যদি শিশুর মলে রক্ত দেখা যায়

বিভিন্ন কারণে শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে, তাতে আতঙ্কিত না হয়ে যথাযথ চিকিৎসা করলে শিশু পুরোপুরি ভালো থাকবে। অনেক সময় লাল রঙের যেমন জেলি, টমেটো বা স্ট্রবেরি, লালশাক, লাল তরমুজ ইত্যাদি খাবারের কারণে শিশুর বমিতে বা মলে রক্তের মতো রং নিয়ে আসতে পারে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে যথাসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 
শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে আছে, এনাল ফিসার, পাইলস, রেকটাল পলিপস, প্রোকটাইটিস ইত্যাদি।

১. পলিপ হচ্ছে ছোট গোটা বা আঙ্গুলের মতো অংশ যা পায়ুপথ বা রেকটামে হয়। এই আঙ্গুলের মতো অংশে যখন মল ত্যাগের সময় মলের ঘষা লাগে তখন তাজা রক্ত বের হয়। এই পলিপ কোলোনস্কোপ বা সিগময়ডোস্কোপ নামক একটি যন্ত্রের সাহায্যে পায়ুপথেই অপসারণ করা যায়। এ জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না বা হাসপাতালে থাকতে হয় না। অপসারণের দুই ঘণ্টার মধ্যে রোগী বাসায় ফিরে যেতে পারে এবং খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কোলোনস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়, তার কোনো পলিপ আছে কিনা। কারণ কিছু ধরনের পলিপ আছে, যা কোলন বা বৃহদন্তে হয় এবং এগুলো পরবর্তীতে ক্যান্সারেও রূপান্তরিত হয়। সুতরাং এ জাতীয় রোগ শিশুদেরও আছে কিনা তা আগেই নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
২. এনাল ফিসার শিশুদের একটি সাধারণ রোগ, মাঝে মাঝে শিশুর মল কষা বা শক্ত হতে পারে

সে ক্ষেত্রে জোরে বা প্রেসার দিয়ে মলত্যাগ করতে চাইলে সেই শক্ত মল মলদ্বারের পেছন দিকে জোরে ঘষা দেয়, ফলে ওই অংশে একটুখানি ছিঁড়ে যেতে পারে। ছিঁড়ে যাওয়াকেই এনাল ফিসার (অহধষ ঋরংংধৎব) বলে। এতে মলের সঙ্গে বা টিস্যু পেপারে কয়েক ফোঁটা তাজা রক্ত যায়। শিশুদেরও এই রোগে ভীত হওয়ার কিছু নেই। কোষ্ঠ নরম করলে, যেমন শাক-সবজি খেয়ে বা মিল্ক অব ম্যাগনেশিয়া জাতীয় ওষুধ খেয়ে কোষ্ঠ স্বাভাবিক হলে এ রোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনা-আপনি সেরে যায়।
৩. পাইলসও শিশুদের হতে পারে। সাধারণত খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।
৪.রেকটাল পলিপস:

এ ক্ষেত্রে মলত্যাগের সময় মলদ্বারটি বের হয়ে আসে, সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। এটি বিশেষ ধরনের ইঞ্জেকশন বা অপারেশনের সাহায্যে চিকিৎসা করা যায়। সার কথা হচ্ছে, শিশুদেরও মলের সঙ্গে রক্ত গেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসার মাধ্যমে এটি ভালো করা সম্ভব। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনসহ অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু এতে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। অপারেশন প্রয়োজন হলেও শিশু দুই-একদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে। অভিভাবকদের সচেতনতা এ ক্ষেত্রে অনেক জরুরি। সবচেয়ে বড় কথা, প্রাথমিক অবস্থা থেকেই এসব রোগের চিকিৎসা নিতে হবে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ)
কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
চেম্বারঃ ১৯ গ্রীন রোড, এ.কে. কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা।
ফোন-০১৭১২৯৬৫০০৯

সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

» আওয়ামী লীগের শ্রমিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল

» বঙ্গবন্ধু সব সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন : খাদ্যমন্ত্রী

» ট্রাকচাপায় প্রকৌশলী নিহত

» অপহরণকারী চক্রের সদস্য সিরাজকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার

» কেনিয়ায় বৃষ্টি-বন্যায় নিহত বেড়ে ১৬৯

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২১জন গ্রেপ্তার

» নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য শ্রমিক ও জনগণের জন্য অভিশাপ : ইনু

» শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না : রিজভী

» যতবার সরকারে এসেছি ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

যদি শিশুর মলে রক্ত দেখা যায়

বিভিন্ন কারণে শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত যেতে পারে, তাতে আতঙ্কিত না হয়ে যথাযথ চিকিৎসা করলে শিশু পুরোপুরি ভালো থাকবে। অনেক সময় লাল রঙের যেমন জেলি, টমেটো বা স্ট্রবেরি, লালশাক, লাল তরমুজ ইত্যাদি খাবারের কারণে শিশুর বমিতে বা মলে রক্তের মতো রং নিয়ে আসতে পারে। তাই আতঙ্কিত না হয়ে যথাসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 
শিশুদের মলের সঙ্গে রক্ত যাওয়ার যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে আছে, এনাল ফিসার, পাইলস, রেকটাল পলিপস, প্রোকটাইটিস ইত্যাদি।

১. পলিপ হচ্ছে ছোট গোটা বা আঙ্গুলের মতো অংশ যা পায়ুপথ বা রেকটামে হয়। এই আঙ্গুলের মতো অংশে যখন মল ত্যাগের সময় মলের ঘষা লাগে তখন তাজা রক্ত বের হয়। এই পলিপ কোলোনস্কোপ বা সিগময়ডোস্কোপ নামক একটি যন্ত্রের সাহায্যে পায়ুপথেই অপসারণ করা যায়। এ জন্য রোগীকে অজ্ঞান করতে হয় না বা হাসপাতালে থাকতে হয় না। অপসারণের দুই ঘণ্টার মধ্যে রোগী বাসায় ফিরে যেতে পারে এবং খাওয়া-দাওয়া করতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে কোলোনস্কোপি পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হতে হয়, তার কোনো পলিপ আছে কিনা। কারণ কিছু ধরনের পলিপ আছে, যা কোলন বা বৃহদন্তে হয় এবং এগুলো পরবর্তীতে ক্যান্সারেও রূপান্তরিত হয়। সুতরাং এ জাতীয় রোগ শিশুদেরও আছে কিনা তা আগেই নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
২. এনাল ফিসার শিশুদের একটি সাধারণ রোগ, মাঝে মাঝে শিশুর মল কষা বা শক্ত হতে পারে

সে ক্ষেত্রে জোরে বা প্রেসার দিয়ে মলত্যাগ করতে চাইলে সেই শক্ত মল মলদ্বারের পেছন দিকে জোরে ঘষা দেয়, ফলে ওই অংশে একটুখানি ছিঁড়ে যেতে পারে। ছিঁড়ে যাওয়াকেই এনাল ফিসার (অহধষ ঋরংংধৎব) বলে। এতে মলের সঙ্গে বা টিস্যু পেপারে কয়েক ফোঁটা তাজা রক্ত যায়। শিশুদেরও এই রোগে ভীত হওয়ার কিছু নেই। কোষ্ঠ নরম করলে, যেমন শাক-সবজি খেয়ে বা মিল্ক অব ম্যাগনেশিয়া জাতীয় ওষুধ খেয়ে কোষ্ঠ স্বাভাবিক হলে এ রোগ অধিকাংশ ক্ষেত্রে আপনা-আপনি সেরে যায়।
৩. পাইলসও শিশুদের হতে পারে। সাধারণত খাদ্যাভাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগের চিকিৎসা করা সম্ভব।
৪.রেকটাল পলিপস:

এ ক্ষেত্রে মলত্যাগের সময় মলদ্বারটি বের হয়ে আসে, সঙ্গে রক্ত যেতে পারে। এটি বিশেষ ধরনের ইঞ্জেকশন বা অপারেশনের সাহায্যে চিকিৎসা করা যায়। সার কথা হচ্ছে, শিশুদেরও মলের সঙ্গে রক্ত গেলে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাধারণ চিকিৎসার মাধ্যমে এটি ভালো করা সম্ভব। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনসহ অন্যান্য চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে। কিন্তু এতে ভীত হওয়ার কোনো কারণ নেই। অপারেশন প্রয়োজন হলেও শিশু দুই-একদিনের মধ্যে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে ওঠে। অভিভাবকদের সচেতনতা এ ক্ষেত্রে অনেক জরুরি। সবচেয়ে বড় কথা, প্রাথমিক অবস্থা থেকেই এসব রোগের চিকিৎসা নিতে হবে।
লেখক: সহযোগী অধ্যাপক (কলোরেক্টাল সার্জারি বিভাগ)
কলোরেক্টাল, লেপারোস্কপিক ও জেনারেল সার্জন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।
চেম্বারঃ ১৯ গ্রীন রোড, এ.কে. কমপ্লেক্স, লিফট-৪, ঢাকা।
ফোন-০১৭১২৯৬৫০০৯

সূএ:মানবজমিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com