হাত বদল হলেই বেড়ে যায় লেবুর দাম, লাভের বড় অংশ ব্যবসায়ীদের পকেটে

মৌলভীবাজারের পাহাড় এবং সমতল ভূমিতে সবুজের সমারোহ। হয়েছে লেবুর বাম্পার ফলন। সারি সারি গাছে ঝুলছে বিভিন্ন প্রজাতির এসব লেবু। কিন্তু চাষিদের কাছ থেকে হাত বদলের সঙ্গে সঙ্গেই বেড়ে যায় লেবুর দাম।

 

সাইজ ভেদে প্রতি শ’ লেবু ২শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় পাইকারি বিক্রি হলেও, হাত ঘুরে এক হালি লেবু খুরচা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৯০ টাকা করে।

 

সোমবার মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের লেবু বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাহাড়ি টিলাভূমিতে কাগজি লেবুর আবাদ হয়। জারা, কাগজি লেবু ছাড়াও সুগন্ধি চায়না লেবুর চাষ হয় এ অঞ্চলে। এরমধ্যে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় এর আবাদ বেশি হয়ে থাকে। রমজান মাসকে সামনে রেখে এখানকার লেবু চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষ করে থাকেন। রমজানে লেবুর চাহিদা বেশি থাকে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বছরের এই সময়টিতে লেবুর দাম বেড়ে যায়।

 

উপজেলার দিলবরনগর এলাকার লেবু ও আনারস বাগান মালিক খোরশেদ মিয়া বলেন, খরচ অনুপাতে লেবুর দাম বেশি না। রোজা ও কোরবানির ঈদেই লেবু ও আনারসের দাম একটু ভালো পাওয়া যায়। হাত বদলে লেবুর দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে। এসব লাভের বড় অংশ চলে যায় ব্যবসায়ীদের পকেটে।

 

শ্রীমঙ্গলের লেবু বাজার ঘুরে দেখা যায়, আড়তে লেবুর রমরমা কেনাবেচা। বেপারিদের হাকডাক। ভোর সকাল থেকে আড়ৎগুলোতে লেবুর পাশাপাশি আনারস, কলা ও অন্যান্য পাহাড়ি ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

 

লেবু বাগান মালিক শাহজান মিয়া বলেন, এখন খরা মৌসুম লেবুর উৎপাদন কম। মূলত বর্ষাকালে লেবু উৎপাদন বেশি হয়। খরা মৌসুমে উৎপাদন কম থাকায় লেবুর বাজার দর বছরের এই সময়ে বেশি থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, খরা মৌসুমে পাম্প দিয়ে উঁচু টিলায় লেবু গাছে পানি ও সার দিতে হয়। এতে খরচ বেশি হয়। আর রমজান মাসে বাড়তি চাহিদা থাকায় দাম বেড়ে যায়।

 

লেবু চাষি জয়নাল মিয়া বলেন, চৈত্র মাসে রমজান মাস হওয়ায় পাহাড় টিলায় সেচ দেওয়া খুবই ব্যয়সাধ্য। ফলে বিশেষভাবে সেচ ও সার দিয়ে লেবু ফলানোর কারণে এমনিতেই লেবুর দাম বেশি পড়ে যায়। আসছে বর্ষায় লেবুর উৎপাদন ও দাম দুটোই কমে যাবে। এতে রমজানের সঙ্গে দামের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।

 

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, মৌলভীবাজার জেলায় এ বছর ১ হাজার ৭০২ হেক্টর জমিতে কাগজি লেবুর চাষ হয়েছে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ২৭ হাজার ২৩২ টন লেবু।

সূএ:আমাদের সময় ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» রায়পুর স্টিল ব্রিজ ও খাশের হাট রোডের বেহাল দশা, দুর্ভোগে জনসাধারণ

» বিশেষ অভিযানে মামলা ও ওয়ারেন্টভুক্ত ১৮০৯ আসামি গ্রেফতার

» আ.লীগ শতশত কোটি টাকা লুটপাট করে দেশকে দেউলিয়া করে দিয়েছে : মঈন খান

» ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বসতি স্থাপন পরিকল্পনার নিন্দা তারেক রহমানের

» দলকানা প্রশাসন দ্বারা বিশ্ববিদ্যালয় চলতে দেওয়া হবে না: শিবির সভাপতি

» অমানবিক পরিশ্রম হচ্ছে: জাবি উপাচার্য

» নির্বাচন বানচাল করতে চাইলে ক্যাম্পাস থেকে প্রতিহত করা হবে: শিবিরের জিএস প্রার্থী

» ফ্যাসিস্টমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই : চরমোনাই পীর

» সুন্দরবনে কুখ্যাত ডাকাত রাঙ্গা বাহিনীর দুই সহযোগীকে অস্ত্রসহ আটক, জিম্মি জেলেরা উদ্ধার

» মোরেলগঞ্জে ইট সোলিং সড়ক মরণফাঁদে পরিণত , ভোগান্তিতে লাখো মানুষ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

হাত বদল হলেই বেড়ে যায় লেবুর দাম, লাভের বড় অংশ ব্যবসায়ীদের পকেটে

মৌলভীবাজারের পাহাড় এবং সমতল ভূমিতে সবুজের সমারোহ। হয়েছে লেবুর বাম্পার ফলন। সারি সারি গাছে ঝুলছে বিভিন্ন প্রজাতির এসব লেবু। কিন্তু চাষিদের কাছ থেকে হাত বদলের সঙ্গে সঙ্গেই বেড়ে যায় লেবুর দাম।

 

সাইজ ভেদে প্রতি শ’ লেবু ২শ’ থেকে ৬শ’ টাকায় পাইকারি বিক্রি হলেও, হাত ঘুরে এক হালি লেবু খুরচা বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৯০ টাকা করে।

 

সোমবার মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের লেবু বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার পাহাড়ি টিলাভূমিতে কাগজি লেবুর আবাদ হয়। জারা, কাগজি লেবু ছাড়াও সুগন্ধি চায়না লেবুর চাষ হয় এ অঞ্চলে। এরমধ্যে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ উপজেলায় এর আবাদ বেশি হয়ে থাকে। রমজান মাসকে সামনে রেখে এখানকার লেবু চাষিরা বাণিজ্যিকভাবে লেবু চাষ করে থাকেন। রমজানে লেবুর চাহিদা বেশি থাকে। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে বছরের এই সময়টিতে লেবুর দাম বেড়ে যায়।

 

উপজেলার দিলবরনগর এলাকার লেবু ও আনারস বাগান মালিক খোরশেদ মিয়া বলেন, খরচ অনুপাতে লেবুর দাম বেশি না। রোজা ও কোরবানির ঈদেই লেবু ও আনারসের দাম একটু ভালো পাওয়া যায়। হাত বদলে লেবুর দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকরা বঞ্চিত হচ্ছে। এসব লাভের বড় অংশ চলে যায় ব্যবসায়ীদের পকেটে।

 

শ্রীমঙ্গলের লেবু বাজার ঘুরে দেখা যায়, আড়তে লেবুর রমরমা কেনাবেচা। বেপারিদের হাকডাক। ভোর সকাল থেকে আড়ৎগুলোতে লেবুর পাশাপাশি আনারস, কলা ও অন্যান্য পাহাড়ি ফলের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

 

লেবু বাগান মালিক শাহজান মিয়া বলেন, এখন খরা মৌসুম লেবুর উৎপাদন কম। মূলত বর্ষাকালে লেবু উৎপাদন বেশি হয়। খরা মৌসুমে উৎপাদন কম থাকায় লেবুর বাজার দর বছরের এই সময়ে বেশি থাকে।

 

তিনি আরও বলেন, খরা মৌসুমে পাম্প দিয়ে উঁচু টিলায় লেবু গাছে পানি ও সার দিতে হয়। এতে খরচ বেশি হয়। আর রমজান মাসে বাড়তি চাহিদা থাকায় দাম বেড়ে যায়।

 

লেবু চাষি জয়নাল মিয়া বলেন, চৈত্র মাসে রমজান মাস হওয়ায় পাহাড় টিলায় সেচ দেওয়া খুবই ব্যয়সাধ্য। ফলে বিশেষভাবে সেচ ও সার দিয়ে লেবু ফলানোর কারণে এমনিতেই লেবুর দাম বেশি পড়ে যায়। আসছে বর্ষায় লেবুর উৎপাদন ও দাম দুটোই কমে যাবে। এতে রমজানের সঙ্গে দামের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানান তিনি।

 

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী জানান, মৌলভীবাজার জেলায় এ বছর ১ হাজার ৭০২ হেক্টর জমিতে কাগজি লেবুর চাষ হয়েছে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ২৭ হাজার ২৩২ টন লেবু।

সূএ:আমাদের সময় ডটকম

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com