লালমনিরহাটে পুলিশ হেফাজতে এক পোশাক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর বাজারে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়কে অবরোধ করে এলাকাবাসী।
মৃত রবিউল ইসলাম খান সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের কাজিচওড়া গ্রামের দুলাল খানের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, নববর্ষ উপলক্ষে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর বাংলা বাজার এলাকায় বৈশাখী মেলায় জুয়ার আসর বসলে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন রবিউল ইসলাম খান। পুলিশ ওই পথচারী রবিউল ইসলামসহ দুইজনকে আটক করে। রবিউল জুয়া খেলেননি বলে জানালেও পুলিশ কর্ণপাত করেনি। এসময় কথা কাটাকাটি হলে পুলিশ তাকে মারধর করে ভ্যানে তুলে নিয়ে যায়। পুলিশের ভাষ্য, রবিউল পথে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়ে পড়লে দ্রুত দায়িত্বরত চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন তাকে। কিন্তু রংপুর পাঠানোর প্রস্তুতিকালেই সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে তিনি মারা যান।
রবিউলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে মহেন্দ্রনগর বাজারে লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করে এলাকাবাসী। তাার অভিযুক্ত সদর থানার এসআই হালিমের শাস্তি দাবি করেন। পুলিশ সেখানে পৌঁছালে অবরোধকারীরা পুলিশ ভ্যানে হামলা ও ভাঙচুর করেন ।
রবিউলের পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, এক সপ্তাহে আগে রবিউল বাড়িতে এসেছেন। মেলার খবর পেয়ে ঘুরতে যান সেখানে। পুলিশের লাথিতে অণ্ডকোষে আঘাত পান তিনি। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা বলেন, রবিউল অভিনয় করছেন।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট সদর থানার ওসি শাহা আলম বলেন, ‘রবিউল কীভাবে মারা গেছেন চিকিৎসকরা বলতে পাবেন।
লালমনিরহাটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, ‘জুয়া খেলার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে দুইজনকে আটক করে। থানায় আসার পথে রবিউল অসুস্থ অনুভব করলে তাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রংপুর মেডিকেলে নেয়ার প্রস্তুতিকালে মৃত্যু হয়।
উল্লেখ্য, এর আগেও লালমনিরহাটে পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। গত ৭ জানুয়ারি স্ত্রী হত্যার অভিযোগে আটক হিমাংশু বর্মণ (৩৬) হাতীবান্ধা থানা পুলিশের হেফাজতে মারা যান। এ ঘটনার প্রতিবেদন জমা দিতে তদন্ত কমিটিকে এক সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়নি।