‘শ…শ…’ শব্দ করলে শিশুর প্রস্রাবের বেগ আসে কেন?

শিশুদের প্রস্রাবের ক্ষেত্রে সাধারণত ‘শ…শ…’, ‘শ…শ…’ শব্দটি কয়েকবার উচ্চারণ করলেই শিশুরা সুন্দরভাবে প্রস্রাব করে থাকে বা তাদের প্রস্রাবে বেগ আসে। শিশুদের এভাবেই প্রস্রাব প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন অভিভাবকরা। আর এটা শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বজুড়েই ব্যবহৃত একটি কার্যকরী কৌশল।

 

এটা আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই ‘শ…শ…’ শব্দটি আসলে কীভাবে শিশুদের প্রস্রাবে সাহায্য করে থাকে?

বিষয়টি আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে কুকুরের ওপর করা রাশিয়ান বিজ্ঞানী ইভান পাভলভের একটি পরীক্ষা থেকে। মাংসের টুকরো খাওয়ার ক্ষেত্রে কুকুরের মুখের ভেতর প্রচুর লালা তৈরি হয়ে থাকে। পালভল তার পরীক্ষায় একটি ঘণ্টার আওয়াজ বাজিয়ে কুকুরকে মাংস খাওয়াতেন। তিনি কয়েকদিন এমনটা করেন, পরবর্তীতে কুকুরটি যখনই ঘণ্টার আওয়াজ শুনতে পেত তখনি মুখ দিয়ে লালা ঝরাতো, এমনকি পাত্রে মাংস না থাকা সত্ত্বেও।

 

যার অর্থ দাড়ায় যে, স্নায়ুতন্ত্র অবচেতনভাবে যে সাড়া দিয়ে থাকে, সেটি বাহ্যিক কোনো উদ্দীপনার মাধ্যমেও হতে পারে।অভিভাবকরা ঠিক একই কাজটি করে থাকের ‘শ…শ…’ শব্দটি উচ্চারণের দ্বারা শিশুদের প্রস্রাব করানোর ক্ষেত্রে। কিছুক্ষণের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক ওই শব্দ এবং প্রস্রাব এর কর্মের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়। সুতরাং, এই শব্দ বাচ্চাদের স্বায়ত্তশাসনে প্রতিবর্তী ক্রিয়া আরম্ভ করে এবং তাদের প্রস্রাবে সাহায্য করে।

 

তবে শব্দের মাধ্যমে প্রস্রাবের এই বিষয়টি শুধু শিশুদের ক্ষেত্রেই নয়, কিছু প্রাপ্তবয়স্কদের মানুষের ক্ষেত্রেও বহিরাগত উদ্দীপনার দ্বারা আলোড়ন সৃষ্টি করে। উদাহারণস্বরুপ, অন্য কাউকে প্রস্রাব করতে দেখলে অথবা পানি পড়ার শব্দ এবং জলপ্রপাতের শব্দ কানে আসলে কিছু মানুষের প্রস্রাবের ভাব চলে আসে।

 

ভিয়েতনামে বাবা-মায়েরা শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই প্রস্রাব-পায়খানা করাতে ‘শি..স..স’ অর্থাৎ হুইসেল প্রশিক্ষণ দিতে আরম্ভ করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এ অভ্যাসের ফলে ভিয়েতনামে শিশুদের ৯ মাস বয়সের পর থেকে সাধারণত ডায়াপারের প্রয়োজন পড়ে না।

 

গবেষকদের মতে, শিশুদের এ অভ্যাসে অভ্যস্ত করার নানা সুবিধা রয়েছে। এটি কেবল ডায়াপারের পেছনে টাকা ব্যয় করা কমিয়ে আনে না, পাশাপাশি পিতামাতার জীবনকে সহজ করে তোলে। অল্প বয়স থেকেই শিশুদের এতে প্রশিক্ষিত করা হলে তাদের মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।  সূএ:রাইজিংবিডি.কম

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাগরে জেলের জালে ধরা পড়েছে পাঁচ মণ ওজনের ‘পাখি মাছ

» খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা স্থিতিশীল

» ঢামেকের মর্গে পড়ে আছে গণঅভ্যুত্থানে নিহত ছয়জনের মরদেহ

» সংস্কার না করলে ২০১৪, ২০১৮, ২০২৪ এর মতো নির্বাচন হবে: গোলাম পরওয়ার

» ২৪–এর ঘোষণাপত্রে খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চায় জনগণ: সারজিস

» দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে আওয়ামী লীগ : মির্জা ফখরুল

» ক্র্যাবের সভাপতি তমাল, সাধারণ সম্পাদক বাদশা

» গৃহবধূ হত্যা মামলায় আসামি গ্রেফতার

» আমি মানুষ দেবতা নই, আমারও ভুল হয় : মোদি

» দেশে প্রথমবার ৫ জনের শরীরে রিওভাইরাস শনাক্ত

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

‘শ…শ…’ শব্দ করলে শিশুর প্রস্রাবের বেগ আসে কেন?

শিশুদের প্রস্রাবের ক্ষেত্রে সাধারণত ‘শ…শ…’, ‘শ…শ…’ শব্দটি কয়েকবার উচ্চারণ করলেই শিশুরা সুন্দরভাবে প্রস্রাব করে থাকে বা তাদের প্রস্রাবে বেগ আসে। শিশুদের এভাবেই প্রস্রাব প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন অভিভাবকরা। আর এটা শুধু আমাদের দেশেই নয়, বিশ্বজুড়েই ব্যবহৃত একটি কার্যকরী কৌশল।

 

এটা আমাদের সকলেরই জানা। কিন্তু কথা হচ্ছে, এই ‘শ…শ…’ শব্দটি আসলে কীভাবে শিশুদের প্রস্রাবে সাহায্য করে থাকে?

বিষয়টি আরো ভালোভাবে বোঝা যাবে কুকুরের ওপর করা রাশিয়ান বিজ্ঞানী ইভান পাভলভের একটি পরীক্ষা থেকে। মাংসের টুকরো খাওয়ার ক্ষেত্রে কুকুরের মুখের ভেতর প্রচুর লালা তৈরি হয়ে থাকে। পালভল তার পরীক্ষায় একটি ঘণ্টার আওয়াজ বাজিয়ে কুকুরকে মাংস খাওয়াতেন। তিনি কয়েকদিন এমনটা করেন, পরবর্তীতে কুকুরটি যখনই ঘণ্টার আওয়াজ শুনতে পেত তখনি মুখ দিয়ে লালা ঝরাতো, এমনকি পাত্রে মাংস না থাকা সত্ত্বেও।

 

যার অর্থ দাড়ায় যে, স্নায়ুতন্ত্র অবচেতনভাবে যে সাড়া দিয়ে থাকে, সেটি বাহ্যিক কোনো উদ্দীপনার মাধ্যমেও হতে পারে।অভিভাবকরা ঠিক একই কাজটি করে থাকের ‘শ…শ…’ শব্দটি উচ্চারণের দ্বারা শিশুদের প্রস্রাব করানোর ক্ষেত্রে। কিছুক্ষণের মধ্যে শিশুর মস্তিষ্ক ওই শব্দ এবং প্রস্রাব এর কর্মের মধ্যে যোগসূত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়। সুতরাং, এই শব্দ বাচ্চাদের স্বায়ত্তশাসনে প্রতিবর্তী ক্রিয়া আরম্ভ করে এবং তাদের প্রস্রাবে সাহায্য করে।

 

তবে শব্দের মাধ্যমে প্রস্রাবের এই বিষয়টি শুধু শিশুদের ক্ষেত্রেই নয়, কিছু প্রাপ্তবয়স্কদের মানুষের ক্ষেত্রেও বহিরাগত উদ্দীপনার দ্বারা আলোড়ন সৃষ্টি করে। উদাহারণস্বরুপ, অন্য কাউকে প্রস্রাব করতে দেখলে অথবা পানি পড়ার শব্দ এবং জলপ্রপাতের শব্দ কানে আসলে কিছু মানুষের প্রস্রাবের ভাব চলে আসে।

 

ভিয়েতনামে বাবা-মায়েরা শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর থেকেই প্রস্রাব-পায়খানা করাতে ‘শি..স..স’ অর্থাৎ হুইসেল প্রশিক্ষণ দিতে আরম্ভ করে। এক গবেষণায় দেখা গেছে, এ অভ্যাসের ফলে ভিয়েতনামে শিশুদের ৯ মাস বয়সের পর থেকে সাধারণত ডায়াপারের প্রয়োজন পড়ে না।

 

গবেষকদের মতে, শিশুদের এ অভ্যাসে অভ্যস্ত করার নানা সুবিধা রয়েছে। এটি কেবল ডায়াপারের পেছনে টাকা ব্যয় করা কমিয়ে আনে না, পাশাপাশি পিতামাতার জীবনকে সহজ করে তোলে। অল্প বয়স থেকেই শিশুদের এতে প্রশিক্ষিত করা হলে তাদের মূত্রাশয় নিয়ন্ত্রণ করতে এবং মূত্রনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে।  সূএ:রাইজিংবিডি.কম

 

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com