পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত ১৫ এপ্রিল থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আগামী ৩ মে সম্ভাব্য ঈদের দিন হিসাব করে ২৯, ৩০ ও ১ তারিখের বাসের সব অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে গেছে বলে দাবি করেছেন বাস কাউন্টারের মাস্টাররা। টিকিট না পেয়ে ঈদে কীভাবে বাড়ি যাবেন সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা বাড়ি ফেরা মানুষের। গতকাল রাজধানীর টেকনিক্যাল, কলাবাগান, গাবতলী বাস টার্মিনাল ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
গাবতলী বাস টার্মিনালের বিভিন্ন বাস কোম্পানির কাউন্টার থেকে জানানো হয়- ২৯, ৩০ এপ্রিল এবং ১ ও ২ মের টিকিট শেষ হয়ে গেছে। সাকুরা পরিবহনের টেকনিক্যাল কাউন্টারের মাস্টার মো. আবদুল হক বলেন, চাকরিজীবীদের আগ্রহের কেন্দ্রে ২৯ এবং ৩০ এপ্রিলের টিকিট। ছাত্ররা মূলত আগেই বাড়ি যাচ্ছেন। তারা ২৭ বা ২৮ এপ্রিলের দিকেই চলে যাচ্ছেন। বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রির শুরুর দিকে অনেক যাত্রী টিকিট নিতে এলেও এখন সেই চাপ অনেক কম। অনেকেই হয়তো বুঝতে পারেন যে এখন টার্মিনালে গিয়ে কাক্সিক্ষত টিকিট না-ও পেতে পারে। তাই এখন চাপ নেই। আর টিকিটও নেই। অধিকাংশ যাত্রী কাক্সিক্ষত দিনের টিকিট চেয়ে পাচ্ছেন না। হানিফ এন্টারপ্রাইজের গাবতলী কাউন্টারে কথা হয় দিনাজপুর ঘোড়াঘাট রুটের যাত্রী আলী হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শুরুর দিকে ঘণ্টাখানেক লাইনে দাঁড়িয়েও ২৯ তারিখের টিকিট পাইনি। তাই আজ আবার আসলাম টিকিট সংগ্রহ করতে। প্রথম দিন বাসের একজন বলেছিলেন আজ আসতে, কারণ যাত্রীদের চাহিদা থাকলে বাস বাড়াতে পারে। কিন্তু আসার পর দেখি তেমন সম্ভাবনা নেই। টিকিট পাইনি। তবে ২ তারিখের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু সেটা দিয়ে আমার কোনো লাভ নেই।’ হানিফ এন্টারপ্রাইজের জি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, চাহিদা বেশি থাকায় ২৯, ৩০ এপ্রিল ও ১ মে টিকিট শেষ। এটা নোটিস বোর্ডের মাধ্যমে জানানো হয়েছে। বিশেষ করে দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও ও রংপুর রুটের এসব দিনের টিকিট দিতে আমরা পারছি না। অন্য রুটে কিছু টিকিট মিলছে। তবে যাত্রী সংখ্যা বেশি হলে আমরা বাড়তি বাস নামাতে পারি। সে জন্য আরও দুই দিন অপেক্ষা করতে হবে। মহাখালী টার্মিনালে আগাম টিকিট নিতে আসা কয়েকজন যাত্রী বলেন, এখনো কোনো গার্মেন্ট ছুটি দেয়নি। ছুটি হলে চাপ বাড়বে। তাই আগেই বাসের অগ্রিম টিকিট নিতে এসেছি। তবে কোনো বাসের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। ময়মনসিংহ, কুড়িগ্রাম, জামালপুরগামী কোনো বাসে টিকিট নেই। ঈদযাত্রার বাসের অগ্রিম টিকিট না পেয়ে নগরবাসী ঢাকা ছাড়তে শুরু করেছেন। পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এবারের ঈদে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ গ্রামে যাবে। গার্মেন্ট-শিল্প-কারখানা ও সরকারি অফিসে একসঙ্গে ছুটি হবে। এতে শেষ সপ্তাহে যাত্রীদের চাপও বাড়বে কয়েকগুণ।
এ ছাড়া ঈদযাত্রায় মহাসড়কে দুর্ভোগ সহ্য করতে হবে। কারণ ঢাকা থেকে বের হওয়ার অধিকাংশ সড়কে খানাখন্দ রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্পের নির্মাণকাজ চলমান থাকায় তীব্র যানজটের আশঙ্কা রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কসহ সিরাজগঞ্জ, সিদ্ধিরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কাঁচপুর সেতু, বঙ্গবন্ধু সেতু ও শিমুলিয়া ফেরিঘাটসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে। সূএ: বাংলাদেশ প্রতিদিন