যে শহরের সবাই প্লেনের মালিক

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, আমেরিকার ক্যামেরন পার্ক নামের শহরটির সবাই প্লেনের মালিক। এ শহরে অলিগলি কিংবা ছোট-বড় রাস্তা বলে কিছুই নেই। মাত্র একটাই পথ, এর পুরোটাই রানওয়ে। শহরকে দুই ভাগে ভাগ করে সেই রানওয়ে এসে মিশেছে যে রাস্তায় সেই রাস্তাটিও ১০০ ফুট প্রশস্ত। প্লেন অনায়াসে ওঠানামা করতে পারে সেখানেও। শুধু তাই নয় ব্যস্ত রাস্তায় চলন্ত গাড়িকে পাশ কাটিয়ে এগিয়েও যেতে পারে কোনো প্রকার বাধা ছাড়া।

 

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার এই ক্যামেরন পার্ক শহরে যারা থাকেন, তারা অফিস যান প্লেনে চড়ে। এমনকি সপ্তাহিক ছুটি কাটাতেও যান প্লেন নিয়ে। আমেরিকার সরকারি নথিতে অবশ্য ক্যামেরন পার্ক শহর নয়। আসলে একটি ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি। কিন্তু এটি শহর নামে পরিচিত।

474

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার বহু বিমানবন্দর অচল হয়ে পড়েছিল। একইসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকের সংখ্যাও বাড়ছিল। সংখ্যাটি ১৯৩৯ সালে ৩৪ হাজার থেকে বেড়ে ১৯৪৬ সালে চার লাখে গিয়ে পৌঁছায়। যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের আরামের অবসর দিতেই ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

আমেরিকার বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন অচল বিমানবন্দরগুলোই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। চেনা পরিচিত পরিবেশে থাকতে বিমানচালকদের ভালো লাগবে, এই ধারণা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

mn

১৯৬৩ সালে সেই ভাবনা থেকেই তৈরি ক্যামেরন পার্ক। এক সময়ে নাম ছিল ক্যামেরন পার্ক এয়ারপোর্ট। সেই নাম বদলে হয় ক্যামেরন পার্ক এয়ারপার্ক। শহরের প্রতিটি পরিবারেরই কোনো না কোনো সদস্য এক সময়ে বিমানচালক ছিলেন। বিশ্বে এমন ফ্লাই-ইন-কমিউনিটি রয়েছে ৬৪০টি। তার মধ্যে ৬১০টিই আমেরিকায়। তবে বৈশিষ্ট্যে ক্যামেরন পার্ক তার মধ্যে সবচেয়ে নিখুঁত বলে মনে করা হয়।

 

আর পাঁচটা শহরে বাস-ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ি যেভাবে চলে, এ শহরে প্লেনও চলে সেইভাবে। গাড়ির গ্যারাজের মতোই প্লেন রাখার জায়গা বা হ্যাঙ্গার রয়েছে ঘরে ঘরে। রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডগুলো অনেকটাই নিচু। প্লেনের ডানা লেগে নষ্ট না হয়ে যায়, তার জন্যই অতিরিক্ত সাবধানতা। এমনকি রাস্তার নামও ‘বোয়িং রোড’।

nn

পুরোনো আমলের ঐতিহ্যবাহী গাড়ির প্রদর্শনীর প্রচলন আছে বিশ্বের বহু শহরে। ক্যামেরন পার্কে গাড়ির পাশাপাশি প্লেনেরও প্রদর্শনী হয়। বছরে এক দিন রানওয়ে বরাবর সার দিয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন মডেলের বিমান। রানওয়ে ধরে একসঙ্গে সেই সব বিমানের উড়ান নেওয়ার দৃশ্যও দেখার মতো। হাতে গোনা ১২৪টি বাড়ি রয়েছে এই শহরে। তার মধ্যে ২০টি বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

 

সেই সব বাড়ি অল্পদামে বিক্রি করে দিচ্ছেন মালিকরা। ফেব্রুয়ারি মাসেই এমন একটি বাড়ির বিজ্ঞাপন আলোচনায় আসে। ইন্টারনেটে দেওয়া সেই বিজ্ঞাপনে প্লেনের হ্যাঙ্গারসহ সেই বাড়িটির দাম চাওয়া হয়েছিল মাত্র ৬ লাখ ৮৫ হাজার ডলার। তবে ক্যামেরন পার্কের অধিকাংশ বাসিন্দা আরামেই আছেন। ছোট্ট ‘শহর’-এ সুবিধার কমতি নেই। এ শহরে স্কুল, বাজার, হাসপাতাল, এমনকি শপিং মলও আছে। সূূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ফোনের বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করার উপায়

» নুসরাতের বুকে কার নামের ট্যাটু?

» সড়ক দুর্ঘটনায় দুই হেলপার নিহত

» আগামীকাল থেকে ২৫ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ

» ইয়াবাসহ চাচা শ্বশুর ও জামাই গ্রেফতার

» জাল নোট তৈরির সরঞ্জাম ও জাল টাকাসহ ৩ জন গ্রেফতার

» বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস আজ

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২৯জন গ্রেপ্তার

» দুই ঘণ্টা পর গাজীপুরে ট্রেন চলাচল শুরু

» উত্তরায় রিকশাচালকদের ছাতা দিলেন মেয়র আতিক

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যে শহরের সবাই প্লেনের মালিক

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, আমেরিকার ক্যামেরন পার্ক নামের শহরটির সবাই প্লেনের মালিক। এ শহরে অলিগলি কিংবা ছোট-বড় রাস্তা বলে কিছুই নেই। মাত্র একটাই পথ, এর পুরোটাই রানওয়ে। শহরকে দুই ভাগে ভাগ করে সেই রানওয়ে এসে মিশেছে যে রাস্তায় সেই রাস্তাটিও ১০০ ফুট প্রশস্ত। প্লেন অনায়াসে ওঠানামা করতে পারে সেখানেও। শুধু তাই নয় ব্যস্ত রাস্তায় চলন্ত গাড়িকে পাশ কাটিয়ে এগিয়েও যেতে পারে কোনো প্রকার বাধা ছাড়া।

 

আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার এই ক্যামেরন পার্ক শহরে যারা থাকেন, তারা অফিস যান প্লেনে চড়ে। এমনকি সপ্তাহিক ছুটি কাটাতেও যান প্লেন নিয়ে। আমেরিকার সরকারি নথিতে অবশ্য ক্যামেরন পার্ক শহর নয়। আসলে একটি ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি। কিন্তু এটি শহর নামে পরিচিত।

474

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আমেরিকার বহু বিমানবন্দর অচল হয়ে পড়েছিল। একইসঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকের সংখ্যাও বাড়ছিল। সংখ্যাটি ১৯৩৯ সালে ৩৪ হাজার থেকে বেড়ে ১৯৪৬ সালে চার লাখে গিয়ে পৌঁছায়। যুদ্ধে অংশ নেওয়া সেই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের আরামের অবসর দিতেই ফ্লাই ইন রেসিডেন্সিয়াল কমিউনিটি গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

 

আমেরিকার বেসামরিক বিমান কর্তৃপক্ষ ঠিক করেন অচল বিমানবন্দরগুলোই অবসরপ্রাপ্ত বিমানচালকদের থাকার ব্যবস্থা করা হবে। চেনা পরিচিত পরিবেশে থাকতে বিমানচালকদের ভালো লাগবে, এই ধারণা থেকেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল।

mn

১৯৬৩ সালে সেই ভাবনা থেকেই তৈরি ক্যামেরন পার্ক। এক সময়ে নাম ছিল ক্যামেরন পার্ক এয়ারপোর্ট। সেই নাম বদলে হয় ক্যামেরন পার্ক এয়ারপার্ক। শহরের প্রতিটি পরিবারেরই কোনো না কোনো সদস্য এক সময়ে বিমানচালক ছিলেন। বিশ্বে এমন ফ্লাই-ইন-কমিউনিটি রয়েছে ৬৪০টি। তার মধ্যে ৬১০টিই আমেরিকায়। তবে বৈশিষ্ট্যে ক্যামেরন পার্ক তার মধ্যে সবচেয়ে নিখুঁত বলে মনে করা হয়।

 

আর পাঁচটা শহরে বাস-ট্যাক্সি বা ব্যক্তিগত গাড়ি যেভাবে চলে, এ শহরে প্লেনও চলে সেইভাবে। গাড়ির গ্যারাজের মতোই প্লেন রাখার জায়গা বা হ্যাঙ্গার রয়েছে ঘরে ঘরে। রাস্তার পাশের সাইনবোর্ডগুলো অনেকটাই নিচু। প্লেনের ডানা লেগে নষ্ট না হয়ে যায়, তার জন্যই অতিরিক্ত সাবধানতা। এমনকি রাস্তার নামও ‘বোয়িং রোড’।

nn

পুরোনো আমলের ঐতিহ্যবাহী গাড়ির প্রদর্শনীর প্রচলন আছে বিশ্বের বহু শহরে। ক্যামেরন পার্কে গাড়ির পাশাপাশি প্লেনেরও প্রদর্শনী হয়। বছরে এক দিন রানওয়ে বরাবর সার দিয়ে দাঁড়ায় বিভিন্ন মডেলের বিমান। রানওয়ে ধরে একসঙ্গে সেই সব বিমানের উড়ান নেওয়ার দৃশ্যও দেখার মতো। হাতে গোনা ১২৪টি বাড়ি রয়েছে এই শহরে। তার মধ্যে ২০টি বাড়ি ফাঁকা পড়ে রয়েছে।

 

সেই সব বাড়ি অল্পদামে বিক্রি করে দিচ্ছেন মালিকরা। ফেব্রুয়ারি মাসেই এমন একটি বাড়ির বিজ্ঞাপন আলোচনায় আসে। ইন্টারনেটে দেওয়া সেই বিজ্ঞাপনে প্লেনের হ্যাঙ্গারসহ সেই বাড়িটির দাম চাওয়া হয়েছিল মাত্র ৬ লাখ ৮৫ হাজার ডলার। তবে ক্যামেরন পার্কের অধিকাংশ বাসিন্দা আরামেই আছেন। ছোট্ট ‘শহর’-এ সুবিধার কমতি নেই। এ শহরে স্কুল, বাজার, হাসপাতাল, এমনকি শপিং মলও আছে। সূূএ:জাগোনিউজ২৪.কম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com