যে গ্রামে আলাদা ভাষায় কথা বলে নারী-পুরুষ

বিশ্বের সব স্থানেই নারী-পুরুষে বিভেদ লক্ষ্য করা যায়। সমাজ, জাতি, সংস্কৃতি সবকিছুতেই নারী ও পুরুষের বিভেদ দৃষ্টিগোচর হয়। এ কারণে নারীরা আজও সমতা ও নিজেদের অধিকার অর্জনে সমাজের সঙ্গে লড়াই করছে।

তবে কখনও কি শুনেছেন, একই গ্রামের বাসিন্দারা কথা বলছেন ভিন্ন ভাষায়! নারীর জন্য এক ভাষা আর পুরুষের জন্য ভিন্ন। এমনই ঘটনার সাক্ষী নাইজেরিয়ার একটি গ্রাম উবাং।

তারা একই সমাজে বেড়ে ওঠে, তবে কথা বলে ভিন্ন ভাষায়। নারী-পুরুষ বিভেদে তাদের শব্দেরও পার্থক্য আছে গ্রামটিতে। যেমন- পোশাক এর জন্য পুরুষরা বলেন ‘নিকি’ আর নারীরা বলেন ‘এরিগা’।

88

আবার গাছকে পুরুষরা ‘কিচি’ আর নারীরা ‘ওকেওয়েং’ বলেন। এগুলো কেবল কিছু সূক্ষ্ম উচ্চারণগত পার্থক্য নয় বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন শব্দ।

 

একটি শিশু বেড়ে ওঠার সময় তার অভিভাবকেরা ভাষাগত পার্থক্য তাদেরকে শিখিয়ে দেন। শিশুরাও বেড়ে ওঠে নিজেদের ভাষার মধ্যেই। যদি একটি শিশু নিজের ভাষা শিখতে অসমর্থ হয়, তাহলে তা অস্বাভাবিক বলে ধারণা করা হয়।

44

মজার বিষয় হলো, উবাং গ্রামের নারী ও পুরুষের ভাষা ভিন্ন হলেও তারা একে অপরের ভাষা ঠিকই বুঝতে পারেন। কারণ বাল্যকাল থেকেই তারা এসব শব্দ শেখেন।

 

উবাং গ্রামের নিয়ম হলো ১০ বছরের পর থেকেই ছেলে-মেয়েরা নিজেদের ভাষায় কথা বলবে। তবে কেন উবাং গ্রামে এমন অদ্ভুত রীতি মেনে চলা হয়?

nn

যদিও এ বিষয়কি রীতি কেন চালু হয়েছিল তা কারও জানা নেই। তবে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা ধর্মীয় তত্ত্ব পছন্দ করে। হয়তো ধর্মীয় কোনো কারণেই এমন রীতির প্রচলন ঘটে। উবাং গ্রামটি বিশ্বের অন্যান্য সম্প্রদায়ের থেকে আলাদা।

নৃবিজ্ঞানী চি চি উন্ডি বলেন, ‘দ্বৈত লিঙ্গ সংস্কৃতি আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। এর ফলে নারী ও পুরুষে বিভেদ তৈরি হয়। এটি একটি দুর্বল তত্ত্ব। নারী-পুরুষ হয়তো ভিন্ন কাজ করে থাকেন তবে তাতে ভাষাগত পার্থক্য থাকা উচিত নয়।’

aaa

বর্তমানে শিক্ষার প্রসার ঘটায় নাইজেরিয়ার তরুণরা ইংরেজি ভাষায় কথা বলছেন। এর ফলে উবাং এর দুটি ভাষার প্রয়োগ অনেকটাই কমতে শুরু করেছে।

 

২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী নাইজেরিয়ার লিঙ্গুইস্টিক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরবর্তী ৫০০ বছরের মধ্যে সেখানকার ৫০০টি ভাষার মধ্যে ৫০টি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।  সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বিমান বিধ্বস্ত : হাসপাতাল থেকে ১৩ জনকে ছাড়পত্র, নতুন ভর্তি ১

» শিক্ষিকা মেহেরীন চৌধুরীর সমাধিতে বিমানবাহিনীর শ্রদ্ধা

» ‘কাইন্দেন না’ বলতেই আরও বেশি কাঁদলেন পলক

» ফ্যাসিবাদের দোসরদের আস্ফালন সহ্য করা হবে না: ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ

» এক চাঁদাবাজ খেদালে আরেক চাঁদাবাজ এসে হাজির হয়: হান্নান মাসউদ

» দুর্ঘটনাকে পুঁজি করে বিএনপি রাজনীতি করে না: মঈন খান

» শিবিরের আসল রূপ দেখতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যান: নাছির উদ্দীন

» অতীতের বস্তাপচা ধারায় কোনো নির্বাচন চাই না: শফিকুর রহমান

» প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিমানবাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

» এক বছর না যেতেই পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রের লক্ষণ দেখা যাচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে গ্রামে আলাদা ভাষায় কথা বলে নারী-পুরুষ

বিশ্বের সব স্থানেই নারী-পুরুষে বিভেদ লক্ষ্য করা যায়। সমাজ, জাতি, সংস্কৃতি সবকিছুতেই নারী ও পুরুষের বিভেদ দৃষ্টিগোচর হয়। এ কারণে নারীরা আজও সমতা ও নিজেদের অধিকার অর্জনে সমাজের সঙ্গে লড়াই করছে।

তবে কখনও কি শুনেছেন, একই গ্রামের বাসিন্দারা কথা বলছেন ভিন্ন ভাষায়! নারীর জন্য এক ভাষা আর পুরুষের জন্য ভিন্ন। এমনই ঘটনার সাক্ষী নাইজেরিয়ার একটি গ্রাম উবাং।

তারা একই সমাজে বেড়ে ওঠে, তবে কথা বলে ভিন্ন ভাষায়। নারী-পুরুষ বিভেদে তাদের শব্দেরও পার্থক্য আছে গ্রামটিতে। যেমন- পোশাক এর জন্য পুরুষরা বলেন ‘নিকি’ আর নারীরা বলেন ‘এরিগা’।

88

আবার গাছকে পুরুষরা ‘কিচি’ আর নারীরা ‘ওকেওয়েং’ বলেন। এগুলো কেবল কিছু সূক্ষ্ম উচ্চারণগত পার্থক্য নয় বরং সম্পূর্ণ ভিন্ন শব্দ।

 

একটি শিশু বেড়ে ওঠার সময় তার অভিভাবকেরা ভাষাগত পার্থক্য তাদেরকে শিখিয়ে দেন। শিশুরাও বেড়ে ওঠে নিজেদের ভাষার মধ্যেই। যদি একটি শিশু নিজের ভাষা শিখতে অসমর্থ হয়, তাহলে তা অস্বাভাবিক বলে ধারণা করা হয়।

44

মজার বিষয় হলো, উবাং গ্রামের নারী ও পুরুষের ভাষা ভিন্ন হলেও তারা একে অপরের ভাষা ঠিকই বুঝতে পারেন। কারণ বাল্যকাল থেকেই তারা এসব শব্দ শেখেন।

 

উবাং গ্রামের নিয়ম হলো ১০ বছরের পর থেকেই ছেলে-মেয়েরা নিজেদের ভাষায় কথা বলবে। তবে কেন উবাং গ্রামে এমন অদ্ভুত রীতি মেনে চলা হয়?

nn

যদিও এ বিষয়কি রীতি কেন চালু হয়েছিল তা কারও জানা নেই। তবে সেখানকার স্থানীয় বাসিন্দারা ধর্মীয় তত্ত্ব পছন্দ করে। হয়তো ধর্মীয় কোনো কারণেই এমন রীতির প্রচলন ঘটে। উবাং গ্রামটি বিশ্বের অন্যান্য সম্প্রদায়ের থেকে আলাদা।

নৃবিজ্ঞানী চি চি উন্ডি বলেন, ‘দ্বৈত লিঙ্গ সংস্কৃতি আফ্রিকার বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়। এর ফলে নারী ও পুরুষে বিভেদ তৈরি হয়। এটি একটি দুর্বল তত্ত্ব। নারী-পুরুষ হয়তো ভিন্ন কাজ করে থাকেন তবে তাতে ভাষাগত পার্থক্য থাকা উচিত নয়।’

aaa

বর্তমানে শিক্ষার প্রসার ঘটায় নাইজেরিয়ার তরুণরা ইংরেজি ভাষায় কথা বলছেন। এর ফলে উবাং এর দুটি ভাষার প্রয়োগ অনেকটাই কমতে শুরু করেছে।

 

২০১৬ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী নাইজেরিয়ার লিঙ্গুইস্টিক অ্যাসোসিয়েশন জানায়, কঠোর ব্যবস্থা না নেওয়া হলে পরবর্তী ৫০০ বছরের মধ্যে সেখানকার ৫০০টি ভাষার মধ্যে ৫০টি বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে।  সূত্র: বিবিসি

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com