হবু মায়ের ত্বকের যত্নে কোন প্রোডাক্টগুলো এড়িয়ে চলা উচিত?

একজন নারী যখন জানতে পারেন তিনি সন্তান সম্ভবা, ঠিক তখন থেকেই তার পুরো দুনিয়াটা যেন বদলে যায়! পুরোটা প্রেগনেন্সি জুড়েই অনাগত শিশুর যত্ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই তার সময় চলে যায়। অনেক হবু মা-ই এসময়ে নিজের যত্ন নিতে ভুলে যান। কিন্তু এ সময় গর্ভের শিশুর পাশাপাশি মায়েরও প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা। এতে কিন্তু মনও ভালো থাকে। সেইজন্যে হবু মায়ের ত্বকের যত্নে কী কী করা যেতে পারে আর কোন ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো এই সময়ে এড়িয়ে চলা উচিত, এটা নিয়ে আজকের ফিচার।

প্রেগনেন্সিতে ত্বকের পরিবর্তন 

প্রেগনেন্সি রিলেটেড স্কিনের সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে। এর জন্য মূলত হরমোনের পরিবর্তনকেই দায়ী করা যায় অথবা একে মাতৃত্বকালীন স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন হিসেবেও ধরা যায়। কিছু কিছু মায়েদের পুরো প্রেগনেন্সিতে ত্বকের কোনো সমস্যাই হয় না, স্বাভাবিকই থাকে সবকিছু। কিন্তু বাকিদের বেলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রকম ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়।

 

সবথেকে কমন কিছু পরিবর্তন হলো-

১) ত্বক শুষ্ক ও খসখসে লাগে এবং ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়। চোখের নিচেও ডার্ক সার্কেল পড়তে পারে।

২) স্কিন ডার্ক বা কালচে হয়ে যাওয়া এই সময়ে বেশ কমন। বিশেষ করে গলা, ঘাড়, আন্ডারআর্মস ইত্যাদি স্থানে চাপ চাপ কালচে ময়লার মতো দাগ বেশি দেখা দেয়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মেলাজমা (Melasma) বলা হয়।

৩) কারো যদি প্রেগনেন্সির আগে থেকেই স্কিনের সমস্যা থেকে থাকে যেমন একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদি এ সময়ে সেটা পরিবর্তিত হয়। কারও ক্ষেত্রে ভালো হয়, কারও ক্ষেত্রে অবস্থার অবনতি হয়।

৪) এছাড়াও স্ট্রেচ মার্কস, স্পাইডার ভেইন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ইচিনেস এই ধরনের সমস্যাও দেখা দেয়।

হবু মায়ের ত্বকের যত্নে যা যা এড়িয়ে চলতে হবে

 

ত্বকের যত্নে অনেক রকম প্রসাধনীই আমরা ব্যবহার করে থাকি। কিছু প্রসাধনীতে এমন অনেক কেমিক্যাল আছে যা গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করলে তা গর্ভস্থ ভ্রূণের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন-

১) রেটিনয়েডস বা ভিটামিন এ

স্কিনটোন ব্রাইট করতে, রিংকেলস দূর করতে, কালো দাগ দূর করা সহ আরও নানা রকম কার্যকরী গুণাবলির জন্য ভিটামিন এ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ভিটামিন এ ত্বকে শোষিত হয়ে রেটিনয়েডস-এ পরিনত হয়। অতিরিক্ত রেটিনয়েডস ভ্রণের বিভিন্ন রকম জন্মগত ত্রুটি, প্রিম্যাচিউর ডেলিভারি এমনকি মিসক্যারেজ পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই ভিটামিন এ বেশি পরিমাণে আছে, এমন প্রসাধনী গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি কেউ যদি মুখে ভিটামিন এ সেবন করে থাকেন, তাহলেও গর্ভধারণের অন্তত একমাস আগে তা বন্ধ করতে হবে।

২) স্যালিসাইলিক অ্যাসিড

ব্রণের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী একটি উপাদান স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। কিন্তু গর্ভাবস্থায় হাই ডোজের বা হাই কনসেন্ট্রেশনের স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ক্ষতিকর। এর কার্যকারিতা অনেকটা অ্যাসপিরিন এর মতো। গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে হাই ডোজে অ্যাসপিরিন বা স্যালিসাইলিক এসিড গ্রহণের ফলে ভ্রুণের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে। এমনকি পুরো প্রেগনেন্সি জুড়ে অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে প্রিম্যাচিউর শিশুর জন্ম এবং শিশুর ব্রেইনে রক্তক্ষরণের প্রবণতাও দেখা দেয়।

৩) কেমিক্যাল সানস্ক্রিন

কেমিক্যাল সানস্ক্রিনে আল্ট্রাভায়োলেট ফিল্টার হিসেবে অক্সিবেনজোন এবং এর থেকে উৎপন্ন মৌলসমূহ খুব ফ্রিকোয়েন্টলি ব্যবহার করা হয়। এটি সান প্রোটেকশনের জন্য খুবই ইফেক্টিভ। কিন্তু এই কেমিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইন হরমোন এর ভাঙ্গন ধরায়, যাতে মা ও শিশুর শরীরের পার্মানেন্ট ড্যামেজ হতে পারে। তাই প্রেগনেন্সিতে এ ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে মিনারেল বেইজড সানস্ক্রিন ইউজ করতে পারবেন, এতে কোনো ক্ষতি নেই। সূএ: সাজগোজ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাসের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

» আওয়ামী লীগের শ্রমিক সমাবেশে নেতাকর্মীদের ঢল

» বঙ্গবন্ধু সব সময় বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন : খাদ্যমন্ত্রী

» ট্রাকচাপায় প্রকৌশলী নিহত

» অপহরণকারী চক্রের সদস্য সিরাজকে অস্ত্রসহ গ্রেফতার

» কেনিয়ায় বৃষ্টি-বন্যায় নিহত বেড়ে ১৬৯

» বিশেষ অভিযান চালিয়ে মাদকবিরোধী অভিযানে বিক্রি ও সেবনের অপরাধে ২১জন গ্রেপ্তার

» নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য শ্রমিক ও জনগণের জন্য অভিশাপ : ইনু

» শেখ হাসিনার অধীনে কেয়ামত পর্যন্ত সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না : রিজভী

» যতবার সরকারে এসেছি ততবার শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়েছি

উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হবু মায়ের ত্বকের যত্নে কোন প্রোডাক্টগুলো এড়িয়ে চলা উচিত?

একজন নারী যখন জানতে পারেন তিনি সন্তান সম্ভবা, ঠিক তখন থেকেই তার পুরো দুনিয়াটা যেন বদলে যায়! পুরোটা প্রেগনেন্সি জুড়েই অনাগত শিশুর যত্ন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়েই তার সময় চলে যায়। অনেক হবু মা-ই এসময়ে নিজের যত্ন নিতে ভুলে যান। কিন্তু এ সময় গর্ভের শিশুর পাশাপাশি মায়েরও প্রয়োজন সঠিক পরিচর্যা। এতে কিন্তু মনও ভালো থাকে। সেইজন্যে হবু মায়ের ত্বকের যত্নে কী কী করা যেতে পারে আর কোন ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো এই সময়ে এড়িয়ে চলা উচিত, এটা নিয়ে আজকের ফিচার।

প্রেগনেন্সিতে ত্বকের পরিবর্তন 

প্রেগনেন্সি রিলেটেড স্কিনের সমস্যা অনেকেরই হয়ে থাকে। এর জন্য মূলত হরমোনের পরিবর্তনকেই দায়ী করা যায় অথবা একে মাতৃত্বকালীন স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন হিসেবেও ধরা যায়। কিছু কিছু মায়েদের পুরো প্রেগনেন্সিতে ত্বকের কোনো সমস্যাই হয় না, স্বাভাবিকই থাকে সবকিছু। কিন্তু বাকিদের বেলায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন রকম ত্বকের সমস্যা দেখা দেয়।

 

সবথেকে কমন কিছু পরিবর্তন হলো-

১) ত্বক শুষ্ক ও খসখসে লাগে এবং ব্রণের সমস্যা বেড়ে যায়। চোখের নিচেও ডার্ক সার্কেল পড়তে পারে।

২) স্কিন ডার্ক বা কালচে হয়ে যাওয়া এই সময়ে বেশ কমন। বিশেষ করে গলা, ঘাড়, আন্ডারআর্মস ইত্যাদি স্থানে চাপ চাপ কালচে ময়লার মতো দাগ বেশি দেখা দেয়। একে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মেলাজমা (Melasma) বলা হয়।

৩) কারো যদি প্রেগনেন্সির আগে থেকেই স্কিনের সমস্যা থেকে থাকে যেমন একজিমা, সোরিয়াসিস ইত্যাদি এ সময়ে সেটা পরিবর্তিত হয়। কারও ক্ষেত্রে ভালো হয়, কারও ক্ষেত্রে অবস্থার অবনতি হয়।

৪) এছাড়াও স্ট্রেচ মার্কস, স্পাইডার ভেইন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ইচিনেস এই ধরনের সমস্যাও দেখা দেয়।

হবু মায়ের ত্বকের যত্নে যা যা এড়িয়ে চলতে হবে

 

ত্বকের যত্নে অনেক রকম প্রসাধনীই আমরা ব্যবহার করে থাকি। কিছু প্রসাধনীতে এমন অনেক কেমিক্যাল আছে যা গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করলে তা গর্ভস্থ ভ্রূণের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে। যেমন-

১) রেটিনয়েডস বা ভিটামিন এ

স্কিনটোন ব্রাইট করতে, রিংকেলস দূর করতে, কালো দাগ দূর করা সহ আরও নানা রকম কার্যকরী গুণাবলির জন্য ভিটামিন এ ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এই ভিটামিন এ ত্বকে শোষিত হয়ে রেটিনয়েডস-এ পরিনত হয়। অতিরিক্ত রেটিনয়েডস ভ্রণের বিভিন্ন রকম জন্মগত ত্রুটি, প্রিম্যাচিউর ডেলিভারি এমনকি মিসক্যারেজ পর্যন্ত ঘটাতে পারে। তাই ভিটামিন এ বেশি পরিমাণে আছে, এমন প্রসাধনী গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা যাবে না। এমনকি কেউ যদি মুখে ভিটামিন এ সেবন করে থাকেন, তাহলেও গর্ভধারণের অন্তত একমাস আগে তা বন্ধ করতে হবে।

২) স্যালিসাইলিক অ্যাসিড

ব্রণের চিকিৎসায় খুবই কার্যকরী একটি উপাদান স্যালিসাইলিক অ্যাসিড। কিন্তু গর্ভাবস্থায় হাই ডোজের বা হাই কনসেন্ট্রেশনের স্যালিসাইলিক অ্যাসিড ক্ষতিকর। এর কার্যকারিতা অনেকটা অ্যাসপিরিন এর মতো। গর্ভাবস্থায় শুরুর দিকে হাই ডোজে অ্যাসপিরিন বা স্যালিসাইলিক এসিড গ্রহণের ফলে ভ্রুণের জন্মগত ত্রুটি দেখা দিতে পারে। এমনকি পুরো প্রেগনেন্সি জুড়ে অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে প্রিম্যাচিউর শিশুর জন্ম এবং শিশুর ব্রেইনে রক্তক্ষরণের প্রবণতাও দেখা দেয়।

৩) কেমিক্যাল সানস্ক্রিন

কেমিক্যাল সানস্ক্রিনে আল্ট্রাভায়োলেট ফিল্টার হিসেবে অক্সিবেনজোন এবং এর থেকে উৎপন্ন মৌলসমূহ খুব ফ্রিকোয়েন্টলি ব্যবহার করা হয়। এটি সান প্রোটেকশনের জন্য খুবই ইফেক্টিভ। কিন্তু এই কেমিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইন হরমোন এর ভাঙ্গন ধরায়, যাতে মা ও শিশুর শরীরের পার্মানেন্ট ড্যামেজ হতে পারে। তাই প্রেগনেন্সিতে এ ধরনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে মিনারেল বেইজড সানস্ক্রিন ইউজ করতে পারবেন, এতে কোনো ক্ষতি নেই। সূএ: সাজগোজ ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা – মো: মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ,বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটি। (দপ্তর সম্পাদক)  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com