দেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাদান পদ্ধতির মানোন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের উদ্যোগ

[ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫] দেশজুড়ে প্রাথমিক শিক্ষার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল। সম্প্রতি, এ নিয়ে এক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়, যার লক্ষ্য সরকারের আসন্ন ‘প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (পিইডিপি-৫)-এর পরিকল্পনায় সহায়তা করার মাধ্যমে এটিকে সফল করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা।

 

এ অংশীদারিত্বের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে প্রাথমিক স্কুলের ইংরেজি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কেমন উদ্যোগ প্রয়োজন তা খুঁজে বের করা। এ উদ্যোগের অন্যতম আরেকটি দিক হল নিডস এনালাইসিস এর মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা, কারণ পেশাগত উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রায়শই তাদের ভূমিকা উপেক্ষা করা হয়। এ নিডস এনালাইসিস প্রক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে এবং পিইডিপি-৫ এ কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মোঃ শামসুজ্জামান এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “এই অংশীদারিত্ব সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের এ সহযোগিতা আমাদের পিইডিপি-৫ এর কৌশলগত পরিকল্পনার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা ব্রিটিশ কাউন্সিলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই; একইসাথে, ভবিষ্যতেও এ ধরনের অংশীদারিত্বের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”

 

বাংলাদেশ সরকার ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের ৭০ বছরেরও বেশি সময়ের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে, আর তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই অংশীদারিত্ব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের প্রোগ্রাম পরিচালক ডেভিড নক্স। এ প্রকল্পের মূল বিষয়বস্তুর ওপরও আলোকপাত করেন তিনি। তিনি বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শহর ও গ্রাম, দুই জায়গা থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা; কারণ, আমাদের প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি বড় অংশ গ্রামে কর্মরত।” তিনি আরও বলেন, “যেহেতু, প্রাথমিক স্তরের অধিকাংশ শিক্ষক নারী, তাই পেশাগত উন্নয়নে লিঙ্গভিত্তিক সমতা নিশ্চিত করাকেও আমরা পূর্ণ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। পাশাপাশি, আমরা যখন মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজন বুঝে কাজ করব ,তখনই কেবল সত্যিকার অর্থে পুরো শিক্ষক সহায়তা ব্যবস্থাটিকে শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।”

 

পরবর্তীতে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শমরেশ সাহা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী এই উদ্যোগ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তার একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

 

চতুর্থ প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (পিইডিপি-৪)-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এ সময় এ. কে. মোহম্মদ সামছুল আহসান, রাজা মোহাম্মদ আবদুল হাই, মোহাম্মদ কামরুল হাসান, মোঃ ইমামুল ইসলাম, মো. মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ রসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ইমরান সাইফুর এবং সাহেলী নাজ।

 

উভয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতির লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



» বাংলাদেশকে চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য দিলো হংকং

» ৪৮তম বিশেষ বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ

» জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা শুরু

» গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে : ডা. জাহিদ

» ডাকসু নির্বাচন সফল করায় সবাইকে ধন্যবাদ দিলেন উপাচার্য

» স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে বনজ সম্পদের চাপ কমানো সম্ভব: পরিবেশ উপদেষ্টা

» জাকসুর ফলাফল পেতে আগামীকাল শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে: অধ্যাপক রশিদুল আলম

» জাকসু নির্বাচন বর্জনের পর রাতে বিক্ষোভ মিছিল ছাত্রদলের

» পরাজয় নিশ্চিত জেনে ছাত্রদলের ভোট বর্জন: শিবির সমর্থিত ভিপি প্রার্থী

» ‘জামায়াত নয়, বিএনপির প্রতিষ্ঠান থেকে কেনা হয়েছে ব্যালট পেপার’

  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Desing & Developed BY PopularITLtd.Com
পরীক্ষামূলক প্রচার...

দেশে ইংরেজি ভাষা শিক্ষাদান পদ্ধতির মানোন্নয়নে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের উদ্যোগ

[ঢাকা, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫] দেশজুড়ে প্রাথমিক শিক্ষার ভবিষ্যৎ উন্নয়নের লক্ষ্যে একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (ডিপিই) এবং ব্রিটিশ কাউন্সিল। সম্প্রতি, এ নিয়ে এক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করা হয়, যার লক্ষ্য সরকারের আসন্ন ‘প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম’ (পিইডিপি-৫)-এর পরিকল্পনায় সহায়তা করার মাধ্যমে এটিকে সফল করে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা।

 

এ অংশীদারিত্বের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে প্রাথমিক স্কুলের ইংরেজি শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নের জন্য কেমন উদ্যোগ প্রয়োজন তা খুঁজে বের করা। এ উদ্যোগের অন্যতম আরেকটি দিক হল নিডস এনালাইসিস এর মাধ্যমে তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা, কারণ পেশাগত উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রায়শই তাদের ভূমিকা উপেক্ষা করা হয়। এ নিডস এনালাইসিস প্রক্রিয়া থেকে প্রাপ্ত তথ্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে প্রমাণভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করবে এবং পিইডিপি-৫ এ কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মোঃ শামসুজ্জামান এ উদ্যোগের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, “এই অংশীদারিত্ব সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ। ব্রিটিশ কাউন্সিলের এ সহযোগিতা আমাদের পিইডিপি-৫ এর কৌশলগত পরিকল্পনার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। এ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমরা ব্রিটিশ কাউন্সিলকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই; একইসাথে, ভবিষ্যতেও এ ধরনের অংশীদারিত্বের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী।”

 

বাংলাদেশ সরকার ও ব্রিটিশ কাউন্সিলের ৭০ বছরেরও বেশি সময়ের সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্কের ইতিহাস রয়েছে, আর তারই ধারাবাহিকতায় আজ এই অংশীদারিত্ব হয়েছে বলে উল্লেখ করেন ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের প্রোগ্রাম পরিচালক ডেভিড নক্স। এ প্রকল্পের মূল বিষয়বস্তুর ওপরও আলোকপাত করেন তিনি। তিনি বলেন, “আমাদের মূল লক্ষ্য হলো শহর ও গ্রাম, দুই জায়গা থেকেই তথ্য সংগ্রহ করা; কারণ, আমাদের প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি বড় অংশ গ্রামে কর্মরত।” তিনি আরও বলেন, “যেহেতু, প্রাথমিক স্তরের অধিকাংশ শিক্ষক নারী, তাই পেশাগত উন্নয়নে লিঙ্গভিত্তিক সমতা নিশ্চিত করাকেও আমরা পূর্ণ অগ্রাধিকার দিচ্ছি। পাশাপাশি, আমরা যখন মধ্যম পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজন বুঝে কাজ করব ,তখনই কেবল সত্যিকার অর্থে পুরো শিক্ষক সহায়তা ব্যবস্থাটিকে শক্তিশালী করা সম্ভব হবে।”

 

পরবর্তীতে, ব্রিটিশ কাউন্সিলের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার শমরেশ সাহা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তের দিক-নির্দেশনা অনুযায়ী এই উদ্যোগ কীভাবে বাস্তবায়িত হবে, তার একটি বিস্তারিত পরিকল্পনা তুলে ধরেন।

 

চতুর্থ প্রাইমারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (পিইডিপি-৪)-এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ আতিকুর রহমান অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন। এ সময় এ. কে. মোহম্মদ সামছুল আহসান, রাজা মোহাম্মদ আবদুল হাই, মোহাম্মদ কামরুল হাসান, মোঃ ইমামুল ইসলাম, মো. মাহবুবুর রহমান বিল্লাহ রসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে, অনুষ্ঠানে ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ইমরান সাইফুর এবং সাহেলী নাজ।

 

উভয় প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রে অগ্রগতির লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার অঙ্গীকারের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানটি শেষ হয়।

Facebook Comments Box

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ



সর্বশেষ আপডেট



সর্বাধিক পঠিত



  

 

আমাদের সাথে যোগাযোগ করুন:ই-মেইল : [email protected]

Design & Developed BY ThemesBazar.Com