আইন আছে, মানে না কেউ

আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ বা অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক। ২০০৮ সালের মহানগর ইমারত বিধিমালায় এ আইন রয়েছে। অথচ এ আইন থাকলেও অধিকাংশ ভবন মালিক সেটি মানছেন না। গত জানুয়ারি মাসে রাজউক ভবন ব্যবহারের সনদ নিতে দুই মাসের সময় বেঁধে দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়। সনদ নেন মাত্র ৭৬ জন মালিক।

 

২০০৮ সালের ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ভবনে বসবাস শুরু বা ব্যবহারের আগে রাজউকের কাছ থেকে ব্যবহার সনদ নিতে হবে। এ সনদ পেলেই কেবল ভবনের মালিক ভবনে উঠতে পারবেন বা ভাড়া দিতে পারবেন।  এ বিষয়ে রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, রাজউকের বিধিমালা অনুযায়ী ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ নেওয়া বাধ্যতামূলক। নিয়মটি ভবন মালিকদের জানাতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আশানুরূপ আবেদন পড়েনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ভবন মালিকরা ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ নেওয়ার পর অন্য সেবা সংস্থাগুলো তাদের সেবা দিবে। কিন্তু অন্য সংস্থাগুলো সে নিয়ম মানছে না। আর তাদের আইনেও সেটা নেই। তারা ভবন মালিকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সেবা পৌঁছে দেয়। ভবন মালিকদের যখন অন্যান্য সেবা পেতে রাজউকের এ আইন প্রয়োজন হয় না, তখন তারা রাজউকের ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ নেবে কেন? এই কর্মকর্তা আরও বলেন, একটা ভবন নির্মাণে রাজউক যখন ত্রুটি পায়, তখন তা তাৎক্ষণিক সমাধানে কোনো আইন নেই। ব্যবস্থা নিতে সময় লাগে তিন মাস। এই সময়ের মধ্যে ভবন মালিকরা কাজ আরও এগিয়ে নেয়। তখন আমরা অভিযানে গেলে ত্রুটিযুক্ত অংশ নিচতলা বা দোতলা পর্যন্ত অপসারণ করতে পারি। কারিগরি সক্ষমতা না থাকায় তার ওপরের তলাগুলোর ব্যাপারে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না। রাজউক সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি রাজউক ভবন ব্যবহার সনদ নিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব ভবনের মালিক ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন; কিন্তু বসবাস বা ব্যবহার সনদপত্র গ্রহণ করেননি তাদের আগামী দুই মাসের মধ্যে সনদ নিতে হবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও অপসারণ) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ১৮ অনুসারে ইমারতের আংশিক বা সম্পূর্ণ নির্মাণ শেষে, ব্যবহারের আগে, ভবন মালিকের রাজউক থেকে ব্যবহার সনদপত্র গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে প্রতি পাঁচ বছর পরপর সনদ নবায়ন করা বাধ্যতামূলক। সনদপত্র না থাকলে রাজউক আওতাধীন এলাকায় ইমারতের মালিকানা হস্তান্তর ও নামজারির অনুমোদন পাওয়া যাবে না।

 

এই বিজ্ঞপ্তির দুই মাস পার হলেও ভবন মালিকদের তেমন সাড়া মেলেনি। গত জানুয়ারি মাসে রাজউক ৩৮ সনদ অনুমোদন দেয়। একই অবস্থা ফেব্রুয়ারি মাসেও। দুই মাসে সংস্থাটি সনদ দেয় ৭৬টি। তবে কতজন আবেদন করেছেন সেই তথ্য দেয়নি রাজউক। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত রাজউকের আওতাধীন এলাকায় বসবাস সনদ নিয়েছে ৩০০টির মতো ভবন। প্রতি বছর সংস্থাটি গড়ে সাত হাজার নতুন ভবনের নকশা অনুমোদন দেয়। অনুমতি নেওয়ার পরের পাঁচ বছর এই নকশার মেয়াদ থাকে। প্রতি বছর অনুমোদিত নকশার ৮০ শতাংশ ভবন নির্মিত হয়। সে হিসাবে গত ১৪ বছরে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার ভবন তৈরি হয়েছে।

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» সকালে খালি পেটে এক টুকরো কাঁচা হলুদের উপকারিতা

» গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

» হার্টে ব্লক : ওষুধ খাবেন কতদিন

» রণবীরের ‘ধুরন্ধর’ ছবির লুক নিয়ে তোলপাড়

» বরিশালকে হারিয়ে টানা তৃতীয় জয় রংপুরের

» উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের ঘটনায় সেই কোরীয় এয়ারলাইন্স প্রধানের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

» অদক্ষ চালক বেপরোয়া গতি কেন মারণফাঁদ এক্সপ্রেসওয়ে

» ঢাবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি ফরহাদ, সেক্রেটারি মহিউদ্দিন

» ইজিবাইকের ধাক্কায় বাইসাইকেল চালক নিহত

» খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন সেনাপ্রধান

  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আইন আছে, মানে না কেউ

আবাসিক ও বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণের পর রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ বা অকুপেন্সি সার্টিফিকেট নেওয়া বাধ্যতামূলক। ২০০৮ সালের মহানগর ইমারত বিধিমালায় এ আইন রয়েছে। অথচ এ আইন থাকলেও অধিকাংশ ভবন মালিক সেটি মানছেন না। গত জানুয়ারি মাসে রাজউক ভবন ব্যবহারের সনদ নিতে দুই মাসের সময় বেঁধে দিয়ে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়। সনদ নেন মাত্র ৭৬ জন মালিক।

 

২০০৮ সালের ঢাকা মহানগর ইমারত বিধিমালায় বলা হয়েছে, কোনো ভবনে বসবাস শুরু বা ব্যবহারের আগে রাজউকের কাছ থেকে ব্যবহার সনদ নিতে হবে। এ সনদ পেলেই কেবল ভবনের মালিক ভবনে উঠতে পারবেন বা ভাড়া দিতে পারবেন।  এ বিষয়ে রাজউকের পরিচালক (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১) প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, রাজউকের বিধিমালা অনুযায়ী ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ নেওয়া বাধ্যতামূলক। নিয়মটি ভবন মালিকদের জানাতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু আশানুরূপ আবেদন পড়েনি। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী ভবন মালিকরা ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ নেওয়ার পর অন্য সেবা সংস্থাগুলো তাদের সেবা দিবে। কিন্তু অন্য সংস্থাগুলো সে নিয়ম মানছে না। আর তাদের আইনেও সেটা নেই। তারা ভবন মালিকদের আবেদনে সাড়া দিয়ে সেবা পৌঁছে দেয়। ভবন মালিকদের যখন অন্যান্য সেবা পেতে রাজউকের এ আইন প্রয়োজন হয় না, তখন তারা রাজউকের ‘ভবন ব্যবহার সনদ’ নেবে কেন? এই কর্মকর্তা আরও বলেন, একটা ভবন নির্মাণে রাজউক যখন ত্রুটি পায়, তখন তা তাৎক্ষণিক সমাধানে কোনো আইন নেই। ব্যবস্থা নিতে সময় লাগে তিন মাস। এই সময়ের মধ্যে ভবন মালিকরা কাজ আরও এগিয়ে নেয়। তখন আমরা অভিযানে গেলে ত্রুটিযুক্ত অংশ নিচতলা বা দোতলা পর্যন্ত অপসারণ করতে পারি। কারিগরি সক্ষমতা না থাকায় তার ওপরের তলাগুলোর ব্যাপারে আমরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারি না। রাজউক সূত্রে জানা যায়, গত ১১ জানুয়ারি রাজউক ভবন ব্যবহার সনদ নিতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেসব ভবনের মালিক ইতোমধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ করেছেন; কিন্তু বসবাস বা ব্যবহার সনদপত্র গ্রহণ করেননি তাদের আগামী দুই মাসের মধ্যে সনদ নিতে হবে। এ ছাড়া ঢাকা মহানগর ইমারত (নির্মাণ, সংরক্ষণ, উন্নয়ন ও অপসারণ) বিধিমালা, ২০০৮-এর বিধি ১৮ অনুসারে ইমারতের আংশিক বা সম্পূর্ণ নির্মাণ শেষে, ব্যবহারের আগে, ভবন মালিকের রাজউক থেকে ব্যবহার সনদপত্র গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক। একই সঙ্গে প্রতি পাঁচ বছর পরপর সনদ নবায়ন করা বাধ্যতামূলক। সনদপত্র না থাকলে রাজউক আওতাধীন এলাকায় ইমারতের মালিকানা হস্তান্তর ও নামজারির অনুমোদন পাওয়া যাবে না।

 

এই বিজ্ঞপ্তির দুই মাস পার হলেও ভবন মালিকদের তেমন সাড়া মেলেনি। গত জানুয়ারি মাসে রাজউক ৩৮ সনদ অনুমোদন দেয়। একই অবস্থা ফেব্রুয়ারি মাসেও। দুই মাসে সংস্থাটি সনদ দেয় ৭৬টি। তবে কতজন আবেদন করেছেন সেই তথ্য দেয়নি রাজউক। এর আগে ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত রাজউকের আওতাধীন এলাকায় বসবাস সনদ নিয়েছে ৩০০টির মতো ভবন। প্রতি বছর সংস্থাটি গড়ে সাত হাজার নতুন ভবনের নকশা অনুমোদন দেয়। অনুমতি নেওয়ার পরের পাঁচ বছর এই নকশার মেয়াদ থাকে। প্রতি বছর অনুমোদিত নকশার ৮০ শতাংশ ভবন নির্মিত হয়। সে হিসাবে গত ১৪ বছরে রাজউকের আওতাধীন এলাকায় প্রায় ৬০ হাজার ভবন তৈরি হয়েছে।

সূএ:বাংলাদেশ প্রতিদিন

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  
উপদেষ্টা -মাকসুদা লিসা
 সম্পাদক ও প্রকাশক :মো সেলিম আহম্মেদ,
ভারপ্রাপ্ত,সম্পাদক : মোঃ আতাহার হোসেন সুজন,
ব্যাবস্থাপনা সম্পাদকঃ মো: শফিকুল ইসলাম আরজু,
নির্বাহী সম্পাদকঃ আনিসুল হক বাবু

 

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

মোবাইল :০১৫৩৫১৩০৩৫০

Design & Developed BY ThemesBazar.Com