আওয়ামী লীগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না : রিজভী

আওয়ামী লীগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

তিনি বলেছেন, ১৯৭৫ সালে বাকশাল করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন চারটি বাদে অন্যসব গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছিল। সেই আওয়ামী লীগই আবার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কালো আইন করেছে। এই আইনে মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় রিজভী এসব কথা বলেন। ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম।

 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আদতে গণমাধ্যমের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা পরিকল্পিতভাবে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিএনপি বাক-স্বাধীনতার পক্ষে। বিএনপির শাসনামলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

আওয়ামী লীগ সরকার মিডিয়াকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না। এখন অনেক গণমাধ্যম দেখা যায় ঠিকই, কিন্তু সরকার সেগুলোকে ভয়ভীতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। যার উদাহরণ, এখন পদ্মা সেতু নিয়ে সব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এটাই তো ফ্যাসিবাদ।

 

খালেদা জিয়ার শাসনামলেও অসংখ্য ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন তো এমন ঢাক-ঢোল পেটানো হয়নি। এখন সেই আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চায়।

সরকার নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা জানিয়ে রিজভী বলেন, চীনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু করা হয়েছে। এই ঋণ আমাদের সবাইকে শোধ করতে হবে। যে টাকা খরচ হওয়ার কথা তা হয়নি। বরং বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। মূলত এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে  রিজভী বলেন, আপনার হিংসাশ্রয়ী আচরণ তো ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আপনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবেন? নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে চুবাবেন। পদ্মা সেতুর নাম শুনলেই এখন ভয় হয়। শেখ হাসিনা এসব কথা বলে এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে গোটা জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। তারা নাকি একেবারে স্বর্গে চলে যাবে।

 

পদ্মা সেতুর শুরু থেকেই সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, গোটা জাতিকে ঋণে জর্জরিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এখন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে। আরও কত হবে, তা বলা যায় না। একটি শিশুও জন্মের পর থেকেই ঋণে জর্জরিত। আমরা ভয়ংকর একদলীয় শাসনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত।

 

সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও শাহাদাত হোসেন বিপ্লবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» হত্যা মামলায় মুক্তি পেয়ে অস্ত্র কারবার, অবশেষে র‍্যাবের হাতে গ্রেফতার

» রোববার আংশিক সূর্যগ্রহণ, বাংলাদেশ থেকে দেখা যাবে না: আইএসপিআর

» বেঁচে থাকলে ৫৪ বছরে পা রাখতেন সালমান শাহ

» সবজির দামে আগুন

» চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক ৬ লেন করার দাবিতে অবরোধ

» পিআর পদ্ধতি নয়, আগের নিয়মেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: ইলিয়াস হোসাইন

» সাংগঠনিকভাবে যতটা শক্তিশালী হওয়ার কথা ছিল, তা অর্জন করতে পারিনি: নাহিদ ইসলাম

» ১৩ ঘণ্টা বন্ধ থাকবে গ্রামীণফোনের রিচার্জ সেবা

» নির্বাচনে এরা লীগ-জাপার দোসরদের ফেভার করবে না তার কি গ্যারান্টি আছে

» হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচারে বদলাবে গ্রুপ চ্যাটের ধরণ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আওয়ামী লীগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না : রিজভী

আওয়ামী লীগ ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না বলে দাবি করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

তিনি বলেছেন, ১৯৭৫ সালে বাকশাল করেছিল আওয়ামী লীগ। তখন চারটি বাদে অন্যসব গণমাধ্যম বন্ধ করা হয়েছিল। সেই আওয়ামী লীগই আবার ২০১৮ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে কালো আইন করেছে। এই আইনে মানুষের বাক স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় রিজভী এসব কথা বলেন। ১৬ জুন সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও আজকের বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরাম।

 

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আদতে গণমাধ্যমের ওপর গোয়েন্দা নজরদারি করা হচ্ছে। সরকারের বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা পরিকল্পিতভাবে নানা ধরনের বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। বিএনপি বাক-স্বাধীনতার পক্ষে। বিএনপির শাসনামলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে।

 

আওয়ামী লীগ সরকার মিডিয়াকে বিকৃতভাবে ব্যবহার করছে দাবি করে বিএনপির এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ আর গণমাধ্যমের স্বাধীনতা একসঙ্গে যায় না। এখন অনেক গণমাধ্যম দেখা যায় ঠিকই, কিন্তু সরকার সেগুলোকে ভয়ভীতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করে। যার উদাহরণ, এখন পদ্মা সেতু নিয়ে সব গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এটাই তো ফ্যাসিবাদ।

 

খালেদা জিয়ার শাসনামলেও অসংখ্য ব্রিজ কালভার্ট নির্মাণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তখন তো এমন ঢাক-ঢোল পেটানো হয়নি। এখন সেই আওয়ামী লীগ সরকার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদোর পিণ্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপাতে চায়।

সরকার নিজের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছে, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা জানিয়ে রিজভী বলেন, চীনের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে পদ্মা সেতু করা হয়েছে। এই ঋণ আমাদের সবাইকে শোধ করতে হবে। যে টাকা খরচ হওয়ার কথা তা হয়নি। বরং বেশি টাকা খরচ করা হয়েছে। মূলত এসব টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে।

 

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে  রিজভী বলেন, আপনার হিংসাশ্রয়ী আচরণ তো ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। আপনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতু থেকে টুস করে ফেলে দেবেন? নোবেল বিজয়ী ব্যক্তিকে চুবাবেন। পদ্মা সেতুর নাম শুনলেই এখন ভয় হয়। শেখ হাসিনা এসব কথা বলে এবং পদ্মা সেতু নির্মাণের মাধ্যমে গোটা জাতিকে বিভক্ত করে ফেলেছেন। তারা নাকি একেবারে স্বর্গে চলে যাবে।

 

পদ্মা সেতুর শুরু থেকেই সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, গোটা জাতিকে ঋণে জর্জরিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ১৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প এখন প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকায় ঠেকেছে। আরও কত হবে, তা বলা যায় না। একটি শিশুও জন্মের পর থেকেই ঋণে জর্জরিত। আমরা ভয়ংকর একদলীয় শাসনের যাঁতাকলে নিষ্পেষিত।

 

সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও শাহাদাত হোসেন বিপ্লবের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ঢাকা বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, বিএনপির সহ তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আমিরুজ্জামান খান শিমুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য ও স্বাধীনতা ফোরামের সভাপতি আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com