আসাদ হোসেন রিফাতঃ লালমনিরহাটে তিস্তায় চলছে সতর্ক সংকেত। তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দিয়ে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা চলছে। কখনো তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার উপরে, কখনো পানি বিপদসীমার নিচে। ফলে সকালে পানি বসত বাড়ি থেকে নেমে গেলেও বিকালে আবারও পানিবন্দি হচ্ছে তিস্তা পাড়ের হাজার হাজার পরিবার। সব মিলে তিস্তা পাড়ে এখন চলছে আতংক। জেলার পানিবন্দি ৩০ হাজার পরিবারের মাঝে ত্রাণ বিতরণ চললেও তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারে নগন্য। ফলে ত্রাণ নিয়ে তিস্তা পাড়ে লোকজনের মাঝে ক্ষোভ দেখা দিয়েছি।
সোমবার (২০ জুন) তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে রাত পর্যন্ত ৩১ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও মঙ্গলবার সকালে পানি কমে বিপদসীমা ছুইছুই। বেলা ১২ টায় পানি বেড়ে আবারও বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে ও ৩ টায় বিপদসীমার ২৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বুধবার সকাল ৯ টায় আবারও পানি নেমে গিয়ে বিপদসীমার ১০ সেঃ মিঃ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে নদীর তীরবর্তী প্রায় ৩০ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পরে। পানি কমা বাড়া করায় ভাঙ্গনের শিকার হচ্ছে তীরবর্তী পরিবার গুলো। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারেজের সবকটি গেট খুলে দিয়েছে ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ।
পানিবন্দি পরিবার গুলোর অভিযোগ, তারা দুই এক দিন পর পর পানি বন্দি হচ্ছে। কিন্তু সেভাবে ত্রাণ পাচ্ছে না। ত্রাণের ১০ কেজি চাল দিয়ে তাদের কিছুই হচ্ছে না। তারা আরো ত্রাণ বিতরণের দাবী তুলেছেন।
হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক শ্যামল, পাটিকাপাড়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মজিবুল আলম সাহাদ ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মশিউর রহমান জানান, তাদের ইউনিয়নে যে পরিমান পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেই তুলনায় তারা ত্রাণ দিতে পারছে না। প্রতিদিন ত্রাণের জন্য লোকজন ইউনিয়ন পরিষদে ভীর করছেন।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌল্লা বলেন, গত মঙ্গলবার সকালে পানি কমে বিপদসীমা ছুইছুই হলেও বিকালে বেড়ে ২৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এর আগে গত ১২ জুন থেকে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বৃদ্ধি ও কমার মধ্য দিয়ে বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। গত ১৭ জুন শুক্রবার সকাল ৬ টায় প্রথমবারের মতো বিপদসীমা অতিক্রম করে ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। বুধবার সকাল ৯ টায় আবারও পানি নেমে গিয়ে বিপদসীমার ১০ সেঃ মিঃ নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, ত্রাণের কোনো সংকট নেই। ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।
Facebook Comments Box