ঢাবির জিয়া হল: প্রস্তুত হয়েও চালু হচ্ছে না রিডিং রুম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জিয়াউর রহমান হলে প্রশাসনের গড়িমসিতে চালু হচ্ছে না নতুন রিডিং রুমটি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বারবার চালু করার আশ্বাস দিলেও কোনোভাবেই চালু হচ্ছে না রুমটি। হল প্রশাসন ইচ্ছে করেই কৃত্রিম সংকট তৈরি করার লক্ষ্যে রিডিং রুমটি চালু করছে না। এতে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

 

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত ১০ মার্চ রিডিং রুমটি চালু করার কথা থাকলেও বারবার তারিখ পিছিয়ে বিলম্ব করেছে হল প্রশাসন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রুমটিতে তালা মেরে রাখা হয়েছে।

 

জিয়াউর রহমান হলটিতে এখন মাত্র একটি রিডিং রুম, যেখানে কষ্টেসৃষ্টে ৭৫ জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে পড়তে পারেন। এর ফলে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ রিডিং রুমে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। নিজ হল ছেড়ে কবি জসিমউদ্দীন হল, সূর্যসেন হল কিংবা বিজয় ৭১ হলের রিডিং রুমে গিয়ে পড়াশোনা করতে হয়।

 

এ বিষয়ে হলটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন আহমেদ বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বর্ষের ৭৩ জন প্রথম বর্ষের ৬৫ জন আছি যারা হলের রিডিং রুমে পড়ার সুযোগই পাচ্ছি না। সিনিয়ররা সবসময় রিডিং রুমে পড়াশোনা করে। আমাদের অন্যান্য হলে গিয়ে কষ্ট করে পড়তে হয়। অথচ নিজের হলেই একটি প্রস্তত রিডিং রুম আছে।

 

এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজু শেখ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা হলের রিডিং রুম থাকার পরেও কষ্ট করে পড়াশোনা করছি। হল প্রশাসন সবই দেখছে কিন্তু, বারবার আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছে। আমরা দ্রুত এই রিডিং রুমটি চালু করার দাবি জানাচ্ছি।’

 

হল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নতুন এ রিডিং রুমটিতে ১০০ জন শিক্ষার্থীর বসার ব্যবস্থা আছে। রিডিং রুমটির কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছে গত বছরের শেষ দিকে কাজ প্রায় শেষ হলেও চালু হয়নি এখন পর্যন্তও।

 

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাহ হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি গত ১১ মাস আগেই হলের দায়িত্বে আসি। দায়িত্বে আসার আগেই রিডিং রুমটির স্ট্রাকচারাল প্রসেস ঠিক ছিল। শুধু চেয়ার টেবিল ছিল না। আমি আসার পরে এখানে একটি ইমার্জেন্সি আউটডোর করেছি।’

 

বিলম্বের কারণ হিসেবে ঠিকাদার নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা, কাজের ধীরগতি ও রিডিং রুমের জন্য চেয়ার টেবিল বানানোর প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণকে উল্লেখ করে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘মূলত এখানে ঠিকাদারের নিয়োগ ও চেয়ার টেবিল বানাতে অনেক সময় নিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন। কিছুদিন আগে তারা আমাদের কাছে রুমটি হস্তান্তর করে।’

 

তবে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন কবে রিডিং রুমটি হস্তান্তর করেছে এটা হল প্রশাসন জানাতে পারেনি। ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি তথ্য দিতে ব্যর্থ হন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে : মান্না

» শিক্ষার্থীদের সততার চর্চা করতে হবে : অর্থ উপদেষ্টা

» বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেয়নি আরব আমিরাত : রাষ্ট্রদূত

» সেনাবাহিনীর সাথে ইউপিডিএফের গোলাগুলি, অস্ত্র উদ্ধার

» ১ বছর আগে বলেছিলাম, অদৃশ্য শক্তি মাথাচাড়া দিচ্ছে, আজ দৃশ্যমান হচ্ছে: তারেক রহমান

» ছাত্রসংসদ নির্বাচনের প্রভাব জাতীয় নির্বাচনেও পড়বে: জামায়াত আমির

» রাতের অন্ধকারে ‘জিনের আসর’ বসিয়ে নেতা নির্বাচন করে জামায়াত: আজিজুল বারী হেলাল

» ক্ষমতায় গেলে নারী উদ্যোক্তাদের বিশেষ ঋণ দিয়ে স্বাবলম্বী করবে জামায়াত

» কেউ যেন বিএনপির নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিস্বার্থ হাসিল করতে না পারে: তারেক রহমান

» বুক ফুলিয়ে দুর্গাপূজা উদযাপন করুন: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের উপদেষ্টা

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ঢাবির জিয়া হল: প্রস্তুত হয়েও চালু হচ্ছে না রিডিং রুম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) জিয়াউর রহমান হলে প্রশাসনের গড়িমসিতে চালু হচ্ছে না নতুন রিডিং রুমটি। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, বারবার চালু করার আশ্বাস দিলেও কোনোভাবেই চালু হচ্ছে না রুমটি। হল প্রশাসন ইচ্ছে করেই কৃত্রিম সংকট তৈরি করার লক্ষ্যে রিডিং রুমটি চালু করছে না। এতে পড়াশোনার ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।

 

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, গত ১০ মার্চ রিডিং রুমটি চালু করার কথা থাকলেও বারবার তারিখ পিছিয়ে বিলম্ব করেছে হল প্রশাসন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রুমটিতে তালা মেরে রাখা হয়েছে।

 

জিয়াউর রহমান হলটিতে এখন মাত্র একটি রিডিং রুম, যেখানে কষ্টেসৃষ্টে ৭৫ জন শিক্ষার্থী একসঙ্গে পড়তে পারেন। এর ফলে শিক্ষার্থীদের বড় একটি অংশ রিডিং রুমে পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। নিজ হল ছেড়ে কবি জসিমউদ্দীন হল, সূর্যসেন হল কিংবা বিজয় ৭১ হলের রিডিং রুমে গিয়ে পড়াশোনা করতে হয়।

 

এ বিষয়ে হলটির দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সুজন আহমেদ বলেন, ‘আমরা দ্বিতীয় বর্ষের ৭৩ জন প্রথম বর্ষের ৬৫ জন আছি যারা হলের রিডিং রুমে পড়ার সুযোগই পাচ্ছি না। সিনিয়ররা সবসময় রিডিং রুমে পড়াশোনা করে। আমাদের অন্যান্য হলে গিয়ে কষ্ট করে পড়তে হয়। অথচ নিজের হলেই একটি প্রস্তত রিডিং রুম আছে।

 

এ বিষয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাজু শেখ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা হলের রিডিং রুম থাকার পরেও কষ্ট করে পড়াশোনা করছি। হল প্রশাসন সবই দেখছে কিন্তু, বারবার আশ্বাস দিয়েই যাচ্ছে। আমরা দ্রুত এই রিডিং রুমটি চালু করার দাবি জানাচ্ছি।’

 

হল প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, নতুন এ রিডিং রুমটিতে ১০০ জন শিক্ষার্থীর বসার ব্যবস্থা আছে। রিডিং রুমটির কাজ অনেক আগেই শুরু হয়েছে গত বছরের শেষ দিকে কাজ প্রায় শেষ হলেও চালু হয়নি এখন পর্যন্তও।

 

এ বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিল্লাহ হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি গত ১১ মাস আগেই হলের দায়িত্বে আসি। দায়িত্বে আসার আগেই রিডিং রুমটির স্ট্রাকচারাল প্রসেস ঠিক ছিল। শুধু চেয়ার টেবিল ছিল না। আমি আসার পরে এখানে একটি ইমার্জেন্সি আউটডোর করেছি।’

 

বিলম্বের কারণ হিসেবে ঠিকাদার নিয়োগে দীর্ঘসূত্রতা, কাজের ধীরগতি ও রিডিং রুমের জন্য চেয়ার টেবিল বানানোর প্রক্রিয়ায় সময়ক্ষেপণকে উল্লেখ করে প্রাধ্যক্ষ বলেন, ‘মূলত এখানে ঠিকাদারের নিয়োগ ও চেয়ার টেবিল বানাতে অনেক সময় নিয়েছে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন। কিছুদিন আগে তারা আমাদের কাছে রুমটি হস্তান্তর করে।’

 

তবে ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশন কবে রিডিং রুমটি হস্তান্তর করেছে এটা হল প্রশাসন জানাতে পারেনি। ইঞ্জিনিয়ারিং সেকশনের দায়িত্বে থাকা নির্বাহী প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি তথ্য দিতে ব্যর্থ হন।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com