পানির নিচে আড়াই হাজার কৃষকের স্বপ্ন

উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার মেদির হাওর, আকাশি হাওর ও ধলিয়া বিলের আধাপাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বছরের একমাত্র ফসল হারিয়ে ওই অঞ্চলের অন্তত আড়াই হাজার কৃষক এখন নিঃস্ব। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে বছরের একমাত্র ফসল হারানোর মুহূর্তে কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে পাশে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

 

সরেজমিনে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার ভাটি অঞ্চলে মেঘনা, ভলভদ্র, লঙ্গর নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এতে গত দুই দিনে ওই এলাকার মেদির হাওর, আকাশি হাওর, ধইল্যা বিল, তিতাজুরি বিল, আটাউরি বিল ও খাসারচর বিলের সব ধান তলিয়ে গেছে।

 

এ অবস্থায় শেষ চেষ্টা হিসেবে পানির নিচ থেকে অনেকেই আধাপাকা ধান কেটে আনার চেষ্টা করছেন। উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নে মাছমা গ্রামের লাভলু মিয়া তাদেরই একজন। লাভলু বলেন, ‘পানির নিচ থেকে ডুব দিয়ে দিয়ে ধান কাটছি। ধান পচে যাচ্ছে।’

 

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘ধান আল্লায় নিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের কেউ যদি আইয়া একটু খোঁজ নিত আমাদের কোনো দুঃখ থাকত না। তারা আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।

 

সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘হাওরে আমার সব জমির ধান এখন পানির নিচে। মনে হচ্ছে যেন দুঃস্বপ্ন দেখতেছি।

 

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশেই আছেন দাবি করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আড়াই হাজার কৃষকের তালিকা হবে। তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা হিসেবে আপাতত ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে।

 

সার্বিক বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান খান শাওন জানান, পানি বাড়তে থাকায় হাওরের ধান দ্রুত কেটে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দুই দিনের পানি বৃদ্ধিতেই এখন পর্যন্ত নাসিরনগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ৩০০ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার কৃষক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধে প্রধান উপদেষ্টাকে বার বার পত্র দিয়েছে বিএনপি’

» রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে আ. লীগকে নিষিদ্ধ করলে ভালো হতো : জামায়াত আমির

» গাজায় মৃত্যু ঝুঁকিতে ৬৫ হাজার শিশু

» ব্যক্তি বা সত্তার কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিধান যুক্ত করে সন্ত্রাসবিরোধী অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

» জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছোঁয়া ক্রীড়াঙ্গনেও লেগেছিল : যুব ও ক্রীড়া উ পদেষ্টা

» ফেসবুক-ইউটিউব-গণমাধ্যমে আওয়ামী লীগের প্রচারণা নিষিদ্ধ

» ওয়ানশুটার গান ও দেশীয় অস্ত্রসহ তিনজন আটক

» রাজনৈতিক দলের বিচারে ট্রাইব্যুনাল আইনের সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ

» নিজের আকিকা করা যাবে?

» যুবককে কুপিয়ে হত্যা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

পানির নিচে আড়াই হাজার কৃষকের স্বপ্ন

উজান থেকে নেমে আসা পানিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার মেদির হাওর, আকাশি হাওর ও ধলিয়া বিলের আধাপাকা ধান পানির নিচে তলিয়ে গেছে। বছরের একমাত্র ফসল হারিয়ে ওই অঞ্চলের অন্তত আড়াই হাজার কৃষক এখন নিঃস্ব। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে এই তালিকা আরও দীর্ঘ হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এদিকে বছরের একমাত্র ফসল হারানোর মুহূর্তে কৃষি বিভাগের কোনো কর্মকর্তাকে পাশে না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

 

সরেজমিনে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার ভাটি অঞ্চলে মেঘনা, ভলভদ্র, লঙ্গর নদীর পানি অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এতে গত দুই দিনে ওই এলাকার মেদির হাওর, আকাশি হাওর, ধইল্যা বিল, তিতাজুরি বিল, আটাউরি বিল ও খাসারচর বিলের সব ধান তলিয়ে গেছে।

 

এ অবস্থায় শেষ চেষ্টা হিসেবে পানির নিচ থেকে অনেকেই আধাপাকা ধান কেটে আনার চেষ্টা করছেন। উপজেলার গোয়ালনগর ইউনিয়নে মাছমা গ্রামের লাভলু মিয়া তাদেরই একজন। লাভলু বলেন, ‘পানির নিচ থেকে ডুব দিয়ে দিয়ে ধান কাটছি। ধান পচে যাচ্ছে।’

 

ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি আরও বলেন, ‘ধান আল্লায় নিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের কেউ যদি আইয়া একটু খোঁজ নিত আমাদের কোনো দুঃখ থাকত না। তারা আমাদের খোঁজ নিতে আসেনি।

 

সদর ইউনিয়নের টেকানগর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, ‘হাওরে আমার সব জমির ধান এখন পানির নিচে। মনে হচ্ছে যেন দুঃস্বপ্ন দেখতেছি।

 

এদিকে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পাশেই আছেন দাবি করে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে আড়াই হাজার কৃষকের তালিকা হবে। তাদেরকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রণোদনা হিসেবে আপাতত ২৫ কেজি করে চাল দেয়া হবে।

 

সার্বিক বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান খান শাওন জানান, পানি বাড়তে থাকায় হাওরের ধান দ্রুত কেটে নিতে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। দুই দিনের পানি বৃদ্ধিতেই এখন পর্যন্ত নাসিরনগর উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের অন্তত ৩০০ হেক্টর জমি তলিয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার কৃষক।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com