করোনাকালে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন বিলিওনিয়ার!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দাপটে থমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। ভাইরাস ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের ধকল সামলাতে ভীষণ চিন্তায় পড়েছিল বিভিন্ন দেশ। 

 

করোনা মহামারীকালে মূল্যস্ফীতির কারণে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে নতুন শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার তৈরি হয়েছে। এর ফলে আগামী বছর প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৩০ হাজার ৩০৩ জন চরম দরিদ্র হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। ফোর্বস সাময়িকী ও বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ হিসাব দিয়েছে অক্সফাম।

 

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন শুরুর প্রেক্ষাপটে অক্সফাম এ তথ্য জানাল। গত ২২ মে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ২৬ মে পর্যন্ত।

 

বিশ্বের তথাকথিত এলিট শ্রেণি ১৯৯৫ সাল থেকে দাভোসে এ সম্মেলন করে আসছে। তবে করোনা মহামারীর কারণে দুই বছর এ সম্মেলন হয়নি। তাই এবার সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শতকোটিপতি, সিইও দাভোসে জড়ো হচ্ছেন। দাভোস সম্মেলন উপলক্ষে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অসমতা নিয়ে নিয়মিত এমন তথ্য তুলে ধরে অক্সফাম।

 

সোমবার সংস্থাটি জানায়, করোনা একদিকে যেমন নতুন শতকোটিপতি তৈরি করেছে, অন্যদিকে এ মহামারী বহু মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দিয়েছে। চলতি বছর নতুন করে বিশ্বের ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে বলে ধারণা করছে অক্সফাম। এমন হলে প্রতি ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৩০৩ জন মানুষ চরম দরিদ্র হবে।

 

মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও এই বিশ্বে নতুন করে ৫৭৩ জন ব্যক্তি শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৩০ ঘণ্টায় শতকোটিপতি হয়েছে একজন।

 

অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, শতকোটিপতিরা তাদের ভাগ্যের অবিশ্বাস্য উন্নতি উদযাপন করতে দাভোসে আসছে। করোনা মহামারী ও বর্তমানে খাদ্য-জ্বালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের বিপুলসংখ্যক মানুষ অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির মুখে পড়েছে। টিকে থাকার জন্য তাদের লড়তে হচ্ছে।

 

এদিকে মহামারীর সুবাদে যারা শতকোটিপতি হয়েছে, তাদের ওপর ‘সংহতি কর’ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সংস্থাটি বলছে, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শিকার লোকজনকে সহায়তার জন্য এ কর আরোপ করা উচিত। পাশাপাশি মহামারী থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার তহবিলেও এ কর কাজে লাগানো যাবে।

 

অক্সফাম জানায়, কোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ২ শতাংশ ও শতকোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ৫ শতাংশ করারোপ করা হলে এক বছরে ২ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সংগ্রহ করা যাবে। যা দিয়ে বিশ্বের ২৩০ কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণ, পর্যাপ্ত টিকা তৈরি ও দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা সম্ভব। সূত্র: অক্সফামমার্কেট ওয়াচইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সাংবাদিকরা স্বাধীনভাবে কাজ করছেন: প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান

» রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় এক ব্যক্তি নিহত

» খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের কল্যাণেও বেশ কিছু নতুন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার- ধর্মমন্ত্রী

» দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর লক্ষ্মীপুরে বৃষ্টি নামলো

» যেকোনো মূল্যে নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ জেলা প্রশাসক ড.বদিউর আলম

» বিশ্ব গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে জামালপুর জেলা প্রেসক্লাবের উদ্দ্যোগে কর্মশালা

» ফোনের বিরক্তিকর বিজ্ঞাপন বন্ধ করার উপায়

» নুসরাতের বুকে কার নামের ট্যাটু?

» সড়ক দুর্ঘটনায় দুই হেলপার নিহত

» আগামীকাল থেকে ২৫ জেলায় স্কুল-কলেজ-মাদরাসা বন্ধ

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

করোনাকালে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন বিলিওনিয়ার!

প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের দাপটে থমকে গিয়েছিল গোটা বিশ্বের অর্থনীতি। ভাইরাস ঠেকাতে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের ধকল সামলাতে ভীষণ চিন্তায় পড়েছিল বিভিন্ন দেশ। 

 

করোনা মহামারীকালে মূল্যস্ফীতির কারণে প্রতি ৩০ ঘণ্টায় একজন করে নতুন শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার তৈরি হয়েছে। এর ফলে আগামী বছর প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ৩০ হাজার ৩০৩ জন চরম দরিদ্র হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থা অক্সফাম এই আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। ফোর্বস সাময়িকী ও বিশ্বব্যাংকের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এ হিসাব দিয়েছে অক্সফাম।

 

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলন শুরুর প্রেক্ষাপটে অক্সফাম এ তথ্য জানাল। গত ২২ মে শুরু হওয়া এ সম্মেলন চলবে ২৬ মে পর্যন্ত।

 

বিশ্বের তথাকথিত এলিট শ্রেণি ১৯৯৫ সাল থেকে দাভোসে এ সম্মেলন করে আসছে। তবে করোনা মহামারীর কারণে দুই বছর এ সম্মেলন হয়নি। তাই এবার সম্মেলনে অংশ নিতে বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, শতকোটিপতি, সিইও দাভোসে জড়ো হচ্ছেন। দাভোস সম্মেলন উপলক্ষে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অসমতা নিয়ে নিয়মিত এমন তথ্য তুলে ধরে অক্সফাম।

 

সোমবার সংস্থাটি জানায়, করোনা একদিকে যেমন নতুন শতকোটিপতি তৈরি করেছে, অন্যদিকে এ মহামারী বহু মানুষকে দারিদ্র্যসীমার নিচে ঠেলে দিয়েছে। চলতি বছর নতুন করে বিশ্বের ২৬ কোটি ৩০ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যাবে বলে ধারণা করছে অক্সফাম। এমন হলে প্রতি ঘণ্টায় ৩০ হাজার ৩০৩ জন মানুষ চরম দরিদ্র হবে।

 

মহামারীর কারণে বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বেড়ে জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়লেও এই বিশ্বে নতুন করে ৫৭৩ জন ব্যক্তি শতকোটিপতি বা বিলিয়নিয়ার হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি ৩০ ঘণ্টায় শতকোটিপতি হয়েছে একজন।

 

অক্সফামের নির্বাহী পরিচালক গ্যাব্রিয়েলা বুচার এক বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, শতকোটিপতিরা তাদের ভাগ্যের অবিশ্বাস্য উন্নতি উদযাপন করতে দাভোসে আসছে। করোনা মহামারী ও বর্তমানে খাদ্য-জ্বালানির অত্যধিক মূল্যবৃদ্ধি তাদের জন্য আশীর্বাদ হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্বের বিপুলসংখ্যক মানুষ অসহনীয় মূল্যবৃদ্ধির মুখে পড়েছে। টিকে থাকার জন্য তাদের লড়তে হচ্ছে।

 

এদিকে মহামারীর সুবাদে যারা শতকোটিপতি হয়েছে, তাদের ওপর ‘সংহতি কর’ আরোপের আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। সংস্থাটি বলছে, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির শিকার লোকজনকে সহায়তার জন্য এ কর আরোপ করা উচিত। পাশাপাশি মহামারী থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার তহবিলেও এ কর কাজে লাগানো যাবে।

 

অক্সফাম জানায়, কোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ২ শতাংশ ও শতকোটিপতিদের সম্পদের ওপর বার্ষিক ৫ শতাংশ করারোপ করা হলে এক বছরে ২ দশমিক ৫২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সংগ্রহ করা যাবে। যা দিয়ে বিশ্বের ২৩০ কোটি মানুষের দারিদ্র্য দূরীকরণ, পর্যাপ্ত টিকা তৈরি ও দরিদ্র দেশগুলোর মানুষের সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার ব্যবস্থা করা সম্ভব। সূত্র: অক্সফামমার্কেট ওয়াচইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউকে

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com