নারীদের বয়স কমানোর প্রযুক্তি আবিষ্কার

বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেহে তারুণ্যের আভা ধরে রাখার আকাঙ্ক্ষা কার না থাকে? শরীরের বেশ কিছু কোষের পরিবর্তনের কারণে সেই আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণই থেকে যায়। তবে এবার বিজ্ঞানীরা সেখানে আশার আলো দেখিয়েছেন। ৫৩ বছর বয়সী এক নারীর দেহের চামড়ার কোষগুলোকে তারা ২৩ বছরের তরুণীর মতো পুনরুজ্জীবিত করেছেন। 

 

কেমব্রিজের বিজ্ঞানীরা এখন বিশ্বাস করছেন যে তারা হয়তো শরীরের বদলে যাওয়া অন্যান্য টিস্যুগুলোরও একইভাবে পুনরুজ্জীবিন ঘটাতে পারবেন। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বয়স সম্পর্কিত রোগ, যেমন-ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্নায়বিক ব্যাধিগুলির চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।

 

চামড়ার কোষ পুনরুজ্জীবিনে যে প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ২৫ বছরেরও বেশি আগে ডলি ক্লোন করা ভেড়া তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।

 

গবেষক দলের প্রধান কেমব্রিজের বাব্রাহাম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক উলফ রেইক বিবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, তিনি আশা করেছিলেন যে এই কৌশলটি শেষ পর্যন্ত বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের স্বাস্থ্য দীর্ঘকাল ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা এই ধরনের জিনিস সম্পর্কে স্বপ্ন দেখেছি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক সাধারণ রোগ আরও খারাপের দিকে যায় এবং এক্ষেত্রে মানুষকে সাহায্য করার কথা চিন্তা করা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।’

 

কোষের পুনরুজ্জীবনের কৌশলটির উৎপত্তি ১৯৯০ এর দশকে। ওই সময় এডিনবার্গের রোজলিন ইনস্টিটিউটের গবেষকরা একটি ভেড়া থেকে নেওয়া গ্রন্থি কোষকে  ভ্রূণে পরিণত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তীতে এই পরীক্ষার মাধ্যমে ডলি ক্লোন ভেড়া তৈরি হয়েছিল।

ভেড়া বা প্রকৃতপক্ষে মানুষের ক্লোন তৈরি করা রোজলিনের গবেষক দলের লক্ষ্য ছিল না। তাদের লক্ষ্য ছিল মানব ভ্রূণের স্টেম সেল তৈরি করার কৌশলটি ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা ছিল, তারা শরীরের রুগ্ন বা বয়সের ভাঁজ পড়া অংশগুলোকে প্রতিস্থাপন করার জন্য পেশী, তরুণাস্থি এবং স্নায়ু কোষের মতো নির্দিষ্ট কোষ জন্মানো।

২০০৬ সালে ডলি কৌশলটি আরও সহজ করেন তৎকালীন কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিনিয়া ইয়ামানাকা। আইপিএস নামে পরিচিত নতুন পদ্ধতিটিতে প্রায় ৫০ দিনের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কোষগুলিতে রাসায়নিক যুক্ত করা হতো। এর ফলে যে জিনগত পরিবর্তন হয় তাতে প্রাপ্তবয়স্ক কোষকে স্টেম কোষে পরিণত করা হয়।

 

কেমব্রিজের বাব্রাহাম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক রেইকের দল ৫৩ বছর বয়সী ত্বকের কোষগুলিতে আইপিএস কৌশল ব্যবহার করেছে। কিন্তু তারা রাসায়নিক স্নান বা সংশ্লেষের মেয়াদ ৫০ দিন থেকে প্রায় ১২ দিনে নামিয়ে নিয়ে আসেন। গবেষকরা অবাক হয়ে দেখেন যে ত্বকের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এবং এগুলো দেখতে ২৩ বছরের তরুণের মতো।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» এনসিপির সঙ্গে ৩ স্ক্যান্ডিনেভিয়ান দেশের দূতাবাস প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত

» ডিসেম্বরের মধ্যে যারা নির্বাচন চাচ্ছেন, তারা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করছেন: নাসীরুদ্দীন

» শিবিরের ওপর হামলার নিন্দা ও অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার আহ্বান রাফির

» যারা চোরা পথ দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়, তারা নির্বাচন চায় না: ড. মঈন খান

» ‘বিএনপি বা অন্য দলের সঙ্গে এনসিপির আসন সমঝোতার দাবি ভিত্তিহীন’

» জুলাইয়ে লড়েছি বুলেটের বিরুদ্ধে, এবার লড়বো ব্যালটের বিপ্লবের জন্য: ড. মাসুদ

» জামায়াতকে নয়, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই : ডা. শফিকুর রহমান

» এনএসসির ক্ষমতাবলে বিসিবির পরিচালক হয়েছেন বুলবুল: যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা

» প্রবাসীদের টাকায় তাদের জন্য দেশে হাসপাতাল নির্মাণ করা হবে: আসিফ নজরুল

» শিক্ষার্থীরা যে মার্ক অর্জন করেছে তাই পাবে, কোন খয়রাতি মার্ক দেবে না: শিক্ষা উপদেষ্টা

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

নারীদের বয়স কমানোর প্রযুক্তি আবিষ্কার

বয়স বাড়ার সাথে সাথে দেহে তারুণ্যের আভা ধরে রাখার আকাঙ্ক্ষা কার না থাকে? শরীরের বেশ কিছু কোষের পরিবর্তনের কারণে সেই আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণই থেকে যায়। তবে এবার বিজ্ঞানীরা সেখানে আশার আলো দেখিয়েছেন। ৫৩ বছর বয়সী এক নারীর দেহের চামড়ার কোষগুলোকে তারা ২৩ বছরের তরুণীর মতো পুনরুজ্জীবিত করেছেন। 

 

কেমব্রিজের বিজ্ঞানীরা এখন বিশ্বাস করছেন যে তারা হয়তো শরীরের বদলে যাওয়া অন্যান্য টিস্যুগুলোরও একইভাবে পুনরুজ্জীবিন ঘটাতে পারবেন। তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে বয়স সম্পর্কিত রোগ, যেমন-ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও স্নায়বিক ব্যাধিগুলির চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন ঘটানো।

 

চামড়ার কোষ পুনরুজ্জীবিনে যে প্রযুক্তি বা কৌশল ব্যবহার করা হয়েছে সেটি ২৫ বছরেরও বেশি আগে ডলি ক্লোন করা ভেড়া তৈরি করতে ব্যবহৃত হয়েছিল।

 

গবেষক দলের প্রধান কেমব্রিজের বাব্রাহাম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক উলফ রেইক বিবিসি নিউজকে জানিয়েছেন, তিনি আশা করেছিলেন যে এই কৌশলটি শেষ পর্যন্ত বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের স্বাস্থ্য দীর্ঘকাল ধরে রাখার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।

 

তিনি বলেন, ‘আমরা এই ধরনের জিনিস সম্পর্কে স্বপ্ন দেখেছি। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনেক সাধারণ রোগ আরও খারাপের দিকে যায় এবং এক্ষেত্রে মানুষকে সাহায্য করার কথা চিন্তা করা অত্যন্ত আনন্দদায়ক।’

 

কোষের পুনরুজ্জীবনের কৌশলটির উৎপত্তি ১৯৯০ এর দশকে। ওই সময় এডিনবার্গের রোজলিন ইনস্টিটিউটের গবেষকরা একটি ভেড়া থেকে নেওয়া গ্রন্থি কোষকে  ভ্রূণে পরিণত করার পদ্ধতি আবিষ্কার করেছিলেন। পরবর্তীতে এই পরীক্ষার মাধ্যমে ডলি ক্লোন ভেড়া তৈরি হয়েছিল।

ভেড়া বা প্রকৃতপক্ষে মানুষের ক্লোন তৈরি করা রোজলিনের গবেষক দলের লক্ষ্য ছিল না। তাদের লক্ষ্য ছিল মানব ভ্রূণের স্টেম সেল তৈরি করার কৌশলটি ব্যবহার করা। এর মাধ্যমে তাদের প্রত্যাশা ছিল, তারা শরীরের রুগ্ন বা বয়সের ভাঁজ পড়া অংশগুলোকে প্রতিস্থাপন করার জন্য পেশী, তরুণাস্থি এবং স্নায়ু কোষের মতো নির্দিষ্ট কোষ জন্মানো।

২০০৬ সালে ডলি কৌশলটি আরও সহজ করেন তৎকালীন কিয়োটো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শিনিয়া ইয়ামানাকা। আইপিএস নামে পরিচিত নতুন পদ্ধতিটিতে প্রায় ৫০ দিনের জন্য প্রাপ্তবয়স্ক কোষগুলিতে রাসায়নিক যুক্ত করা হতো। এর ফলে যে জিনগত পরিবর্তন হয় তাতে প্রাপ্তবয়স্ক কোষকে স্টেম কোষে পরিণত করা হয়।

 

কেমব্রিজের বাব্রাহাম ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক রেইকের দল ৫৩ বছর বয়সী ত্বকের কোষগুলিতে আইপিএস কৌশল ব্যবহার করেছে। কিন্তু তারা রাসায়নিক স্নান বা সংশ্লেষের মেয়াদ ৫০ দিন থেকে প্রায় ১২ দিনে নামিয়ে নিয়ে আসেন। গবেষকরা অবাক হয়ে দেখেন যে ত্বকের কোষগুলো পুনরুজ্জীবিত হয়েছে এবং এগুলো দেখতে ২৩ বছরের তরুণের মতো।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : dhakacrimenewsbd@gmail.com

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com