলা প্রথম প্রকাশিত ছবি এটি। 

 

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন হোয়াইট হাউসে সেই ছবি প্রকাশ করে বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক অবদানের কথা তুলে ধরেন। খবর বিবিসি ও গার্ডিয়ানের।

 

প্রকাশিত ছবিটি মহাবিশ্বের গ্যালাক্সিগুলোর একটি অংশকে ধারণ করেছে। এর নাম দেওয়া হয়েছে এসএমএসিএস ০৭২৩।

 

ছবিতে সবচেয়ে বেশি উজ্জ্বল ও লম্বাটে যেসব দাগ দেখা যাচ্ছে—সেগুলো পৃথিবীর আবাসস্থল আকাশগঙ্গা ছায়াপথ বা মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির প্রতিবেশী তারকা। এ ছাড়া অনেকগুলো আলোকবিন্দুগুলো দেখা যাচ্ছে। দেখতে তারকা মনে হলেও, এগুলো প্রতিটি একেকটি ছায়াপথ।

 

ছবিটিতে মহাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা জ্বলজ্বলে আলোক রশ্মির বিচ্ছুরণ ফুটে উঠেছে। বলা হচ্ছে মহাবিশ্বের প্রাচীনতম রূপ এটি। প্রকাশিত হওয়ার পর ছবিটিকে ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে হইচই পড়ে গেছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেন ছবিটি উন্মোচন করে বলেছেন, ‘নাসা অভূতপূর্ব কাজ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও গোটা মানবসভ্যতার জন্য এটি ঐতিহাসিক দিন

 

মহাবিশ্বের ছবিটি সম্পর্কে নাসার প্রশাসক বিল নেলসন বলেছেন, ছবিটিতে বিভিন্ন গ্যালাক্সির চারপাশে বাঁকানো গ্যালাক্সির আলো ফুটে উঠেছে। টেলিস্কোপে পৌঁছানোর আগে কয়েক শ কোটি বছর ধরে ভ্রমণ করেছে এ আলো।

 

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ১ হাজার ৩০০ কোটি বছরেরও বেশি পেছনের দিকে তাকাচ্ছি।’

নাসা শিগগিরই আরও ছবি প্রকাশ করবে বলে জানা গেছে। সেই ছবিগুলো প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগেকার। এসব ছবি মহাবিশ্বের আনুমানিক শুরু বিন্দুর কাছাকাছি।

জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ

নাসার নতুন এই জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ আগের হাবল টেলিস্কোপ থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী। এক হাজার কোটি ডলার খরচে এটি তৈরি করা হয়েছে। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটি মহাশূন্যের উদ্দেশে রওনা দেয়। পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে বর্তমানে প্রায় ১৫ লাখ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ।

 

দুটি লক্ষ্যে কাজ করছে টেলিস্কোপটি। এক, প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি বছর আগের মহাবিশ্বে জ্বলে ওঠা আদি নক্ষত্রগুলোর ছবি তোলা। দুই, দূরদূরান্তের গ্রহগুলো প্রাণ ধারণের উপযোগী কি না, তা খতিয়ে দেখা।

 

বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন যুগ ধরে নির্মিত জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপটির তোলা নতুন ছবিটি মহাবিশ্বে সম্পর্কে সবার ধারণাকে পাল্টে দিতে পারে।

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com