আজ শুভ মহালয়া

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্য লগ্ন শুভ মহালয়া আজ (রোববার)।

 

আজ থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হচ্ছে। ভোরের আলো ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পিতৃপক্ষ শেষে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষ। চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে মর্ত্যে দেবী দুর্গাকে জানানো হয় আহ্বান।

 

মহালয়া উপলক্ষ্যে চন্ডীপাঠ ছাড়াও বিভিন্ন মন্দির এবং মণ্ডপে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মূলত মহালয়া মানেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়ে যাওয়া।

 

মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুরাণে আছে- দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব- মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী নিয়ে দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।

 

মহালয়ার ভোর থেকেই শুরু হয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা। সনাতন ধর্মে বলা হয়, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। মৃত আত্মীয়পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে পানি-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়।

 

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত রোববার থেকেই দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শোনা যাবে। দুর্গাপূজার এই সূচনার দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হবে। মহালয়া উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

 

মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপে, ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, স্বামীবাগে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই চন্ডীপাঠ, চন্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হবে।

 

এবারের শারদীয়া দুর্গাপূজা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান এই দুর্গাপূজা। এবার ৩৩ হাজার ৫৭৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ২৫৫টি। অর্থাৎ গতবারের চেয়েও এবারের দুর্গাপূজা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া সরকারি অনুদানও গত বছরের চেয়ে এক কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» ড. ইউনূসকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করার পেছনে দেশি-বিদেশি কোনো ইন্ধন ছিল না : নাহিদ ইসলাম

» পিআর হবে কিনা—সিদ্ধান্ত নেবে রাজনৈতিক দলগুলো: প্রেস সচিব

» উন্নত চিকিৎসার জন্য আগামীকাল সিঙ্গাপুরে যাচ্ছেন নুরুল হক নুর

» ৩ ঘণ্টা পর সিলেটের সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ শুরু

» প্রশ্ন রিজভীর ইউনিভার্সিটির ভিপিকে কি ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে?

» অভিনেত্রী পূজার সঙ্গে প্রতারণা, কলকাতায় গ্রেফতার প্রযোজক

» সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

» টাইগারদের ফাইনাল যাত্রা: শ্রীলঙ্কা বধের পর সামনে যে সমীকরণ

» ‘পূজার নিরাপত্তায় বুধবার থেকে মাঠে নামছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী’ : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

» বিভিন্ন দাবিতে সচিবালয়ে কর্মচারীদের বিক্ষোভ

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

আজ শুভ মহালয়া

ছবি সংগৃহীত

 

অনলাইন ডেস্ক :  বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসবের পুণ্য লগ্ন শুভ মহালয়া আজ (রোববার)।

 

আজ থেকেই শারদীয় দুর্গোৎসবের ক্ষণ গণনা শুরু হচ্ছে। ভোরের আলো ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে পিতৃপক্ষ শেষে শুরু হয়েছে দেবীপক্ষ। চন্ডীপাঠের মধ্য দিয়ে মর্ত্যে দেবী দুর্গাকে জানানো হয় আহ্বান।

 

মহালয়া উপলক্ষ্যে চন্ডীপাঠ ছাড়াও বিভিন্ন মন্দির এবং মণ্ডপে মহালয়ার ঘট স্থাপন ও বিশেষ পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মূলত মহালয়া মানেই দুর্গাপূজার দিন গণনা শুরু হয়ে যাওয়া।

 

মহালয়া দুর্গোৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। পুরাণে আছে- দুর্গোৎসবের তিনটি পর্ব- মহালয়া, বোধন আর সন্ধিপূজা। মহামায়া অসীম শক্তির উৎস। পুরাণ মতে, মহালয়ার দিনে, দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পান। শিবের বর অনুযায়ী কোনো মানুষ বা দেবতা কখনো মহিষাসুরকে হত্যা করতে পারবে না। ফলে অসীম ক্ষমতাশালী মহিষাসুর দেবতাদের স্বর্গ থেকে বিতাড়িত করে এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের অধীশ্বর হতে চায়। তাই ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রয়ী সম্মিলিতভাবে ‘মহামায়া’র রূপে অমোঘ নারীশক্তি সৃষ্টি করলেন এবং দেবতাদের দশটি অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে সিংহবাহিনী নিয়ে দেবী দুর্গা ৯ দিনব্যাপী যুদ্ধে মহিষাসুরকে পরাজিত ও হত্যা করে।

 

মহালয়ার ভোর থেকেই শুরু হয় পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে তর্পণ করা। সনাতন ধর্মে বলা হয়, পিতৃপক্ষে প্রয়াত আত্মারা স্বর্গ থেকে মর্ত্যলোকে আসেন। মৃত আত্মীয়পরিজন ও পূর্বপুরুষদের আত্মার মঙ্গল কামনা করেন অনেকে। পূর্বপুরুষদের উদ্দেশে পানি-তিল-অন্ন উৎসর্গ করে তর্পণ করা হয়।

 

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর ষষ্ঠীপূজার মাধ্যমে দুর্গাপূজা শুরু হলেও মূলত রোববার থেকেই দুর্গাপূজার আগমনধ্বনি শোনা যাবে। দুর্গাপূজার এই সূচনার দিনটি সারা দেশে বেশ আড়ম্বরের সঙ্গে উদযাপিত হবে। মহালয়া উপলক্ষ্যে বিভিন্ন মন্দির ও পূজা কমিটি বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে।

 

মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির উদ্যোগে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মেলাঙ্গনে কেন্দ্রীয় পূজা মণ্ডপে, ঢাকাস্থ রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশন, বরদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হল, সিদ্ধেশ্বরী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, স্বামীবাগে লোকনাথ ব্রহ্মচারী আশ্রম ও মন্দির, রামসীতা মন্দির, জয়কালী মন্দিরসহ বিভিন্ন পূজামণ্ডপে ভোর থেকেই চন্ডীপাঠ, চন্ডীপূজা ও বিশেষ পূজার মধ্য দিয়ে মহালয়ার ঘট স্থাপন করা হবে।

 

এবারের শারদীয়া দুর্গাপূজা নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান এই দুর্গাপূজা। এবার ৩৩ হাজার ৫৭৬টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হবে। এর মধ্যে ঢাকা মহানগরীতে ২৫৫টি। অর্থাৎ গতবারের চেয়েও এবারের দুর্গাপূজা বৃদ্ধি পেয়েছে। তাছাড়া সরকারি অনুদানও গত বছরের চেয়ে এক কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com