গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে চার সমস্যা

চট্টগ্রামে বর্তমানে গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে প্রধান চারটি সমস্যা। এর মধ্যে অন্যতম সমস্যাগুলো হলো- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, রক্তশূন্যতা এবং হরমোন সমস্যা জনিতসহ নানা ধরনের মেডিকেল জটিলতা। এসব রোগের কারণে মা ও গর্ভের অনাগত বাচ্চার ঝুঁকিও অনেক বেড়ে যায়।        

 

চট্টগ্রাম ইন্টান্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (সিআইএমসি) এর একদল গবেষকের ‘গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণায় এ ফলাফল জানা যায়। চট্টগ্রামের ইউএসটিসিতে ভর্তিকৃত ৫০ জন গর্ভবর্তী মায়েদের মধ্যে চলতি বছর এ গবেষণা পরিচালিত হয়।

 

সিআইএমসি’র প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. ফারজানা চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় যুক্ত ছিলেন সিআইএমসি’র প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মুসলিনা আক্তার ও সহকারি অধ্যাপক ডা. শামীমা আক্তার। গবেষণাটি তত্ত্বাবধান করেন ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ।

 

গবেষণায় বলা হয়, ২১-২৫ বছর বয়সী মায়েরা এ জাতীয় সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ৩৮ শতাংশ মায়েদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস আছে, ৩৪ শতাংশ মায়েরা পূর্ববতী গর্ভাবস্থায় প্রেশার জনিত সমস্যায় ভুগেছিলেন। ৪৮ শতাংশ মায়েদের ডেলিভারি হয় সিজারিয়ানের মাধ্যমে, ৪০ শতাংশ হয় নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে এবং ১২ শতাংশ ডেলিভারি হয় যন্ত্রের মাধ্যমে। মায়ের উচ্চ রক্তচাপের কারণে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বাচ্চা পেটেই মারা গিয়েছে। এ সমস্ত মায়ের মধ্যে অধিকাংশেরই ইমমেচিউর বেবি (অপূর্ণাঙ্গা বাচ্চা) জন্মগ্রহণ করে।  ফলে এর মধ্যে অনেককেই জন্মের পর এনআইসিইউতে (নিউ নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করাতে হয়।

 

সিআইএমসি’র প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মুসলিনা আক্তার বলেন, গর্ভবতী মায়েদের বর্তমানে নানা ধরণের জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অনেক সমস্যার মধ্যে কিছু জটিলতা প্রতিনিয়তই রোগীদের মধ্যে দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, রক্তশূন্যতা এবং হরমোন সমস্যাসহ নানা ধরনের মেডিকেল জটিলতা। ৫০ জন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে গবেষণা পরিচালনা করে সেখানেও তাদের মধ্যে এসব সমস্যা শনাক্ত করা হয়েছে। তাই প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শের আওতায় থাকা জরুরি। কোনো জটিলতা দেখা গেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি বলেন, গর্ভবতী মায়েদের এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে কিছু বিষয় সব সময় মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে আছে- প্রেগনেন্সি পূর্ববতী নিয়মিতই স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ, গর্ভবতী অবস্থায় নিয়মিত চেকআপে থাকা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এ সব নিয়ম মেনে চললে জটিলতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি।    ,

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» মোবাইল-ইন্টারনেট সেবায় ভ্যাট প্রত্যাহার না করলে এনবিআর ঘেরাও

» ইইউর রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি

» এসআইকে কুপিয়ে হত্যা মামলায় দুইজন গ্রেপ্তার

» জোড়া খুনের ঘটনায় দুইজনগ্রেফতার

» সাবেক এমপি হেনরীর সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ

» আগামী নির্বাচন হবে ইতিহাসের সেরা : ড. ইউনূস

» ‘অন্তর্বর্তী সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করেনি’

» টিউলিপের ক্ষমা চাওয়া উচিত: প্রধান উপদেষ্টা

» মোহাম্মদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ৪০

» আমাদের মূল ফোকাস জাতীয় নির্বাচন: ইসি

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে চার সমস্যা

চট্টগ্রামে বর্তমানে গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে প্রধান চারটি সমস্যা। এর মধ্যে অন্যতম সমস্যাগুলো হলো- উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, রক্তশূন্যতা এবং হরমোন সমস্যা জনিতসহ নানা ধরনের মেডিকেল জটিলতা। এসব রোগের কারণে মা ও গর্ভের অনাগত বাচ্চার ঝুঁকিও অনেক বেড়ে যায়।        

 

চট্টগ্রাম ইন্টান্যাশনাল মেডিকেল কলেজ (সিআইএমসি) এর একদল গবেষকের ‘গর্ভবতী মায়েদের ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা’ শীর্ষক গবেষণায় এ ফলাফল জানা যায়। চট্টগ্রামের ইউএসটিসিতে ভর্তিকৃত ৫০ জন গর্ভবর্তী মায়েদের মধ্যে চলতি বছর এ গবেষণা পরিচালিত হয়।

 

সিআইএমসি’র প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. ফারজানা চৌধুরীর নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণায় যুক্ত ছিলেন সিআইএমসি’র প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. মুসলিনা আক্তার ও সহকারি অধ্যাপক ডা. শামীমা আক্তার। গবেষণাটি তত্ত্বাবধান করেন ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. মুসলিম উদ্দিন সবুজ।

 

গবেষণায় বলা হয়, ২১-২৫ বছর বয়সী মায়েরা এ জাতীয় সমস্যায় বেশি আক্রান্ত হচ্ছেন। ৩৮ শতাংশ মায়েদের পরিবারে উচ্চ রক্তচাপের ইতিহাস আছে, ৩৪ শতাংশ মায়েরা পূর্ববতী গর্ভাবস্থায় প্রেশার জনিত সমস্যায় ভুগেছিলেন। ৪৮ শতাংশ মায়েদের ডেলিভারি হয় সিজারিয়ানের মাধ্যমে, ৪০ শতাংশ হয় নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে এবং ১২ শতাংশ ডেলিভারি হয় যন্ত্রের মাধ্যমে। মায়ের উচ্চ রক্তচাপের কারণে ৮ দশমিক ৮ শতাংশ বাচ্চা পেটেই মারা গিয়েছে। এ সমস্ত মায়ের মধ্যে অধিকাংশেরই ইমমেচিউর বেবি (অপূর্ণাঙ্গা বাচ্চা) জন্মগ্রহণ করে।  ফলে এর মধ্যে অনেককেই জন্মের পর এনআইসিইউতে (নিউ নেটাল ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট) ভর্তি করাতে হয়।

 

সিআইএমসি’র প্রসূতী ও স্ত্রীরোগ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মুসলিনা আক্তার বলেন, গর্ভবতী মায়েদের বর্তমানে নানা ধরণের জটিলতার মুখোমুখি হতে হচ্ছে। অনেক সমস্যার মধ্যে কিছু জটিলতা প্রতিনিয়তই রোগীদের মধ্যে দেখা দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিকস, রক্তশূন্যতা এবং হরমোন সমস্যাসহ নানা ধরনের মেডিকেল জটিলতা। ৫০ জন গর্ভবতী মায়ের মধ্যে গবেষণা পরিচালনা করে সেখানেও তাদের মধ্যে এসব সমস্যা শনাক্ত করা হয়েছে। তাই প্রতিটি গর্ভবতী মায়ের সব সময় চিকিৎসকের পরামর্শের আওতায় থাকা জরুরি। কোনো জটিলতা দেখা গেলেই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি বলেন, গর্ভবতী মায়েদের এসব সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে কিছু বিষয় সব সময় মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে আছে- প্রেগনেন্সি পূর্ববতী নিয়মিতই স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ, গর্ভবতী অবস্থায় নিয়মিত চেকআপে থাকা এবং সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা। এ সব নিয়ম মেনে চললে জটিলতা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব বলে আমরা মনে করি।    ,

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com