বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় আসছে ‘এজিবি’ বাহিনী

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নতুন করে এয়ার গার্ড অব বাংলাদেশ (এজিবি) বাহিনী হচ্ছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দেওয়া এবং হুমকি প্রতিরোধের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংযোগ বজায় রাখার জন্য এ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ।

 

এ ব্যাপারে সুপারিশ প্রণয়ন করতে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা থেকে ১২ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খানকে। কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।

 

সূত্র জানায়, দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় একটি বিশেষ বাহিনী গঠন করতে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ করে বিমান বাহিনী। এরপরই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে কমিটি গঠন করা হয়। বিশেষ এ বাহিনীর প্রধান কোন বাহিনী থেকে আসবেন, বাহিনীর সদস্যসংখ্যা কত হবে, কী হবে তাদের কাজের পরিধি, কোন কোন বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ এ বাহিনীতে যুক্ত হবেন ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ থাকবে কমিটির সুপারিশে। এরপরই এটি গঠনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিকসহ আটটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে। এছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), বিমান বাহিনীর সদস্য এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে অনেক সময়ই এক বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অন্য বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ সমন্বয় হচ্ছে না। এ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের ঘটনাও বিভিন্ন সময় ঘটেছে।

 

বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনী গঠিত হলে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা এজিবির সদস্য হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। নতুন এ বাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অর্গানোগ্রাম থাকবে। তাদের যানবাহনসহ অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্টের বিষয়ও একটি কাঠামোর আওতায় থাকবে। এজিবি বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকালে ‘চেইন অব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

 

১৯৮৫ সাল থেকে দেশে বেসামরিক বিমান চলাচল পরিচালনা করছে বেবিচক। এর আগে বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় বেবিচক চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স (বিএএসএফ) গঠনের উদ্যোগ নেয়। এতে বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ অন্যান্য সংস্থার ১০ হাজার ৬৩২ সদস্য রাখার প্রস্তাব প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তাবে এই বিশাল জনবলের ব্যয় মেটাতে তিন ধাপে ৩৯৭ কোটি টাকার আর্থিক বিষয়ও তুলে ধরা হয়। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এজিবি বাহিনী গঠনের উদ্যোগে বেবিচকের ওই বিশেষ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ বাতিল হবে, নাকি নাম পরির্বতন করে নতুন এ বাহিনী গঠিত হবেÑএ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বেবিচকেরই একাধিক কর্মকর্তা। বছরের শুরুতে বিএএসএফ নামে বেবিচকের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের উদ্যোগের খবরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। তারা বিশেষ বাহিনী গঠন বন্ধের দাবিতে গত ১৭ মার্চ বেবিচক সদর দপ্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা করেন। এরপর এ উদ্যোগে ভাটা পড়ে। তখন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেছিলেন, বেবিচকের নিজস্ব শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই বিশেষ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রস্তাব আইকাওসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও প্রচলনের পরিপন্থী। এরপরই বেবিচক বিশেষ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ থেকে সরে আসে। এমন অবস্থার মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এজিবি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) মফিদুর রহমান বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু কমিটিতে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কোনো সদস্য রাখা হয়নি। তাদেরও প্রতিনিধি রাখা দরকার ছিল। এজিবি করতে হলে অবশ্যই সিভিল অ্যাভিয়েশনের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে আইকাওয়ের নিয়মও অনুসরণ করতে হবে। মোটকথা, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই নতুন এ উদ্যোগ এগিয়ে নিতে হবে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এয়ার গার্ড গঠন সময়ের দাবি। প্রথমে এটি বাহিনী হিসেবে কাজ শুরু করবে, পরে অধিদপ্তরে রূপান্তর করা হবে।

 

এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) আতাউর রহমান খান বলেন, মাত্র তো কাজ শুরু হলো। বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা আরো জোরদার করার জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বিমানবন্দরের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি নিরাপত্তাব্যবস্থাও আছে ঝুঁকিতে। বিমানবন্দরে দিনের পর দিন চলে আসছে নানা অপরাধ। এতে দেশ-বিদেশে বদনাম হচ্ছে। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং অপরাধীদের আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা পাচারসহ সব ধরনের অপরাধই হচ্ছে বিমানবন্দরে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

বেবিচক জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে দেশি-বিদেশি অন্তত ৩৭টি বিমান সংস্থা বাংলাদেশে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ৪৭টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচল চুক্তি রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০ হাজারের মতো যাত্রী আসা-যাওয়া করছেন শাহজালাল, শাহ আমানত, ওসমানীসহ সব বিমানবন্দরে। কিন্তু বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরালো না থাকায় যাত্রীবেশী অপরাধীরা সহজেই অপরাধ করে পার পাচ্ছে। বিভিন্ন কৌশল নিয়েও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এভসেক বাহিনীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজারসহ পাঁচ হাজারের বেশি জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। তবে দীর্ঘমেয়াদে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারে এজিবি বাহিনী গঠনের উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে বেবিচক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন এই বাহিনী গঠনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, এ মুহূর্তে এ ধরনের বাহিনীর কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। যেখানে বিমানবন্দরে নিরাপত্তায় বেবিচকের নিজস্ব বাহিনী এভসেক, বিমান বাহিনী, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছে, সেখানে নতুন করে এ বাহিনী গঠনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» যৌথ বাহিনীর অভিযানে ৬৯ জন গ্রেফতার

» ‘জামায়াতে ইসলামী ক্ষমতার রাজনীতি করে না’

» ঐশ্বরিয়া-ক্যাটরিনার সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার কারণ জানালেন সালমান খান

» ডাম্প ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে ৩ যাত্রী নিহত

» বৃষ্টির প্রভাব বেড়েছে সবজির দাম ,কাঁচামরিচ ৪০০

» শুনেছি গ্রামীণ নামের প্রতিষ্ঠানগুলো ধুমায়ে কাজ পাচ্ছে, লুটেপুটে খা চোরের বাইচ্চারা : ইলিয়াস

» বিএনপির ইমেজ বেশি ক্ষুণ্ণ করেছে জামায়াত : মাসুদ কামাল

» আ. লীগ নিয়ে ড. ইউনূসের সরকার ছেলেখেলা করছে : নিলোফার চৌধুরী

» ভোটের জন্য আল্লাহকে নারাজ করা যাবে না: পার্থ

» সমন্বয়ক পরিচয়ে চাঁদাবাজি করা সেই মেয়েটির পক্ষে কোর্টে দাঁড়াবে ফজলুর রহমান

উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় আসছে ‘এজিবি’ বাহিনী

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় নতুন করে এয়ার গার্ড অব বাংলাদেশ (এজিবি) বাহিনী হচ্ছে। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা দেওয়া এবং হুমকি প্রতিরোধের মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংযোগ বজায় রাখার জন্য এ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ।

 

এ ব্যাপারে সুপারিশ প্রণয়ন করতে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা থেকে ১২ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন ও অর্থ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান খানকে। কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।

 

সূত্র জানায়, দেশের বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় একটি বিশেষ বাহিনী গঠন করতে সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অনুরোধ করে বিমান বাহিনী। এরপরই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশে কমিটি গঠন করা হয়। বিশেষ এ বাহিনীর প্রধান কোন বাহিনী থেকে আসবেন, বাহিনীর সদস্যসংখ্যা কত হবে, কী হবে তাদের কাজের পরিধি, কোন কোন বাহিনীর সদস্যরা বিশেষ এ বাহিনীতে যুক্ত হবেন ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ থাকবে কমিটির সুপারিশে। এরপরই এটি গঠনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে দেশের তিনটি আন্তর্জাতিকসহ আটটি বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মী রয়েছে। এছাড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন), বিমান বাহিনীর সদস্য এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করে আসছেন। কিন্তু দায়িত্ব পালনকালে অনেক সময়ই এক বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অন্য বাহিনীর সদস্যদের যথাযথ সমন্বয় হচ্ছে না। এ নিয়ে সৃষ্ট দ্বন্দ্বের ঘটনাও বিভিন্ন সময় ঘটেছে।

 

বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় বিশেষ বাহিনী গঠিত হলে বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যরা এজিবির সদস্য হয়ে দায়িত্ব পালন করবেন। নতুন এ বাহিনীর একটি নির্দিষ্ট অর্গানোগ্রাম থাকবে। তাদের যানবাহনসহ অন্যান্য লজিস্টিক সাপোর্টের বিষয়ও একটি কাঠামোর আওতায় থাকবে। এজিবি বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এতে বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তার দায়িত্ব পালনকালে ‘চেইন অব কমান্ড’ প্রতিষ্ঠা হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

 

১৯৮৫ সাল থেকে দেশে বেসামরিক বিমান চলাচল পরিচালনা করছে বেবিচক। এর আগে বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তায় বেবিচক চলতি বছরের শুরুতে বাংলাদেশ এয়ারপোর্ট সিকিউরিটি ফোর্স (বিএএসএফ) গঠনের উদ্যোগ নেয়। এতে বিমানবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ অন্যান্য সংস্থার ১০ হাজার ৬৩২ সদস্য রাখার প্রস্তাব প্রস্তুত করা হয়। প্রস্তাবে এই বিশাল জনবলের ব্যয় মেটাতে তিন ধাপে ৩৯৭ কোটি টাকার আর্থিক বিষয়ও তুলে ধরা হয়। এখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এজিবি বাহিনী গঠনের উদ্যোগে বেবিচকের ওই বিশেষ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ বাতিল হবে, নাকি নাম পরির্বতন করে নতুন এ বাহিনী গঠিত হবেÑএ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন খোদ বেবিচকেরই একাধিক কর্মকর্তা। বছরের শুরুতে বিএএসএফ নামে বেবিচকের নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের উদ্যোগের খবরে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে। তারা বিশেষ বাহিনী গঠন বন্ধের দাবিতে গত ১৭ মার্চ বেবিচক সদর দপ্তরে বিক্ষোভ কর্মসূচি ও প্রতিবাদ সভা করেন। এরপর এ উদ্যোগে ভাটা পড়ে। তখন বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেছিলেন, বেবিচকের নিজস্ব শক্তিশালী সাংগঠনিক কাঠামো থাকা সত্ত্বেও তাদের সঙ্গে পরামর্শ না করেই বিশেষ বাহিনী গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ধরনের প্রস্তাব আইকাওসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানদণ্ড ও প্রচলনের পরিপন্থী। এরপরই বেবিচক বিশেষ বাহিনী গঠনের উদ্যোগ থেকে সরে আসে। এমন অবস্থার মধ্যেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে এজিবি গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

 

বেবিচকের সাবেক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) মফিদুর রহমান বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে উদ্যোগ নিয়েছে, তা অবশ্যই ইতিবাচক। কিন্তু কমিটিতে সিভিল অ্যাভিয়েশনের কোনো সদস্য রাখা হয়নি। তাদেরও প্রতিনিধি রাখা দরকার ছিল। এজিবি করতে হলে অবশ্যই সিভিল অ্যাভিয়েশনের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হবে। এক্ষেত্রে আইকাওয়ের নিয়মও অনুসরণ করতে হবে। মোটকথা, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমেই নতুন এ উদ্যোগ এগিয়ে নিতে হবে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইকাও) নির্দেশনা অনুযায়ী বিমানবন্দরগুলোতে আন্তর্জাতিক মানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এয়ার গার্ড গঠন সময়ের দাবি। প্রথমে এটি বাহিনী হিসেবে কাজ শুরু করবে, পরে অধিদপ্তরে রূপান্তর করা হবে।

 

এ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির প্রধান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) আতাউর রহমান খান বলেন, মাত্র তো কাজ শুরু হলো। বিমানবন্দরগুলোর নিরাপত্তা আরো জোরদার করার জন্য এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, দেশে বিমানবন্দরের পরিধি যেমন বাড়ছে, তেমনি নিরাপত্তাব্যবস্থাও আছে ঝুঁকিতে। বিমানবন্দরে দিনের পর দিন চলে আসছে নানা অপরাধ। এতে দেশ-বিদেশে বদনাম হচ্ছে। এ ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। বরং অপরাধীদের আরো বেপরোয়া হয়ে উঠতে দেখা যাচ্ছে। স্বর্ণ ও বৈদেশিক মুদ্রা পাচারসহ সব ধরনের অপরাধই হচ্ছে বিমানবন্দরে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হচ্ছে।

 

বেবিচক জানায়, শাহজালাল বিমানবন্দরে বর্তমানে দেশি-বিদেশি অন্তত ৩৭টি বিমান সংস্থা বাংলাদেশে তাদের ফ্লাইট পরিচালনা করছে। ৪৭টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বিমান চলাচল চুক্তি রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৪০ হাজারের মতো যাত্রী আসা-যাওয়া করছেন শাহজালাল, শাহ আমানত, ওসমানীসহ সব বিমানবন্দরে। কিন্তু বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরালো না থাকায় যাত্রীবেশী অপরাধীরা সহজেই অপরাধ করে পার পাচ্ছে। বিভিন্ন কৌশল নিয়েও অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো।

 

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল চালুর প্রস্তুতির অংশ হিসেবে এভসেক বাহিনীতে প্রায় সাড়ে তিন হাজারসহ পাঁচ হাজারের বেশি জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন। তবে দীর্ঘমেয়াদে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারে এজিবি বাহিনী গঠনের উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। তবে বেবিচক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নতুন এই বাহিনী গঠনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তারা বলছেন, এ মুহূর্তে এ ধরনের বাহিনীর কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। যেখানে বিমানবন্দরে নিরাপত্তায় বেবিচকের নিজস্ব বাহিনী এভসেক, বিমান বাহিনী, এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নসহ অন্যান্য সংস্থা কাজ করছে, সেখানে নতুন করে এ বাহিনী গঠনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা,

সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,

ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,

ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,

নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন: ই-মেইল : [email protected],

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com