৩০০ বছর ধরে যে গ্রামের মানুষ জুতা পরেন না

ময়লা থেকে পা’কে রক্ষা করতে মানুষ জুতা পরে থাকে। তবে বর্তমান এটি শুধু যে পায়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখছে তা নয়। সেই সঙ্গে ফ্যাশনের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে জুতা। তবে যদি বলি বিংশ শতাব্দীতে এসেও অনেকে জুতা ব্যবহার করেন না। না এটি কোনো অর্থাভাবের জন্য নয়। রীতি মেনেই এই কাজ করেন পুরো একটি গ্রামের মানুষ।

কথায় বলে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। পাহাড়ের কোলে এক গ্রাম। সেখানে নাকি কেউ পরেন না জুতা। অবাক হলেন তো? আসলে আপনি অবাক হবেন বৈকি! একজন দুজন নয়, পুরো এক গ্রামের মানুষ জুতা পরেন না। এটাই এই গ্রামের বিশেষত্ব। গ্রামটি দক্ষিণ ভারতের প্রসিদ্ধ তামিলনাড়ুর কোদাইকানালের কাছাকাছি অবস্থিত। নাম তার ভেল্লাগাভি।

 

গ্রামটি ৩০০ বছরের পুরোনো। যদি আপনাকে এই গ্রামের মধ্যে দিয়েই ঘন জঙ্গলে সফর করতে বা ট্রেকিংয়ে যেতে হয় তাহলে আপনাকেও এই রীতি মানতেই হবে। তাদের কাছে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস বিশাল জায়গা দখল করে রয়েছে। আমরা মূলত দুটি উদ্দেশ্যে জুতা পরি। প্রথমত, ময়লা থেকে আমাদের দুইটি পা রক্ষা করতে। দ্বিতীয়ত এটি আমাদের কাছে এখন ফ্যাশনের অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তবে অবিশ্বাস্য হলেও আপনাকে মানতেই হবে যে এই গ্রামে কেউই জুতা আজ পর্যন্ত পরেননি।

 

গ্রামটিতে পৌঁছানোর পথটি কিন্তু বেশ দুর্গম। গ্রামটিতে প্রায় ১০০টি পরিবার বাস করে। আপনার পড়ে অদ্ভুত লাগলেও আসলে গ্রামবাসীদের কাছে এই পুরো গ্রামটিই ভগবানের বাসস্থান। এমনটাই তারা মনে করেন। গ্রামের বাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে পরপর বানানো হয়েছে। গ্রামে ঢোকার মূলেই একটি মন্দির দেখতে পাবেন পর্যটকরা। সেই মন্দির পার হওয়ার পর থেকেই আর কেউ গ্রামে জুতা পরেন না। তাই আপনিও পরতে পারবেন না জুতা।

 

এই ছোট গ্রামে ২৫টি মন্দির রয়েছে যেখানে ১৫০ জন মতো বাস করেন। বাড়িরগুলোর মাঝে মাঝেই একটি করে মন্দির পাবেন। প্রতিটি মন্দিরের সামনে অন্তত একজন করে ব্যক্তিকে দেখবেন নতজানু হয়ে প্রার্থনা করছেন। গ্রামটিতে মন্দিরের সংখ্যা সেখানকার বাড়ির সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।

 

এমনকি গ্রামটিতে প্রবেশ করার মুখেই জুতার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে একটি বোর্ডে লেখা রয়েছে যে গ্রামে প্রবেশের আগে দয়া করে জুতা খুলে দেবেন। যদিও বেশ কিছুটা সময় পর্যন্ত এই রীতি কঠোরভাবে তারা মানত। তবে এখন তারা পর্যটকদের একটি নির্দিষ্টি জায়গা পর্যন্ত জুতা পরে আসার অনুমতি দেয়। এছাড়াও ঐ গ্রামের বার্ষিক মন্দির উৎসবটিও যথেষ্ট জনপ্রিয় সেখানে।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

» আওয়ামী লীগের শ্রমিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল

» বঙ্গবন্ধু সব সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন : খাদ্যমন্ত্রী

» ট্রাকচাপায় প্রকৌশলী নিহত

» অপহরণকারী চক্রের সদস্য সিরাজকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার

» কেনিয়ায় বৃষ্টি-বন্যায় নিহত বেড়ে ১৬৯

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২১জন গ্রেপ্তার

» নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য শ্রমিক ও জনগণের জন্য অভিশাপ : ইনু

» শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না : রিজভী

» যতবার সরকারে এসেছি ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

৩০০ বছর ধরে যে গ্রামের মানুষ জুতা পরেন না

ময়লা থেকে পা’কে রক্ষা করতে মানুষ জুতা পরে থাকে। তবে বর্তমান এটি শুধু যে পায়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখছে তা নয়। সেই সঙ্গে ফ্যাশনের একটি বড় অংশজুড়ে রয়েছে জুতা। তবে যদি বলি বিংশ শতাব্দীতে এসেও অনেকে জুতা ব্যবহার করেন না। না এটি কোনো অর্থাভাবের জন্য নয়। রীতি মেনেই এই কাজ করেন পুরো একটি গ্রামের মানুষ।

কথায় বলে, বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর। পাহাড়ের কোলে এক গ্রাম। সেখানে নাকি কেউ পরেন না জুতা। অবাক হলেন তো? আসলে আপনি অবাক হবেন বৈকি! একজন দুজন নয়, পুরো এক গ্রামের মানুষ জুতা পরেন না। এটাই এই গ্রামের বিশেষত্ব। গ্রামটি দক্ষিণ ভারতের প্রসিদ্ধ তামিলনাড়ুর কোদাইকানালের কাছাকাছি অবস্থিত। নাম তার ভেল্লাগাভি।

 

গ্রামটি ৩০০ বছরের পুরোনো। যদি আপনাকে এই গ্রামের মধ্যে দিয়েই ঘন জঙ্গলে সফর করতে বা ট্রেকিংয়ে যেতে হয় তাহলে আপনাকেও এই রীতি মানতেই হবে। তাদের কাছে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস বিশাল জায়গা দখল করে রয়েছে। আমরা মূলত দুটি উদ্দেশ্যে জুতা পরি। প্রথমত, ময়লা থেকে আমাদের দুইটি পা রক্ষা করতে। দ্বিতীয়ত এটি আমাদের কাছে এখন ফ্যাশনের অন্যতম অঙ্গ হয়ে উঠেছে। তবে অবিশ্বাস্য হলেও আপনাকে মানতেই হবে যে এই গ্রামে কেউই জুতা আজ পর্যন্ত পরেননি।

 

গ্রামটিতে পৌঁছানোর পথটি কিন্তু বেশ দুর্গম। গ্রামটিতে প্রায় ১০০টি পরিবার বাস করে। আপনার পড়ে অদ্ভুত লাগলেও আসলে গ্রামবাসীদের কাছে এই পুরো গ্রামটিই ভগবানের বাসস্থান। এমনটাই তারা মনে করেন। গ্রামের বাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে পরপর বানানো হয়েছে। গ্রামে ঢোকার মূলেই একটি মন্দির দেখতে পাবেন পর্যটকরা। সেই মন্দির পার হওয়ার পর থেকেই আর কেউ গ্রামে জুতা পরেন না। তাই আপনিও পরতে পারবেন না জুতা।

 

এই ছোট গ্রামে ২৫টি মন্দির রয়েছে যেখানে ১৫০ জন মতো বাস করেন। বাড়িরগুলোর মাঝে মাঝেই একটি করে মন্দির পাবেন। প্রতিটি মন্দিরের সামনে অন্তত একজন করে ব্যক্তিকে দেখবেন নতজানু হয়ে প্রার্থনা করছেন। গ্রামটিতে মন্দিরের সংখ্যা সেখানকার বাড়ির সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গিয়েছে।

 

এমনকি গ্রামটিতে প্রবেশ করার মুখেই জুতার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করতে একটি বোর্ডে লেখা রয়েছে যে গ্রামে প্রবেশের আগে দয়া করে জুতা খুলে দেবেন। যদিও বেশ কিছুটা সময় পর্যন্ত এই রীতি কঠোরভাবে তারা মানত। তবে এখন তারা পর্যটকদের একটি নির্দিষ্টি জায়গা পর্যন্ত জুতা পরে আসার অনুমতি দেয়। এছাড়াও ঐ গ্রামের বার্ষিক মন্দির উৎসবটিও যথেষ্ট জনপ্রিয় সেখানে।

সূএ:ডেইলি বাংলাদেশ

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com