ডিজিটাল মুদ্রা চালু করতে কাজ করছে সিঙ্গাপুর-কম্বোডিয়াও

অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার। দু-একটি ছাড়া বেশির ভাগ দেশ ভার্চুয়াল মুদ্রাকে আইনিভাবে অনুমোদন দেয়নি। তার পরও ক্রিপ্টোকারেন্সি-ইথেরিয়ামের মতো মুদ্রার ব্যবহার ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব মুদ্রার ডিজিটাল সংস্করণ চালু করতে কাজ করছে। এমন উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর ও কম্বোডিয়াও সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) চালু করতে কাজ করছে। খবর ব্যাংকক পোস্ট।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থ প্রদান সহজ করতে এবং স্টার্টআপ ও ই-কমার্স ব্যবসা উৎসাহিত করতে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার করতে চাইছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ। তুলনামূলক অল্প বয়সী জনসংখ্যা এবং ইন্টারনেট ও সেলফোন ব্যবহারের উচ্চ হারের কারণে এ অঞ্চলের ডিজিটাল পেমেন্ট, ই-কমার্স ও ক্রিপ্টোকারেন্সিতে প্রচুর স্টার্টআপ আসছে।

বিআইএস ইনোভেশন হাবের হংকং কেন্দ্রের প্রধান বেনেডিক্ট নোলেনস একটি প্যানেল আলোচনায় বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অত্যন্ত উর্বর ভূমি। যখন আপনি অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্সের বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছেন, তখন আপনি অর্থ প্রদানের নতুন পদ্ধতির বৃদ্ধিও দেখতে পাবেন। বিষয়গুলো একটি আরেকটির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

 

সিবিডিসি এশিয়ায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় উঠছে। ২০১৪ সালে চীন ই-ইউয়ান তৈরিতে কাজ শুরু করে। যেখানে হংকং নিজস্ব ই-এইচকেডি চালু করতে পর্যালোচনা করছে। শহরটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক হংকং মনিটারি অথরিটি পিপলস ব্যাংক অব চায়না, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সিবিডিসি সেটেলমেন্ট প্লাটফর্ম তৈরির জন্য এমব্রিজ নামের একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।

 

এদিকে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গাপুরও। দেশটি অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বিআইএস ইনোভেশন হাবসহ আন্তঃসীমান্ত লেনদেনের জন্য প্লাটফর্ম তৈরিতে কাজ করছে। দেশটির এ প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে প্রজেক্ট ডানবার।

 

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ কম্বোডিয়াও ডিজিটাল অর্থনীতি বিকাশে কাজ করছে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব কম্বোডিয়ার সহকারী গভর্নর সেরেই চেয়া বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্টারনেট অর্থনীতি বিস্তৃত করার অনেক সুযোগ রয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার ছোট এ দেশে প্রায় দুই কোটি সেলফোন সাবস্ক্রিপশন রয়েছে। আমাদের দেশে এক ব্যক্তিকে দুই বা তিনটি সেলফোন সাবস্ক্রিপশন দেয়া হয়।

 

কভিড-১৯ মহামারী ডিজিটাল অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত করছে। দুই বছর ধরে লকডাউনের মতো কঠোর বিধিনিষেধ লোকদের অনলাইনে কেনাকাটা করতে উৎসাহিত করেছে। সেরেই চেয়া বলেন, এ পরিস্থিতি কম্বোডিয়াসহ বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে এখন প্রযুক্তি স্টার্টআপের সংখ্যা ১০ গুণ বেড়েছে। ডিবিএস ব্যাংকের মতো ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার জন্য প্লাটফর্ম স্থাপন করেছে।

 

সিঙ্গাপুরের অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিপ্টো কারেন্সি এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড স্টার্ট-আপসের চেয়ারম্যান ফ্রেডরিক ফাং বলেন, সিঙ্গাপুরে ডিজিটাল অর্থনীতি ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ আরো বেশি লোক ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আগ্রহী হচ্ছে। শুধু তরুণরাই নয়, বয়স্ক গ্রাহকরাও ডিজিটাল পেমেন্টে ঝুঁকছেন।

 

তবে অনেক বিশ্লেষক ভার্চুয়াল মুদ্রার ঝুঁকি নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। বিআইএস ইনোভেশন হাবের বেনেডিক্ট নোলেনস ক্রিপ্টোকারেন্সির নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাপকভাবে চালু থাকা নগদ অর্থ সবচেয়ে বেনামি বস্তু। তাছাড়া ডিজিটাল মুদ্রা কাগজ বা কয়েনের চেয়ে পর্যবেক্ষণ করা সহজ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ইসির ২ আইন সংস্কার প্রস্তাবের অনুমোদন

» কল্কির সিক্যুয়েল থেকেও বাদ পড়লেন দীপিকা

» সাইফুজ্জামান ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘রেড নোটিশ’ জারির আবেদন

» বাংলাদেশের মানুষ পিআর পদ্ধতি প্রত্যাখ্যান করেছে: টুকু

» বায়তুল মোকাররম এলাকায় ইসলামী আন্দোলনের বিক্ষোভ শুরু

» সীমানা বিরোধ: আদালতের রায়ের পর সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

» নির্বাচনকে সামনে রেখে নেতাকর্মীদের একগুচ্ছ নির্দেশনা তারেক রহমানের

» দুটি ব্যাংকের তিনটি কার্ড ব্যবহার করে ৬ লাখ টাকা প্রতারণার, গ্রেফতার ১

» বাংলাদেশে সবচাইতে আগে জরুরি জাতীয় নির্বাচন : জিল্লুর রহমান

» শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা জুলাই গণহত্যার জন্য দায়ী— সাক্ষ্য নাহিদের

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

ডিজিটাল মুদ্রা চালু করতে কাজ করছে সিঙ্গাপুর-কম্বোডিয়াও

অনলাইন ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে বাড়ছে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার। দু-একটি ছাড়া বেশির ভাগ দেশ ভার্চুয়াল মুদ্রাকে আইনিভাবে অনুমোদন দেয়নি। তার পরও ক্রিপ্টোকারেন্সি-ইথেরিয়ামের মতো মুদ্রার ব্যবহার ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় অনেক কেন্দ্রীয় ব্যাংক নিজস্ব মুদ্রার ডিজিটাল সংস্করণ চালু করতে কাজ করছে। এমন উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সর্বশেষ সিঙ্গাপুর ও কম্বোডিয়াও সেন্ট্রাল ব্যাংক ডিজিটাল কারেন্সি (সিবিডিসি) চালু করতে কাজ করছে। খবর ব্যাংকক পোস্ট।

 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অর্থ প্রদান সহজ করতে এবং স্টার্টআপ ও ই-কমার্স ব্যবসা উৎসাহিত করতে ডিজিটাল মুদ্রার ব্যবহার করতে চাইছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশ। তুলনামূলক অল্প বয়সী জনসংখ্যা এবং ইন্টারনেট ও সেলফোন ব্যবহারের উচ্চ হারের কারণে এ অঞ্চলের ডিজিটাল পেমেন্ট, ই-কমার্স ও ক্রিপ্টোকারেন্সিতে প্রচুর স্টার্টআপ আসছে।

বিআইএস ইনোভেশন হাবের হংকং কেন্দ্রের প্রধান বেনেডিক্ট নোলেনস একটি প্যানেল আলোচনায় বলেন, ডিজিটাল পেমেন্টের ক্ষেত্রে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অত্যন্ত উর্বর ভূমি। যখন আপনি অনলাইনভিত্তিক ই-কমার্সের বৃদ্ধি দেখতে পাচ্ছেন, তখন আপনি অর্থ প্রদানের নতুন পদ্ধতির বৃদ্ধিও দেখতে পাবেন। বিষয়গুলো একটি আরেকটির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত।

 

সিবিডিসি এশিয়ায় ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় উঠছে। ২০১৪ সালে চীন ই-ইউয়ান তৈরিতে কাজ শুরু করে। যেখানে হংকং নিজস্ব ই-এইচকেডি চালু করতে পর্যালোচনা করছে। শহরটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক হংকং মনিটারি অথরিটি পিপলস ব্যাংক অব চায়না, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সঙ্গে সিবিডিসি সেটেলমেন্ট প্লাটফর্ম তৈরির জন্য এমব্রিজ নামের একটি প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে।

 

এদিকে ডিজিটাল মুদ্রা চালুর ঘোষণা দিয়েছে সিঙ্গাপুরও। দেশটি অস্ট্রেলিয়া, মালয়েশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর সঙ্গে বিআইএস ইনোভেশন হাবসহ আন্তঃসীমান্ত লেনদেনের জন্য প্লাটফর্ম তৈরিতে কাজ করছে। দেশটির এ প্রকল্পের নাম দেয়া হয়েছে প্রজেক্ট ডানবার।

 

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আরেক দেশ কম্বোডিয়াও ডিজিটাল অর্থনীতি বিকাশে কাজ করছে। ন্যাশনাল ব্যাংক অব কম্বোডিয়ার সহকারী গভর্নর সেরেই চেয়া বলেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ইন্টারনেট অর্থনীতি বিস্তৃত করার অনেক সুযোগ রয়েছে। ১ কোটি ৬০ লাখ জনসংখ্যার ছোট এ দেশে প্রায় দুই কোটি সেলফোন সাবস্ক্রিপশন রয়েছে। আমাদের দেশে এক ব্যক্তিকে দুই বা তিনটি সেলফোন সাবস্ক্রিপশন দেয়া হয়।

 

কভিড-১৯ মহামারী ডিজিটাল অর্থনীতিকে ত্বরান্বিত করছে। দুই বছর ধরে লকডাউনের মতো কঠোর বিধিনিষেধ লোকদের অনলাইনে কেনাকাটা করতে উৎসাহিত করেছে। সেরেই চেয়া বলেন, এ পরিস্থিতি কম্বোডিয়াসহ বিশ্বজুড়ে ডিজিটাল অর্থনীতির আকার বাড়িয়ে দিয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে সিঙ্গাপুরে এখন প্রযুক্তি স্টার্টআপের সংখ্যা ১০ গুণ বেড়েছে। ডিবিএস ব্যাংকের মতো ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোও ক্রিপ্টোকারেন্সি ব্যবসার জন্য প্লাটফর্ম স্থাপন করেছে।

 

সিঙ্গাপুরের অ্যাসোসিয়েশন অব ক্রিপ্টো কারেন্সি এন্টারপ্রাইজ অ্যান্ড স্টার্ট-আপসের চেয়ারম্যান ফ্রেডরিক ফাং বলেন, সিঙ্গাপুরে ডিজিটাল অর্থনীতি ব্যাপকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। কারণ আরো বেশি লোক ক্রিপ্টোকারেন্সিতে আগ্রহী হচ্ছে। শুধু তরুণরাই নয়, বয়স্ক গ্রাহকরাও ডিজিটাল পেমেন্টে ঝুঁকছেন।

 

তবে অনেক বিশ্লেষক ভার্চুয়াল মুদ্রার ঝুঁকি নিয়ে প্রথম থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছেন। বিআইএস ইনোভেশন হাবের বেনেডিক্ট নোলেনস ক্রিপ্টোকারেন্সির নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা নিয়ে উদ্বেগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, বর্তমানে ব্যাপকভাবে চালু থাকা নগদ অর্থ সবচেয়ে বেনামি বস্তু। তাছাড়া ডিজিটাল মুদ্রা কাগজ বা কয়েনের চেয়ে পর্যবেক্ষণ করা সহজ।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com